অর্ণব সান্যাল
শনিবারের দিনটাই শুরু হয়েছিল ফাহিরের ফোন দিয়ে। অফিসের কাজেই কেজো কথা। একটা সংবাদ কীভাবে দেওয়া হবে, আদৌ দেওয়া হবে কি না, তা-ই জানতে চেয়েছিলেন ফাহির। সেই কথা শেষের ঠিক ১০ মিনিট পর কর্মস্থলে ঢুকে দেখি, কাজটা হয়ে গেছে।
ফাহির এমনই ছিলেন। কাজ পেলে তাতে দায়িত্বের কোনো ঘাটতি কখনোই ঘটতে দেননি। ২৪ বছর বয়সী এই সাংবাদিকের পোশাকি নাম মো. ফখরুল ইসলাম ভূঁঞা। আমরা, তাঁর সহকর্মীরা অবশ্য তাঁকে ফাহির ফখরুল হিসেবেই চিনতাম। ছিল আরও নানা ডাকনাম, সবাই ভালোবেসেই দিয়েছিল। ভালো না বাসলে কি আর ডাকনামে ডাকা যায়?
সব ডাকনামকে অর্থহীন বানিয়ে ফাহির চলে গেছেন। শনিবার বিকেলে অকস্মাৎ হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। সেদিন সকাল ৮টায় অফিসে এসেছিলেন ফাহির। সারা দিন স্বাভাবিক নিয়মেই দায়িত্ব পালন করেন। বেলা ৩টার পর তিনি অফিস থেকে বাসায় চলে যান। মোহাম্মদপুরের বাসায় ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলেও ফাহিরকে ফেরানো যায়নি।
এই লেখাটি যখন লিখছি, তখনো ভাবছি—ফাহির কি সত্যিই চলে গেছে? এখনো একটা ঘোর চারপাশে বর্তমান। বোধ হচ্ছে, এই হয়তো কেউ বলবে—‘ফাহির কাল সকালে ডিউটিতে আছে।’ এই কথাটা শোনার আকাঙ্ক্ষা মন থেকে যাচ্ছেই না। কারণ, ফাহির ডিউটিতে থাকলেই যে, কাল সকালে অফিসে আসার সময় আমার মোবাইল ফোন বেজে ওঠার একটা ক্ষীণ আশা থেকে যায়। ফোনের সেই স্ক্রিনে আবার ভেসে উঠতে পারে ‘ফাহির’ নামটি। হয়তো বলে উঠবে, ‘ভাই, এই নিউজটা কি দিব?’
ফাহিরের মৃত্যুসংবাদ কানে এসেছিল তাঁকে শেষ দেখার ১০০ মিনিট পর। সহকর্মী সবাই ছুটে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো সংবাদটি লিখতে মন সায় দিচ্ছিল না। আশা ছিল, এই বুঝি কেউ ফোন করে জানাবে ফাহির আছে। কিন্তু শেষতক সম্পাদনা করতে হলো ‘সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম ভূঁঞা মারা গেছেন’ শীর্ষক সংবাদটি। ফাহিরের ছবি বাছাইও করতে হলো। ছবি দেখতে দেখতে আবারও বুকে বাজল অবিশ্বাসের সুর। এত হাসি-খুশি একটা ছেলে এখন আর হাসবে না? অফিসে দুষ্টুমি করে বকুনি খাওয়ার ভয়ে নিজেকে লুকাবে না?
এর চেয়ে লুকানোর চেষ্টা করলেই ভালো হতো, ফাহির। অন্তত খুঁজে বের করা তো যেত!
ফাহির অফিস থেকে একটু আগে বের হয়েছিল গতকাল। হাসিমুখে অনুমতি চেয়ে বলেছিল, ‘ভাই, আমি একটু যাই? আজ একটা কাজ আছে।’ অনুমতি পেয়ে আবার এ-ও জানিয়ে আশ্বস্ত করেছিল যে অফিসের কাজের সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট সহকর্মীকে সে বলে-কয়ে একটু আগেই আনিয়েছে।
কিন্তু ফাহিরের সেই ‘একটু যাই’ যে চিরদিনের তরে হবে, সেটি কি আর আমরা জানতাম! ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারলে নিশ্চয় যেতেই দিতাম না।
সেই থেকে ক্ষণে ক্ষণে ভাবনারা জানাচ্ছে, ‘ইশ্, যদি ফাহিরকে ছুটি না দিতাম!’ তবে হয়তো ফাহির অসুস্থ হলে তাঁকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টায় হাত লাগাতে পারতাম। প্রিয়জন চলে গেলে তো এমনই বোধ হয় বারবার। কত আফসোসেরা এসে ভিড় জমায় তখন!
ফাহির আর আসবেন না। কিন্তু তাঁর হাসিমুখ মনে থাকবে চিরকাল। মিথ্যে কথার এই শহরে অমন নিষ্পাপ হাসি আর কজন দিতে পারে!
ভালো থাকবেন, ফাহির। ফোন দেবেন, প্লিজ। অপেক্ষায় রইলাম।
শনিবারের দিনটাই শুরু হয়েছিল ফাহিরের ফোন দিয়ে। অফিসের কাজেই কেজো কথা। একটা সংবাদ কীভাবে দেওয়া হবে, আদৌ দেওয়া হবে কি না, তা-ই জানতে চেয়েছিলেন ফাহির। সেই কথা শেষের ঠিক ১০ মিনিট পর কর্মস্থলে ঢুকে দেখি, কাজটা হয়ে গেছে।
ফাহির এমনই ছিলেন। কাজ পেলে তাতে দায়িত্বের কোনো ঘাটতি কখনোই ঘটতে দেননি। ২৪ বছর বয়সী এই সাংবাদিকের পোশাকি নাম মো. ফখরুল ইসলাম ভূঁঞা। আমরা, তাঁর সহকর্মীরা অবশ্য তাঁকে ফাহির ফখরুল হিসেবেই চিনতাম। ছিল আরও নানা ডাকনাম, সবাই ভালোবেসেই দিয়েছিল। ভালো না বাসলে কি আর ডাকনামে ডাকা যায়?
সব ডাকনামকে অর্থহীন বানিয়ে ফাহির চলে গেছেন। শনিবার বিকেলে অকস্মাৎ হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। সেদিন সকাল ৮টায় অফিসে এসেছিলেন ফাহির। সারা দিন স্বাভাবিক নিয়মেই দায়িত্ব পালন করেন। বেলা ৩টার পর তিনি অফিস থেকে বাসায় চলে যান। মোহাম্মদপুরের বাসায় ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলেও ফাহিরকে ফেরানো যায়নি।
এই লেখাটি যখন লিখছি, তখনো ভাবছি—ফাহির কি সত্যিই চলে গেছে? এখনো একটা ঘোর চারপাশে বর্তমান। বোধ হচ্ছে, এই হয়তো কেউ বলবে—‘ফাহির কাল সকালে ডিউটিতে আছে।’ এই কথাটা শোনার আকাঙ্ক্ষা মন থেকে যাচ্ছেই না। কারণ, ফাহির ডিউটিতে থাকলেই যে, কাল সকালে অফিসে আসার সময় আমার মোবাইল ফোন বেজে ওঠার একটা ক্ষীণ আশা থেকে যায়। ফোনের সেই স্ক্রিনে আবার ভেসে উঠতে পারে ‘ফাহির’ নামটি। হয়তো বলে উঠবে, ‘ভাই, এই নিউজটা কি দিব?’
ফাহিরের মৃত্যুসংবাদ কানে এসেছিল তাঁকে শেষ দেখার ১০০ মিনিট পর। সহকর্মী সবাই ছুটে যাওয়ার পর তাঁর মৃত্যুর খবর জানানো সংবাদটি লিখতে মন সায় দিচ্ছিল না। আশা ছিল, এই বুঝি কেউ ফোন করে জানাবে ফাহির আছে। কিন্তু শেষতক সম্পাদনা করতে হলো ‘সাংবাদিক ফখরুল ইসলাম ভূঁঞা মারা গেছেন’ শীর্ষক সংবাদটি। ফাহিরের ছবি বাছাইও করতে হলো। ছবি দেখতে দেখতে আবারও বুকে বাজল অবিশ্বাসের সুর। এত হাসি-খুশি একটা ছেলে এখন আর হাসবে না? অফিসে দুষ্টুমি করে বকুনি খাওয়ার ভয়ে নিজেকে লুকাবে না?
এর চেয়ে লুকানোর চেষ্টা করলেই ভালো হতো, ফাহির। অন্তত খুঁজে বের করা তো যেত!
ফাহির অফিস থেকে একটু আগে বের হয়েছিল গতকাল। হাসিমুখে অনুমতি চেয়ে বলেছিল, ‘ভাই, আমি একটু যাই? আজ একটা কাজ আছে।’ অনুমতি পেয়ে আবার এ-ও জানিয়ে আশ্বস্ত করেছিল যে অফিসের কাজের সুবিধার জন্য সংশ্লিষ্ট সহকর্মীকে সে বলে-কয়ে একটু আগেই আনিয়েছে।
কিন্তু ফাহিরের সেই ‘একটু যাই’ যে চিরদিনের তরে হবে, সেটি কি আর আমরা জানতাম! ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারলে নিশ্চয় যেতেই দিতাম না।
সেই থেকে ক্ষণে ক্ষণে ভাবনারা জানাচ্ছে, ‘ইশ্, যদি ফাহিরকে ছুটি না দিতাম!’ তবে হয়তো ফাহির অসুস্থ হলে তাঁকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টায় হাত লাগাতে পারতাম। প্রিয়জন চলে গেলে তো এমনই বোধ হয় বারবার। কত আফসোসেরা এসে ভিড় জমায় তখন!
ফাহির আর আসবেন না। কিন্তু তাঁর হাসিমুখ মনে থাকবে চিরকাল। মিথ্যে কথার এই শহরে অমন নিষ্পাপ হাসি আর কজন দিতে পারে!
ভালো থাকবেন, ফাহির। ফোন দেবেন, প্লিজ। অপেক্ষায় রইলাম।
পঞ্চদশ শতকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য বাংলাদেশে এসেছিলেন সুফিসাধক হজরত বদরউদ্দিন শাহ্ মাদার। তিনি ফরিদপুর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বরিশাল যাওয়ার পথে জল-জঙ্গলপূর্ণ একটি স্থানে এসে উপস্থিত হন। এরপর পদ্মার শাখা আড়িয়াল খাঁ নদের দক্ষিণ তীরে নিজের আস্তানা গড়ে তোলেন।
৪ দিন আগেলালমনিরহাটের পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস মৌজায় মজদের আড়া নামে একটি পতিত জঙ্গল ছিল। স্থানীয় ভাষায় ‘আড়া’ মানে জঙ্গলময় স্থান। ১৯৮৫ সালে স্থানীয়রা আড়াটি পরিষ্কার করে চাষাবাদের উদ্যোগ নেয়। ওই সময় মাটি খুঁড়ে সমতল করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ফুলেল নকশার প্রচুর প্রাচীন ইট।
৮ দিন আগে...সাধারণ মানুষের অসীম দুঃখ-দুর্দশা আর বুর্জোয়া শাসকশ্রেণির অন্তর্গত কুৎসিত ক্ষমতালিপ্সা ও প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতি উচ্ছেদ করার নির্মম কর্মকাণ্ড দেখার পর, যেকোনো পরিণত কিশোর কোনো না কোনো প্রগতিশীল বামপন্থী রাজনৈতিক ভাবাদর্শের প্রতি আকৃষ্ট হবে—সমসাময়িক কালে সেটাই নিতান্ত স্বাভাবিক ছিল।
৯ দিন আগে২০০১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাত্র কয়েক ঘণ্টায় অ্যানা কুর্নিকোভা ভাইরাসটি তৈরি করেন নেদারল্যান্ডসের এক তরুণ, জান ডে উইট। ভাইরাসটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার কিছু দিন পর তিনি বুঝতে পারেন—তাঁর তৈরি এই ভাইরাস অনেক মানুষকে বিপদে ফেলেছে এবং বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করেছে। তখন তিনি বিষয়টি বাবা-মাকে জানান এবং নিজেই
১১ দিন আগে