Ajker Patrika

ট্রাম্প ও পুতিনের পারমাণবিক রেষারেষি কোথায় নিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীকে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি

বিশ্ব রাজনীতিতে আবারও পারমাণবিক যুদ্ধের আতঙ্ক ঘনীভূত হচ্ছে। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার সাম্প্রতিক ঘোষণায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শীতল যুদ্ধের পর বিশ্বে যে পারমাণবিক ভারসাম্য তৈরি হয়েছিল, তা এখন ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হঠাৎ ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কর্মসূচি আবারও শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘অন্য দেশগুলো যেহেতু পরীক্ষায় ব্যস্ত, আমরাও সমানভাবে আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করব।’ তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যে স্পষ্ট নয়—তিনি সরাসরি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার কথা বলেছেন, নাকি পরমাণু সক্ষম অস্ত্রের মহড়ার কথা বলেছেন।

এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগেই মস্কোর এক সামরিক হাসপাতালে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আরেকটি ‘অজেয়’ অস্ত্র পরীক্ষার দাবি করেন। তিনি জানান, রাশিয়া সফলভাবে ‘পোসাইডন’ নামের পরমাণু-চালিত টর্পেডো পরীক্ষায় সফল হয়েছে। ধারণা করা হয়, এই টর্পেডো প্রায় ৯ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত যেতে পারে এবং তা কোনোভাবেই প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। পুতিনের ভাষায়, ‘পোসাইডন’ পৃথিবীর যে কোনো আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী।’

তিনি আরও জানান, বহু প্রতীক্ষিত ‘সারমাত’ বা ‘স্যাটান ২’ ক্ষেপণাস্ত্রও শিগগিরই রুশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা হতে পারে।

২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘নিউ স্টার্ট’ চুক্তি অনুযায়ী উভয় দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা সীমিত রাখার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ২০২৬ সালে এই চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আর তার আগেই দুই দেশই নতুন অস্ত্র প্রদর্শনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে।

সপ্তাহখানেক আগে পুতিন ঘোষণা দিয়েছিলেন, রাশিয়া সফলভাবে ‘বুরেভেস্টনিক’ নামের পরমাণু-চালিত ক্রুজ মিসাইলের পরীক্ষাও সম্পন্ন করেছে। এই মিসাইল দীর্ঘ সময় ধরে সাবসনিক গতিতে উড়তে পারে বলে দাবি রুশ সামরিক বাহিনীর। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পরমাণু-চালিত অস্ত্র প্রযুক্তিগতভাবে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ, বাস্তবে ব্যবহারের জন্য এখনো অপ্রস্তুত।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, রাশিয়ার এই ‘পারমাণবিক ঝনঝনানি’ মূলত সামরিক নয়, কূটনৈতিক চাপের কৌশল। ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ও পশ্চিমা বিশ্বের কঠোর অবস্থানের কারণে মস্কো চায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ তার দাবিগুলোর প্রতি মনোযোগী হোক।

কিন্তু পুতিনের এই প্রদর্শনের জবাবে ট্রাম্পের নির্দেশ বিশ্বকে নতুন এক অনিশ্চিত পথে ঠেলে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দুই শক্তিধর দেশের এই পাল্টাপাল্টি হুমকি পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে আবারও উসকে দেবে। এর ফলে বিশ্বে শীতল-যুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে ভয়ংকর অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যেখানে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি বা অসতর্ক কোনো পদক্ষেপ মানবসভ্যতাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

বিদ্যুতের লাইন ঠিক করার কথা বলে ঘরে ঢুকে কিশোরীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

প্রতারণার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছে এই সরকার: মান্না

শেখ মুজিবের ছবি টাঙানোর বিধান বিলুপ্তির প্রস্তাব নেই জুলাই সনদে, ক্ষোভ বিএনপির

সময়ক্ষেপণ করবেন না, আগামীকালের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করুন— প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ