Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ ফুরিয়ে গেছে, কী হবে ইউক্রেনের

যুক্তরাষ্ট্রের বরাদ্দ ফুরিয়ে গেছে, কী হবে ইউক্রেনের

ইউক্রেনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ফুরিয়ে গেছে। বিষয়টি এমন এক সময়ে সামনে এসেছে যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের দুঃসাহস দেখাচ্ছিল কিয়েভ। তবে সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে এই মুহূর্তে যুদ্ধক্ষেত্রের গতিপথ দখলে নিতে চাইছে রুশ বাহিনী। 

চলতি সপ্তাহে শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্যই ওয়াশিংটনের কাছে আরও অর্থ সহযোগিতা চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের (কংগ্রেস) রিপাবলিকান সদস্যরা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটিতে অতিরিক্ত তহবিল পাঠানোর প্রস্তাবটি আটকে দিতে এককাট্টা হয়েছেন। 

পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে ৪৪.২ বিলিয়ন ডলারের নিরাপত্তা সহায়তা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এই মুহূর্তে এসে ঠেকে গেছে দেশটি। সম্প্রতি ইউক্রেনের জন্য মাত্র ১৭৫ মিলিয়ন ডলারের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। প্রয়োজনের তুলনায় যাকে নগণ্যই বলা চলে। 

গত সপ্তাহে কংগ্রেসের নেতাদের উদ্দেশে এক চিঠিতে হোয়াইট হাউসের বাজেট ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক শালান্দা ইয়াং লিখেছেন, ‘চলমান লড়াইয়ে ইউক্রেনকে সমর্থন করার জন্য আমাদের অর্থ ফুরিয়ে গেছে। পরের বছরের জন্য এটি কোনো সমস্যা নয়।’ 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন কংগ্রেসকে একটি জরুরি ব্যয় বিল পাশ করাতে আহ্বান জানিয়েছেন। ১১০.৫ বিলিয়ন ডলারের এই বিল পাশ হলে এর মধ্য থেকে ৬১.৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ হবে ইউক্রেনের জন্য। 

মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা জরুরি ব্যয়ের এই বিলটি আটকে দিলে নিশ্চিতভাবেই ইউক্রেন তার সবচেয়ে বড় সামরিক সমর্থককে হারাবে। কারণ ইউক্রেনের সহায়তায় ৪৭ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। এই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরই জার্মানির অবস্থান। দেশটি ইউক্রেনের নিরাপত্তা সহায়তায় ১৮.৩ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। 

বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে মস্কোর আক্রমণের গতি থামিয়ে দিতে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহায়তা খুবই জরুরি। কারণ রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ দুর্বল হয়ে যাওয়ার সুযোগে বর্তমানে দেশটির পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে রুশ বাহিনী। 

আশঙ্কা করা হচ্ছে, রিপাবলিকানদের সংশয় থাকায় ইউক্রেনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার অনুমোদন ছাড়াই এই বছরের জন্য সমাপ্ত হয়ে যেতে পারে মার্কিন কংগ্রেসের কার্যক্রম। 

ইউক্রেনের যুদ্ধ অচলাবস্থার মধ্যে দেশটির ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা আর্থিক সহায়তাকে কিয়েভের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য হিসাবে বারবার আওয়াজ তুলছেন। বিবিসিকে দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘সহজ কথায়, আমরা এই পরিস্থিতিতে থেমে যেতে পারি না। কারণ আমরা যদি তা করি, তবে আমরা মারা যাব।’ 

যুক্তরাষ্ট্রে আওয়াজ তুলছেন ইউক্রেনপন্থী বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও। ইউক্রেনে পাঠানো সহায়তাকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বিনিয়োগ হিসাবে বর্ণনা করছেন। 

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনও মত দিয়েছিলেন, কিয়েভের পতন হলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার আক্রমণ চালিয়ে যাবেন এবং যুক্তরাষ্ট্রকেও যুদ্ধে টেনে নেবেন। 

হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক ভাষণে বাইডেন যুক্তি দেন—ইউক্রেন দখল করে নিলে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন নিশ্চিতভাবেই ন্যাটো সদস্যভুক্ত কোনো দেশে আক্রমণ করবেন। কিন্তু সংবিধানের অনুচ্ছেদ-৫ অনুযায়ী, ন্যাটো অঞ্চলের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অর্থাৎ সেই যুদ্ধে সরাসরি লড়াই করতে হবে মার্কিন বাহিনীকে। 

জরুরি প্রয়োজনের এই মুহূর্তে মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুক্তিগুলো ইউক্রেনে আর্থিক সহায়তা পাঠাতে কংগ্রেসকে রাজি করাতে পারে কি-না সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত