অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েল গত শুক্রবার ইরানে একের পর এক হামলা চালানোর আগে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কড়া ‘সতর্কবার্তাও’ দেয়। ইসরায়েল দাবি করে, ইরান দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথে অগ্রসর হচ্ছে, আর এই হামলাগুলো সেই প্রচেষ্টা রুখতেই প্রয়োজন ছিল। তবে এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়ন খুবই সাংঘর্ষিক।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য ছিল একেবারে ভিন্ন। তাদের মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরান বর্তমানে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না। এমনকি ইরান যদি এখনই চেষ্টা শুরু করে, তবুও লক্ষ্যে পৌঁছাতে ৩ বছর সময় লাগবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট চার ব্যক্তি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার মতে, কয়েক দিনের ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি হয়তো মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে। দেশটির নাতানজে অবস্থিত সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু ফোরদোর দ্বিতীয় সু-সুরক্ষিত সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এখনো অক্ষত।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অস্ত্র ও আকাশপথে সহায়তা ছাড়া ইসরায়েলের পক্ষে ফোরদোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প ও বাইডেন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সাবেক শীর্ষ কূটনীতিক ও সিএনএনের বিশ্লেষক ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, ‘ইসরায়েল হয়তো এই পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কার্যকারিতা থামাতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংস করতে চাইলে সেটা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের হামলাতেই সম্ভব—অথবা কূটনৈতিক সমঝোতায়।’
বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। তারা চায় না, যুক্তরাষ্ট্র কোনো ব্যয়সাপেক্ষ ও জটিল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক। ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্র জড়াতে চায় না। তবে সিএনএনকে সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি ইরানের কর্মসূচিকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে চায়, তাহলে মার্কিন সহায়তা লাগবেই—বিশেষত এমন বোমা, যা ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো ভেদ করতে পারে এবং সেগুলো বহন করার মতো বি-টু বোমারু বিমান।
বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের উপদেষ্টা দলের মধ্যকার নিরপেক্ষ মনোভাবাপন্ন ও যুদ্ধপন্থী রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট নিজেও কিছুটা দ্বিধায় আছেন। গত রোববার এবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এখনই এর সঙ্গে জড়িত নই। ভবিষ্যতে জড়াতে পারি, তবে এই মুহূর্তে আমরা এতে জড়িত না।’ এরপর গতকাল সোমবার কানাডায় জি-৭ সম্মেলনে ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইরানকে আহ্বান জানান, ‘দেরি না করে আলোচনায় বসুন।’
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বেসামরিক গোয়েন্দাদের তুলনায় বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার আগেই সেন্ট্রাল কমান্ড বিশ্বাস করেছিল, ইরান চাইলে দ্রুতই একটি ব্যবহারযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারে—বিষয়টির সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র এমন তথ্য দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলাসহ কয়েকজন সামরিক নেতা ইসরায়েলকে রক্ষায় বেশি সম্পদ চেয়েছেন। তবে সেই সম্পদ আক্রমণ চালাতে নয়, প্রতিরক্ষা সহযোগিতার জন্য। সূত্র বলেছে, জেনারেল কুরিলা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে চান। তাই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক উপস্থিতি পুনর্বিন্যাস করছে, যাতে নিজেদের বাহিনী সুরক্ষিত রাখতে পারে এবং প্রয়োজনে ইসরায়েলকে সাহায্য করতে পারে।
গতকাল সিএনএনকে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস নিমিটজ ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে দ্রুত রওনা হয়েছে। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত কিছু মার্কিন নৌযান—যেগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম—চলতি সপ্তাহেই পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন হবে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, গত রোববার পর্যন্ত অন্তত দুবার ইসরায়েলকে রক্ষায় মার্কিন নৌবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে।
একই তথ্য, ভিন্ন বিশ্লেষণ
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রায়ই ভিন্ন ব্যাখা দেয়, যদিও তারা তথ্য শেয়ার করে। গত মার্চে ট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড কংগ্রেসে জানান, ‘আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো মনে করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাজ করছে না। তাদের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ২০০৩ সালে যে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন, সেটার অনুমোদনও পুনরায় দেননি।’
রোববার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়, কেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা তথ্য গ্যাবার্ডের বক্তব্যের সঙ্গে মেলে না। জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেয়ার করেছি, তা পরিষ্কারভাবে বলছে—তারা (ইরান) গোপনে ইউরেনিয়াম অস্ত্রীকরণের পরিকল্পনা করছে এবং খুব দ্রুতই এগোচ্ছে।’
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ইরান এমন পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা দিয়ে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব। সংস্থাটি এটিকে ‘গভীর উদ্বেগের বিষয়’ বলে জানিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ইরানের জন্য শুধু একটি কাঁচা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ নয়, বরং সেটি কাজ করার মতো একটি ডেলিভারি সিস্টেম তৈরিও দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইএইএ এখন যাচাই করছে, ইসরায়েলের হামলায় ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোর কতটা ক্ষতি হয়েছে। তবে কিছু মার্কিন কর্মকর্তার আশঙ্কা, এসব হামলা হয়তো ইরানকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে, যা এত দিন তারা নেয়নি—অস্ত্রীকরণ শুরু করা।
তবে সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য জানা এক সূত্র বলছে, ইরান এখন বিপর্যস্ত। তারা আদৌ সেই সক্ষমতা বা দক্ষতা ধরে রেখেছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সবচেয়ে নিরাপদ ঘাঁটি—ফোরদো এখনো সুরক্ষিত। এটি একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। সিএনএনের ওলফ ব্লিৎজারকে ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, সবকিছু এসে ঠেকে এক জায়গায়—ফোরদো, ফোরদো এবং ফোরদো।
তিনি আরও বলেন, ‘এই স্থাপনা ধ্বংস করতে পারবে কেবল যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলিদের পক্ষে তা খুব কঠিন। যদি এই অভিযান শেষ হয় ফোরদো অক্ষত রেখেই, তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। ইরান আরও আগ্রাসীভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের পথে এগোতে পারে—আর সেই পরিকাঠামো তখনো তাদের হাতে থাকবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন এখনো বলছে, কূটনৈতিকভাবে সমাধান সম্ভব। তবে সিএনএনকে এক আঞ্চলিক কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইরান কাতার ও ওমানকে জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার মধ্যে তারা কোনো আলোচনায় যাবে না। অন্যদিকে ইসরায়েলও এখনই হামলা থামানোর কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
আরও খবর পড়ুন:
ইসরায়েল গত শুক্রবার ইরানে একের পর এক হামলা চালানোর আগে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কড়া ‘সতর্কবার্তাও’ দেয়। ইসরায়েল দাবি করে, ইরান দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পথে অগ্রসর হচ্ছে, আর এই হামলাগুলো সেই প্রচেষ্টা রুখতেই প্রয়োজন ছিল। তবে এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মূল্যায়ন খুবই সাংঘর্ষিক।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্য ছিল একেবারে ভিন্ন। তাদের মূল্যায়নে বলা হয়েছে, ইরান বর্তমানে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে না। এমনকি ইরান যদি এখনই চেষ্টা শুরু করে, তবুও লক্ষ্যে পৌঁছাতে ৩ বছর সময় লাগবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট চার ব্যক্তি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার মতে, কয়েক দিনের ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি হয়তো মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে। দেশটির নাতানজে অবস্থিত সেন্ট্রিফিউজ স্থাপনায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে, কিন্তু ফোরদোর দ্বিতীয় সু-সুরক্ষিত সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এখনো অক্ষত।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ অস্ত্র ও আকাশপথে সহায়তা ছাড়া ইসরায়েলের পক্ষে ফোরদোকে ক্ষতিগ্রস্ত করা সম্ভব নয়। ট্রাম্প ও বাইডেন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সাবেক শীর্ষ কূটনীতিক ও সিএনএনের বিশ্লেষক ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, ‘ইসরায়েল হয়তো এই পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কার্যকারিতা থামাতে পারে, কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংস করতে চাইলে সেটা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের হামলাতেই সম্ভব—অথবা কূটনৈতিক সমঝোতায়।’
বিষয়টি ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য একটি বড় দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। তারা চায় না, যুক্তরাষ্ট্র কোনো ব্যয়সাপেক্ষ ও জটিল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক। ট্রাম্প স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ইসরায়েলের পারমাণবিক অবকাঠামো ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্র জড়াতে চায় না। তবে সিএনএনকে সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েল যদি ইরানের কর্মসূচিকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে চায়, তাহলে মার্কিন সহায়তা লাগবেই—বিশেষত এমন বোমা, যা ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলো ভেদ করতে পারে এবং সেগুলো বহন করার মতো বি-টু বোমারু বিমান।
বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের উপদেষ্টা দলের মধ্যকার নিরপেক্ষ মনোভাবাপন্ন ও যুদ্ধপন্থী রিপাবলিকান সদস্যদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। এমনকি প্রেসিডেন্ট নিজেও কিছুটা দ্বিধায় আছেন। গত রোববার এবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এখনই এর সঙ্গে জড়িত নই। ভবিষ্যতে জড়াতে পারি, তবে এই মুহূর্তে আমরা এতে জড়িত না।’ এরপর গতকাল সোমবার কানাডায় জি-৭ সম্মেলনে ট্রাম্প ইসরায়েল ও ইরানকে আহ্বান জানান, ‘দেরি না করে আলোচনায় বসুন।’
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বেসামরিক গোয়েন্দাদের তুলনায় বেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলার আগেই সেন্ট্রাল কমান্ড বিশ্বাস করেছিল, ইরান চাইলে দ্রুতই একটি ব্যবহারযোগ্য পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে পারে—বিষয়টির সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র এমন তথ্য দিয়েছে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলাসহ কয়েকজন সামরিক নেতা ইসরায়েলকে রক্ষায় বেশি সম্পদ চেয়েছেন। তবে সেই সম্পদ আক্রমণ চালাতে নয়, প্রতিরক্ষা সহযোগিতার জন্য। সূত্র বলেছে, জেনারেল কুরিলা সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে চান। তাই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক উপস্থিতি পুনর্বিন্যাস করছে, যাতে নিজেদের বাহিনী সুরক্ষিত রাখতে পারে এবং প্রয়োজনে ইসরায়েলকে সাহায্য করতে পারে।
গতকাল সিএনএনকে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস নিমিটজ ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ মধ্যপ্রাচ্যের দিকে দ্রুত রওনা হয়েছে। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত কিছু মার্কিন নৌযান—যেগুলো ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম—চলতি সপ্তাহেই পূর্ব ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন হবে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, গত রোববার পর্যন্ত অন্তত দুবার ইসরায়েলকে রক্ষায় মার্কিন নৌবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে।
একই তথ্য, ভিন্ন বিশ্লেষণ
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে প্রায়ই ভিন্ন ব্যাখা দেয়, যদিও তারা তথ্য শেয়ার করে। গত মার্চে ট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড কংগ্রেসে জানান, ‘আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো মনে করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাজ করছে না। তাদের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি ২০০৩ সালে যে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন, সেটার অনুমোদনও পুনরায় দেননি।’
রোববার ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়, কেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা তথ্য গ্যাবার্ডের বক্তব্যের সঙ্গে মেলে না। জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শেয়ার করেছি, তা পরিষ্কারভাবে বলছে—তারা (ইরান) গোপনে ইউরেনিয়াম অস্ত্রীকরণের পরিকল্পনা করছে এবং খুব দ্রুতই এগোচ্ছে।’
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ গত সপ্তাহে জানিয়েছে, ইরান এমন পরিমাণে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা দিয়ে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব। সংস্থাটি এটিকে ‘গভীর উদ্বেগের বিষয়’ বলে জানিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ইরানের জন্য শুধু একটি কাঁচা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করাই চ্যালেঞ্জ নয়, বরং সেটি কাজ করার মতো একটি ডেলিভারি সিস্টেম তৈরিও দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইএইএ এখন যাচাই করছে, ইসরায়েলের হামলায় ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোর কতটা ক্ষতি হয়েছে। তবে কিছু মার্কিন কর্মকর্তার আশঙ্কা, এসব হামলা হয়তো ইরানকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করবে, যা এত দিন তারা নেয়নি—অস্ত্রীকরণ শুরু করা।
তবে সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য জানা এক সূত্র বলছে, ইরান এখন বিপর্যস্ত। তারা আদৌ সেই সক্ষমতা বা দক্ষতা ধরে রেখেছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সবচেয়ে নিরাপদ ঘাঁটি—ফোরদো এখনো সুরক্ষিত। এটি একটি পাহাড়ের নিচে অবস্থিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। সিএনএনের ওলফ ব্লিৎজারকে ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, সবকিছু এসে ঠেকে এক জায়গায়—ফোরদো, ফোরদো এবং ফোরদো।
তিনি আরও বলেন, ‘এই স্থাপনা ধ্বংস করতে পারবে কেবল যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলিদের পক্ষে তা খুব কঠিন। যদি এই অভিযান শেষ হয় ফোরদো অক্ষত রেখেই, তাহলে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। ইরান আরও আগ্রাসীভাবে পারমাণবিক অস্ত্রের পথে এগোতে পারে—আর সেই পরিকাঠামো তখনো তাদের হাতে থাকবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন এখনো বলছে, কূটনৈতিকভাবে সমাধান সম্ভব। তবে সিএনএনকে এক আঞ্চলিক কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইরান কাতার ও ওমানকে জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার মধ্যে তারা কোনো আলোচনায় যাবে না। অন্যদিকে ইসরায়েলও এখনই হামলা থামানোর কোনো ইঙ্গিত দেয়নি।
আরও খবর পড়ুন:
কানাডায় চলমান শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি৭-এর শীর্ষ সম্মেলনে পুরো মনোযোগ ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে। সেখানে অন্য কোনো ইস্যু বলতে গেলে স্থানই পায়নি; বরং এই সম্মেলনে রাশিয়া এক অনাকাঙ্ক্ষিত পক্ষপাত পেয়ে গেছে। সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও রাশিয়াকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি৭-এ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর
৮ ঘণ্টা আগেহামলা চালিয়ে ইরান সরকারের জন্য জনসমর্থন অর্জনের পথ খুলে দিচ্ছে ইসরায়েল—এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে তেহরানভিত্তিক সাংবাদিক ও গবেষক আব্বাস আসলানি বলেন, এত দিন যাঁরা সরকারবিরোধী অবস্থানে ছিলেন, তাঁরাও এখন সরকারকে সমর্থন দিচ্ছেন।
১০ ঘণ্টা আগেকিন্তু গত শুক্রবার ইরানের ওপর হামলা চালানোর পর ইসরায়েল আর সেই ছাড় পায়নি, যা ইরাকের ক্ষেত্রে শুরু হয়েছিল। ইসরায়েলি আক্রমণের ফলে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তা দিনের পর দিন গড়াচ্ছে, সম্ভবত সপ্তাহও পেরিয়ে যাবে। এবারে ইসরায়েলের লক্ষ্য আরও বড়—তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভান্ডার ধ্বংস, একাধিক পারমাণবিক
১১ ঘণ্টা আগেইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে যে হামলা শুরু করেছে, তা যেন শুধু স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে নয়, বরং সেই কর্মসূচির মাথা হিসেবে পরিচিত বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধেও। এই হামলার তালিকায় ছিল ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান ফেরেইদুন আব্বাসির নাম।
১ দিন আগে