Ajker Patrika

নথি জালিয়াতির মামলায় কক্সবাজারের সাবেক ডিসি-জজসহ পাঁচজনের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত নথি জালিয়াতির মামলায় কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি), জজসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছেন। এ সময় আগামী ৩ আগস্ট এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের প্রায় ৪০ মিনিট শুনানির পর আদালত সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। ৩ আগস্ট থেকে এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। প্রথমে মামলার বাদীর সাক্ষ্য নেওয়া হবে।

একই সঙ্গে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ৩ আগস্ট পর্যন্ত তাঁদের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন বলে জানান তিনি।

আসামিরা হলেন কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. রুহুল আমিন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার, কক্সবাজার আদালতের স্টেনোগ্রাফার জাফর আহমদ, আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল।

অ্যাডভোকেট লাভলু বলেন, শুনানি চলাকালে অন্তর্বর্তী জামিনে থাকা পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা গেছে, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী এলাকায় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা এ কে এম কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর আদালতে একটি মামলা করেছিলেন। এতে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়। প্রধান আসামি করা হয় জেলা প্রশাসক রুহুল আমিনকে। এ সময় আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য দুদককে নির্দেশ দেন। এই মামলায় ২০১৭ সালের ২২ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক সাবেক জেলা প্রশাসক রহুল আমিনকে কারাগারে পাঠান। দীর্ঘ কারাভোগ শেষে পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

পরে তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলার এক নম্বর আসামি রুহুল আমিনের নাম বাদ দিয়ে নথিপত্র পাঠান দুদকের প্রধান কার্যালয়ে। জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিনের নাম বাদ দেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে একই আদালতে বাদী কায়সারুল ইসলাম চৌধুরী জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, জেলা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আরও একটি জালিয়াতির মামলা করেন।

ওই মামলার তদন্ত শেষে দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন ২০২৪ সালের ১ জুলাই আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে নথি জালিয়াতির ঘটনায় সহযোগিতা করায় সাবেক জেলা প্রশাসক ও জেলা জজ ছাড়াও আসামি করা হয় বাদীপক্ষের আইনজীবী মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির স্বপন কান্তি পাল এবং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. জাফর আহমদকে। মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় দুদকের কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রহিম ও কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এস এম শাহ হাবিবুর রহমানকে। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি কক্সবাজারের বিশেষ জজ আদালতে জালিয়াতির বিষয়ে দুদকের দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়। ২৩ জানুয়ারি আদালত ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তাঁরা আদালতে হাজির হয়ে অন্তর্বর্তী জামিন পান। সম্প্রতি মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে ইয়াবাসহ শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার, দল থেকে বহিষ্কার

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার শ্রমিক দল নেতা সামছুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার শ্রমিক দল নেতা সামছুল আলম। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৩৮০টি ইয়াবা ট্যাবলেটসহ সামছুল আলম (৩৫) নামের এক শ্রমিক দল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার দেবরাজ এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং আজ শনিবার সকালে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার সামছুল আলম উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কুতুবপুর শুকনারছিট এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে।

সখীপুর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ উপজেলার দেবরাজ এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে ওই এলাকা থেকে মাদকদ্রব্যসহ সামছুলকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ৩৮০টি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দলীয় সকল পদ থেকে সামছুল আলমকে বহিষ্কার করা হয়। উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. মতিন ও সদস্যসচিব বাবুল মিয়া এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে সামছুলকে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লিবাস চক্রবর্তী বলেন, ‘আসামি কোনো দলের নেতা কি না, তা আমাদের জানা নেই। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি, প্রাণ বাঁচাতে পুলিশ বক্সে আশ্রয়

গাজীপুর (শ্রীপুর) প্রতিনিধি
অভিযুক্ত শিক্ষক দৌড়ে গিয়ে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযুক্ত শিক্ষক দৌড়ে গিয়ে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদ্রাসার এক শিশুশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে ওই শিক্ষক দৌড়ে গিয়ে পুলিশ বক্সে আশ্রয় নিলে সেখানে তাঁকে দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে ওসির নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে হেফাজতে নেয়। এ সময় পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ জনতার মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

গতকাল শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাতে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় পুলিশ বক্সে এই ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাত ১১টায় পুলিশ বক্স থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। অভিযুক্ত মোহাম্মদ মহসিন (৩৫) নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার কাচুটিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলার দারুল হিকমা হাফিজিয়া ক্যাডেট মাদ্রাসার শিক্ষক।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাত সোয়া ৯টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে গণপিটুনি দেন মাদ্রাসার আশপাশের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী শিশুশিক্ষার্থীর স্বজনেরা। এরপর প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে গিয়ে মাওনা চৌরাস্তা এলাকার জেলা পুলিশ বক্সে আশ্রয় নেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এরপর কয়েক শ মানুষ পুলিশ বক্স ঘিরে ফেলে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করেন। পরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই ঘণ্টার চেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় তাঁকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, প্রথমে বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশ পাঠানো হয়। পরে পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে পড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় বিক্ষুব্ধ জনতাকে ধাওয়া দিয়ে অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষককে আটক করে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকোর্টের সামনে মধ্যরাতে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন হাইকোর্টের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় (৩০) এক নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক রাত আড়াইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হামিদুল ইসলাম জানান, রাতে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর আসে হাইকোর্টের সামনে কোনো যানবাহনের ধাক্কায় এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

হামিদুল ইসলাম আরও জানান, স্থানীয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই নারী ভবঘুরে প্রকৃতির। হাইকোর্ট এলাকায় থাকতেন। তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পোকা দমনে পরিবেশবান্ধব ‘পাচিং’ পদ্ধতিতে সুফল পাচ্ছেন মৌলভীবাজারের আমনচাষিরা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে আমনখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে আমনখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের কৃষকেরা আমন ধানের ক্ষতিকারক পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ‘পাচিং’ পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জেলার হাওর এলাকা এবং সমতল ভূমিতে বাঁশ বা গাছের খুঁটি ব্যবহার করে এই ‘ডেথ পাচিং’ পদ্ধতি প্রয়োগ করে কৃষকেরা উল্লেখযোগ্য সুফল পাচ্ছেন। কৃষিবিদেরা মনে করছেন, কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা আরও বাড়ালে এই পদ্ধতির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা সম্ভব।

এই পদ্ধতিতে ধানখেতে বাঁশের খুঁটি বা ডাল পুঁতে দেওয়া হয়, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির শিকারি পাখি এসে বসে। এই পাখিগুলো ধানগাছের ক্ষতিকর পোকামাকড়, বিশেষ করে মাজরা পোকা খেয়ে ফেলে। ফলে ফসলে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কমে যায়, কীটনাশকের ব্যবহার ও খরচ হ্রাস পায় এবং পরিবেশ সুরক্ষিত থাকে। পাখিদের মল থেকে জৈব সার তৈরি হওয়ায় জমির উর্বরতা শক্তিও বাড়ে।

সরেজমিনে জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা বিচ্ছিন্নভাবে এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। প্রায় ১০০ শতক জমিতে ২৫-৩০টি ডেথ পাচিং দেওয়া হয়েছে। বাঁশের খুঁটি বা গাছের ডালের মাথায় খড় বেঁধে পাখির বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশির ভাগ কৃষক পরিবেশবান্ধব এই ডেথ পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কৃষকেরা জানান, জেলায় সবচেয়ে বেশি আমন ধান চাষ হয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ে মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা যায়। এই পোকা ধানের ডিগ পাতা কেটে দেওয়ায় অনেক সময় পচন রোগের সৃষ্টি হয়। এই আক্রমণ মোকাবিলায় কীটনাশক ব্যবহারের পাশাপাশি তাঁরা পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে আমার ধানখেতে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি। এই পদ্ধতির কারণে পোকামাকড় কম আসে। আমরা ধানের চারা রোপণের কয়েক সপ্তাহ পর থেকে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করি। কিছুদিন আগে জমির প্রায় পুরোটা মাজরা পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছে। পোকা দমনে কীটনাশক ছিটানোর পাশাপাশি পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি।’

কৃষকদের মতে, বিশেষ করে শালিক ও ফিঙে—এই দুই ধরনের পাখি পাচিংয়ে বসে পোকা নিধনে প্রধান ভূমিকা রাখে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ পূরণ করেছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, পাচিং পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকেরা সুফল পাচ্ছেন। যারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তাঁদের খরচ কম হয় এবং সুফল বেশি হয়। এটি পরিবেশ বান্ধব। কম খরচে বাঁশের খুঁটি দ্বারা সহজে এটি করা যায়। বিশেষ করে মাজরা পোকার আক্রমণ থেকে ধান রক্ষার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা খুবই প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত