Ajker Patrika

ভোরে স্বামী মসজিদে, বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে স্ত্রীর লাশ

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৫৩
নিহতের বাড়িতে স্বজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহতের বাড়িতে স্বজন ও প্রতিবেশীদের আহাজারি। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামীর দাবি, ফজরের নামাজের সময় স্ত্রীকে ডেকে দিয়ে মসজিদে গিয়েছিলেন তিনি। আজ সোমবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

নিহতের নাম— শাহিদা বেগম (৬৫)। তিনি একই গ্রামের মাওলানা আবদুল মমিনের স্ত্রী। ওই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে।

নিহতের পরিবার বলছে, প্রতিদিনের মতো আজ ফজরের নামাজের সময় শাহিদা বেগমকে ঘুম থেকে ডেকে দিয়ে মসজিদে নামাজের উদ্দেশে বেরিয়ে যান তাঁর স্বামী মাওলানা আবদুল মমিন। মসজিদ থেকে বাসায় ফিরে স্ত্রীকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন প্রতিবেশীরাও। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করে শাহিদা বেগমকে পাওয়া যায়নি। এ সময়ে ঘরের পেছনের সেফটিক ট্যাংকের কিছুটা দূরে তাঁর ব্যবহৃত জুতা এবং মাটিতে টানাহেঁচড়া করার দাগ দেখা যায়। জুতা এবং দাগের সূত্র ধরে স্থানীয়রা সেফটিক ট্যাংকে তাকালে মাথা নিচে ও পা ওপরের দিকে ওঠানো অবস্থায় শাহিদা বেগমের লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ গিয়ে সেফটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের স্বামী মাওলানা আব্দুল মমিন বলেন, ‘আমি ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার সময় শাহিদাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে নামাজ পড়তে বলে মসজিদে চলে যাই। যাওয়ার সময় তাঁকে ঘরের বাইরের লাইট বন্ধ করতে বলি এবং আমি গেটের তালা ঝুলিয়ে দেই। মসজিদ থেকে ফিরে এসে গেটের তালা খুলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে দেখি লাইটগুলো জ্বালানো অবস্থায় রয়েছে। ঘরের সামনের দরজা বন্ধ ও পেছনের দরজাটি খোলা। ঘরের ভেতরে আমার স্ত্রীকে পাই নাই। আমি খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে প্রতিবেশীদের জানাই। পরে প্রতিবেশীরাসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে আমার স্ত্রীকে খুঁজে পাই নাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে এক প্রতিবেশী আমার স্ত্রীর জুতা এবং মাটিতে টানা হেঁচরার দাগ দেখতে পেয়ে ঘরে পাশের সেফটিক ট্যাংকের কাছে গিয়ে দেখি মাথা নিচু এবং পা ওপরের দিকে করা আমার স্ত্রীর লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশ এসে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।’

শাহিদা বেগমের জামাতা মো. শাহাদাৎ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার শ্বশুরের সঙ্গে তাঁর ভাইদের জায়গা-সম্পত্তির বিষয় নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার সালিস দরবার হয়েছে। তাঁরা আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। আর সকালে সেপটিক ট্যাংকে আমার শাশুড়ির লাশ পাওয়াটা রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে। তাঁকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলা হয়েছে।’

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিল্লাল উদ্দিন আহম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শাহিদা বেগমের লাশ সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ গুমের উদ্দেশে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেওয়া হয়। তবে কীভাবে তাঁকে হত্যা করে হয়েছে, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা: নান্দাইলে সাবেক এমপি-মন্ত্রীকন্যার বিরুদ্ধে মামলা

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত