আল জাজিরার বিশ্লেষণ
আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে ইতিহাস গড়েছে রাশিয়া। ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর এটিই প্রথম কোনো দেশের স্বীকৃতি। অতীতে এই গোষ্ঠীর সঙ্গে তীব্র শত্রুতা থাকলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলে এবং এবার সেই সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক মর্যাদা দিল।
তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘রাশিয়ার এই সাহসী পদক্ষেপকে আমরা মূল্যায়ন করি। ইনশা আল্লাহ, এটি অন্য দেশগুলোর জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
শত্রুতা থেকে সহযোগিতা
১৯৭৯ সালে সোভিয়েত সেনারা আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালিয়ে একটি কমিউনিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। এরপর ১০ বছরের যুদ্ধে আফগান মুজাহিদদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ১৫ হাজার সোভিয়েত সেনা প্রাণ হারায়। ১৯৯২ সালে কাবুলে রুশ দূতাবাস রকেট হামলার শিকার হলে মস্কো তাদের কূটনৈতিক মিশন বন্ধ করে দেয়।
সোভিয়েত-সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহকে ১৯৯৬ সালে কাবুলে জাতিসংঘ ভবনে আশ্রয় নেওয়া অবস্থায় তালেবান হত্যা করে। এরপর ’৯০-এর দশকে রাশিয়া আহমদ শাহ মাসুদের নেতৃত্বাধীন নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে তালেবানের বিরুদ্ধে সমর্থন দেয়।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন জর্জ বুশকে সহানুভূতি জানিয়ে তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে সাহায্য করেন। এরপর ২০০৩ সালে রাশিয়া তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তানে আইএস-খোরাসান (আইএসআইএস-কে) নামক গোষ্ঠীর উত্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে রাশিয়া তালেবানের প্রতি নরম হতে থাকে। ইসলামিক স্টেট খোরাসানকে শত্রু হিসেবে দেখে তালেবান। ২০২৪ সালের মার্চে মস্কোতে এক কনসার্ট হলে আইএস-খোরাসানের হামলায় ১৪৯ জন নিহত হলে রাশিয়া তালেবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়।
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে রাশিয়া তালেবানের ‘সন্ত্রাসী’ তকমা তুলে নেয় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘আফগানিস্তানের নতুন সরকার বাস্তবতা; আমাদের উচিত আদর্শবাদ নয়, বাস্তববাদী নীতি গ্রহণ করা।’
অন্যান্য দেশের অবস্থান
চীন—২০১৯ সালেই চীন তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। ২০২৩ সালে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিএনপিসি তালেবান সরকারের সঙ্গে ২৫ বছরের তেল উত্তোলন চুক্তি করে। ২০২৪ সালে চীন তালেবান মুখপাত্র বিলাল কারিমকে দূত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তবে তারা এখনো তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
পাকিস্তান—একসময়ের প্রধান সমর্থক হলেও এখন প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, তালেবান সরকার পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দিচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তান আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশে বিমান হামলা চালায়, যাতে ৪৬ আফগান নাগরিক নিহত হয় বলে দাবি করে কাবুল।
ভারত—অতীতে তালেবানকে পাকিস্তানের হাতিয়ার মনে করলেও, এখন ভারত সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দুবাইয়ে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর মে মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও মুত্তাকির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
ইরান—ভারত-রাশিয়ার মতো ১৯৯০-এর দশক থেকে তালেবানদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক খারাপ ছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে তালেবান কিছু ইরানি কূটনীতিককে হত্যা করায় সম্পর্ক চরমে পৌঁছায়। তখন থেকে ইরানও আইএস-খোরাসানকে বড় হুমকি মনে করে। তবে গত মে মাসের ১৭ তারিখ মুত্তাকি তেহরান ডায়ালগ ফোরামে অংশ নেন এবং ইরানের রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পথে।
এরপর আর কোন দেশ তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে?
বিশ্লেষকদের মতে, তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিক থেকে মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ এবং চীন হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপকারী। ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর কবীর তানেজা আল জাজিরাকে বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কৌশলগত ও নিরাপত্তার স্বার্থে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এ স্বীকৃতি স্বেচ্ছায় নয়, বরং বাস্তবতার চাপ।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার স্বীকৃতি কাবুলে তাদের প্রভাব দৃঢ় করেছে। এটি তালেবানের জন্য আন্তর্জাতিক মর্যাদার দিক থেকেও বড় বিজয়।’
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে ইতিহাস গড়েছে রাশিয়া। ২০২১ সালে তালেবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর এটিই প্রথম কোনো দেশের স্বীকৃতি। অতীতে এই গোষ্ঠীর সঙ্গে তীব্র শত্রুতা থাকলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলে এবং এবার সেই সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক মর্যাদা দিল।
তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘রাশিয়ার এই সাহসী পদক্ষেপকে আমরা মূল্যায়ন করি। ইনশা আল্লাহ, এটি অন্য দেশগুলোর জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
শত্রুতা থেকে সহযোগিতা
১৯৭৯ সালে সোভিয়েত সেনারা আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালিয়ে একটি কমিউনিস্ট সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। এরপর ১০ বছরের যুদ্ধে আফগান মুজাহিদদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ১৫ হাজার সোভিয়েত সেনা প্রাণ হারায়। ১৯৯২ সালে কাবুলে রুশ দূতাবাস রকেট হামলার শিকার হলে মস্কো তাদের কূটনৈতিক মিশন বন্ধ করে দেয়।
সোভিয়েত-সমর্থিত আফগান প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহকে ১৯৯৬ সালে কাবুলে জাতিসংঘ ভবনে আশ্রয় নেওয়া অবস্থায় তালেবান হত্যা করে। এরপর ’৯০-এর দশকে রাশিয়া আহমদ শাহ মাসুদের নেতৃত্বাধীন নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে তালেবানের বিরুদ্ধে সমর্থন দেয়।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে হামলার পর রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন জর্জ বুশকে সহানুভূতি জানিয়ে তালেবানবিরোধী লড়াইয়ে সাহায্য করেন। এরপর ২০০৩ সালে রাশিয়া তালেবানকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফগানিস্তানে আইএস-খোরাসান (আইএসআইএস-কে) নামক গোষ্ঠীর উত্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে রাশিয়া তালেবানের প্রতি নরম হতে থাকে। ইসলামিক স্টেট খোরাসানকে শত্রু হিসেবে দেখে তালেবান। ২০২৪ সালের মার্চে মস্কোতে এক কনসার্ট হলে আইএস-খোরাসানের হামলায় ১৪৯ জন নিহত হলে রাশিয়া তালেবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায়।
২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে রাশিয়া তালেবানের ‘সন্ত্রাসী’ তকমা তুলে নেয় এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘আফগানিস্তানের নতুন সরকার বাস্তবতা; আমাদের উচিত আদর্শবাদ নয়, বাস্তববাদী নীতি গ্রহণ করা।’
অন্যান্য দেশের অবস্থান
চীন—২০১৯ সালেই চীন তালেবানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। ২০২৩ সালে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিএনপিসি তালেবান সরকারের সঙ্গে ২৫ বছরের তেল উত্তোলন চুক্তি করে। ২০২৪ সালে চীন তালেবান মুখপাত্র বিলাল কারিমকে দূত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তবে তারা এখনো তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।
পাকিস্তান—একসময়ের প্রধান সমর্থক হলেও এখন প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক উত্তপ্ত। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে, তালেবান সরকার পাকিস্তানবিরোধী জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দিচ্ছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তান আফগানিস্তানের পাকতিয়া প্রদেশে বিমান হামলা চালায়, যাতে ৪৬ আফগান নাগরিক নিহত হয় বলে দাবি করে কাবুল।
ভারত—অতীতে তালেবানকে পাকিস্তানের হাতিয়ার মনে করলেও, এখন ভারত সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি দুবাইয়ে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর মে মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও মুত্তাকির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
ইরান—ভারত-রাশিয়ার মতো ১৯৯০-এর দশক থেকে তালেবানদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক খারাপ ছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে তালেবান কিছু ইরানি কূটনীতিককে হত্যা করায় সম্পর্ক চরমে পৌঁছায়। তখন থেকে ইরানও আইএস-খোরাসানকে বড় হুমকি মনে করে। তবে গত মে মাসের ১৭ তারিখ মুত্তাকি তেহরান ডায়ালগ ফোরামে অংশ নেন এবং ইরানের রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পথে।
এরপর আর কোন দেশ তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে?
বিশ্লেষকদের মতে, তালেবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিক থেকে মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ এবং চীন হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপকারী। ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর কবীর তানেজা আল জাজিরাকে বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশগুলো কৌশলগত ও নিরাপত্তার স্বার্থে তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এ স্বীকৃতি স্বেচ্ছায় নয়, বরং বাস্তবতার চাপ।’
তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার স্বীকৃতি কাবুলে তাদের প্রভাব দৃঢ় করেছে। এটি তালেবানের জন্য আন্তর্জাতিক মর্যাদার দিক থেকেও বড় বিজয়।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন, তিনি লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সিকে (সিআইএ) অনুমোদন দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস প্রথমে খবরটি প্রকাশ করে। তারা জানায়, মার্কিন প্রশাসনের কৌশল মূলত
৩ ঘণ্টা আগেইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর আর্থিক শক্তি অনেকটাই তাদের তেলের ওপর নির্ভরশীল। আর রাশিয়ার এই তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারত। বর্তমানে ভারতের মোট অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ আসে রাশিয়া থেকে। ওয়াশিংটনের যুক্তি, রাশিয়ার তেল আমদানি বন্ধ হলে মস্কোর আর্থিক সামর্থ্য কমবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চাপ সৃষ্টি
১৬ ঘণ্টা আগেকিন্তু এখন সেই সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এ সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানি বিমানবাহিনী কাবুলে হামলা চালিয়েছে। দুই পক্ষের পারস্পরিক প্রত্যাশার অমিল এবং একে অপরের সামর্থ্যের প্রতি অসম্মান—এই দুই কারণে আগের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে পড়ছে।
২১ ঘণ্টা আগেগাজায় হত্যাযজ্ঞ অন্তত সাময়িকভাবে বন্ধ হয়েছে। ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দী ব্যক্তিদের বিনিময় শুরু হয়েছে এবং ত্রাণ সহায়তাও এখন কিছুটা সহজে পৌঁছাতে পারছে বিপর্যস্ত গাজার মানুষের কাছে। এর জন্য আমরা সবাই কৃতজ্ঞ হতেই পারি। স্বাভাবিকভাবেই, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প...
১ দিন আগে