আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, এবার তিনি চীনকেও একই পথে আনতে চান।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। আজ বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বুধবার দুই নেতার মধ্যে কোনো টেলিফোন আলাপ হয়নি। ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আশ্বাস দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এর আগে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, খুব শিগগির ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করবে।
প্রসঙ্গত, ভারত ও চীন—এই দুই দেশ রাশিয়ার সমুদ্রপথে তেল রপ্তানির সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
ভারতের ওপর বাণিজ্য চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ট্রাম্প চলমান যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য আলোচনাকে ব্যবহার করছেন রাশিয়ার তেল ইস্যুতে দিল্লির ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য। গত আগস্টে তিনি ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকে অজুহাত দেখিয়ে দিল্লির ওপর অতিরিক্ত বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেন। তবে মোদি সরকার এখনো তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
ভারত বরাবরই বলে এসেছে, রাশিয়ার তেল কেনা ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যক। তাই তেল আমদানি বন্ধ করা ভারতের অর্থনীতি ও জনগণের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
যদি ভারত সত্যিই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে, তবে এটি মস্কোর জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে। কারণ, রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনায় তেল রপ্তানি অন্যতম প্রধান অর্থের উৎস।
তেল ইস্যুতেই কেন দ্বন্দ্ব?
ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন চাপ। আগস্টে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসান, যা মোট শুল্কহারকে ৫০ শতাংশে পৌঁছে দেয়। তবে একইভাবে চীনের ওপর তিনি কোনো এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি—যদিও চীন এখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা।
চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটি গত বছর রাশিয়া থেকে রেকর্ড ১০৯ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা তাদের মোট জ্বালানি আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ। অন্যদিকে ভারত আমদানি করেছে প্রায় ৮৮ মিলিয়ন টন।
এ কারণে নয়াদিল্লি অভিযোগ করেছে, ওয়াশিংটন একপাক্ষিকভাবে ভারতকে নিশানা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই অবস্থান আংশিকভাবে এসেছে ভারতের বাণিজ্য আলোচনায় ‘অবাধ্যতা’ থেকে।
হংকংভিত্তিক গবেষক ও অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো আল-জাজিরাকে বলেন, ভারতের কৃষিপণ্যে উচ্চ শুল্ক ও ওষুধে ভর্তুকি দেওয়ার মতো সুরক্ষামূলক নীতিই যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য সম্পর্কের মূল বাধা। যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারত এসব খাতে বিনিয়োগ ও ভর্তুকি কমিয়ে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করুক।
চীনের প্রতি ভিন্ন মনোভাবের কারণ
চীনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প তুলনামূলক নরম অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, তিনি চীনের সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির প্রত্যাশায় আপাতত অপেক্ষা করছেন। সেই চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ‘রেয়ার আর্থ মেটাল’ বা দুর্লভ খনিজ পদার্থের বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে চায়।
এই দুর্লভ খনিজগুলো গাড়ির যন্ত্রাংশ, সামরিক প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিকস উৎপাদনে অপরিহার্য। বর্তমানে চীন ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ খনিজের উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিশ্বে প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রেখেছে এবং এর মধ্যে ১২টি রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
চীনের নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ অনুযায়ী, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে কিছু নির্দিষ্ট খনিজ কেনার আগে বেইজিংয়ের অনুমতি নিতে হচ্ছে। ট্রাম্প এর প্রতিক্রিয়ায় ১ নভেম্বর থেকে চীনা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, চলতি মাসের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
রাশিয়ান তেলের ওপর ভারতের নির্ভরতা
রাশিয়া বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ। শিপিং বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের (Kpler) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত প্রতিদিন গড়ে ৪৫ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যার মধ্যে ১৬ লাখ ব্যারেল বা ৩৪ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে।
২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় এটি ২ হাজার ২৫০ শতাংশ বেশি। তখন প্রতিদিন ভারত রাশিয়া থেকে মাত্র ৬৮ হাজার ব্যারেল তেল কিনত।
গবেষণা সংস্থা সিআরইএর তথ্য অনুযায়ী, চীন রাশিয়ার মোট তেল রপ্তানির ৪৭ শতাংশ কিনেছে আর ভারত ৩৮ শতাংশ।
ভারত কেন এত রাশিয়ান তেল কিনছে
২০২২ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেলের ওপর ৬০ ডলারের মূল্যসীমা নির্ধারণ করে। এর ফলে রাশিয়া বাধ্য হয় প্রতিযোগিতামূলক দামে তেল বিক্রি করতে, যা ভারতের জন্য সুবিধাজনক হয়।
সস্তায় তেল কেনার কারণে ভারতের চলতি হিসাবের ঘাটতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ কমে যায়। এর ফলে দেশটির বৃহৎ তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (আরআইএল) সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়।
২০২১ সালে রিলায়েন্সের জামনগর রিফাইনারিতে আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের মধ্যে রাশিয়ার অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ, যা ২০২৫ সালে বেড়ে প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।
সিআরইএর হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত জামনগর রিফাইনারি থেকে বিশ্বব্যাপী ৮৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তেলজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে—এর মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ বা ৩৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য গেছে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দেশগুলোতে।
ট্রাম্পের দাবিতে ভারতের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক দাবির বিষয়ে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ বলেন, ভারতের জ্বালানি নীতি সর্বদা স্থিতিশীল দাম ও নির্ভরযোগ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর নির্ভর করে।
আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছি। আবারও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গতকাল এ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কোনো ফোনালাপ হয়নি।’ ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আশ্বাস দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘আমাদের নীতির দুটি মূল লক্ষ্য হলো—স্থিতিশীল জ্বালানি মূল্য বজায় রাখা ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ জন্য আমরা জ্বালানির উৎস বৈচিত্র্যপূর্ণ করার নীতিতে অটল।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের জ্বালানি সহযোগিতা সম্প্রসারণে আলোচনা চলছে।
অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরোর মতে, আগামী তিন থেকে ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক ‘উত্তেজনাপূর্ণ কিন্তু বাস্তবসম্মত সমঝোতায়’ পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘যদি ভারত রাশিয়ার তেল আমদানি কিছুটা কমায়, তবে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক কিছুটা শিথিল করতে পারে এবং ২০২৬ সালের শুরুর দিকে একটি ক্ষুদ্র বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে।
কিন্তু ভারত কি আসলেই রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমাবে বা বন্ধ করবে? সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত কখনোই এমন সিদ্দান্ত নেবে না। কারণ, কৌশলগতভাবে রাশিয়া ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আর সবচেয়ে বড় কথা, যেখানে অন্যান্য দেশের তুলনায় কম দামে তেল পাওয়া যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে কি ভারত এ বাণিজ্য বন্ধ করবে? এমনটা ভাবা অমূলক।
তাহলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কীভাবে ভারতকে ঠেকাবেন? তিনি কি ভারতকে রাশিয়ার তেল না কিনতে বাধ্য করতে পারবেন? ট্রাম্প এমনটা করতেই পারেন। কিন্তু এখানেও প্রশ্ন থেকে যায়, ভারত ট্রাম্পের বাধ্যবাধকতা কেন মানবে? বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার তেল কেনার অপরাধে ট্রাম্প ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করেছেন। তেল কেনা বন্ধ না করলে হয়তো আরও শুল্ক আরোপ করবেন। এভাবেই তিনি ভারতকে বাধ্য করতে চাইবেন।

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, এবার তিনি চীনকেও একই পথে আনতে চান।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। আজ বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল বুধবার দুই নেতার মধ্যে কোনো টেলিফোন আলাপ হয়নি। ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আশ্বাস দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
এর আগে গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, খুব শিগগির ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করবে।
প্রসঙ্গত, ভারত ও চীন—এই দুই দেশ রাশিয়ার সমুদ্রপথে তেল রপ্তানির সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
ভারতের ওপর বাণিজ্য চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ট্রাম্প চলমান যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য আলোচনাকে ব্যবহার করছেন রাশিয়ার তেল ইস্যুতে দিল্লির ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য। গত আগস্টে তিনি ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানিকে অজুহাত দেখিয়ে দিল্লির ওপর অতিরিক্ত বাণিজ্য শুল্ক আরোপ করেন। তবে মোদি সরকার এখনো তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
ভারত বরাবরই বলে এসেছে, রাশিয়ার তেল কেনা ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যাবশ্যক। তাই তেল আমদানি বন্ধ করা ভারতের অর্থনীতি ও জনগণের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।
যদি ভারত সত্যিই রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে, তবে এটি মস্কোর জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে। কারণ, রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনায় তেল রপ্তানি অন্যতম প্রধান অর্থের উৎস।
তেল ইস্যুতেই কেন দ্বন্দ্ব?
ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন চাপ। আগস্টে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক বসান, যা মোট শুল্কহারকে ৫০ শতাংশে পৌঁছে দেয়। তবে একইভাবে চীনের ওপর তিনি কোনো এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেননি—যদিও চীন এখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা।
চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটি গত বছর রাশিয়া থেকে রেকর্ড ১০৯ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা তাদের মোট জ্বালানি আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ। অন্যদিকে ভারত আমদানি করেছে প্রায় ৮৮ মিলিয়ন টন।
এ কারণে নয়াদিল্লি অভিযোগ করেছে, ওয়াশিংটন একপাক্ষিকভাবে ভারতকে নিশানা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই অবস্থান আংশিকভাবে এসেছে ভারতের বাণিজ্য আলোচনায় ‘অবাধ্যতা’ থেকে।
হংকংভিত্তিক গবেষক ও অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো আল-জাজিরাকে বলেন, ভারতের কৃষিপণ্যে উচ্চ শুল্ক ও ওষুধে ভর্তুকি দেওয়ার মতো সুরক্ষামূলক নীতিই যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য সম্পর্কের মূল বাধা। যুক্তরাষ্ট্র চায় ভারত এসব খাতে বিনিয়োগ ও ভর্তুকি কমিয়ে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করুক।
চীনের প্রতি ভিন্ন মনোভাবের কারণ
চীনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প তুলনামূলক নরম অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, তিনি চীনের সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির প্রত্যাশায় আপাতত অপেক্ষা করছেন। সেই চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ‘রেয়ার আর্থ মেটাল’ বা দুর্লভ খনিজ পদার্থের বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে চায়।
এই দুর্লভ খনিজগুলো গাড়ির যন্ত্রাংশ, সামরিক প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিকস উৎপাদনে অপরিহার্য। বর্তমানে চীন ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ খনিজের উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিশ্বে প্রায় একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রেখেছে এবং এর মধ্যে ১২টি রপ্তানিতে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
চীনের নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ অনুযায়ী, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে কিছু নির্দিষ্ট খনিজ কেনার আগে বেইজিংয়ের অনুমতি নিতে হচ্ছে। ট্রাম্প এর প্রতিক্রিয়ায় ১ নভেম্বর থেকে চীনা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তবে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, চলতি মাসের শেষ দিকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
রাশিয়ান তেলের ওপর ভারতের নির্ভরতা
রাশিয়া বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ। শিপিং বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের (Kpler) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত প্রতিদিন গড়ে ৪৫ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যার মধ্যে ১৬ লাখ ব্যারেল বা ৩৪ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে।
২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় এটি ২ হাজার ২৫০ শতাংশ বেশি। তখন প্রতিদিন ভারত রাশিয়া থেকে মাত্র ৬৮ হাজার ব্যারেল তেল কিনত।
গবেষণা সংস্থা সিআরইএর তথ্য অনুযায়ী, চীন রাশিয়ার মোট তেল রপ্তানির ৪৭ শতাংশ কিনেছে আর ভারত ৩৮ শতাংশ।
ভারত কেন এত রাশিয়ান তেল কিনছে
২০২২ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার তেলের ওপর ৬০ ডলারের মূল্যসীমা নির্ধারণ করে। এর ফলে রাশিয়া বাধ্য হয় প্রতিযোগিতামূলক দামে তেল বিক্রি করতে, যা ভারতের জন্য সুবিধাজনক হয়।
সস্তায় তেল কেনার কারণে ভারতের চলতি হিসাবের ঘাটতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ কমে যায়। এর ফলে দেশটির বৃহৎ তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ (আরআইএল) সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়।
২০২১ সালে রিলায়েন্সের জামনগর রিফাইনারিতে আমদানি করা অপরিশোধিত তেলের মধ্যে রাশিয়ার অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ, যা ২০২৫ সালে বেড়ে প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।
সিআরইএর হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত জামনগর রিফাইনারি থেকে বিশ্বব্যাপী ৮৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তেলজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে—এর মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ বা ৩৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য গেছে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া দেশগুলোতে।
ট্রাম্পের দাবিতে ভারতের প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক দাবির বিষয়ে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ বলেন, ভারতের জ্বালানি নীতি সর্বদা স্থিতিশীল দাম ও নির্ভরযোগ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর নির্ভর করে।
আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছি। আবারও স্পষ্টভাবে বলতে চাই, গতকাল এ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে কোনো ফোনালাপ হয়নি।’ ফলে রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আশ্বাস দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
জয়সওয়াল আরও বলেন, ‘আমাদের নীতির দুটি মূল লক্ষ্য হলো—স্থিতিশীল জ্বালানি মূল্য বজায় রাখা ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এ জন্য আমরা জ্বালানির উৎস বৈচিত্র্যপূর্ণ করার নীতিতে অটল।’ তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের জ্বালানি সহযোগিতা সম্প্রসারণে আলোচনা চলছে।
অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরোর মতে, আগামী তিন থেকে ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক ‘উত্তেজনাপূর্ণ কিন্তু বাস্তবসম্মত সমঝোতায়’ পৌঁছাতে পারে। তিনি বলেন, ‘যদি ভারত রাশিয়ার তেল আমদানি কিছুটা কমায়, তবে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক কিছুটা শিথিল করতে পারে এবং ২০২৬ সালের শুরুর দিকে একটি ক্ষুদ্র বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে।
কিন্তু ভারত কি আসলেই রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমাবে বা বন্ধ করবে? সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত কখনোই এমন সিদ্দান্ত নেবে না। কারণ, কৌশলগতভাবে রাশিয়া ভারতের ঘনিষ্ঠ মিত্র। আর সবচেয়ে বড় কথা, যেখানে অন্যান্য দেশের তুলনায় কম দামে তেল পাওয়া যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে কি ভারত এ বাণিজ্য বন্ধ করবে? এমনটা ভাবা অমূলক।
তাহলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কীভাবে ভারতকে ঠেকাবেন? তিনি কি ভারতকে রাশিয়ার তেল না কিনতে বাধ্য করতে পারবেন? ট্রাম্প এমনটা করতেই পারেন। কিন্তু এখানেও প্রশ্ন থেকে যায়, ভারত ট্রাম্পের বাধ্যবাধকতা কেন মানবে? বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার তেল কেনার অপরাধে ট্রাম্প ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করেছেন। তেল কেনা বন্ধ না করলে হয়তো আরও শুল্ক আরোপ করবেন। এভাবেই তিনি ভারতকে বাধ্য করতে চাইবেন।

জেলবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর পরিবার এখন ‘প্রুফ অব লাইফ’ দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে উত্তরণের সেই যাত্রা ও ব্যক্তিগত স্মৃতি তুলে ধরেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা, কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর।
২ দিন আগে
গত দুই দশক ধরে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছিল ভেনেজুয়েলা। উদ্দেশ্য ছিল এমন এক নতুন আন্তর্জাতিক জোট গড়া, যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে পারবে।
৩ দিন আগে
২১ নভেম্বর দুবাই এয়ার শোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস এমকে-১-এর দুর্ঘটনার পর থেকেই এই প্রকল্পের দীর্ঘদিনের দুর্বলতাগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড...
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে, সেই প্রশ্ন এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণার পর ভারত থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জেলবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর পরিবার এখন ‘প্রুফ অব লাইফ’ দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে উত্তরণের সেই যাত্রা ও ব্যক্তিগত স্মৃতি তুলে ধরেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা, কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর।
ইমরান খান একসময় পাকিস্তানের সংস্কার ও জাতীয় পুনর্জাগরণের স্বপ্ন হিসেবে বিবেচিত হতেন। সেই মানুষটাই ২০২৩ সাল থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দী। ৭২ বছর বয়সী এই নেতাকে ঘিরে এখন গুজব ছড়িয়েছে—তাঁকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। তাঁর ছেলে কাসিম খান এখন বাবার জীবিত থাকার প্রমাণ ও মুক্তি দাবি করেছেন। এসব গুজব সত্য হলে এটি হবে এমন একটি জীবনের করুণ পরিসমাপ্তি, যে জীবন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের খ্যাতি, জাতীয় নেতৃত্ব এবং শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছিল।
১৯৫২ সালে লাহোরে সম্ভ্রান্ত পশতু পরিবারে জন্ম ইমরানের। লাহোরের অ্যাচিসন কলেজ, রয়্যাল গ্রামার স্কুল উর্সেস্টার ও অক্সফোর্ডের কেবল কলেজে শিক্ষাগ্রহণ। ৭০-এর দশকের শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ এবং ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক শিরোপা জয় তাঁকে ক্রিকেট-পুরাণের অমর নায়ক বানিয়ে দেয়।
কৌশল, দূরদর্শিতা ও দলকে এক সুতায় গেঁথে রাখার ক্ষমতা তাঁকে দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের মধ্যেও অসামান্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ক্রিকেট থেকে জনসেবায়
ক্রিকেট ছাড়ার পর তিনি গড়ে তোলেন শওকত খানম ক্যানসার হাসপাতাল। এটি তাঁর মায়ের স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম বৃহৎ ক্যানসার হাসপাতাল। সাধারণ মানুষের দানে পরিচালিত এই হাসপাতাল তাঁর জনপ্রিয়তা ও জন-আস্থারই প্রমাণ।
কিন্তু ইমরানের জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়টি পুরোপুরি রাজনীতিকে ঘিরে। ১৯৯৬ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠা করলেও দলটি দীর্ঘ সময় প্রান্তিক পর্যায়ে ছিল। ২০১০ সালের পর থেকে তাঁর দুর্নীতিবিরোধী বার্তা, জাতীয় মর্যাদার প্রতিশ্রুতি এবং ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণা দেশজুড়ে তরুণদের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া তোলে।
২০১৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু ‘নয়া পাকিস্তানের’ স্বপ্ন দেখালেও তাঁর শাসনকালজুড়ে ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা, কূটনৈতিক চাপ ও সেনাবাহিনীর শক্তিশালী প্রভাব—যা শেষ পর্যন্ত তাঁর পতনের কারণ হয়।
শশী থারুর তাঁর জীবনের তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইমরান খানকে দেখেছেন।
প্রথম পরিচয়—থারুর যখন জাতিসংঘে কর্মরত, তখন নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। থারুর বলেন, ইমরানের সহজ-সরল আচরণ ও সবার সঙ্গে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁকে মুগ্ধ করে।
দ্বিতীয় পর্যায়—ইমরান তখন অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার হিসেবে নিয়মিত ভারতে আসতেন, বিভিন্ন টেলিভিশনে টক শোতে অংশ নিতেন। থারুরের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হতো। থারুর বলেন, ইমরান ছিলেন স্পষ্টভাষী, বুদ্ধিদীপ্ত এবং প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে আগ্রহী। ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনা সত্ত্বেও ভারতে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল অনেক, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে।
ইমরান খানের সঙ্গে শশী থারুরের সবচেয়ে স্মরণীয় সাক্ষাৎটি হয় ২০১৭ সালে ইসলামাবাদে এশিয়ান পার্লামেন্টারি সম্মেলনে। ইমরান তখন বিরোধী দলের নেতা। তিনি থারুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। নিরাপত্তার অজুহাতে পাকিস্তান সরকার থারুরকে হোটেলের বাইরে যেতে দেয়নি। তখন ইমরান নিজেই ছয়জন সহকর্মী নিয়ে হোটেলে যান।
থারুর বলেন, ‘আমাদের সাক্ষাৎটি রাজনৈতিক ছিল না—পুরোটা ছিল ইতিহাস নিয়ে। ইমরান আমার ‘‘An Era of Darkness’’ বই পুরোটা পড়েছেন। সেখান থেকে কিছু উদ্ধৃতি টেনে তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, মতামত দেন, উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানান। ইমরান আমাকে পাকিস্তানে এসে ইতিহাস নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার আমন্ত্রণও জানান। তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।’
থারুর আরও বলেন, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ক্ষমতায় এলেও ইমরান ছিলেন বৈপরীত্যের প্রতীক। ভারতের সঙ্গে শান্তি চান, কিন্তু সামরিক গোয়েন্দাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতায় বাধাপ্রাপ্ত হন। দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নিলেও নিজেই অভিযোগের মুখে পড়েন। অর্থনীতি সামাল দিতে গিয়ে চাপে পড়েন।
২০২২ সালে সেনা হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়ে ইমরান ‘ডিপ স্টেট’-এর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। সেনাবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট সংগঠিত করে। এরপর শুরু হয় ধারাবাহিক মামলা, গ্রেপ্তার ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ২০২৩ সালে তিনি কারাবন্দী হন। অনেকের মতো থারুরও মনে করেন, ওই মামলার রায় ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া, জেলের পরিবেশ, দলের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন—এসব তাঁর বিচ্ছিন্নতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। বোনেরা জেলের বাইরে বিক্ষোভ করলে পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এখন তাঁর মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। কেউ বলছে, সামরিক গোয়েন্দা মহলের ভেতরকার একটি অংশ তাঁকে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে কোনো সরকারি বক্তব্য নেই। তবে এই নীরবতা রহস্য আরও গভীর করছে। যদি এটা সত্য হয়, তবে এটি পাকিস্তানের রাজনীতির ইতিহাসে আরও এক অন্ধকার অধ্যায় হয়ে থাকবে।
থারুর মনে করেন, ইমরানের জীবনের পরিসমাপ্তি পাকিস্তানের আরও এক জনপ্রিয় নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর পরিণতিরই প্রতিধ্বনি। তিনিও ভেবেছিলেন, সামরিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে যেতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য তাঁকে জীবন দিতে হয়েছিল।
থারুর জানান, তাঁর কাছে ইমরান থেকে যাবেন সেই মানুষ হিসেবে—যিনি ইসলামাবাদের হোটেলে এসে এক ঘণ্টা ধরে ইতিহাস নিয়ে কথা বলেছিলেন এবং রাজনীতির বাইরে একজন চিন্তাশীল, আবেগপ্রবণ ও দৃঢ় বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে।

জেলবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর পরিবার এখন ‘প্রুফ অব লাইফ’ দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে উত্তরণের সেই যাত্রা ও ব্যক্তিগত স্মৃতি তুলে ধরেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা, কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর।
ইমরান খান একসময় পাকিস্তানের সংস্কার ও জাতীয় পুনর্জাগরণের স্বপ্ন হিসেবে বিবেচিত হতেন। সেই মানুষটাই ২০২৩ সাল থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দী। ৭২ বছর বয়সী এই নেতাকে ঘিরে এখন গুজব ছড়িয়েছে—তাঁকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। তাঁর ছেলে কাসিম খান এখন বাবার জীবিত থাকার প্রমাণ ও মুক্তি দাবি করেছেন। এসব গুজব সত্য হলে এটি হবে এমন একটি জীবনের করুণ পরিসমাপ্তি, যে জীবন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের খ্যাতি, জাতীয় নেতৃত্ব এবং শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছিল।
১৯৫২ সালে লাহোরে সম্ভ্রান্ত পশতু পরিবারে জন্ম ইমরানের। লাহোরের অ্যাচিসন কলেজ, রয়্যাল গ্রামার স্কুল উর্সেস্টার ও অক্সফোর্ডের কেবল কলেজে শিক্ষাগ্রহণ। ৭০-এর দশকের শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ এবং ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক শিরোপা জয় তাঁকে ক্রিকেট-পুরাণের অমর নায়ক বানিয়ে দেয়।
কৌশল, দূরদর্শিতা ও দলকে এক সুতায় গেঁথে রাখার ক্ষমতা তাঁকে দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের মধ্যেও অসামান্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ক্রিকেট থেকে জনসেবায়
ক্রিকেট ছাড়ার পর তিনি গড়ে তোলেন শওকত খানম ক্যানসার হাসপাতাল। এটি তাঁর মায়ের স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম বৃহৎ ক্যানসার হাসপাতাল। সাধারণ মানুষের দানে পরিচালিত এই হাসপাতাল তাঁর জনপ্রিয়তা ও জন-আস্থারই প্রমাণ।
কিন্তু ইমরানের জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়টি পুরোপুরি রাজনীতিকে ঘিরে। ১৯৯৬ সালে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠা করলেও দলটি দীর্ঘ সময় প্রান্তিক পর্যায়ে ছিল। ২০১০ সালের পর থেকে তাঁর দুর্নীতিবিরোধী বার্তা, জাতীয় মর্যাদার প্রতিশ্রুতি এবং ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণা দেশজুড়ে তরুণদের মধ্যে অভূতপূর্ব সাড়া তোলে।
২০১৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু ‘নয়া পাকিস্তানের’ স্বপ্ন দেখালেও তাঁর শাসনকালজুড়ে ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা, কূটনৈতিক চাপ ও সেনাবাহিনীর শক্তিশালী প্রভাব—যা শেষ পর্যন্ত তাঁর পতনের কারণ হয়।
শশী থারুর তাঁর জীবনের তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইমরান খানকে দেখেছেন।
প্রথম পরিচয়—থারুর যখন জাতিসংঘে কর্মরত, তখন নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে ইমরান খানের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। থারুর বলেন, ইমরানের সহজ-সরল আচরণ ও সবার সঙ্গে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁকে মুগ্ধ করে।
দ্বিতীয় পর্যায়—ইমরান তখন অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটার হিসেবে নিয়মিত ভারতে আসতেন, বিভিন্ন টেলিভিশনে টক শোতে অংশ নিতেন। থারুরের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হতো। থারুর বলেন, ইমরান ছিলেন স্পষ্টভাষী, বুদ্ধিদীপ্ত এবং প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে আগ্রহী। ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনা সত্ত্বেও ভারতে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল অনেক, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে।
ইমরান খানের সঙ্গে শশী থারুরের সবচেয়ে স্মরণীয় সাক্ষাৎটি হয় ২০১৭ সালে ইসলামাবাদে এশিয়ান পার্লামেন্টারি সম্মেলনে। ইমরান তখন বিরোধী দলের নেতা। তিনি থারুরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান। নিরাপত্তার অজুহাতে পাকিস্তান সরকার থারুরকে হোটেলের বাইরে যেতে দেয়নি। তখন ইমরান নিজেই ছয়জন সহকর্মী নিয়ে হোটেলে যান।
থারুর বলেন, ‘আমাদের সাক্ষাৎটি রাজনৈতিক ছিল না—পুরোটা ছিল ইতিহাস নিয়ে। ইমরান আমার ‘‘An Era of Darkness’’ বই পুরোটা পড়েছেন। সেখান থেকে কিছু উদ্ধৃতি টেনে তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, মতামত দেন, উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য নিয়ে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি জানান। ইমরান আমাকে পাকিস্তানে এসে ইতিহাস নিয়ে বক্তৃতা দেওয়ার আমন্ত্রণও জানান। তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।’
থারুর আরও বলেন, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ক্ষমতায় এলেও ইমরান ছিলেন বৈপরীত্যের প্রতীক। ভারতের সঙ্গে শান্তি চান, কিন্তু সামরিক গোয়েন্দাব্যবস্থার সীমাবদ্ধতায় বাধাপ্রাপ্ত হন। দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান নিলেও নিজেই অভিযোগের মুখে পড়েন। অর্থনীতি সামাল দিতে গিয়ে চাপে পড়েন।
২০২২ সালে সেনা হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়ে ইমরান ‘ডিপ স্টেট’-এর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। সেনাবাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট সংগঠিত করে। এরপর শুরু হয় ধারাবাহিক মামলা, গ্রেপ্তার ও রাজনৈতিক অস্থিরতা। ২০২৩ সালে তিনি কারাবন্দী হন। অনেকের মতো থারুরও মনে করেন, ওই মামলার রায় ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া, জেলের পরিবেশ, দলের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন—এসব তাঁর বিচ্ছিন্নতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। বোনেরা জেলের বাইরে বিক্ষোভ করলে পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ ওঠে।
এখন তাঁর মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। কেউ বলছে, সামরিক গোয়েন্দা মহলের ভেতরকার একটি অংশ তাঁকে হত্যা করেছে। এ বিষয়ে কোনো সরকারি বক্তব্য নেই। তবে এই নীরবতা রহস্য আরও গভীর করছে। যদি এটা সত্য হয়, তবে এটি পাকিস্তানের রাজনীতির ইতিহাসে আরও এক অন্ধকার অধ্যায় হয়ে থাকবে।
থারুর মনে করেন, ইমরানের জীবনের পরিসমাপ্তি পাকিস্তানের আরও এক জনপ্রিয় নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর পরিণতিরই প্রতিধ্বনি। তিনিও ভেবেছিলেন, সামরিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে যেতে পারবেন। কিন্তু এর জন্য তাঁকে জীবন দিতে হয়েছিল।
থারুর জানান, তাঁর কাছে ইমরান থেকে যাবেন সেই মানুষ হিসেবে—যিনি ইসলামাবাদের হোটেলে এসে এক ঘণ্টা ধরে ইতিহাস নিয়ে কথা বলেছিলেন এবং রাজনীতির বাইরে একজন চিন্তাশীল, আবেগপ্রবণ ও দৃঢ় বিশ্বাসী মানুষ হিসেবে।

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি
১৬ অক্টোবর ২০২৫
গত দুই দশক ধরে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছিল ভেনেজুয়েলা। উদ্দেশ্য ছিল এমন এক নতুন আন্তর্জাতিক জোট গড়া, যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে পারবে।
৩ দিন আগে
২১ নভেম্বর দুবাই এয়ার শোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস এমকে-১-এর দুর্ঘটনার পর থেকেই এই প্রকল্পের দীর্ঘদিনের দুর্বলতাগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড...
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে, সেই প্রশ্ন এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণার পর ভারত থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

গত দুই দশক ধরে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছিল ভেনেজুয়েলা। উদ্দেশ্য ছিল এমন এক নতুন আন্তর্জাতিক জোট গড়া, যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে পারবে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চাপের মুখে পড়েও ভেনেজুয়েলার প্রধান মিত্ররা কার্যকর সহযোগিতা থেকে বিরত আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিনবিরোধী তথাকথিত ওই ‘স্বৈরশাসকদের জোট’ শান্তিকালে যতটা শক্তিশালী দেখায়, সংকটের সময় ততটাই দুর্বল। ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর বড় ধরনের মোতায়েনের পরও মিত্র দেশগুলো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বাস্তব সহায়তার বদলে শুধু রাজনৈতিক সমর্থন বা শুভেচ্ছা বার্তাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এর মধ্যে মাদুরোর জন্মদিনে নিকারাগুয়ার নেতা ড্যানিয়েল অর্টেগার পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তাটিকেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দৃশ্যমান সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে গত তিন মাসে ক্যারিবিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন বাহিনী একের পর এক নৌকাকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে। এই ধরনের হামলায় এখন পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ওয়াশিংটন দাবি করেছে—ওই নৌকাগুলো মাদক পরিবহন করছিল এবং এগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। তবে সমালোচকেরা এসব হামলাকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যেও অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যেও ভেনেজুয়েলার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর চুপ হয়ে থাকা অনেকের কাছেই অস্বাভাবিক ঠেকছে।
এ বিষয়ে রোববার (৩০ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার ঘনিষ্ঠ মিত্র কিউবা, ইরান ও নিকারাগুয়া নিজেদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে সামরিকভাবে কিছু করার দুঃসাহস দেখাতে পারছে না। আর অতীতে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলাকে সামরিক যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ ও অর্থ সহায়তা দিলেও এখন তাদেরও সীমাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার সামরিক ও আর্থিক সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে, আর চীনের দুর্বল অর্থনীতি তাকে উদার হতে দিচ্ছে না। তা ছাড়া উভয় দেশই বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সমঝোতা চায়। ফলে ভেনেজুয়েলার জন্য দেশ দুটি রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
এদিকে খবর পাওয়া গেছে, সম্প্রতি রাশিয়ার নিষিদ্ধ তেল বহনকারী দুই ট্যাংকার ভেনেজুয়েলায় হালকা ক্রুড ও ন্যাফথা সরবরাহ করেছে। এই দুটি ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি যথেষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি আরও সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে এই ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলো দিয়ে মাদুরোকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
একসময় মাদুরোর পূর্বসূরি ও ভেনেজুয়েলার শক্তিমান নেতা হুগো শাভেজ দেশের বিপুল তেলসম্পদকে কাজে লাগিয়ে চীন, কিউবা, ইরানসহ বহু দেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়েছিলেন। চীনের ব্যাংকগুলো ভেনেজুয়েলাকে অগণিত ঋণ দিয়েছিল, এর বিনিময়ে নিত তেল। কিউবা পাঠাত চিকিৎসক ও সামরিক বিশেষজ্ঞ, আর দেশটিতে ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল ইরান। কিন্তু মাদুরোর আমলে অর্থনীতি ভেঙে পড়ায় এসব সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে।
চীন এখনো ভেনেজুয়েলার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা ও তেলে ক্রেতা হলেও নতুন প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে। মূলত চীন এখন শুধু ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল নিয়ে পুরোনো ঋণ আদায় করছে। বিশ্লেষকেরা এই বিষয়টিকে ক্রেডিটর ট্র্যাপ’ হিসেবে দেখছেন—যেখানে ঋণগ্রহীতার নয়, বরং ঋণদাতার অবস্থাই বেশি বিপদসংকুল।
ভেনেজুয়েলার বিরোধী শিবিরের ধারণা—মাদুরো ক্ষমতাচ্যুত হলে চীনের স্বার্থও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হলে ভবিষ্যতে ভেনেজুয়েলার তেল সরাসরি ওয়াশিংটনের দিকেই প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমন বাস্তবতার মধ্যে চীন কত দিন চুপ থাকে সেটাই দেখার বিষয়।

গত দুই দশক ধরে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছিল ভেনেজুয়েলা। উদ্দেশ্য ছিল এমন এক নতুন আন্তর্জাতিক জোট গড়া, যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে পারবে। কিন্তু বর্তমান বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চাপের মুখে পড়েও ভেনেজুয়েলার প্রধান মিত্ররা কার্যকর সহযোগিতা থেকে বিরত আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিনবিরোধী তথাকথিত ওই ‘স্বৈরশাসকদের জোট’ শান্তিকালে যতটা শক্তিশালী দেখায়, সংকটের সময় ততটাই দুর্বল। ক্যারিবিয়ান সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর বড় ধরনের মোতায়েনের পরও মিত্র দেশগুলো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে বাস্তব সহায়তার বদলে শুধু রাজনৈতিক সমর্থন বা শুভেচ্ছা বার্তাতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এর মধ্যে মাদুরোর জন্মদিনে নিকারাগুয়ার নেতা ড্যানিয়েল অর্টেগার পাঠানো শুভেচ্ছা বার্তাটিকেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দৃশ্যমান সমর্থন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে গত তিন মাসে ক্যারিবিয়ান ও প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন বাহিনী একের পর এক নৌকাকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালাচ্ছে। এই ধরনের হামলায় এখন পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ওয়াশিংটন দাবি করেছে—ওই নৌকাগুলো মাদক পরিবহন করছিল এবং এগুলো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। তবে সমালোচকেরা এসব হামলাকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর মধ্যেও অস্বস্তি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যেও ভেনেজুয়েলার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর চুপ হয়ে থাকা অনেকের কাছেই অস্বাভাবিক ঠেকছে।
এ বিষয়ে রোববার (৩০ নভেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলার ঘনিষ্ঠ মিত্র কিউবা, ইরান ও নিকারাগুয়া নিজেদের অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে সামরিকভাবে কিছু করার দুঃসাহস দেখাতে পারছে না। আর অতীতে রাশিয়া ও চীন ভেনেজুয়েলাকে সামরিক যন্ত্রপাতি, প্রশিক্ষণ ও অর্থ সহায়তা দিলেও এখন তাদেরও সীমাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার সামরিক ও আর্থিক সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে, আর চীনের দুর্বল অর্থনীতি তাকে উদার হতে দিচ্ছে না। তা ছাড়া উভয় দেশই বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সমঝোতা চায়। ফলে ভেনেজুয়েলার জন্য দেশ দুটি রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
এদিকে খবর পাওয়া গেছে, সম্প্রতি রাশিয়ার নিষিদ্ধ তেল বহনকারী দুই ট্যাংকার ভেনেজুয়েলায় হালকা ক্রুড ও ন্যাফথা সরবরাহ করেছে। এই দুটি ভেনেজুয়েলার তেল উৎপাদনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি যথেষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি আরও সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে এই ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলো দিয়ে মাদুরোকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
একসময় মাদুরোর পূর্বসূরি ও ভেনেজুয়েলার শক্তিমান নেতা হুগো শাভেজ দেশের বিপুল তেলসম্পদকে কাজে লাগিয়ে চীন, কিউবা, ইরানসহ বহু দেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়েছিলেন। চীনের ব্যাংকগুলো ভেনেজুয়েলাকে অগণিত ঋণ দিয়েছিল, এর বিনিময়ে নিত তেল। কিউবা পাঠাত চিকিৎসক ও সামরিক বিশেষজ্ঞ, আর দেশটিতে ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল ইরান। কিন্তু মাদুরোর আমলে অর্থনীতি ভেঙে পড়ায় এসব সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে।
চীন এখনো ভেনেজুয়েলার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা ও তেলে ক্রেতা হলেও নতুন প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে। মূলত চীন এখন শুধু ভেনেজুয়েলার অপরিশোধিত তেল নিয়ে পুরোনো ঋণ আদায় করছে। বিশ্লেষকেরা এই বিষয়টিকে ক্রেডিটর ট্র্যাপ’ হিসেবে দেখছেন—যেখানে ঋণগ্রহীতার নয়, বরং ঋণদাতার অবস্থাই বেশি বিপদসংকুল।
ভেনেজুয়েলার বিরোধী শিবিরের ধারণা—মাদুরো ক্ষমতাচ্যুত হলে চীনের স্বার্থও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হলে ভবিষ্যতে ভেনেজুয়েলার তেল সরাসরি ওয়াশিংটনের দিকেই প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমন বাস্তবতার মধ্যে চীন কত দিন চুপ থাকে সেটাই দেখার বিষয়।

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি
১৬ অক্টোবর ২০২৫
জেলবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর পরিবার এখন ‘প্রুফ অব লাইফ’ দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে উত্তরণের সেই যাত্রা ও ব্যক্তিগত স্মৃতি তুলে ধরেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা, কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর।
২ দিন আগে
২১ নভেম্বর দুবাই এয়ার শোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস এমকে-১-এর দুর্ঘটনার পর থেকেই এই প্রকল্পের দীর্ঘদিনের দুর্বলতাগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড...
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে, সেই প্রশ্ন এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণার পর ভারত থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

২১ নভেম্বর দুবাই এয়ার শোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস এমকে-১-এর দুর্ঘটনার পর থেকেই এই প্রকল্পের দীর্ঘদিনের দুর্বলতাগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (এইচএএল) নির্মিত এই যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা নিয়ে দেশীয় সরকারি নিরীক্ষা সংস্থাগুলোর তোলা প্রশ্নগুলো নতুন করে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে।
দুবাইয়ে বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট উইং কমান্ডার নামাংশ শিয়াল-এর মৃত্যু হয়। দুবাই, প্যারিস এবং ফার্নবরোর পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এয়ার শোতে এই দুর্ঘটনা তেজসের সুনাম এবং রপ্তানির সম্ভাবনাকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার বেশ কিছু দেশ তেজস কেনার বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল বলে বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনার পর অনেক সম্ভাব্য ক্রেতা নীরব হয়ে গেছে। তারা বিকল্প খুঁজছে বলেও খবর এসেছে। এমনিতেই এইচএএল রপ্তানি আকর্ষণ করতে হিমশিম খাচ্ছিল; তার মধ্যে এই দুর্ঘটনায় সব সম্ভাবনা ফিকে হয়ে গেল।
তেজস কর্মসূচি, ১৯৮১ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) পুরোনো সোভিয়েত যুগের মিগ-২১ বিমান প্রতিস্থাপনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুরু হয়েছিল। তবে দীর্ঘসূত্রতায় ঝুলে যায়। বিমানটি তৈরি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এর ধারাবাহিক উৎপাদন ও গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ছিল পুরোনো। বিশ্লেষকদের মতে, দুর্ঘটনার পর এখন এই দীর্ঘদিনের ত্রুটিগুলো আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রে এসেছে।
তদন্তে সামনে এসেছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো দশকের পর দশক ধরে তেজস কর্মসূচির একাধিক ত্রুটি নিয়ে যে উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল, এই দুর্ঘটনা সেসব উদ্বেগকে নাটকীয়ভাবে জনসমক্ষে এনেছে। এইচএএল এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এই ত্রুটিগুলোকে এত দিন অভ্যন্তরীণ, সামাল দেওয়ার মতো সমস্যা হিসেবে গণ্য করলেও এখন সেগুলো আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রে এসেছে। একজন সাবেক এইচএএল কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, প্রথম প্রজন্মের, যুদ্ধে পরীক্ষিত নয়—এমন একটি বিমানের এমন মারাত্মক দুর্ঘটনা, সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার দুর্বলতা সব মিলিয়ে যে ভাবমূর্তি তৈরি হলো, তা ‘গুরুতর এবং সম্ভবত পুনরুদ্ধার করা কঠিন’।
সংসদীয় প্রতিরক্ষা কমিটি, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) এবং কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) মতো সংস্থাগুলো এলসিএর নকশা, উন্নয়ন থেকে শুরু করে ধারাবাহিক উৎপাদন পর্যন্ত এর সমস্যাসংকুল পথ নিয়ে নিয়মিতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে।
এর মধ্যে ২০২৩ সালের সিএজি নিরীক্ষায় তেজসের ‘নকশায় গুরুতর ত্রুটি’ এবং ‘প্রয়োজনীয় থ্রাস্ট (ধাক্কা) সম্পর্কে ভুল মূল্যায়ন’ তুলে ধরা হয়। ২০২১ সালের পিএসি কমিটি সামগ্রিকভাবে এলসিএ কর্মসূচির ‘ব্যাখ্যাহীন বিলম্ব’-এর জন্য তীব্র সমালোচনা করে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলা এই প্রকল্পের তদারকি সংস্থাগুলোর ‘বিশৃঙ্খল মনোভাব’ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের সমালোচনাও করা হয়।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এইচএএল, ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থার মধ্যে একটি ডেডিকেটেড এলসিএ লিয়াজোঁ গ্রুপের অনুপস্থিতির কারণে এমকে-১-এর সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায়নি। লিয়াজোঁ গ্রুপ বা পর্যবেক্ষক সংস্থা গঠনের জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও তা কার্যকর হয়নি।
এইচএএলের এই দুর্বলতার প্রমাণ মেলে এলসিএর অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্সেও। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বিমানবাহিনীর প্রথম তেজস এমকে-১ স্কোয়াড্রন—নম্বর ৪৫ ফ্লাইং ড্যাগার্স—গঠন করা হয়েছিল পাঁচ বছর দেরিতে। এই ১৮টি বিমান ‘প্রাথমিক অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স-২’ (আইওসি-২ )সহ কমিশন করা হয়েছিল। বোঝা যায়, এই প্রকল্পের উন্নয়ন ও সার্টিফিকেশনের বেশ চাপ ছিল। স্থানীয়ভাবে এটিকে ৫৩টি সনদে ‘ওয়েভার’ বা ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এর মধ্যে আবার ২০টি ছাড়পত্র স্থায়ী।
যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে আইওসি মানে বিমানটি উড্ডয়নের জন্য নিরাপদ হলেও তার যুদ্ধ সক্ষমতা সীমিত। অন্যদিকে ফাইনাল অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স (এফওসি) দিয়ে বোঝানো হয় বিমানটির সম্পূর্ণ মিশন প্রস্তুতি, পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র সংযোজন এবং কার্যকারিতার মান নিশ্চিত করা হয়েছে। শুধু দ্বিতীয় এমকে-১ স্কোয়াড্রন (নম্বর ১৮ ফ্লাইং বুলেটস) এফওসি মানসম্পন্ন বিমান পেয়েছিল।
দুবাই দুর্ঘটনার আগে ২০২৪ সালের মার্চে জয়সালমিরে যে তেজস বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটির প্রাথমিক অনুসন্ধানে ‘তেল ব্যবস্থার ত্রুটি, যার ফলে ইঞ্জিন বিকল’—অর্থাৎ একটি উৎপাদনজনিত ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছিল। এই ধরনের দুর্ঘটনা উৎপাদন মান এবং গুণমান নিয়ন্ত্রণে এইচএএলের দুর্বলতাকে বারবার সামনে এনেছে।
দীর্ঘদিন ধরে এইচএএলের উৎপাদন গতি নিয়ে বিমানবাহিনী অসন্তুষ্ট। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং প্রকাশ্যে এইচএএলের ধীরগতির সমালোচনা করে বলেছিলেন যে তিনি এইচএএলের ওপর ‘আস্থাশীল নন’।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমস্যাটি মূলত দুটি সংস্থার ‘ভিন্ন ভাষায় কথা বলার’ মধ্যেই নিহিত: বিমানবাহিনী কাজ করে অপারেশনাল মোডে—যা মিশন প্রস্তুতি, সময়সীমা এবং ফ্লাইট নিরাপত্তার মতো বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত, আর এইচএএল চলে ‘ফাইল মোডে’, অর্থাৎ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং কাগজপত্রের টেবিল পরিবর্তনে সময়ক্ষেপণ হয়। এই সাংস্কৃতিক অমিল বারবার সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটিয়েছে এবং জরুরি অপারেশনাল উদ্বেগগুলোকে দ্রুত মোকাবিলা করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ছাড়াও এইচএএলের বৃহত্তম গ্রাহক হওয়া সত্ত্বেও তাদের বোর্ডে বিমানবাহিনীর স্থায়ী কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। ফলে সংস্থাটির উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সরাসরি অপারেশনাল মতামত দেওয়ার মতো কোনো প্রতিনিধি এইচএএল পায়নি।
দুবাইয়ের দুর্ঘটনা এইচএএলের ২০০৮-০৯ সালের প্রথম রপ্তানি উদ্যোগের কথা মনে করিয়ে দেয়। সে সময় ইকুয়েডরের বিমানবাহিনীর কাছে বিক্রি করা সাতটি ধ্রুব অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টারের মধ্যে চারটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, যার ফলে ২০১৫ সালে চুক্তি বাতিল হয়। ইকুয়েডর অভিযোগ করেছিল, বিক্রয়-পরবর্তী সহায়তার অভাব এবং খুচরা যন্ত্রাংশের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি ছিল দুর্ঘটনার কারণ। এই ঘটনা বিশ্ব সামরিক বিমান শিল্প মহলে এইচএএলের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং গ্রাহক প্রতিক্রিয়ায় ঘাটতিই তুলে ধরে।
দুবাইয়ের এই দুর্ঘটনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার প্রতিবেদনগুলো এইচএএলের বৈশ্বিক বিশ্বাসযোগ্যতা হুমকির মুখে ফেলেছে। ভারতের প্রথম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তেজসের বিষয়ে সম্ভাব্য ক্রেতারা এখন কেবল মুখের কথায় ভরসা রাখতে পারবে না। ভারতকে তার সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।

২১ নভেম্বর দুবাই এয়ার শোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস এমকে-১-এর দুর্ঘটনার পর থেকেই এই প্রকল্পের দীর্ঘদিনের দুর্বলতাগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (এইচএএল) নির্মিত এই যুদ্ধবিমানের কার্যকারিতা নিয়ে দেশীয় সরকারি নিরীক্ষা সংস্থাগুলোর তোলা প্রশ্নগুলো নতুন করে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে।
দুবাইয়ে বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট উইং কমান্ডার নামাংশ শিয়াল-এর মৃত্যু হয়। দুবাই, প্যারিস এবং ফার্নবরোর পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম এয়ার শোতে এই দুর্ঘটনা তেজসের সুনাম এবং রপ্তানির সম্ভাবনাকে বড় ধাক্কা দিয়েছে। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার বেশ কিছু দেশ তেজস কেনার বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল বলে বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু দুর্ঘটনার পর অনেক সম্ভাব্য ক্রেতা নীরব হয়ে গেছে। তারা বিকল্প খুঁজছে বলেও খবর এসেছে। এমনিতেই এইচএএল রপ্তানি আকর্ষণ করতে হিমশিম খাচ্ছিল; তার মধ্যে এই দুর্ঘটনায় সব সম্ভাবনা ফিকে হয়ে গেল।
তেজস কর্মসূচি, ১৯৮১ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) পুরোনো সোভিয়েত যুগের মিগ-২১ বিমান প্রতিস্থাপনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুরু হয়েছিল। তবে দীর্ঘসূত্রতায় ঝুলে যায়। বিমানটি তৈরি হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু এর ধারাবাহিক উৎপাদন ও গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ছিল পুরোনো। বিশ্লেষকদের মতে, দুর্ঘটনার পর এখন এই দীর্ঘদিনের ত্রুটিগুলো আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রে এসেছে।
তদন্তে সামনে এসেছে, ভারতের অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো দশকের পর দশক ধরে তেজস কর্মসূচির একাধিক ত্রুটি নিয়ে যে উদ্বেগ জানিয়ে আসছিল, এই দুর্ঘটনা সেসব উদ্বেগকে নাটকীয়ভাবে জনসমক্ষে এনেছে। এইচএএল এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এই ত্রুটিগুলোকে এত দিন অভ্যন্তরীণ, সামাল দেওয়ার মতো সমস্যা হিসেবে গণ্য করলেও এখন সেগুলো আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রে এসেছে। একজন সাবেক এইচএএল কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, প্রথম প্রজন্মের, যুদ্ধে পরীক্ষিত নয়—এমন একটি বিমানের এমন মারাত্মক দুর্ঘটনা, সেই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার দুর্বলতা সব মিলিয়ে যে ভাবমূর্তি তৈরি হলো, তা ‘গুরুতর এবং সম্ভবত পুনরুদ্ধার করা কঠিন’।
সংসদীয় প্রতিরক্ষা কমিটি, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) এবং কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (সিএজি) মতো সংস্থাগুলো এলসিএর নকশা, উন্নয়ন থেকে শুরু করে ধারাবাহিক উৎপাদন পর্যন্ত এর সমস্যাসংকুল পথ নিয়ে নিয়মিতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে।
এর মধ্যে ২০২৩ সালের সিএজি নিরীক্ষায় তেজসের ‘নকশায় গুরুতর ত্রুটি’ এবং ‘প্রয়োজনীয় থ্রাস্ট (ধাক্কা) সম্পর্কে ভুল মূল্যায়ন’ তুলে ধরা হয়। ২০২১ সালের পিএসি কমিটি সামগ্রিকভাবে এলসিএ কর্মসূচির ‘ব্যাখ্যাহীন বিলম্ব’-এর জন্য তীব্র সমালোচনা করে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলা এই প্রকল্পের তদারকি সংস্থাগুলোর ‘বিশৃঙ্খল মনোভাব’ এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের সমালোচনাও করা হয়।
নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এইচএএল, ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থার মধ্যে একটি ডেডিকেটেড এলসিএ লিয়াজোঁ গ্রুপের অনুপস্থিতির কারণে এমকে-১-এর সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায়নি। লিয়াজোঁ গ্রুপ বা পর্যবেক্ষক সংস্থা গঠনের জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও তা কার্যকর হয়নি।
এইচএএলের এই দুর্বলতার প্রমাণ মেলে এলসিএর অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্সেও। ২০১৬ সালের জুলাই মাসে বিমানবাহিনীর প্রথম তেজস এমকে-১ স্কোয়াড্রন—নম্বর ৪৫ ফ্লাইং ড্যাগার্স—গঠন করা হয়েছিল পাঁচ বছর দেরিতে। এই ১৮টি বিমান ‘প্রাথমিক অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স-২’ (আইওসি-২ )সহ কমিশন করা হয়েছিল। বোঝা যায়, এই প্রকল্পের উন্নয়ন ও সার্টিফিকেশনের বেশ চাপ ছিল। স্থানীয়ভাবে এটিকে ৫৩টি সনদে ‘ওয়েভার’ বা ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এর মধ্যে আবার ২০টি ছাড়পত্র স্থায়ী।
যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রে আইওসি মানে বিমানটি উড্ডয়নের জন্য নিরাপদ হলেও তার যুদ্ধ সক্ষমতা সীমিত। অন্যদিকে ফাইনাল অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স (এফওসি) দিয়ে বোঝানো হয় বিমানটির সম্পূর্ণ মিশন প্রস্তুতি, পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র সংযোজন এবং কার্যকারিতার মান নিশ্চিত করা হয়েছে। শুধু দ্বিতীয় এমকে-১ স্কোয়াড্রন (নম্বর ১৮ ফ্লাইং বুলেটস) এফওসি মানসম্পন্ন বিমান পেয়েছিল।
দুবাই দুর্ঘটনার আগে ২০২৪ সালের মার্চে জয়সালমিরে যে তেজস বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, সেটির প্রাথমিক অনুসন্ধানে ‘তেল ব্যবস্থার ত্রুটি, যার ফলে ইঞ্জিন বিকল’—অর্থাৎ একটি উৎপাদনজনিত ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছিল। এই ধরনের দুর্ঘটনা উৎপাদন মান এবং গুণমান নিয়ন্ত্রণে এইচএএলের দুর্বলতাকে বারবার সামনে এনেছে।
দীর্ঘদিন ধরে এইচএএলের উৎপাদন গতি নিয়ে বিমানবাহিনী অসন্তুষ্ট। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং প্রকাশ্যে এইচএএলের ধীরগতির সমালোচনা করে বলেছিলেন যে তিনি এইচএএলের ওপর ‘আস্থাশীল নন’।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমস্যাটি মূলত দুটি সংস্থার ‘ভিন্ন ভাষায় কথা বলার’ মধ্যেই নিহিত: বিমানবাহিনী কাজ করে অপারেশনাল মোডে—যা মিশন প্রস্তুতি, সময়সীমা এবং ফ্লাইট নিরাপত্তার মতো বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত, আর এইচএএল চলে ‘ফাইল মোডে’, অর্থাৎ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং কাগজপত্রের টেবিল পরিবর্তনে সময়ক্ষেপণ হয়। এই সাংস্কৃতিক অমিল বারবার সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ঘটিয়েছে এবং জরুরি অপারেশনাল উদ্বেগগুলোকে দ্রুত মোকাবিলা করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ছাড়াও এইচএএলের বৃহত্তম গ্রাহক হওয়া সত্ত্বেও তাদের বোর্ডে বিমানবাহিনীর স্থায়ী কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। ফলে সংস্থাটির উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সরাসরি অপারেশনাল মতামত দেওয়ার মতো কোনো প্রতিনিধি এইচএএল পায়নি।
দুবাইয়ের দুর্ঘটনা এইচএএলের ২০০৮-০৯ সালের প্রথম রপ্তানি উদ্যোগের কথা মনে করিয়ে দেয়। সে সময় ইকুয়েডরের বিমানবাহিনীর কাছে বিক্রি করা সাতটি ধ্রুব অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টারের মধ্যে চারটি বিধ্বস্ত হয়েছিল, যার ফলে ২০১৫ সালে চুক্তি বাতিল হয়। ইকুয়েডর অভিযোগ করেছিল, বিক্রয়-পরবর্তী সহায়তার অভাব এবং খুচরা যন্ত্রাংশের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি ছিল দুর্ঘটনার কারণ। এই ঘটনা বিশ্ব সামরিক বিমান শিল্প মহলে এইচএএলের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং গ্রাহক প্রতিক্রিয়ায় ঘাটতিই তুলে ধরে।
দুবাইয়ের এই দুর্ঘটনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার প্রতিবেদনগুলো এইচএএলের বৈশ্বিক বিশ্বাসযোগ্যতা হুমকির মুখে ফেলেছে। ভারতের প্রথম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তেজসের বিষয়ে সম্ভাব্য ক্রেতারা এখন কেবল মুখের কথায় ভরসা রাখতে পারবে না। ভারতকে তার সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে।

ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি
১৬ অক্টোবর ২০২৫
জেলবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর পরিবার এখন ‘প্রুফ অব লাইফ’ দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে উত্তরণের সেই যাত্রা ও ব্যক্তিগত স্মৃতি তুলে ধরেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা, কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর।
২ দিন আগে
গত দুই দশক ধরে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছিল ভেনেজুয়েলা। উদ্দেশ্য ছিল এমন এক নতুন আন্তর্জাতিক জোট গড়া, যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে পারবে।
৩ দিন আগে
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে, সেই প্রশ্ন এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণার পর ভারত থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে, সেই প্রশ্ন এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণার পর ভারত থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে। এ নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছে ঢাকা। তবে দিল্লি এখনো কোনো পরিষ্কার অবস্থান জানায়নি।
সর্বশেষ গত বুধবার দিল্লি জানিয়েছে, তারা হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি ‘পরীক্ষা’ করছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার ‘হিস্ট্রি ইলাস্ট্রেটেড’ নামে একটি ফটো স্টোরিতে শেখ হাসিনার বিগত ১৭ বছরের শাসনামলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘ সময় প্রভাব বিস্তার করা শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থা এক কথায় জটিল। একসময় তিনি ছিলেন গণতন্ত্রপন্থী নেতা, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি। পরবর্তী সময় তিনি রূপ নেন একজন কর্তৃত্ববাদী নেতায়, যাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য হাসিনাকে এ শাস্তি দেওয়া হয় এবং বাংলাদেশের অনেকেই মনে করেন, এই অপরাধে হাসিনার ফাঁসি হওয়া উচিত।










বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে, সেই প্রশ্ন এখন বিশ্বজুড়ে আলোচিত। তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশ ঘোষণার পর ভারত থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে। এ নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছে ঢাকা। তবে দিল্লি এখনো কোনো পরিষ্কার অবস্থান জানায়নি।
সর্বশেষ গত বুধবার দিল্লি জানিয়েছে, তারা হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়টি ‘পরীক্ষা’ করছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার ‘হিস্ট্রি ইলাস্ট্রেটেড’ নামে একটি ফটো স্টোরিতে শেখ হাসিনার বিগত ১৭ বছরের শাসনামলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘ সময় প্রভাব বিস্তার করা শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থা এক কথায় জটিল। একসময় তিনি ছিলেন গণতন্ত্রপন্থী নেতা, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি। পরবর্তী সময় তিনি রূপ নেন একজন কর্তৃত্ববাদী নেতায়, যাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। সম্প্রতি তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য হাসিনাকে এ শাস্তি দেওয়া হয় এবং বাংলাদেশের অনেকেই মনে করেন, এই অপরাধে হাসিনার ফাঁসি হওয়া উচিত।










ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি
১৬ অক্টোবর ২০২৫
জেলবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ঘিরে রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর পরিবার এখন ‘প্রুফ অব লাইফ’ দাবি করছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট তারকা থেকে রাজনীতিতে উত্তরণের সেই যাত্রা ও ব্যক্তিগত স্মৃতি তুলে ধরেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা, কূটনীতিক ও লেখক শশী থারুর।
২ দিন আগে
গত দুই দশক ধরে রাশিয়া, চীন, কিউবা, ইরানের মতো যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হয়ে উঠতে চেয়েছিল ভেনেজুয়েলা। উদ্দেশ্য ছিল এমন এক নতুন আন্তর্জাতিক জোট গড়া, যা ওয়াশিংটনের প্রভাবকে মোকাবিলা করতে পারবে।
৩ দিন আগে
২১ নভেম্বর দুবাই এয়ার শোতে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান (এলসিএ) তেজস এমকে-১-এর দুর্ঘটনার পর থেকেই এই প্রকল্পের দীর্ঘদিনের দুর্বলতাগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে। দুর্ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড...
৪ দিন আগে