আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর
দুই সন্তানের মা রশিদা আক্তার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বড় ছেলে দেখে ফেলায় সে যাত্রা বেঁচে যান তিনি। এটি রশিদার জীবনের গল্পের একেবারে শেষের অংশ। এর আগের যে গল্প তা শুনতে শুনতে অশ্রুসজল হয়ে ওঠেন মিলনায়তনভর্তি মানুষ। অশ্রুভরা চোখে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে রশিদা যখন নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া গল্প শোনাচ্ছিলেন, তখন বিবর্ণ হেমন্ত কিছুটা ধূসর রং ছড়িয়ে দিয়েছে দিগন্তে।
দিনাজপুর সদরের চেহেলগাজী ইউনিয়নের দিনমজুর পিতার সন্তান রশিদা আক্তার। নিজেদের ভিটে না থাকায় সরকারি খাস জমিতে একটি কুঁড়েঘরে কোনোমতে দিনযাপন করতেন পুরো পরিবার। বাবার আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় লেখাপড়া হয়নি তাঁর। লুকিয়ে বাড়ির পাশের ব্র্যাক স্কুলে ক্লাস করতে গিয়ে ধরা পড়ে বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। বয়স যখন বারো। কিছু রোজগারের আশায় মা তাঁকে ঢাকায় রেখে আসেন অন্যের বাড়িতে কাজ করার জন্য। দু্ছ ইরের মাথায় বাড়ি ফিরে আসেন রশিদা। নিজ বাড়িতে ফিরতে পেরে খুশি হলেও, তিনি জানতেই পারেননি কী বিপদ তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে সেখানে! বাড়িতে এনেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
রশিদা জানান, সব কাজ জানার পরও শুধু তরকারি রান্না করতে না পারায় শাশুড়ি তাঁকে তরকারি ছাড়া শুধু ভাত খেতে দিতেন। প্রচণ্ড পরিশ্রমের পর লবণ আর তেল দিয়েই দুপুরের খাবার খেতে হতো তাঁকে। বিয়ের দুই বছরের মাথায় গর্ভবতী হয়ে পড়লে নির্যাতনের মাত্রা যেন আরও বেড়ে যায়। সে সময় রশিদাকে আধপেটা থেকে বড় বড় হাঁড়িতে গরুর খাবার রান্না করতে হতো। করতে হতো বাড়ির সব কাজ। এ অবস্থাতেই পানির ডেকচি নিয়ে বারান্দায় উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেলেও মেলেনি কোনো চিকিৎসা। সঙ্গে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনও সহ্য করতে হতো মুখ বুজে।
২২ নভেম্বর, মঙ্গলবার দিনাজপুরের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পল্লীশ্রীর মিলনায়তনে রশিদার মতো প্রায় অর্ধশত কিশোরী মা তাঁদের জীবনের ঘটনাবলি তুলে ধরতে একত্র হয়েছিলেন। সে অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘স্টোরি টেলিং অ্যান্ড ফটো ন্যারেটিভ সেশন’। জীবনের গল্প বলা ও জীবন ছবির বর্ণনার সে অনুষ্ঠানে বিবাহিত কিশোরীদের গল্প শুনেছেন তাঁদের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পল্লীশ্রীর আয়োজনে এ প্রকল্পটিতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে টেরেডেস হোমস, ব্র্যাক জেমসপি, গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
রশিদা আক্তারের মতো সদর উপজেলার ফাজিলপুরের মেয়ে সোনিয়া খাতুন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। কিছুদিনের মধ্যে সোনিয়া জানতে পারেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুর মাদকাসক্ত। ফলে প্রতি রাতে তাঁকে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনও সহ্য করতে হয়। একপর্যায়ে সোনিয়ার বাবা তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে বাধ্য হন। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সোনিয়া পড়াশোনা করে নার্স হতে চান।
এ অনুষ্ঠানে জীবনের গল্প বলতে আসা নুর আক্তার, আরফিনা, রিমু, সুবর্ণা, রাইসারা জানান, তাঁরা পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জীবনে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। তাঁদের সঙ্গে আসা স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িরাও জানান, সচেতনতা, অশিক্ষা আর অজ্ঞতার কারণে তাঁরা অতীতে যে আচরণ করেছেন, তা কাম্য নয়। নিজেদের পরিবর্তনের পাশাপাশি এ ধরনের অন্যায় দেখলে তাঁরা প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন এখন।
দুই সন্তানের মা রশিদা আক্তার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বড় ছেলে দেখে ফেলায় সে যাত্রা বেঁচে যান তিনি। এটি রশিদার জীবনের গল্পের একেবারে শেষের অংশ। এর আগের যে গল্প তা শুনতে শুনতে অশ্রুসজল হয়ে ওঠেন মিলনায়তনভর্তি মানুষ। অশ্রুভরা চোখে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে রশিদা যখন নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া গল্প শোনাচ্ছিলেন, তখন বিবর্ণ হেমন্ত কিছুটা ধূসর রং ছড়িয়ে দিয়েছে দিগন্তে।
দিনাজপুর সদরের চেহেলগাজী ইউনিয়নের দিনমজুর পিতার সন্তান রশিদা আক্তার। নিজেদের ভিটে না থাকায় সরকারি খাস জমিতে একটি কুঁড়েঘরে কোনোমতে দিনযাপন করতেন পুরো পরিবার। বাবার আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় লেখাপড়া হয়নি তাঁর। লুকিয়ে বাড়ির পাশের ব্র্যাক স্কুলে ক্লাস করতে গিয়ে ধরা পড়ে বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। বয়স যখন বারো। কিছু রোজগারের আশায় মা তাঁকে ঢাকায় রেখে আসেন অন্যের বাড়িতে কাজ করার জন্য। দু্ছ ইরের মাথায় বাড়ি ফিরে আসেন রশিদা। নিজ বাড়িতে ফিরতে পেরে খুশি হলেও, তিনি জানতেই পারেননি কী বিপদ তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে সেখানে! বাড়িতে এনেই তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়।
রশিদা জানান, সব কাজ জানার পরও শুধু তরকারি রান্না করতে না পারায় শাশুড়ি তাঁকে তরকারি ছাড়া শুধু ভাত খেতে দিতেন। প্রচণ্ড পরিশ্রমের পর লবণ আর তেল দিয়েই দুপুরের খাবার খেতে হতো তাঁকে। বিয়ের দুই বছরের মাথায় গর্ভবতী হয়ে পড়লে নির্যাতনের মাত্রা যেন আরও বেড়ে যায়। সে সময় রশিদাকে আধপেটা থেকে বড় বড় হাঁড়িতে গরুর খাবার রান্না করতে হতো। করতে হতো বাড়ির সব কাজ। এ অবস্থাতেই পানির ডেকচি নিয়ে বারান্দায় উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গেলেও মেলেনি কোনো চিকিৎসা। সঙ্গে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনও সহ্য করতে হতো মুখ বুজে।
২২ নভেম্বর, মঙ্গলবার দিনাজপুরের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পল্লীশ্রীর মিলনায়তনে রশিদার মতো প্রায় অর্ধশত কিশোরী মা তাঁদের জীবনের ঘটনাবলি তুলে ধরতে একত্র হয়েছিলেন। সে অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘স্টোরি টেলিং অ্যান্ড ফটো ন্যারেটিভ সেশন’। জীবনের গল্প বলা ও জীবন ছবির বর্ণনার সে অনুষ্ঠানে বিবাহিত কিশোরীদের গল্প শুনেছেন তাঁদের স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পল্লীশ্রীর আয়োজনে এ প্রকল্পটিতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে টেরেডেস হোমস, ব্র্যাক জেমসপি, গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
রশিদা আক্তারের মতো সদর উপজেলার ফাজিলপুরের মেয়ে সোনিয়া খাতুন। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায় তাঁর। কিছুদিনের মধ্যে সোনিয়া জানতে পারেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুর মাদকাসক্ত। ফলে প্রতি রাতে তাঁকে স্বামীর শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনও সহ্য করতে হয়। একপর্যায়ে সোনিয়ার বাবা তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে বাধ্য হন। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী সোনিয়া পড়াশোনা করে নার্স হতে চান।
এ অনুষ্ঠানে জীবনের গল্প বলতে আসা নুর আক্তার, আরফিনা, রিমু, সুবর্ণা, রাইসারা জানান, তাঁরা পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জীবনে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। তাঁদের সঙ্গে আসা স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িরাও জানান, সচেতনতা, অশিক্ষা আর অজ্ঞতার কারণে তাঁরা অতীতে যে আচরণ করেছেন, তা কাম্য নয়। নিজেদের পরিবর্তনের পাশাপাশি এ ধরনের অন্যায় দেখলে তাঁরা প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন এখন।
মৃত্যুদণ্ড দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ করা যায়, এমন প্রমাণাদি নেই বলে মন্তব্য করেছেন ব্লাস্টের (বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে লিঙ্গভিত্তিক...
৪ দিন আগেশিশুদের সাইকোলজি আগে বুঝতে হবে—যতটা সরলীকরণ করা যায়। পরের পাতায় কী আছে, এ রকম একটা কৌতূহল রাখি। রংটা খুব উজ্জ্বল থাকে। সামাজিক সচেতনতা বাড়ায়, চিন্তার বিকাশ ঘটায়—এমন কাজ করি। চরিত্রদের এক্সপ্রেশনে ব্যাপক ফান থাকতে হবে।
৫ দিন আগে‘বাংলাদেশের মেয়েরা সুযোগ পেলে সকলেই হিমালয় জয় করতে পারে।’ নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে এমন কথাই জানিয়েছেন পাঁচ নারী পর্বতারোহী। ‘সুলতানার স্বপ্ন অবারিত: তরুণীর অগ্রযাত্রা’ বিষয়ে এক আলাপচারিতায় এ কথা বলেন তাঁরা। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অভিজ্ঞতা বিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তাঁরা
৫ দিন আগেআমার লেখার ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ের প্রতি আগ্রহ কিংবা স্বতঃস্ফূর্ততাকে প্রাধান্য দিই। শব্দ আমার কাছে স্রোতস্বিনী নদীর মতো। আমি অনেকের লেখা পড়ি। তবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিন ভাইয়ের থ্রিলার ভাবনার আড্ডাগুলো থ্রিলার লেখার ক্ষেত্রে বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমি তাঁর লেখার ভক্ত।
১২ দিন আগে