Ajker Patrika

এবার ফুটপাতের দোকানিকে কাউন্সিলর জসিমের মারধরের ভিডিও ভাইরাল, থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
এবার ফুটপাতের দোকানিকে কাউন্সিলর জসিমের মারধরের ভিডিও ভাইরাল, থানায় মামলা

বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না চট্টগ্রাম নগরীর আলোচিত কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুল আলম ওরফে জসিমের। এবার ফুটপাতের এক দোকানিকে মারধরের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর আকবরশাহ থানায় এ মামলা করেন মারধরের শিকার ওই দোকানি অপু প্রধান।

ভুক্তভোগীর বাড়ি পঞ্চগড়ে। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ক্রোকারিজ, সিরামিক ও মুদি মালামাল ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন।

আকবরশাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উদ্দিন আকবর আজ শুক্রবার মামলার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, মামলায় কাউন্সিলর জসিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৭ মে আকবরশাহ থানার পূর্ব ফিরোজশাহ এইচ ব্লক মোড়ে ‘ফেরির দোকান’ নিয়ে বসেছিলেন মামলার বাদী অপু প্রধান। ওইদিন বিকেল ৫টা নাগাদ কাউন্সিলর জসিম এসে ‘তুই নাকি লটারির দোকান দিয়েছিস’ এই বলে অপুকে এলোপাতাড়ি চড়, লাথি ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। 

এ সময় গালিগালাজ করে কাউন্সিলর জসিম চিৎকার করে অপুকে বলেন, ‘কার পারমিশন নিয়ে আমার এলাকায় ব্যবসা করতাছস? আমার এলাকায় ব্যবসা করতে হলে আমার অনুমতি লাগবে। চাঁদা ছাড়া এখানে কোনো ব্যবসা করা যাবে না।’ পরে পুলিশ এসে অপু প্রধানকে হেফাজতে নেয়। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, এ সময় আসামিরা তাঁর দোকানের ক্যাশ থেকে নগদ টাকা ও বেশ কিছু মালামাল লুটপাত ও ভাংচুর করে। 

এর আগে এ ঘটনার ধারণকৃত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনায় আসেন জসিম। এ সময় তাঁকে নিয়ে অনেকে সমালোচনাও করেন। 

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ছাতার নিচে অপু দোকান করছিলেন। বিকেলে কাউন্সিলর জহুরুল সেখানে গিয়ে ওই যুবককে টেনে হিঁচড়ে ছাতার নিচ থেকে বের করে আনেন। এ সময় ওই দোকানিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এরপর বাঁ হাতে তাঁর টি–শার্ট ধরে থাপ্পড় ও লাথি দিতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে টহল পুলিশের একটি গাড়ি উপস্থিত হয়। 

এ সময় কাউন্সিলর পুলিশকে ডাকেন। পরে চার পুলিশ সদস্য গাড়ি থেকে নেমে আসেন। পুলিশের উপস্থিতিতেও কাউন্সিলর জসিম ওই যুবককে একটি লাথি মারেন। এরপর জুয়া বসানোর অভিযোগ তুলে ওই দোকানিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে পুলিশ দোকানিকে হেফাজতে নেয়। 

এই ঘটনার পর পুলিশ যাচাই-বাছাই শেষে ওই দোকানিকে ছেড়ে দেয়। পরে ওইদিন রাতেই মারধরের শিকার ওই দোকানি চাঁদাবাজি ও মারধরের অভিযোগ এনে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। 

এই বিষয়ে কাউন্সিলর জসিমের গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাসার সামনে জুয়ার বোর্ড বসিয়েছে ছেলেটি। তাঁকে একটা থাপ্পড় দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। মারধর করিনি।’ 

তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, লটারির মাধ্যমে ওই দোকানি সেখানে পণ্য বিক্রি করছিলেন।

জানা যায়, জহুরুল আলম জসিম উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় পাহাড় কাটাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরীতে পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শনে গেলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে কাউন্সিলর জসিমের উপস্থিতিতে ঢিল ছোড়েন তাঁর অনুসারীরা। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিও জসিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত