জিয়া হাসান, প্রবাসী অর্থনীতি বিশ্লেষক ও প্রাবন্ধিক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার রাতে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের ওপর রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন। বাংলাদেশের ওপরও তিনি ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন কোন পদ্ধতিতে এই শুল্ক আরোপ করেছে, সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন জার্মানিপ্রবাসী অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান। আজকের পত্রিকা'র পাঠকদের জন্য তাঁর পুরো লেখাটি তুলে ধরা হলো।
‘যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পাল্টাপাল্টি হারে শুল্ক ও অশুল্ক বাধার ওপর রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফের ভিত্তিতে এই শুল্কের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকা হিসাব করেছে তার সঙ্গে কোন দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কত, সেই ঘাটতিকে আমেরিকার উক্ত দেশ থেকে আমদানির পরিমাণ দিয়ে ভাগ করে একটি কো-এফিশিয়েন্ট দিয়ে গুণ করে শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে।
অধিকাংশ দেশের জন্য এই কো-এফিশিয়েন্ট শূন্য দশমিক ৫। কিন্তু আমেরিকা যাকে শাস্তি দিতে চায়, তার জন্য কো-এফিশিয়েন্টের হার বেশি রাখা হয়েছে। যেমন—চীনের জন্য কো-এফিশিয়েন্ট শূন্য দশমিক ৮, কিন্তু পাকিস্তানের জন্য শূন্য দশমিক ৪১। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কিছুটা আনফেভারেবল হারে ডিউটি নির্ধারণ করা হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৪ হারে কো-এফিশিয়েন্ট ধরে। শূন্য দশমিক ৫ কো-এফিশিয়েন্ট হিসেবে ধরে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেশি সুবিধা পাচ্ছে এবং পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ পয়েন্ট বেশি সুবিধা পাচ্ছে।
ছবিতে আপনি কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, চীন, ইউরোপ, জাপান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের ডিউটি রেট নির্ধারণের হিসাব দেখতে পাচ্ছেন।
হিসাবটা এভাবে হচ্ছে, আমেরিকার বাংলাদেশ থেকে ২০২৪ সালে রপ্তানি ছিল ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যার ফলে ট্রেড ডেফিসিট (বাণিজ্য ঘাটতি) ভাগ আমদানি দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশ, কিন্তু বাংলাদেশের ডিউটি নির্ধারিত হয়েছে ৩৭ শতাংশ। কারণ শূন্য দশমিক ৫৪ কো-এফিশিয়েন্ট দিয়ে গুণ করা হয়েছে।
এই কো-এফিশিয়েন্ট হিসাবটা এক্স্যাক্টলি কীভাবে করা হয়েছে, তা কেউ জানে না। তবে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে, আমেরিকার ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ অফিস আমেরিকার ট্রেড ব্যারিয়ার নিয়ে একটি গ্লোবাল রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মাত্র দুই দিন আগে, সেখানে বিভিন্ন দেশের ব্যারিয়ারগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
আমরা ধরে নিতে পারি, সেই রিপোর্টের মূল ইস্যু এবং আমেরিকার জিও-সিকিউরিটি মাথায় রেখে এই কো-এফিশিয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রিপোর্টে বাংলাদেশ নিয়ে পাঁচ পাতার দুঃখ-কষ্টের বিবরণ আছে, বাণিজ্য মন্ত্রণলায় সেটা ভালো করে পড়েন।
বর্তমানে ট্রাম্প যে নীতি অনুসরণ করছেন তা হচ্ছে—আমার থেকে বেশি আমদানি করো, তাহলে তোমার শুল্কের হার কমবে। তা না হলে আমার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখো বা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করো, তাহলে আমি কো-এফিশিয়েন্টে ছাড় দেব।’
(লেখাটি জিয়া হাসানের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া)
আরও খবর পড়ুন:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার রাতে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের ওপর রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন। বাংলাদেশের ওপরও তিনি ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন কোন পদ্ধতিতে এই শুল্ক আরোপ করেছে, সে বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন জার্মানিপ্রবাসী অর্থনীতিবিদ জিয়া হাসান। আজকের পত্রিকা'র পাঠকদের জন্য তাঁর পুরো লেখাটি তুলে ধরা হলো।
‘যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পাল্টাপাল্টি হারে শুল্ক ও অশুল্ক বাধার ওপর রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফের ভিত্তিতে এই শুল্কের হার নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকা হিসাব করেছে তার সঙ্গে কোন দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কত, সেই ঘাটতিকে আমেরিকার উক্ত দেশ থেকে আমদানির পরিমাণ দিয়ে ভাগ করে একটি কো-এফিশিয়েন্ট দিয়ে গুণ করে শুল্কহার নির্ধারণ করা হয়েছে।
অধিকাংশ দেশের জন্য এই কো-এফিশিয়েন্ট শূন্য দশমিক ৫। কিন্তু আমেরিকা যাকে শাস্তি দিতে চায়, তার জন্য কো-এফিশিয়েন্টের হার বেশি রাখা হয়েছে। যেমন—চীনের জন্য কো-এফিশিয়েন্ট শূন্য দশমিক ৮, কিন্তু পাকিস্তানের জন্য শূন্য দশমিক ৪১। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কিছুটা আনফেভারেবল হারে ডিউটি নির্ধারণ করা হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৪ হারে কো-এফিশিয়েন্ট ধরে। শূন্য দশমিক ৫ কো-এফিশিয়েন্ট হিসেবে ধরে ভারত বাংলাদেশের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেশি সুবিধা পাচ্ছে এবং পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ পয়েন্ট বেশি সুবিধা পাচ্ছে।
ছবিতে আপনি কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, চীন, ইউরোপ, জাপান, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের ডিউটি রেট নির্ধারণের হিসাব দেখতে পাচ্ছেন।
হিসাবটা এভাবে হচ্ছে, আমেরিকার বাংলাদেশ থেকে ২০২৪ সালে রপ্তানি ছিল ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যার ফলে ট্রেড ডেফিসিট (বাণিজ্য ঘাটতি) ভাগ আমদানি দাঁড়িয়েছে ৬৯ শতাংশ, কিন্তু বাংলাদেশের ডিউটি নির্ধারিত হয়েছে ৩৭ শতাংশ। কারণ শূন্য দশমিক ৫৪ কো-এফিশিয়েন্ট দিয়ে গুণ করা হয়েছে।
এই কো-এফিশিয়েন্ট হিসাবটা এক্স্যাক্টলি কীভাবে করা হয়েছে, তা কেউ জানে না। তবে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে, আমেরিকার ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ অফিস আমেরিকার ট্রেড ব্যারিয়ার নিয়ে একটি গ্লোবাল রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মাত্র দুই দিন আগে, সেখানে বিভিন্ন দেশের ব্যারিয়ারগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
আমরা ধরে নিতে পারি, সেই রিপোর্টের মূল ইস্যু এবং আমেরিকার জিও-সিকিউরিটি মাথায় রেখে এই কো-এফিশিয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রিপোর্টে বাংলাদেশ নিয়ে পাঁচ পাতার দুঃখ-কষ্টের বিবরণ আছে, বাণিজ্য মন্ত্রণলায় সেটা ভালো করে পড়েন।
বর্তমানে ট্রাম্প যে নীতি অনুসরণ করছেন তা হচ্ছে—আমার থেকে বেশি আমদানি করো, তাহলে তোমার শুল্কের হার কমবে। তা না হলে আমার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখো বা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করো, তাহলে আমি কো-এফিশিয়েন্টে ছাড় দেব।’
(লেখাটি জিয়া হাসানের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া)
আরও খবর পড়ুন:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এলোমেলো ও লাগামহীন শুল্কারোপের কারণে বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির বাজার খ্যাত আসিয়ানের দেশগুলো বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে। ট্রাম্পের শুল্কের খড়্গ নেমে এসেছে চীনের ওপরও। এই অবস্থায় চীন ও আসিয়ান পরস্পরের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প নিয়েছে। আর তাই পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আসিয়ান সদস্য...
১৭ ঘণ্টা আগেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ ক্যাম্পেইন এগিয়ে নিতে বিশ্বের দেশগুলোর ওপর বিশাল শুল্ক আরোপ করেছিলেন। যদিও পরে সেই শুল্ক তিনি ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন। কিন্তু চীনের ওপর তিনি শুল্ক বাড়িয়েই চলেছেন। জবাবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় কাছাকাছি পরিমাণে
৩ দিন আগেমার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একসময় অনেকগুলো দেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করতে চেয়েছিলেন। তবে এই যুদ্ধে এখন যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রতিপক্ষ বলা যায় চীনকেই। এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। গতকাল বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, চীন ছাড়া অন্য কোনো দেশের পণ্যের ওপর তিনি...
৫ দিন আগেশুল্কযুদ্ধের হুংকার দিয়ে শুরু করলেও মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় ট্রাম্পকে পিছু হটতে হলো। শেয়ার ও বন্ডবাজারের অস্থিরতা, ক্ষুদ্র ব্যবসার ক্ষতি ও বৈশ্বিক আর্থিক বাজারে ধস তাঁকে নীতিগত ইউ-টার্ন নিতে বাধ্য করেছে। তবে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি বিশ্ববাজারে স্বস্তি আনলেও চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই
৫ দিন আগে