ডা. ফারজানা রহমান

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
শুধু সহপাঠী নয়, খবরটি শিক্ষকদের জন্যও খুব আকস্মিক আর হৃদয়বিদারক ছিল। ধীরে ধীরে জানা গেল, মা-বাবার কলহের কারণেই দিন দিন মানসিক অবসাদে ভুগছিল মেয়েটি। তাই সপ্তম শ্রেণির কিশোরী মারিয়া নিজেকেই মা-বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়েছিল চিরতরে।
তবে চন্দনার (ছদ্মনাম) ঘটনাটি ভিন্ন। উনিশ বছর বয়সে নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে পরিবারের মতেই আংটিবদল হয়েছিল তাঁর। এরপর বিয়ের জন্য অপেক্ষা। দেড় বছরের মাথায় কোনো এক বিষয়ে দুজনের মধ্যে কলহ হয়। রাগের মাথায় চন্দনার হবু স্বামী আত্মহত্যা করেন।
পরদিন সকালে চন্দনার ঘুম ভাঙে দুঃসংবাদে—তাঁর প্রিয় মানুষটি আর নেই। এরপর পোস্টমর্টেম, থানা, পুলিশ। বারবার পুলিশের জেরার মুখে পড়ে নিজের শোককে সরিয়ে রাখতে হয়েছে জবানবন্দির আড়ালে। সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি চন্দনা। সাত দিন অচেতন থেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এখন জীবনকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। ২১ বছরের সেই দুঃস্বপ্নের মতো সময়গুলো ২৮ বছর বয়সেও তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে।
এমন অনেক ঘটনাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের আশপাশে। পৃথিবীতে প্রতি আট সেকেন্ডে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। অথচ আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু। আত্মহত্যার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, বিশ্বব্যাপী, জাতীয় এবং আঞ্চলিকভাবে সংকটে থাকা ব্যক্তিদের আরও সহায়তা করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা উচিত।
আর তাই ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একযোগে দিবসটি পালনে কাজ করছে।
কিছু পরিসংখ্যান
অনেক কিছুর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে যোগ হয়েছে সাইবার নিরাপত্তাহীনতা। আধুনিকায়ন, শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। লিঙ্গনির্বিশেষে ব্ল্যাকমেলের শিকার হলেও এর বড় অংশে আছে বিভিন্ন বয়সের নারীরা। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা- ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ইউনিটে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়ে ৩৪ হাজার ৬০৫টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৯২।
লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এই বিশাল সংখ্যার নারীর অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীদের এই উচ্চ হার জানিয়ে দিচ্ছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করছে ব্যাপক মাত্রায়।
এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৯ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ জন, ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন এবং যৌতুকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন নারী।
আত্মহত্যার কারণ
বেকারত্ব, হতাশা, বিচ্ছেদ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব—এগুলো আত্মহত্যার সামাজিক কারণ। এটি বেশি দেখা দেয় কৃষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। পরিবারে আত্মহত্যা ও মানসিক রোগের ইতিহাস থাকলে এর ঝুঁকি বাড়ে।
জেনেটিক বা বংশগতির সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ রয়েছে। আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে, এ রকম মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামের হরমোন বা নিউরোট্রান্সমিটারের স্বল্পতা দেখা যায়। সাধারণত এককভাবে আত্মহত্যা হলেও কখনো কখনো দলগতভাবে, ধর্মীয় রীতি পালনের অংশ হিসেবেও এটি করা হয়ে থাকে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরী ও বিবাহিত নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার প্রবণতার কারণগুলো হয় বিবাহবিচ্ছেদ বা দাম্পত্য কলহ, সম্পর্কের জটিলতা, পারিবারিক সহিংসতা, লেখাপড়ার খারাপ ফল, মা-বাবা কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্ব, মনোমালিন্য, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি।
আত্মহত্যার ঝুঁকিপূর্ণ নির্দেশক
আত্মহত্যার পারিবারিক ইতিহাস, পারিবারিক অশান্তি, সহিংসতা, অবহেলিত শৈশব-কৈশোর,
মানসিক-শারীরিক ও যৌন নির্যাতন, দারিদ্র্য, একাকিত্ব, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও নিজের মানসিক রোগ, বিশেষ করে বিষণ্নতা, সিজোফ্রেনিয়া, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের সমস্যা।
প্রতিরোধের উপায়
আত্মহত্যা যারা করে, করতে চায় বা পরিকল্পনা করে, তারা কিন্তু তাদের এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে থাকে বিভিন্নভাবে। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। আত্মহত্যার প্রবণতা মেডিকেল ও সাইকিয়াট্রিক ইমার্জেন্সি।
রোগী যদি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়, তাহলে তার সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে। যেমন বিষপান, ফাঁসি, পানিতে ডুবে যাওয়া, ওপর থেকে লাফ দেওয়া—এগুলোর কারণ যা-ই হোক, রোগীকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি তাকে অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্ট বা মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে।
চিকিৎসা, ওষুধ সেবন, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপির মাধ্যমে সঠিক কারণ অনুসন্ধানই পারে একজন মানুষকে নতুন জীবন দিতে। তবে আত্মহত্যা প্রতিরোধে শুধু ওই মানুষ, তার পরিবার ও চিকিৎসক সম্পৃক্ত হলেই হবে না, এর দায়িত্ব সরকার, রাষ্ট্র এবং এর সঙ্গে যুক্ত পুরো সিস্টেমকে নিতে হবে।
ডা. ফারজানা রহমান, সহযোগী অধ্যাপক , মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
শুধু সহপাঠী নয়, খবরটি শিক্ষকদের জন্যও খুব আকস্মিক আর হৃদয়বিদারক ছিল। ধীরে ধীরে জানা গেল, মা-বাবার কলহের কারণেই দিন দিন মানসিক অবসাদে ভুগছিল মেয়েটি। তাই সপ্তম শ্রেণির কিশোরী মারিয়া নিজেকেই মা-বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়েছিল চিরতরে।
তবে চন্দনার (ছদ্মনাম) ঘটনাটি ভিন্ন। উনিশ বছর বয়সে নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে পরিবারের মতেই আংটিবদল হয়েছিল তাঁর। এরপর বিয়ের জন্য অপেক্ষা। দেড় বছরের মাথায় কোনো এক বিষয়ে দুজনের মধ্যে কলহ হয়। রাগের মাথায় চন্দনার হবু স্বামী আত্মহত্যা করেন।
পরদিন সকালে চন্দনার ঘুম ভাঙে দুঃসংবাদে—তাঁর প্রিয় মানুষটি আর নেই। এরপর পোস্টমর্টেম, থানা, পুলিশ। বারবার পুলিশের জেরার মুখে পড়ে নিজের শোককে সরিয়ে রাখতে হয়েছে জবানবন্দির আড়ালে। সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি চন্দনা। সাত দিন অচেতন থেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এখন জীবনকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। ২১ বছরের সেই দুঃস্বপ্নের মতো সময়গুলো ২৮ বছর বয়সেও তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে।
এমন অনেক ঘটনাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের আশপাশে। পৃথিবীতে প্রতি আট সেকেন্ডে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। অথচ আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু। আত্মহত্যার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, বিশ্বব্যাপী, জাতীয় এবং আঞ্চলিকভাবে সংকটে থাকা ব্যক্তিদের আরও সহায়তা করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা উচিত।
আর তাই ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একযোগে দিবসটি পালনে কাজ করছে।
কিছু পরিসংখ্যান
অনেক কিছুর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে যোগ হয়েছে সাইবার নিরাপত্তাহীনতা। আধুনিকায়ন, শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। লিঙ্গনির্বিশেষে ব্ল্যাকমেলের শিকার হলেও এর বড় অংশে আছে বিভিন্ন বয়সের নারীরা। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা- ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ইউনিটে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়ে ৩৪ হাজার ৬০৫টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৯২।
লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এই বিশাল সংখ্যার নারীর অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীদের এই উচ্চ হার জানিয়ে দিচ্ছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করছে ব্যাপক মাত্রায়।
এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৯ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ জন, ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন এবং যৌতুকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন নারী।
আত্মহত্যার কারণ
বেকারত্ব, হতাশা, বিচ্ছেদ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব—এগুলো আত্মহত্যার সামাজিক কারণ। এটি বেশি দেখা দেয় কৃষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। পরিবারে আত্মহত্যা ও মানসিক রোগের ইতিহাস থাকলে এর ঝুঁকি বাড়ে।
জেনেটিক বা বংশগতির সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ রয়েছে। আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে, এ রকম মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামের হরমোন বা নিউরোট্রান্সমিটারের স্বল্পতা দেখা যায়। সাধারণত এককভাবে আত্মহত্যা হলেও কখনো কখনো দলগতভাবে, ধর্মীয় রীতি পালনের অংশ হিসেবেও এটি করা হয়ে থাকে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরী ও বিবাহিত নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার প্রবণতার কারণগুলো হয় বিবাহবিচ্ছেদ বা দাম্পত্য কলহ, সম্পর্কের জটিলতা, পারিবারিক সহিংসতা, লেখাপড়ার খারাপ ফল, মা-বাবা কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্ব, মনোমালিন্য, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি।
আত্মহত্যার ঝুঁকিপূর্ণ নির্দেশক
আত্মহত্যার পারিবারিক ইতিহাস, পারিবারিক অশান্তি, সহিংসতা, অবহেলিত শৈশব-কৈশোর,
মানসিক-শারীরিক ও যৌন নির্যাতন, দারিদ্র্য, একাকিত্ব, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও নিজের মানসিক রোগ, বিশেষ করে বিষণ্নতা, সিজোফ্রেনিয়া, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের সমস্যা।
প্রতিরোধের উপায়
আত্মহত্যা যারা করে, করতে চায় বা পরিকল্পনা করে, তারা কিন্তু তাদের এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে থাকে বিভিন্নভাবে। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। আত্মহত্যার প্রবণতা মেডিকেল ও সাইকিয়াট্রিক ইমার্জেন্সি।
রোগী যদি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়, তাহলে তার সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে। যেমন বিষপান, ফাঁসি, পানিতে ডুবে যাওয়া, ওপর থেকে লাফ দেওয়া—এগুলোর কারণ যা-ই হোক, রোগীকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি তাকে অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্ট বা মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে।
চিকিৎসা, ওষুধ সেবন, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপির মাধ্যমে সঠিক কারণ অনুসন্ধানই পারে একজন মানুষকে নতুন জীবন দিতে। তবে আত্মহত্যা প্রতিরোধে শুধু ওই মানুষ, তার পরিবার ও চিকিৎসক সম্পৃক্ত হলেই হবে না, এর দায়িত্ব সরকার, রাষ্ট্র এবং এর সঙ্গে যুক্ত পুরো সিস্টেমকে নিতে হবে।
ডা. ফারজানা রহমান, সহযোগী অধ্যাপক , মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট
ডা. ফারজানা রহমান

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
শুধু সহপাঠী নয়, খবরটি শিক্ষকদের জন্যও খুব আকস্মিক আর হৃদয়বিদারক ছিল। ধীরে ধীরে জানা গেল, মা-বাবার কলহের কারণেই দিন দিন মানসিক অবসাদে ভুগছিল মেয়েটি। তাই সপ্তম শ্রেণির কিশোরী মারিয়া নিজেকেই মা-বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়েছিল চিরতরে।
তবে চন্দনার (ছদ্মনাম) ঘটনাটি ভিন্ন। উনিশ বছর বয়সে নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে পরিবারের মতেই আংটিবদল হয়েছিল তাঁর। এরপর বিয়ের জন্য অপেক্ষা। দেড় বছরের মাথায় কোনো এক বিষয়ে দুজনের মধ্যে কলহ হয়। রাগের মাথায় চন্দনার হবু স্বামী আত্মহত্যা করেন।
পরদিন সকালে চন্দনার ঘুম ভাঙে দুঃসংবাদে—তাঁর প্রিয় মানুষটি আর নেই। এরপর পোস্টমর্টেম, থানা, পুলিশ। বারবার পুলিশের জেরার মুখে পড়ে নিজের শোককে সরিয়ে রাখতে হয়েছে জবানবন্দির আড়ালে। সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি চন্দনা। সাত দিন অচেতন থেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এখন জীবনকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। ২১ বছরের সেই দুঃস্বপ্নের মতো সময়গুলো ২৮ বছর বয়সেও তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে।
এমন অনেক ঘটনাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের আশপাশে। পৃথিবীতে প্রতি আট সেকেন্ডে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। অথচ আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু। আত্মহত্যার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, বিশ্বব্যাপী, জাতীয় এবং আঞ্চলিকভাবে সংকটে থাকা ব্যক্তিদের আরও সহায়তা করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা উচিত।
আর তাই ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একযোগে দিবসটি পালনে কাজ করছে।
কিছু পরিসংখ্যান
অনেক কিছুর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে যোগ হয়েছে সাইবার নিরাপত্তাহীনতা। আধুনিকায়ন, শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। লিঙ্গনির্বিশেষে ব্ল্যাকমেলের শিকার হলেও এর বড় অংশে আছে বিভিন্ন বয়সের নারীরা। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা- ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ইউনিটে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়ে ৩৪ হাজার ৬০৫টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৯২।
লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এই বিশাল সংখ্যার নারীর অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীদের এই উচ্চ হার জানিয়ে দিচ্ছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করছে ব্যাপক মাত্রায়।
এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৯ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ জন, ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন এবং যৌতুকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন নারী।
আত্মহত্যার কারণ
বেকারত্ব, হতাশা, বিচ্ছেদ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব—এগুলো আত্মহত্যার সামাজিক কারণ। এটি বেশি দেখা দেয় কৃষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। পরিবারে আত্মহত্যা ও মানসিক রোগের ইতিহাস থাকলে এর ঝুঁকি বাড়ে।
জেনেটিক বা বংশগতির সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ রয়েছে। আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে, এ রকম মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামের হরমোন বা নিউরোট্রান্সমিটারের স্বল্পতা দেখা যায়। সাধারণত এককভাবে আত্মহত্যা হলেও কখনো কখনো দলগতভাবে, ধর্মীয় রীতি পালনের অংশ হিসেবেও এটি করা হয়ে থাকে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরী ও বিবাহিত নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার প্রবণতার কারণগুলো হয় বিবাহবিচ্ছেদ বা দাম্পত্য কলহ, সম্পর্কের জটিলতা, পারিবারিক সহিংসতা, লেখাপড়ার খারাপ ফল, মা-বাবা কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্ব, মনোমালিন্য, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি।
আত্মহত্যার ঝুঁকিপূর্ণ নির্দেশক
আত্মহত্যার পারিবারিক ইতিহাস, পারিবারিক অশান্তি, সহিংসতা, অবহেলিত শৈশব-কৈশোর,
মানসিক-শারীরিক ও যৌন নির্যাতন, দারিদ্র্য, একাকিত্ব, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও নিজের মানসিক রোগ, বিশেষ করে বিষণ্নতা, সিজোফ্রেনিয়া, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের সমস্যা।
প্রতিরোধের উপায়
আত্মহত্যা যারা করে, করতে চায় বা পরিকল্পনা করে, তারা কিন্তু তাদের এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে থাকে বিভিন্নভাবে। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। আত্মহত্যার প্রবণতা মেডিকেল ও সাইকিয়াট্রিক ইমার্জেন্সি।
রোগী যদি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়, তাহলে তার সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে। যেমন বিষপান, ফাঁসি, পানিতে ডুবে যাওয়া, ওপর থেকে লাফ দেওয়া—এগুলোর কারণ যা-ই হোক, রোগীকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি তাকে অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্ট বা মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে।
চিকিৎসা, ওষুধ সেবন, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপির মাধ্যমে সঠিক কারণ অনুসন্ধানই পারে একজন মানুষকে নতুন জীবন দিতে। তবে আত্মহত্যা প্রতিরোধে শুধু ওই মানুষ, তার পরিবার ও চিকিৎসক সম্পৃক্ত হলেই হবে না, এর দায়িত্ব সরকার, রাষ্ট্র এবং এর সঙ্গে যুক্ত পুরো সিস্টেমকে নিতে হবে।
ডা. ফারজানা রহমান, সহযোগী অধ্যাপক , মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
শুধু সহপাঠী নয়, খবরটি শিক্ষকদের জন্যও খুব আকস্মিক আর হৃদয়বিদারক ছিল। ধীরে ধীরে জানা গেল, মা-বাবার কলহের কারণেই দিন দিন মানসিক অবসাদে ভুগছিল মেয়েটি। তাই সপ্তম শ্রেণির কিশোরী মারিয়া নিজেকেই মা-বাবার কাছ থেকে সরিয়ে নিয়েছিল চিরতরে।
তবে চন্দনার (ছদ্মনাম) ঘটনাটি ভিন্ন। উনিশ বছর বয়সে নিজের ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে পরিবারের মতেই আংটিবদল হয়েছিল তাঁর। এরপর বিয়ের জন্য অপেক্ষা। দেড় বছরের মাথায় কোনো এক বিষয়ে দুজনের মধ্যে কলহ হয়। রাগের মাথায় চন্দনার হবু স্বামী আত্মহত্যা করেন।
পরদিন সকালে চন্দনার ঘুম ভাঙে দুঃসংবাদে—তাঁর প্রিয় মানুষটি আর নেই। এরপর পোস্টমর্টেম, থানা, পুলিশ। বারবার পুলিশের জেরার মুখে পড়ে নিজের শোককে সরিয়ে রাখতে হয়েছে জবানবন্দির আড়ালে। সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি চন্দনা। সাত দিন অচেতন থেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এখন জীবনকে পথে ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি। ২১ বছরের সেই দুঃস্বপ্নের মতো সময়গুলো ২৮ বছর বয়সেও তাড়া করে বেড়ায় তাঁকে।
এমন অনেক ঘটনাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের আশপাশে। পৃথিবীতে প্রতি আট সেকেন্ডে একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। অথচ আত্মহত্যা প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু। আত্মহত্যার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো, বিশ্বব্যাপী, জাতীয় এবং আঞ্চলিকভাবে সংকটে থাকা ব্যক্তিদের আরও সহায়তা করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা উচিত।
আর তাই ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থার সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য ফেডারেশন একযোগে দিবসটি পালনে কাজ করছে।
কিছু পরিসংখ্যান
অনেক কিছুর সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে যোগ হয়েছে সাইবার নিরাপত্তাহীনতা। আধুনিকায়ন, শিল্পায়ন ও নগরায়ণের ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। লিঙ্গনির্বিশেষে ব্ল্যাকমেলের শিকার হলেও এর বড় অংশে আছে বিভিন্ন বয়সের নারীরা। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
‘বাংলাদেশে সাইবার অপরাধপ্রবণতা- ২০২৩’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন ইউনিটে ৩০ এপ্রিল ২০২৩ পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়ে ৩৪ হাজার ৬০৫টি। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ২৬ হাজার ৫৯২।
লিঙ্গভিত্তিক তুলনামূলক পরিসংখ্যানে সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগীদের মধ্যে নারীর হার ৫৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এই বিশাল সংখ্যার নারীর অনেকের মধ্যে দেখা দিয়েছে আত্মহত্যার প্রবণতা। সাইবার অপরাধে ভুক্তভোগী নারীদের এই উচ্চ হার জানিয়ে দিচ্ছে, প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা তৈরি করছে ব্যাপক মাত্রায়।
এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ৬৯ জন নারী। যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ জন, ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন এবং যৌতুকের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন নারী।
আত্মহত্যার কারণ
বেকারত্ব, হতাশা, বিচ্ছেদ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, একাকিত্ব—এগুলো আত্মহত্যার সামাজিক কারণ। এটি বেশি দেখা দেয় কৃষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে। পরিবারে আত্মহত্যা ও মানসিক রোগের ইতিহাস থাকলে এর ঝুঁকি বাড়ে।
জেনেটিক বা বংশগতির সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ রয়েছে। আত্মহত্যার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে, এ রকম মানুষের মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামের হরমোন বা নিউরোট্রান্সমিটারের স্বল্পতা দেখা যায়। সাধারণত এককভাবে আত্মহত্যা হলেও কখনো কখনো দলগতভাবে, ধর্মীয় রীতি পালনের অংশ হিসেবেও এটি করা হয়ে থাকে।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একেবারেই আলাদা। আমাদের দেশে কিশোর-কিশোরী ও বিবাহিত নারীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আত্মহত্যার প্রবণতার কারণগুলো হয় বিবাহবিচ্ছেদ বা দাম্পত্য কলহ, সম্পর্কের জটিলতা, পারিবারিক সহিংসতা, লেখাপড়ার খারাপ ফল, মা-বাবা কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্ব, মনোমালিন্য, তৃতীয় লিঙ্গ ইত্যাদি।
আত্মহত্যার ঝুঁকিপূর্ণ নির্দেশক
আত্মহত্যার পারিবারিক ইতিহাস, পারিবারিক অশান্তি, সহিংসতা, অবহেলিত শৈশব-কৈশোর,
মানসিক-শারীরিক ও যৌন নির্যাতন, দারিদ্র্য, একাকিত্ব, পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও নিজের মানসিক রোগ, বিশেষ করে বিষণ্নতা, সিজোফ্রেনিয়া, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের সমস্যা।
প্রতিরোধের উপায়
আত্মহত্যা যারা করে, করতে চায় বা পরিকল্পনা করে, তারা কিন্তু তাদের এই ইচ্ছার কথা জানিয়ে থাকে বিভিন্নভাবে। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিতে হবে। আত্মহত্যার প্রবণতা মেডিকেল ও সাইকিয়াট্রিক ইমার্জেন্সি।
রোগী যদি সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়, তাহলে তার সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে। যেমন বিষপান, ফাঁসি, পানিতে ডুবে যাওয়া, ওপর থেকে লাফ দেওয়া—এগুলোর কারণ যা-ই হোক, রোগীকে উপযুক্ত চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি তাকে অবশ্যই সাইকিয়াট্রিস্ট বা মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হবে।
চিকিৎসা, ওষুধ সেবন, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপির মাধ্যমে সঠিক কারণ অনুসন্ধানই পারে একজন মানুষকে নতুন জীবন দিতে। তবে আত্মহত্যা প্রতিরোধে শুধু ওই মানুষ, তার পরিবার ও চিকিৎসক সম্পৃক্ত হলেই হবে না, এর দায়িত্ব সরকার, রাষ্ট্র এবং এর সঙ্গে যুক্ত পুরো সিস্টেমকে নিতে হবে।
ডা. ফারজানা রহমান, সহযোগী অধ্যাপক , মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৫ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

মারিয়ার (ছদ্মনাম) হাতে হঠাৎ কাটা দাগ দেখতে পাচ্ছিল তার সহপাঠীরা। মারিয়া খুব সচেতনভাবে চেষ্টা করত এই দাগ অ্যাপ্রোনের আড়ালে ঢেকে রাখতে। সহপাঠীরা জিজ্ঞাসা করলে এড়িয়ে যেত সে। খুব কাছের বন্ধুদেরও নিজের কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলেনি। একদিন সন্ধ্যার পর তার সহপাঠীরা জানতে পারল মারিয়ার মৃত্যুর খবর।
০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৫ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৫ দিন আগে