Ajker Patrika

মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ

সম্পাদকীয়
Thumbnail image
মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ ছিলেন সমাজসংস্কারক। তিনি বহুবিধ জনকল্যাণকর কাজের মধ্যে আজীবন নিজেকে নিযুক্ত রেখেছিলেন। যদিও মেহেরুল্লাহ পেশায় ছিলেন একজন দরজি। জ্ঞান অন্বেষণের প্রবল ইচ্ছাশক্তির কারণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর নিজগৃহ ত্যাগ করেন। এরপর স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠেন।

পরবর্তী সময়ে তিনি বিশ্ববরেণ্য কবি শেখ সাদীর ‘পান্দেনামা’, ‘গুলিস্তা’ ও ‘বুস্তা’ গ্রন্থ পড়েন এবং তার ওপর বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তিনি পান্দেনামা গ্রন্থটি অনুবাদও করেছিলেন।

মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ ১৮৬১ সালের ২৬ ডিসেম্বর বর্তমান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ঘোপ গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।

মেহেরুল্লাহ মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যুগোপযোগী চিন্তাভাবনা পরিপক্ব করার জন্য পত্রিকার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন।

এরপর তিনি কলকাতা থেকে প্রকাশিত সুধাকর, ইসলাম প্রচারক, মিহিরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন তাঁদের মধ্যে জাগরণ তৈরির জন্য।

মুনশী মেহেরুল্লাহ তাঁর পাশের গ্রাম মনোহরপুরে মুসলিম সম্প্রদায়কে শিক্ষিত করার জন্য ‘মাদ্রাসায়ে কারামাতিয়া’ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। যেটা বর্তমানে তাঁর স্মৃতির স্মরণে ‘মুনশী মেহেরুল্লাহ একাডেমি’ নামে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এ ছাড়া তিনি ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ১৮৮৯ সালে ‘ইসলাম ধর্মোত্তেজিকা সভা’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।

মুনশী মেহেরুল্লাহকে বলা হয় মুসলমানদের রামমোহন রায়। কেননা, রাজা রামমোহন রায় উনিশ শতকের প্রথমে হিন্দু সম্প্রদায়কে জাগিয়ে তুলে বিভিন্ন কুসংস্কার দূর করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তেমনি উনিশ শতকের শেষের দিকে মুনশী মেহেরুল্লাহ কুসংস্কারাচ্ছন্ন মুসলমানদের মুক্ত করতে কাজ করেছিলেন।

তাঁর লেখা ১০টির মতো পুস্তকের সন্ধান পাওয়া যায়। এর মধ্যে ‘খ্রিষ্টধর্মের অসারতা’ ও ‘রদ্দে খ্রিষ্টান’ বই দুটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত। এ ছাড়া ‘হিন্দুধর্ম রহস্য ও দেবলীলা’, ‘বিধবা গঞ্জনা’, ‘বিষাদ ভান্ডার’, ‘মেহেরুল এসলাম’, ‘মুসলমান ও খ্রিষ্টান তর্কযুদ্ধ’ বইগুলো সমাজে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল।

১৯০৭ সালের ৭ জুন তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত