Ajker Patrika

সমতল জমিতে কমলা চাষে সফল দশমিনার আনিছুর

দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি 
নিজের বাগানে উদ্যোক্তা কাজী আনিছুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজের বাগানে উদ্যোক্তা কাজী আনিছুর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

ধানের দেশ পটুয়াখালীর দশমিনায় সমতল জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে সফল হয়েছেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা কাজী আনিছুর রহমান। দেড় বছর আগে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানী গ্রামে নিজের খামারে পরীক্ষামূলকভাবে কমলা চাষের উদ্যোগ নেন তিনি। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত এ কমলা থেকে ভবিষ্যতে বছরে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের প্রত্যাশা তাঁর।

জানা যায়, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে দেড় বছর আগে যশোরের বেনাপোল এলাকার একটি বাগান থেকে চায়না থ্রি, ম্যান্ডারিন ও দার্জিলিং জাতের ১৫০টি চারা কিনে এনে নিজের প্রায় এক একর জমির বাগানে রোপণ করেছিলেন কাজী আনিছুর রহমান। চারার মূল্য, পরিবহন খরচ, রোপণ, পরিচর্যাসহ এযাবৎ এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে তাঁর।

কৃষক কাজী আনিছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ইতিমধ্যে স্থানীয় বাজারগুলোতে তাঁর বাগানের কমলা বিক্রি শুরু করেছেন। গ্রামীণ বাজারগুলোতে এর চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া উৎসুক দর্শনার্থীরা সরাসরি বাগানে এসে কিনে নিচ্ছেন কমলা। চলতি বছর এখন পর্যন্ত অর্ধলাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছেন তিনি। কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ২০০ ও সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা দাম পেয়েছেন। এ বছর আরও প্রায় অর্ধলাখ টাকার কমলা বিক্রির প্রত্যাশা রয়েছে তাঁর।

সরেজমিন দেখা যায়, বিক্রির পরও প্রতিটি গাছে গড়ে ৮ থেকে ১০ কেজি কমলা রয়েছে। থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সবুজ-হলুদ রঙের কমলাগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বাগানে আসা প্রতিটি দর্শনার্থীর। কেউ কেউ কিনে বাগানে বসেই খাচ্ছেন কমলা। আবার বাগানের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে সেলফিতে ফ্রেম বন্দী হচ্ছেন অনেকেই।

ক্রেতা জাকির হাওলদার বলেন, ‘এই বাগানের কমলাগুলো যেমনি দেখতে চমৎকার, তেমনি খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু। তা ছাড়া বাজারের কমলার মতো এতে কোনো রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণ নেই। তাই বাজারের চেয়ে এই কমলাগুলো বেশি স্বাস্থ্য উপযোগী। আমি আমার পরিবারের সকলকে নিয়ে দেখতে এসেছি। বাচ্চাদের জন্য পাঁচ কেজি কমলা কিনলাম।’

থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সবুজ-হলুদ রঙের কমলাগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বাগানে আসা প্রতিটি দর্শনার্থীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সবুজ-হলুদ রঙের কমলাগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বাগানে আসা প্রতিটি দর্শনার্থীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী হাসান জিদনি বলেন, ‘আমাদের এলাকার মাটিতে এত সুন্দর কমলা হবে, আমরা কল্পনা করি নাই। আমার কিছু পতিত জমি আছে। উনার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে আমিও চাষ করব।’

বেলে-দোআঁশ সমতল ভূমিতে কমলার সফল চাষ সাড়া ফেলেছে পুরো এলাকায়। আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশের মাটিতে কমলার বাগান করতে চাইলে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

দশমিনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কাজী আনিছুর রহমানকে সার্বিক সহযোগিতা ও কারিগরি পরামর্শ দিয়ে আসছি। চায়না থ্রি জাতের কমলাটি বেশি মিষ্টি হওয়ায় এটির বাজারমূল্য বেশি পাবে। কমলার চাষ বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে আমদানি কমতে থাকবে। তাতে প্রতিবছর সরকারের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লিটনদের ‘ফাইনাল’ ম্যাচ দিনের আলোয়

ফটিকছড়িতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, আটক দুই

আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দিলেন রেজা কিবরিয়া, প্রার্থী হচ্ছেন কোন আসনে

আজকের রাশিফল: প্রাক্তনের মেসেজ পেয়ে আবেগে ভেসে যাবেন, কর্মক্ষেত্রে প্রশংসিত হবেন

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের দামামা: সমরাস্ত্র শিল্পের মুনাফা বেড়ে ৬৭৮ বিলিয়ন ডলার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ