Ajker Patrika

উখিয়ায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজার রোহিঙ্গার পুনর্বাসন শুরু

ইফতিয়াজ নুর নিশান, কক্সবাজার
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৩, ২২: ৪৪
Thumbnail image

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজার রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন শুরু হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দ্বিতীয় দিনে ক্যাম্প ও স্থানীয় প্রশাসনসহ রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে কর্মরত সংস্থাগুলোর সমন্বিত তৎপরতায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের দেওয়া হচ্ছে খাবার। পুড়ে যাওয়া প্রায় দুই হাজার ঘরের জায়গায় অবস্থান নেওয়া পরিবারগুলোকে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে তাঁবু ও ত্রিপল সরবরাহ করা হয়েছে। 

গতকাল রোববার দুপুরের খাওয়া শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিল উখিয়ার বালুখালীর ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ, বি, ডি ব্লকের রোহিঙ্গারা। বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ডি-১৫ ব্লকের একটি ঘর থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হলে প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে সরে পড়ে ওই ক্যাম্পসহ তিনটি ক্যাম্পের কমপক্ষে দেড় লাখ বাসিন্দা। 

শরণার্থী ক্যাম্পের ছোট্ট ঝুপড়িতে রোহিঙ্গা যুবক কলিমউল্লাহর (২৭) সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, যা ছিল সব চোখের সামনে ছাই হয়ে গেছে। মিয়ানমারের সিটওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা এই যুবক জানান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় বর্মিজ শিক্ষক হিসেবে কাজ করার সুবাদে তাঁর বেতনের টাকায় কেনা শখের ল্যাপটপও আগুনে পুড়ে গেছে। 

তরুণ রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারের সদস্য মোহাম্মদ মুসা (২৫) বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার ও কর্মরত সংস্থাগুলো খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করলেও পোশাকসহ গৃহস্থালি সামগ্রীর (ননফুড আইটেম) সংকট দেখা দিয়েছে।’

উখিয়ায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ১২ হাজার রোহিঙ্গার পুনর্বাসন করা হচ্ছেএদিকে সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার সদস্য ও সমর্থকেরা তাদের প্রতিপক্ষ আরএসও ও ইসলামি মাহাজসহ কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে বিরোধের জেরে এই পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি ভিডিও দেখিয়ে ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা মাঝি বলেন, ‘আরসা প্রতিশোধ নিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলা করবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছিল। ইন্টারনেটে আরসা নেতারা অডিও বার্তা প্রচার করেছেন।’

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এ তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ১১ নম্বর ক্যাম্প ইনচার্জ সরওয়ার কামাল।

সরওয়ার কামাল বলেন, ‘তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ড নাকি নাশকতা, তা খতিয়ে দেখছে। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন শুরু করা হয়েছে, তাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের দিন সন্দেহভাজন হিসেবে মোহাম্মদ তাহের (১৮) নামের এক রোহিঙ্গাকে এপিবিএন আটক করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত