Ajker Patrika

চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো সাগরের পরিবার 

দেলোয়ার হোসেন আকাইদ, কুমিল্লা
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২৪, ২১: ২৭
চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো সাগরের পরিবার 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে এক চোখ হারিয়েছেন সাগর। ডান চোখে সামান্য দেখতে পান। আর বাঁ চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। হাত ভাঙাসহ শরীরে রয়েছে অসংখ্য ছররা গুলির ক্ষত। চিকিৎসক বলছেন, অস্ত্রোপচার করা হলেও চোখ ঠিক হবে না। 

ইতিমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। অসহায় পরিবার বলছে, সাগরের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। 

সাগরের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারের জাফরাবাদে। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন রামপুরা এলাকায় একটি গরুর খামারে শ্রমিক হিসেবে সাত বছর ধরে কাজ করছেন। 

গেল ১৮ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ ও পুলিশ। সে সময় ছাত্রীদের ওপর নির্মম হামলায় সময় সাগর সামনে ছিলেন। এ দৃশ্য দেখে তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অংশ নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোটাবিরোধী একটি মিছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। তখন পুলিশের ছররা গুলিতে শরীরে ও চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হন সাগর। বর্তমানে তিনি বাঁ চোখে কিছুই দেখতে পান না। ডান চোখেও সমস্যা রয়েছে। 

সেদিনই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) ভর্তি হয়ে ৮ দিন আইসিইউতে চিকিৎসা শেষে চক্ষু বিভাগের সাধারণ শয্যায় স্থানান্তর হন। সেখান থেকে তাঁকে ভর্তি করানো হয় কুমিল্লার আলেখারচর চক্ষু হাসপাতালে। সেখান থেকে নেওয়া হয় চট্টগ্রাম শেভরন চক্ষু হাসপাতালে। 

চট্টগ্রাম শেভরন চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক মো. দেলোয়ার হোসেন স্বজনদের জানান, ছররা গুলির আঘাতে সাগরের একটি চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। অস্ত্রোপচার করে চোখ রাখা যাবে, কিন্তু কিছুই দেখতে পাবে না। 

আহত মো. সাগর বলেন, ‘গত ১৮ জুলাই বিকেলে ওষুধ কিনতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যান। সেখানে ছাত্রীদের ওপর বর্বর হামলার ঘটনায় নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। আমিও শিক্ষার্থীদের পক্ষ হয়ে তাদের সঙ্গে যুক্ত হই। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিছিলে যোগ দিয়ে কোটবাড়ী মহাসড়ক এলাকায় যাই। এ সময় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় আমি আহত হই।’ 
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িতে করে হাসপাতালে এনে ভর্তি করান ছাত্ররা।’ 

বর্তমানে বাঁ চোখে তিনি কিছুই দেখেন না বলে জানান। আরেক চোখেও কিছুটা সমস্যা রয়েছে। হাত ভাঙাসহ শরীরে রয়েছে ছররা গুলির অনেক ক্ষত। 

আহত সাগরের বাবা আব্দুল মবিন বলেন, ‘সাত বছর ধরে আমার ছেলে এ খামারে কাজ করছে। হঠাৎ শুনলাম সে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার বলেছেন তার চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। তার একটি হাত ভেঙে গেছে। আমরা অসহায়, কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। গুরুতর আহতাবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে ছিল। পরে চক্ষু বিভাগে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে চোখের চিকিৎসার জন্য যাই।’ 

তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ চট্টগ্রাম শেভরন চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তার বলেছেন চোখ ভালো হবে না। চিকিৎসা করে নষ্ট চোখটি রাখা যাবে, তবে কিছুই দেখতে পাবে না। নয়তো চোখ ভেতরে চলে যাবে। ২৯ আগস্ট ডাক্তার চোখের অপারেশন করাবেন। ৫০ হাজার টাকা খচর হবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করে আমি দেনায় পড়ে গেছি। খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত