Ajker Patrika

কোরবানির ঈদ ঘিরে দিনরাত কাজ করছেন আগৈলঝাড়ার কামারশিল্পীরা

 আগৈলঝাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০১ জুন ২০২৫, ২১: ০০
দা, বঁটি, ছুরি, চাকু ও চাপাতি বানাতে ব্যস্ত আগৈলঝাড়ার কামার। ছবি: আজকের পত্রিকা
দা, বঁটি, ছুরি, চাকু ও চাপাতি বানাতে ব্যস্ত আগৈলঝাড়ার কামার। ছবি: আজকের পত্রিকা

আর কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। আর এই কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বরিশালের আগৈলঝাড়ার কামারশিল্পীরা।

পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দা, বঁটি, ছুরি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বানাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের দোকানগুলো থেকে আগুনে পোড়ানো নরম লোহায় হাতুড়ি পেটানোর টুংটাং আওয়াজ দিনরাত শোনা যাচ্ছে।

বিভিন্ন বাজার ও কামারপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, কামারের দোকানগুলোয় লাল আগুনের মধ্যে রাখা লোহাতে অনবরত পিটুনি দেওয়া হচ্ছে। অধিক পরিশ্রম হলেও বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এই সময়ে বাড়তি রোজগারের আশায় পথ চেয়ে থাকেন কামারপাড়ার শিল্পীরা। তবে কামারপাড়ার দোকানিরা বলছেন, এ বছর লোহা আর কয়লার দাম বেশি হলেও সেই তুলনায় বেশি মজুরি নিতে পারছেন না তাঁরা। তাই এ বছর বেশি লাভের আশা করছেন না তাঁরা।

বর্তমানে ভালো মানের প্রতিটি দা তৈরিতে মজুরি নেওয়া হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা। চাকু তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, বড় ছুরি তৈরিতে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং বঁটি তৈরিতে মজুরি নেওয়া হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় কোরবানির অপরিহার্য এসব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন রাজিহার গ্রামের কামারশিল্পী অশোক সরকার, শুভাস রায়, বাসুদেব দাস। বাসুদেব দাস সরকার জানান, এখন ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড়। কামারদের কেউ ব্যস্ত নতুন দা-বঁটি তৈরিতে, আবার কেউ ব্যস্ত পুরোনো দা, বঁটি, ছুরি ও চাপাতিতে শাণ দিতে। তবে নতুন কাজের চেয়ে গৃহস্থদের কাছে পশু জবাইয়ের জন্য পুরোনো ছুরি, চাপাতিগুলোতে শাণ দিতে বেশি ঝুঁকছেন ক্রেতারা। গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে আগে থেকেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লোক রেখেছেন তাঁরা।

আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর বাজার, রাজিহার, গৈলা বাজার, গুপ্তেরহাট বাজার, সাহেবেরহাট, বাশাইল, পয়সারহাট, ছয়গ্রামসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, বঁটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করছেন কামারেরা। শাণ দেওয়া নতুন দা, বঁটি, ছুরি ও চাকু সাজিয়ে রাখা হয়েছে দোকানের সামনে। দোকানের জ্বলন্ত আগুনের তাপে কামারশিল্পীদের শরীর থেকে ঝরছে অবিরাম ঘাম। চোখে-মুখে প্রচণ্ড ক্লান্তির ছাপ। তবুও তাঁরা থেমে নেই। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে ব্যস্ততা। ব্যবহার্য জিনিস স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন এলাকায়। মৌসুমি ব্যবসার জন্য পশুর মাংস বানিয়ে বাড়তি রোজগার করতে কসাইদের অনেকে নতুন জিনিসপত্র বানাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত