Ajker Patrika

চট্টগ্রামে কিশোরী ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় যুবকের মৃত্যুদণ্ডাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৯: ০৮
Thumbnail image

চট্টগ্রামে এক কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের পর হত্যা মামলার আসামি আলী আকবরকে (২৯) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

আজ রোববার চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামির বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার ডলু আরালিয়া এলাকায়। ২০১৬ সালে ২০ জানুয়ারি ওই ঘটনার সময় আসামির বয়স ছিল ২২ বছর। 

ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুর আলম আজকের পত্রিকাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘কিশোরী হত্যা মামলায় আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত করায় আদালত আসামির বিরুদ্ধে এ সাজার রায় ঘোষণা করেন। আদেশে, উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখা সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।’ 

মামলা থেকে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ২০ জানুয়ারি চট্টগ্রামে ভুজপুর থানাধীন বাদুরখিল গ্রামে একটি গাছে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিনই নিহতের বাবা ভুজপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের পর ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে ভুজপুর থানার ওই সময়ের উপপরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন মোল্ল্যা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ২০১৭ সালে ৬ জানুয়ারি আকবরকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন থানার ওই সময়ের তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক হেলাল উদ্দিন ফারুকী।

মামলা থেকে আরও জানা গেছে, নিহত কিশোরীর সঙ্গে আসামির মোবাইল ফোনে পরিচয় থেকে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৫ সালে ১৮ জুলাই ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান আকবর। পরে নিজের বাড়িতে কয়েক দিন রেখে ওই কিশোরীকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে তিনি। এরপর পুনরায় তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখানো হয়। নিহতের কাছে বিশ্বাস অর্জনের জন্য একই বছর ১০ নভেম্বর অপ্রাপ্তবয়স্ক ওই কিশোরীকে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে কথিত বিয়ে করেন আসামি। এ সময় আকবরের আরেকটি বিয়ের বিষয় জেনে যায় কিশোরী। পরে পৃথক ঘর তৈরি করে সংসার করার কথা বলে নিহতের বাবার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু নিহতের বাবা রিকশাচালক হওয়ায় টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এদিকে প্রথম স্ত্রী তাঁর স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জেনে যাওয়ায় তাঁর পক্ষ থেকে কিশোরীকে তালাক দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। সব মিলিয়ে পরে আসামি কিশোরীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আকবর। ঘটনার দিন ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়িতে অবস্থানের সময় তাকে নিয়ে স্থানীয় একটি খামার বাড়িতে বেড়াতে যান আকবর। সেখানে ধর্ষণের পর তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে ওই কিশোরীর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আসামি পালিয়ে যান। তদন্তে ওঠে আসে আসামি একজন মাদক কারবারি। তাঁর নামে মাদকের মামলা আছে। 

পুলিশ জানায়, ২০১৬ সালে ২৬ আগস্ট আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিনে কারাগার থেকে বের হন। এর পর থেকে পলাতক আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত