Ajker Patrika

মায়ের সামনে ইলেকট্রিশিয়ানকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, ৫০ হাজার টাকা ‘ছিনতাই’

চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
Thumbnail image
কুমিল্লা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইমরান হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে ইমরান হোসেন (২১) নামের এক যুবককে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় যুবকের কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ঘটনায় আহত যুবকের মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে স্থানীয় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত শহিদুর রেজা রতন মিয়াজী ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইমরান উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে। তিনি পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান (বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি)। কাজের জন্য তাঁর বাবা ঢাকায় থাকেন।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে স্থানীয় তারাশাইল বাজারের বিকাশের দোকান থেকে ইমরান ৫০ হাজার টাকা তুলো বাড়ি ফিরছিলেন। পথে স্থানীয় শহিদুর রেজা রতন মিয়াজীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পথরোধ করে অস্ত্রের মুখে তাঁকে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। এ সময়ে তাঁর মা আফরোজা বেগম এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা তাঁকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরে ইমরানকে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে মায়ের সামনেই নির্যাতন চালায়।

একপর্যায়ে ইমরান অচেতন হয়ে পড়ছে মৃত ভেবে রেখে চলে যায় হামলাকারীরা। সিসি টিভি ফুটেজে নির্যাতনের একটি ভিডিও চিত্র আজ শনিবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় ইমরানের পরিবার রতন মিয়াজীকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে আরও বলা হয়, মারধরের সময় ইমরানের কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাবেদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাত ১২টা ২০ মিনিটে মুমূর্ষু অবস্থায় ইমরান হোসেনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আমরা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি।’

মসজিদের সামনে খুঁটিতে বেঁধে ইমরানকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে লোকজন জড়ো হলে ইমরানকে মৃত ভেবে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। ছবি: সিসি টিভির ফুটেজ থেকে সংগৃহীত
মসজিদের সামনে খুঁটিতে বেঁধে ইমরানকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে লোকজন জড়ো হলে ইমরানকে মৃত ভেবে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। ছবি: সিসি টিভির ফুটেজ থেকে সংগৃহীত

ইমরানে মা আফরোজা বেগম বলেন, ‘শহিদুর রেজা রতন মিয়াজী চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এলাকায় তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তার সামাজিক অপকর্মের বিরুদ্ধে আমার ছেলে প্রায় সময়ে প্রতিবাদ করত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ছেলেকে হুমকি দিয়ে আসছিল। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে ইমরানকে একা পেয়ে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। আমার ছেলের চিৎকার শুনে আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। তারা বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় ইমরানকে প্রায় তিন ঘণ্টা নির্যাতন করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়।’

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্যাতনের সিসি ক্যামেরার একটি ভিডিও চিত্র আমার নজরে এসেছে। অভিযুক্ত শহিদুর রেজা রতন মিয়াজী প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত