Ajker Patrika

বৃষ্টির কবিতামালা

আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২২, ১১: ৩৮
বৃষ্টির কবিতামালা

অলকানন্দা বিত্তান্ত 
সিদ্ধার্থ অভিজিৎ 

হলুদ পাঞ্জাবির দিকে তাকালে
অলকানন্দার অভিশাপ
উজ্জ্বলতর হয়ে ফোটে।

ধরুন তখন আপনি হাঁটছেন—
পিছু পিছু সাইলেন্ট বৃষ্টি।
আপনি পিছনে তাকালেন না,
আপনি হাঁটছেন—
কার্যত কদমের কুঁড়ি নাচছে এবং
যখন আপনি ভাবলেন থামবেন
ততক্ষণে আপনার ব্রেক
ফেল করে গেছে।
বৃষ্টি শুকাচ্ছে,
কষ্ট আত্তি করে যদিও দাঁড়ালেন
দেখবেন খাঁ খাঁ রৌদ্র।

উপায়ান্তর গাছের ছায়ায় হয়তো বসবেন!
দেখলেন, ঘামেরা অপদান কারকের
উপকরণ। আপনার ভাবনারা ততক্ষণে
কই মাছের মতন
খলখল করতে শুরু করবে।

আচানক মাথার ওপর
ঝরে পড়ল গাছের বেদনা।
অপসৃয়মান ছায়ায় আপনি হয়তো নিজেই
অলকানন্দা গাছের গেজেটেড রিপ্রেজেন্টেটিভ!

প্রতীকী ছবিদুটি কবিতা
সরদার ফারুক

১.
ঘুমিয়ে পড়ার একশ উপায় আছে
কাল্পনিক ভেড়া গুনে ঘুমানোর কথা
ভাবলেই হাসি পায়
ওষুধ খাওয়ার মানে অবেদন বীজ বুনে দেওয়া
চারাগুলো বড় হয়ে ঢেকে দেবে
দৃশ্যাবলি, আলোর কুহক

এখন তোমাকে ভেবে জেগে থাকা ভালো
একটানা বৃষ্টি আর হাওয়ার দাপটে
জানালার র্পদাগুলো আরও কিছুক্ষণ
ইচ্ছেমতো কোমর দোলাক!

২.
সামনে যদি উদোম সাদা খাতা
আঁকতে পারো পাতাবিহীন গাছ
শুকনো ফলে বোঁটার নাভিমূলে
ঘুমিয়ে থাকে হারিয়ে-যাওয়া নাচ
 
আসতে পারে ঝোড়ো হাওয়ার দিন
কেমন হবে মেঘের কালো মুখ?
তেরছা করে এঁকাে জলের ফোঁটা
ঝরেই যাবে, একটু পেল সুখ!

প্রতীকী ছবিকবিতায় ডুবে যেতে থাকি
আতাউর রহমান

হলুদ আলোর রাত, বৃষ্টির মতোই চাঁদ ঝরছে
এ শহরে, হৃদয়ের বারান্দায় ঘাপটি মেরে বসে
তুমিও এ দৃশ্য দেখে গলে ছড়িয়ে পড়ছ সমস্ত
শরীরে রক্তের মতো; মননে ও চোখে অন্য চাঁদ
আমার, অন্য আকাশ; কবিতায় ডুবে যেতে থাকি,
অক্ষরে অক্ষর ঘষে মেতে উঠি আদিম উৎসবে...

তোমাদের শহরেও হলুদ রাত আসে এভাবে?
আমিও কি এভাবেই গলে ঝরি তোমার ভেতর?

প্রতীকী ছবিবৃষ্টির রূপকথা
শাহাবুদ্দীন নাগরী

একধরনের হাহাকার চেপে রেখে তুমি বললে,
বৃষ্টি কোনো নারী নয় যে চিবুকে দুহাত রেখে 
জানালা দিয়ে তাকিয়ে মগ্নতায় ডুবে ডুবে 
তুমি ওকে দেখবে, বৃৃষ্টিকে দেখার কী আছে? 

তোমার কণ্ঠটা ভীষণ শুকনো ঠেকল কানে।

বৃষ্টির ঠোঁট নেই, চোখ নেই, মনকাড়া ছিরি নেই, 
ভারী স্তনও অনেক সময় চোখ আটকে রাখে, 
বৃষ্টির তাও নেই, কোমর নেই, মেদহীন তলপেট
বা ঢেউতোলা নদীর মতো সুশ্রী নিতম্ব নেই, 
স্পর্শ করার মতো ঝক্ঝকে সফেদ ত্বক নেই,
নেই নাচঘর মাতিয়ে রাখা নূপুর পরানো পা,  
সটান হাত বাড়িয়ে কী অমন ছুঁয়ে দেখো তুমি?

তোমার চোখ থেকে ঝরে পড়ল ঈর্ষার জলকণা।

একধরনের হা-হুতাশ চকিতে লুকিয়ে নিয়ে বললে,
বৃষ্টি কি তোমাকে মালহার রাগে গান শোনায়?
নাকি সারা রাত বিছানায় নাগিনীর মতো জড়িয়ে 
ধরে চুমু খায়? ভঙ্গিমা আমার চেয়ে ভালো জানে?

তোমার ঠোঁট থেকে উপচে পড়ল শত লিটার উদ্বেগ।

আমি হাসলাম, বৃষ্টি দেখলেই এমন করে হাসা যায়,
[তোমার মনে হলো আমি ধূর্ত চিতার মতো হাসছি]
বৃষ্টি রমণী নয়, রমণ জানে না, ভিজলাম বৃষ্টিতে নেমে,
তবু বৃষ্টি সত্যিকার নারী, জড়তাহীন অন্তহীন প্রেমে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত