Ajker Patrika

হুমায়ুন আজাদের লেখালেখি

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

এমএ পড়ার সময় আমি কবিতা লিখেছি, প্রবন্ধ লিখেছি; কিন্তু কোনো গোষ্ঠীতে যোগ দিইনি। আমি দেখেছি কবি হওয়ার জন্যেও সাহিত্যিক রাজনীতি লাগে, বিভিন্ন সংঘে যোগ দিতে হয়, গুরু ধরতে হয়, অনেকের কাছে খুব বিনীত থাকতে হয়, লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে গাঁজাটাজা খেতে হয়, বেশ্যাবাড়ি যেতে হয়—আমি এসব করিনি। ‘কবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ’-এর কিছু বিবরণ আছে।

আমি অনেক প্রবন্ধ লেখেছি, সাহিত্য সমালোচনা করেছি, অকপটে আমার মতামত প্রকাশ করেছি। তাই এমএ ক্লাসে উঠতে না উঠতেই আমার অনেক শত্রু তৈরি হয়ে গিয়েছিল। আর এখন তো তাদের অভাব নেই। আমার একটি প্রবন্ধের জন্য খুব খেপেছিলেন হাসান হাফিজুর রহমান। যেহেতু আমি তাঁর কবিতাকে ঠিক কবিতা বলে স্বীকার করিনি। শহীদ কাদরীর ‘উত্তরাধিকার’-এ আমিই প্রথম আলোচনা লিখেছিলাম, বেশ দীর্ঘ সমালোচনা, বেরিয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান লেখক সংঘের ‘পরিক্রম’ পত্রিকায়। অনেক প্রশংসা করেছিলাম, তবে একটু সমালোচনাও ছিল, তাতেই খেপে গিয়েছিলেন কাদরী।

এমএ পরীক্ষা দেওয়ার পর টাকাপয়সার দরকার হলো, কেননা তখন বৃত্তি বন্ধ হয়ে গেছে। ইত্তেফাকের দাদাভাইকে ব্যাপারটি বললাম।...তিনি আমাকে সাহিত্যের পাতায় প্রতি সংখ্যায় কিছু লিখতে বললেন। আমি ‘জর্নাল’ নামে একটি কলাম লেখা শুরু করলাম। ওটি ছিল পুরোপুরি সাহিত্য নিয়ে লেখা কলাম। খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। শত্রুও সৃষ্টি হয়েছিল অনেক। তখন ‘ললনা’ নামে নারীদের একটা সাপ্তাহিক বেরোতো, তাতে নারীদের ছদ্মনামে সাধারণত লিখত পুরুষ লেখকেরাই। সেখানে ‘লুনা অরবিটা’ নামে একজন নিয়মিতভাবে আমাকে গালাগালি দিত। ওই ‘লুনা অরবিটা’ কে, তা আমি পরে জেনেছিলাম। ওই লুনা অরবিটারা এখন প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে গেছে...

সূত্র: এই বাঙলার সক্রেটিস, জামাল উদ্দিন ও শরীফা বুলবুল সম্পাদিত, পৃষ্ঠা-৪২-৪৩

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত