Ajker Patrika

সড়ক দখল করে শেড নির্মাণ, ভোগান্তিতে পথচারীরা

প্রতিনিধি, পটিয়া (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮: ৩০
সড়ক দখল করে শেড নির্মাণ, ভোগান্তিতে পথচারীরা

চট্টগ্রামের পটিয়ার শান্তিরহাট-বুধপুরা সড়ক দখল করে দোকানের শেড নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে শাহ আমানত মার্কেট ও জমজম মার্কেটের মালিকদের বিরুদ্ধে। এতে সড়কের প্রবেশমুখে যানজট এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের পথটি আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। 

প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা আনোয়ারার পড়ৈকোড়া, ভিংরোল, মাহাতা, খাসখামা, মামুরখাইন, ওষখাইনসহ প্রতিদিন প্রায় অর্ধলাখ মানুষের যাতায়াত করে। এরই মধ্যে সড়কটি দখল করে লোহার পাটাত দিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে গাড়ি চলাচল ও সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। 

এর আগেও এ দুটি মার্কেট মালিকের বিরুদ্ধে ফুটপাত দখল এবং সড়কের ওপর মার্কেটের সিঁড়ি ও বিভিন্ন দোকান নির্মাণ করার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। ফলে মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে পটিয়ার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ছাড়াও আনোয়ারা উপজেলার লোকজন কালীগঞ্জ হয়ে যাতায়াতের জন্য সড়কটি ব্যবহার করে। গুরুত্ব বিবেচনায় জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নির্দেশে রাস্তার ওপর থেকে কাঁচাবাজার অপসারণ, সড়ক সম্প্রসারণ ও ড্রেন নির্মাণ করা হয়। লোকজন যাতে বাজারে সহজে যাতায়াত করতে পারে, সে জন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ওপর থেকে কাঁচাবাজার সরিয়ে নিজস্ব জমিতে স্থায়ীভাবে বাজারটি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু গত দুই বছর আগে রাস্তার ফুটপাত দখল ও ড্রেন ভেঙে মার্কেট ও মার্কেটের সিঁড়ি তৈরি করায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। এ কারণে সারা বছরই সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে থাকত। সম্প্রতি কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি সংস্কার করে সড়ক বিভাগ। কিন্তু দখলদারির কারণে সাধারণ মানুষ এই সড়কের সুফল ভোগ করতে পারছে না।

জমজম মার্কেটের মালিক এমরান হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, সড়ক দখল করে শেড নির্মাণের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। শেডটি নির্মাণ করছেন শাহ আমানত মার্কেটের মালিক বদরুদ্দোজা জুয়েল। এ নিয়ে দুই মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও ক্ষুব্ধ বলে জানান তিনি। 

এদিকে শাহ আমানত মার্কেটের মালিক পাঁচ ভাই। এর মধ্যে এক ভাই শোয়াইবুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, `আমি সড়ক দখল করে সরকারি জায়গায় শেড নির্মাণের বিরোধী। এ নিয়ে আমরা ভাই জুয়েলকে বাধা দিয়েছি। সে তার পরও গায়ের জোরে এমন কাজটি করছে। রাস্তায় শেড নির্মাণের কারণে মানুষ আমাদের পরিবারকে নিয়ে গালিগালাজ করতে পারে। কিন্তু আমার ভাই তা বোঝে না।' 

শোয়াইবুল ইসলাম বলেন, `আমার ইচ্ছা করছে এই মুহূর্তে শেডটি ভেঙে ফেলতে। মার্কেটের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। শুধু আন্ডারগ্রাউন্ডে একটি হোটেল ভাড়া দেওয়ায় আজ এ অবস্থা। ওই হোটেলের মালিক আবসার সওদাগরের যোগসাজশে এমন অপরাধ করছেন আমার ভাই। এ নিয়ে আমাদের পরিবারেও দ্বিমত রয়েছে।'

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সম্পাদক বদরুদ্দোজা জুয়েল আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনি নিজের জায়গায় শেড নির্মাণ করছেন। সড়ক দখল করে নয়। 

এ বিষয়ে দোহাজারী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, গুরুত্ব বিবেচনায় সড়কটির উন্নয়ন ও এর পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল। বাজারের জমিতে যেন বাজার থাকে, সে জন্য সব ধরনের সুবিধা করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ সচেতন না হওয়ায় তারা এর সুফল পাচ্ছে না। সরকার যতই উন্নয়ন করুক, সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে এর কোনো সুফল মিলবে না। সবার আগে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। জমজম মার্কেটের মালিক সড়ক দখল করে শেড নির্মাণের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সড়ক বিভাগের এই কর্মকর্তা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত