Ajker Patrika

দেশের ৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী মারাত্মক করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২১, ২২: ৫৮
দেশের ৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী মারাত্মক করোনা সংক্রমণ ঝুঁকিতে

ঢাকা: দেশে বর্তমানে প্রায় চার কোটি তামাক ব্যবহারকারী রয়েছে, যারা মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের ওপর বাড়তি করারোপ ও তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছে প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) ও অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)।

আজ মঙ্গলবার সংস্থা দুটি আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও দাম সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরে বলা হয়, এমনিতেই করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশের স্বাস্থ্য খাতসহ সামগ্রিক অর্থনীতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে জনস্বাস্থ্যের জন্য তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।

প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার উদাহরণ তুলে ধরে তামাকপণ্যের ওপর কর বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। একই সঙ্গে তিনি তামাকের ক্ষতিকর দিক তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার ওপরও গুরুত্ব দেন।

তামাকের ক্ষতিকর দিকের কথা উল্লেখ করে কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, ‘সরকারকে মানুষের কল্যাণের বিষয়টি দেখতে হবে। আমাদের সংবিধানেও তা–ই রয়েছে। কিন্তু সরকার তামাক থেকে শুধু রাজস্ব আয়ের বিষয়টি প্রাধান্য দেয়। অথচ মানুষের ওপর এর অভিঘাত কী, তার মূল্যায়ন করে না।’

তামাকের ওপর সুনির্দিষ্ট হারে কর বসানোর কথা বলেন বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো নাজনীন আহমেদ। তিনি বলেন বলেন, ‘তামাকের ওপর সুনির্দিষ্ট হারে কর বসাতে হবে। এতে সরকার লাভবান হবে।’

ভার্চ্যুয়াল এ সম্মেলনে জানানো হয়, তামাক ব্যবহারে দেশে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, অধূমপায়ীর তুলনায় ধূমপায়ীদের কভিড-১৯ সংক্রমণে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কাও অনেক বেশি। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘ইকোনমিক কস্ট অব টোব্যাকো ইউজ ইন বাংলাদেশ: আ হেলথ কস্ট অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। অথচ একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয় ছিল ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবীর তামাকপণ্যে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্করোপের প্রস্তাব করেন। বিশেষত, সিগারেটের নিম্নস্তরে প্রস্তাবিত কর ও দাম প্রস্তাব বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তাঁর প্রস্তাবে বাজেটে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরে সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্কারোপ, দাম ও করহারের ব্যবধান কমিয়ে মূল্যস্তরের সংখ্যা চারটি থেকে দুটিতে নামিয়ে আনা, বিড়ি, জর্দা, গুলের ওপর সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্কারোপের কথা বলা হয়। এ ছাড়া সব তামাকপণ্যে খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তামাকের দাম বাড়ানো হলে তরুণ জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি তামাকাসক্ত দরিদ্র জনগোষ্ঠী তামাক ছাড়তে উৎসাহিত হবে। এ ছাড়া তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে ৩ লাখ ৯০ হাজার বর্তমান ধূমপায়ী এবং ৪ লাখ তরুণের অকাল মৃত্যু রোধ সম্ভব হবে। পাশাপাশি সিগারেট থেকে সম্পূরক শুল্ক, স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ও ভ্যাট বাবদ অতিরিক্ত ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত