Ajker Patrika

দরজা বন্ধ করে ছাত্রের গায়ে ১০টি বেত ভাঙলেন কোচিংয়ের শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২২, ১৮: ৩০
দরজা বন্ধ করে ছাত্রের গায়ে ১০টি বেত ভাঙলেন কোচিংয়ের শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

বন্ধুদের সঙ্গে দুষ্টুমি করায় বরগুনার তালতলীতে এক স্কুলছাত্রকে ঘরের দরজা বন্ধ করে পিটিয়েছেন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

প্রায় দেড় মাস আগে উপজেলার লাউপাড়া বাজারে সাকসেস কোচিং সেন্টারে এ ঘটনাটি ঘটে। আহত স্কুলছাত্র উপজেলার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

জানা যায়, উপজেলার লাউপাড়া বাজারে ‘সাকসেস কোচিং সেন্টার’ নামের একটি কোচিং খোলেন স্থানীয় ছগির হোসেন। সেখানে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রসহ ওই এলাকার দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী প্রাইভেট পড়ে। এই কোচিং সেন্টারে ছগির হোসেন একাই শিক্ষকতা করেন। মাঝে মধ্যে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে নিচের শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এই কোচিং সেন্টারে প্রায় দেড় মাস আগে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রকে মারধর করা হয়। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিও ভাইরালের পরপরই একের পর এক শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিষয়ে মুখ খুলছে।

অভিযুক্ত কোচিং শিক্ষকআহত স্কুলছাত্র বলে, ‘প্রায় দেড় মাস আগে আমার ক্লাসের এক বন্ধুর সাথে দুষ্টুমি করি। দুষ্টুমি করার পরে ছগির স্যারের ভয়ে আমি তিন দিন কোচিং সেন্টারে যাইনি। তারপরে বড় ভাইদের দিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে একটি রুমে আটকানো হয়। এরপর ছগির স্যার ১০টি বেত নিয়ে আসে। প্রায় আধঘণ্টা যাবৎ আমাকে পেটাতে থাকে। আমি স্যারের হাতে-পায়ে ধরলেও আমাকে মারধর করে। এই আধা ঘণ্টায় ৭টি বেত ভেঙে ফেলেছে। বেধড়ক মারধর করায় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে ছেড়ে দেয় ও একটি রুমে আটকে রাখে। জ্ঞান ফিরলে আমাকে আবারও মারধরের ভয় দেখানো হয় যাতে এই বিষয়টি কাউকে না বলি। পরে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে আমাকে ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। আমি স্যারের ভয়ে এত দিন মুখ খুলিনি, তারপর দেখি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।’

কোচিং সেন্টারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলে, তাদের কারণে অকারণে এভাবেই নির্যাতন করা হতো। ছগির স্যারের ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাকসেস কোচিং সেন্টারের মালিক ও অভিযুক্ত শিক্ষক ছগির হোসেন বলেন, ‘ওই ছাত্র দুষ্টুমি করার পরে আমি বেত দিয়ে ১৪০টি পিটুনি দিছি। সেটা কে বা কারা ভিডিও করেছে তা আমি দেখিনি। ভাই, এ বিষয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) নিউজ করার কোনো দরকার নেই। আপনাদের সাথে তালতলী এসে দেখা করব।’

এ বিষয়ে লাউপড়া সাগর সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী বলেন, ‘ওই কোচিং সেন্টারে আমার এই বিদ্যালয়ের ছাত্রকে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে। ভিডিওতে যেভাবে দেখেছি তাতে গরুকেও মানুষ এভাবে পেটায় না। আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

এ নিয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম সাদিক তানভীরকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি আমিও দেখেছি। খুবই দুঃখজনক বিষয়, পাশাপাশি ফৌজদারি অপরাধের ভেতরেও পড়ে। সে ক্ষেত্রে থানায় ওই ছাত্রের অভিভাবক মামলা করতে পারেন।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন কোচিং সেন্টার অবৈধ। ওই অভিযুক্ত সগীরের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি, নোটিশও করাব। বর্তমানে ওই শিক্ষক পলাতক। বের হলে ও কোচিং সেন্টার খোলা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত