কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’
কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুনতে মোবাইল ফোনের নম্বর টিপেই ফেললাম। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল, ‘হ্যালো।’ বুঝলাম, বাংলাদেশের ওয়ান অ্যান্ড অনলি রাণী হামিদ অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন গেলেও সেটা রিসিভ করেন। নিজের কথা সবিস্তারে বললাম তাঁকে। বললাম নিজের ইচ্ছার কথাও। খুব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ‘ফোনে কথা বললে হয় না? এখন আর সাক্ষাৎকার দিতে ভালো লাগে না যে!’ কথা যেভাবেই হোক, বললেই চলবে। আমি রাজি হয়ে গেলাম। তিনি নামাজের জন্য কিছু সময় চেয়ে নিলেন।
মধ্যবর্তী এই সময়গুলোতে মনে মনে তাঁকে করার মতো কিছু প্রশ্ন খুঁজতে থাকলাম। কিন্তু হাতি, ঘোড়া মেরে, মন্ত্রী-সান্ত্রি উড়িয়ে রাজার সঙ্গে টক্কর দিয়ে যিনি কিস্তিমাত করেছেন, তাঁকে কুপোকাত করার মতো কোনো প্রশ্ন যে আমার কাছে নেই, সেটা ভেবে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। ‘যাক বাবা’ বলে সময়মতো আবারও তাঁর মোবাইল ফোনে কল দিলাম। ধরেই বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বলো!’ অর্বাচীনের মতো জানতে চাইলাম, ‘কেন দাবা খেলা বেছে নিয়েছিলেন?’ খুবই সাবলীল হাসি হেসে বললেন, ‘জানি না তো! ছোটবেলায় আমার বাবাকে দেখতাম অনেক খেলাধুলা করতেন। পুলিশ ছিলেন তো। অনেক ধরনের খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি দাবা খেলতেন। বাবাকে খুব প্রশ্ন করতাম তখন। এটা কীভাবে হয়, ওই চালটা কেমন। অবসরে ভাইবোনদের সঙ্গে খেলতাম। এভাবেই দাবার প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয় ছোটবেলা থেকে। কিন্তু তখন কেউ দাবা খেলত না। স্কুলে অবশ্য আমি দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।’ জানতে চাইলাম, ‘তাহলে ছোটবেলা থেকেই…।’ কথার পিঠেই বলে উঠলেন, ‘না না! আমি যে আমলের কথা বলছি, তখন মেয়েদের দাবা খেলার প্রচলনই ছিল না এ দেশে। আমি খেলা শুরু করেছি বিয়ের পর।’
এরপর খুব উৎফুল্ল কণ্ঠে রাণী হামিদ বলে গেলেন তাঁর গৃহিণী থেকে দাবার রাণী হয়ে ওঠার গল্প। বলে গেলেন দাবার চৌষট্টি খোপের বোর্ডটাকে জীবনের সঙ্গে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে কীভাবে হয়ে উঠলেন দাবার রানি। মজা করে বলেন, ‘আমি তো নির্ভেজাল একজন হাউস ওয়াইফ ছিলাম, যার মাথায় সারাক্ষণ সংসার আর বাচ্চা ছিল। দাবা যে খেলব, এটার কোনো চিন্তাই ছিল না মাথায়।’
১৮ বছর বয়সে বিয়ে হওয়ার পর স্বামী আর চার সন্তান নিয়ে ছিল রাণীর নিজের ভুবন। একবার মেয়ে স্কুল থেকে ফিরে জানাল, তার বান্ধবীর বাবা অনেক বড় দাবাড়ু। রাণী শুনে হাসির ছলেই মেয়েকে বলেছিলেন, ‘একদিন আমার সঙ্গে খেলতে বলিস, দেখব কত ভালো দাবাড়ু।’ সেই বান্ধবীর বাবা ছিলেন ওই সময়ের বিখ্যাত দাবাড়ু ড. আকমল হোসেন। তাঁর সঙ্গে এক দান খেলে রাণী বুঝেছিলেন, দাবার অনেক কিছুই আরও বুঝতে হবে তাঁকে। এরপর আকমল হোসেনের কাছেই দাবা শিখতে শুরু করেন। ১৯৭৭ সালে নবদিগন্ত সংসদ নামের একটি ক্লাবের দাবা প্রতিযোগিতায় হয়ে যান চ্যাম্পিয়ন। সেখান থেকে নতুন জীবন শুরু হয় এক সাধারণ গৃহিণীর।
কথার মাঝে জানতে চাইলাম, ‘নির্ভেজাল গৃহিণী ছিলেন, তাহলে দাবার মতো একটা খেলা খেলবেন বলে ভাবলেন কেন?’ খুব সাদামাটা উত্তর এল, ‘অনেকেই বলেন, দাবা বুদ্ধির খেলা, ধৈর্যের খেলা। কিন্তু আমার কাছে দাবা একটা মজার খেলা। এটা খেলে আমি আনন্দ পাই। অনেক কিছু করে ফেলব ভেবে খেলা শুরু করিনি। খেলতে খেলতে খেলাটা শিখে নিয়েছি। দাবার প্রতি ভালোবাসা বাবার খেলা দেখে। তাই উত্তরাধিকারসূত্রে বাবার কিছু নেওয়ার বেলায় তাঁর রেখে যাওয়া দাবার বোর্ডটাই দখল করেছিলাম আমি।’ আবার একটু হেসে নিলেন আপন মনে। তাঁর স্বচ্ছ আর নিপাট কথাবার্তা আমাকে অনেক বেশি সহজ করে ফেলেছিল ততক্ষণে। জানতে চাইলাম, ‘সেই ১৯৭৭ সাল থেকে খেলছেন, কত বড় বড় রেকর্ড করেছেন ব্যক্তিগতভাবে। দেশের হয়ে অনেকবার খেলেছেন, সম্মান বয়ে এনেছেন। এসব ভাবলে কী মনে হয়?’ এবার নরম, তবে কিছুটা হতাশামাখা কণ্ঠে উত্তর এল, ‘আমি যখন খেলা শুরু করলাম, তখন জানতামই না, বই পড়ে দাবা খেলতে হয়। মেয়েদের দেখতাম হাতে করে বই নিয়ে আসত। তখন তাদের দেখে আমিও পড়তাম ওই বইগুলো। ধীরে ধীরে নিজেকে গড়লাম। সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে খেলাটাই ছিল ধ্যানজ্ঞান। যা অর্জন করেছি, সব অবশ্যই গর্বের। এত কিছু ভেবে করিনি।’
দেশে নারীদের দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে রাণী হামিদের নাম উচ্চারিত হয়। জানতে চাইলাম, তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে খেলার পরিবেশ আর এখনকার পরিবেশের ভিন্নতা কোথায়। প্রশ্ন শুনে একটু সময় নিলেন। বললেন, দেখো, পরিবেশ তো বদলেছেই। আগের দিনে দাবা খেলার পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে যে আড্ডাটা হতো, তা এখন অনেকটাই হয়ে ওঠে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আর মোবাইল ফোনই আড্ডার ক্ষেত্রটা দখল করে নিয়েছে। তবে আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে এখন। আমরা খুব কম ট্রেনিংয়ে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আজকালকার বাচ্চারা এই সুযোগগুলো পাচ্ছে, স্পনসর পাচ্ছে। খেলতে বাইরে যাচ্ছে। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলেই ভালো করা সম্ভব।’
এবার উল্টো প্রশ্ন ভেসে এল, ‘আর কিছু জানতে চাও?’ তাঁর এমন প্রশ্ন আমাকে মনে করিয়ে দিল, আমি এবার বোধ হয় বেশি সময় নিয়ে নিচ্ছি। ঝটপট বলে ফেললাম নিজের আবেগের কথা। একজন মানুষ যিনি ৩৩ বছর বয়স থেকে দাবার ঘুঁটির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারা আমার জন্য অনেক আনন্দের হতো। এ কথা বলায় আবারও নিপাট হাসি হেসে রাণী হামিদ বললেন, ‘সামনে সেপ্টেম্বরেই একটা টুর্নামেন্ট আছে। চলে এসো, সেখানে দেখা করব। চলে এসো!’ একটা সরল আহ্বান আবারও বুঝিয়ে দিল, দাবা আসলেই মজার খেলা। চালের মারপ্যাঁচ থাকলেও তা কারও অভিব্যক্তি কিংবা ব্যক্তিগত জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে না। এত অর্জনের পরেও রাণী হামিদ একজন সরল মানুষ। যিনি স্বপ্ন দেখেন, আরও খেলবেন। বলছিলেন, ‘বয়সের কারণে অনেক ওষুধ খেতে হয়। একেক ওষুধের একেক পাওয়ার। তবে যত দিন মস্তিষ্ক সচল থাকবে, আমি খেলে যাব।’

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৭ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৭ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৭ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৭ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৭ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৭ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

কিছু মানুষের নাম শুনলেই মনের কোণে ভেসে ওঠে নানান গল্প। কারণ, সেই সব মানুষের গল্প এতবার এতভাবে পড়া হয়েছে যে সেগুলো এখন জীবন্ত হয়ে গেছে। কিন্তু বহুশ্রুত সেই সব গল্পও যদি চরিত্রটির মুখ থেকে শোনার সুযোগ আসে, নিজেকে ধন্য মনে হয়। এবার তেমনই একটি সুযোগ এলে হৃৎকম্প বেড়ে গেল। ধমনির রক্তস্রোতের শব্দ শুনতে শুন
২৬ জুলাই ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
৪ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৭ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭ দিন আগে