Ajker Patrika

কাশ্মীরে নৌকায় অগ্নিকাণ্ড: নিহতের ২ জন গণপূর্তের কর্মকর্তা, অপরজন ঠিকাদার 

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
কাশ্মীরে নৌকায় অগ্নিকাণ্ড: নিহতের ২ জন গণপূর্তের কর্মকর্তা, অপরজন ঠিকাদার 

ভারতের কাশ্মীরের শ্রীনগরের ডাল লেকে হাউসবোটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত তিনজনই চট্টগ্রামের। এর মধ্যে দুজন গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলী ও একজন ঠিকাদারির সঙ্গে সম্পৃক্ত। 

নিহত তিন পর্যটক হলেন, রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অনিন্দ্য কৌশল, চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইমন দাশ গুপ্ত ও গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার মো. মাইনুদ্দিন চৌধুরী। 

গতকাল শনিবার কাশ্মীরের স্থানীয় সময় ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে ডাল লেকের ৯ নম্বর ঘাটের কাছে সাফিনা নামের একটি হাউসবোটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। হাউস বোটগুলোতে পর্যটকদের জন্য রাত্রি যাপনের সুযোগ থাকে। যাতে ডাল লেকের রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। 

পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রকৌশলী অনিন্দ্য কৌশল চুয়েটের ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার মিঠাছড়া ইউনিয়নে। রাঙামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। 

বাবা স্বপন কুমার নাথ সড়ক ও জনপথ বিভাগে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে অবসরে যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কৌশলের চুয়েটের সহপাঠী প্রকৌশলী আমিনুল আহসান রিমন। 

এই বিষয়ে অনিন্দ্য কৌশলের বাবা স্বপন কুমার নাথ বলেন, ‘অনিন্দ্য গত ৩ নভেম্বর তীর্থের উদ্দেশ্যে ভারতে যান। দু–এক দিনের মধ্যেই তার ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ভয়াল এক দুর্ঘটনা আমার পুরো পৃথিবী ওলটপালট করে দিল।’ 

তিনি আরও জানান, কীভাবে ছেলের মরদেহ দেশে আনা যায় তা নিয়ে ভারতে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। 
 
নিহত আরেকজনের নাম ইমন দাশ গুপ্ত। তিনি কুয়েটের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের পুরকৌশল বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। 

চট্টগ্রাম নগরীর আসকার দিঘির পাড়ে ইমন পরিবার নিয়ে বাস করতেন। তাঁর বাড়ি রাউজান থানার বিনাজুরি এলাকা। 

তাঁর স্ত্রীর নাম লোপা দাশ গুপ্তা। তিনি পুলিশের এএসপি হিসেবে কর্মরত আছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি, চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মো, করিম উদ্দিন। এই দম্পতির আহির দাশ গুপ্তা নামের চার বছর বয়সী এক ছেলে আছে। 

ইমনের মা স্মৃতি দাশ গুপ্তা বলেন, ‘সর্বশেষ পুজোর ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে এসেছিল ইমন। কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে ভারতের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে গিয়েছিল। এর মধ্যে এ দুর্ঘটনার খবর এল। এখন ওর ছেলের কী হবে? কীভাবে নিজেদের সান্ত্বনা দেব?’ 

এদিকে উল্লিখিত দুই প্রকৌশলীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশ পিডব্লিউডি ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতি, চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মো. তৌফিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মো. করিম উদ্দিন। 
 
নিহত অপরজন মো. মাইনুদ্দিন চৌধুরীর বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার মধ্যম কদলপুর গ্রামে। তিনি গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার ছিলেন। 

স্ত্রী, দুই সন্তান আয়েশা (১৫) ও মোতাচ্ছিনকে (১০) নিয়ে নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটিতে থাকতেন তিনি। ১৯৯২ সালে এসএসসি পাস করেছেন রাউজানের কদলপুর স্কুল থেকে। তাঁর বাবা মোজাফফর হোসেন চৌধুরীর চট্টগ্রাম ওয়াসার সাবেক কর্মকর্তা। 

একই স্কুলের অগ্রজ ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী আজকের পত্রিকাকে জানান, মেধাবী, কাজকর্মে সৎ ও নম্র স্বভাবের মাইনুদ্দিনকে হারিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে এলাকাবাসী ও বন্ধু-বান্ধবরাও শোকে স্তব্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইলট ইচ্ছা করে বিধ্বস্ত করান এয়ার ইন্ডিয়ার সেই ড্রিমলাইনার: বিশেষজ্ঞ

৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি: পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা অবরোধ বৈষম্যবিরোধীদের

তবে কি ধরে নেব, মবের পেছনে সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে: তারেক রহমান

ইসরায়েল রাষ্ট্রের পতনের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ করেছিলেন আইনস্টাইন

মিটফোর্ডে নৃশংস হত্যাকাণ্ড: ‘আমি জড়িত না, ফাঁইসা গেছি’— অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা রবিনের দাবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত