Ajker Patrika

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলায় আসামি বিএনপির নেতা-কর্মীরাও

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি 
মঙ্গলবার বিকেলে তালতলী উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মঙ্গলবার বিকেলে তালতলী উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনার তালতলী উপজেলায় দুই বছর আগে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হামলা, দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় বিএনপিরই নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তালতলী উপজেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। মিছিল-সমাবেশ থেকে মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ছগির হাওলাদারকে দল থেকে বহিষ্কার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩০ জুলাই তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. ছগির হাওলাদার বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন। মামলাটি দুই বছর আগে বিএনপির দলীয় কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি-উল কবির জোমাদ্দার, সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান তনু এবং আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. মতিয়ার রহমানসহ ১০১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী মো. ছগির হাওলাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য অন্তত ১৫-২০ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকেও এই মামলায় আসামি করেছেন। অভিযোগকারীরা বলছেন, জমি দখল, মামলা বাণিজ্য এবং নিরীহ মানুষকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই বাদী বিএনপির নেতা-কর্মী, রাখাইন এবং নিরীহ মানুষদের আসামি করেছেন।

এই অভিযোগের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা শহরে পাঁচ শতাধিক বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাঁদের দাবি, মামলার বাদী মো. ছগির হাওলাদারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক এবং বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি করার জন্য মামলা করায় তাঁকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামিদের তালিকায় রয়েছেন উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মো. নিজাম আকন (৪৪ নম্বর), তার ভাই যুবদল নেতা বেল্লাল আকন (৩৬ নম্বর), বড়বগী ইউনিয়নের যুবদল নেতা হাবিব (৭২ নম্বর) এবং শ্রমিক দল নেতা হারুন চৌকিদার। এ ছাড়া রাখাইন সম্প্রদায়ের মংনানসে, মংনান্ট এবং থুইমং সুঁই তালুকদারকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।

তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম লিটন মোল্লা বলেন, ‘মামলার বাদী মো. ছগির হাওলাদার ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সক্রিয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি করেছেন। এটা অত্যন্ত জঘন্য কাজ।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাদীর জমিজমা নিয়ে বিরোধীদেরও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

তালতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মিয়া মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে হামলা ভাঙচুরের ঘটনার দিন বাদী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। বাদী নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের এই মামলায় আসামি করেছেন।’

রাখাইন সম্প্রদায়ের মংনানসে ও মংনান্ট বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। বাদী জমি দখলের জন্য আমাদের মামলায় আসামি করেছেন। জমি নিয়ে এখনো আদালতে তিনটি মামলা চলমান রয়েছে।

নিজাম আকন বলেন, ‘বাদী আমার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। তার দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় আমাকে ও আমার ভাইকে আসামি করেছেন।’

তবে মামলার বাদী মো. ছগির হাওলাদার বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি করার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমার সঙ্গে বিরোধ রয়েছে এমন কাউকে ওই মামলার আসামি করিনি। রাজনৈতিকভাবে হেনস্তা করতে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আদালতের আদেশ পেয়েছি। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। প্রমাণ না থাকলে অভিযোগপত্র থেকে তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কক্সবাজার ভ্রমণ: ৫ নেতাকে শোকজ করল এনসিপি

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

৬ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, আসবেন পুতিনও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত