নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দুপুরের খাওয়া শেষ। মাছের কাঁটা, ভাত আর কিছু উচ্ছিষ্ট মিলিয়ে একটি প্লাস্টিকের বাটিতে নেওয়া হলো। এরপর বাসার বাইরে রাস্তার পাশে সেগুলো রেখে আসা হলো কয়েকটি কুকুরের জন্য।
এসব দেখেই পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের একটি বাড়িতে বড় হয়েছেন অন্তরা রায়। মা-বাবার এসব কাজই তাঁকে এখন করে তুলেছে একজন স্বেচ্ছাসেবী প্রাণী উদ্ধারকর্মী। তাঁর উদ্ধার করা এসব প্রাণীর মধ্যে শুধু কুকুর-বিড়ালই নয়, আছে সাপের মতো হিমশীতল রক্তের সরীসৃপও। ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সাংগঠনিক কাজ মিলিয়ে দেশের বেশ কয়েক প্রজাতির বিষধর ও নির্বিষ সাপ, ঘোড়া, বেজি, কাঠবিড়ালি, বনবিড়াল, গুইসাপ, কাক, বাজ, চিল, টিয়াসহ আরও বেশ কিছু প্রজাতির পশুপাখি উদ্ধার করেছেন তিনি।
অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে বনভূমির সঙ্গে ছোট হয়ে আসছে বন্য প্রাণীর আবাসস্থল, এমনটা মনে করেন অন্তরা। ফলে রেসকিউ করার পর সেসব প্রাণীর উপযুক্ত আবাসস্থলে ফিরিয়ে দিতে বেশ বেগ পেতে হয় তাঁর মতো স্বেচ্ছাসেবীদের। কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন, ঢাকা থেকে কোনো বন্য প্রাণী বা পাখি উদ্ধার করা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটিকে তার উপযুক্ত পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে বেশ দূরে গিয়ে অবমুক্ত করতে হয়।
মা-বাবার কাছ থেকেই প্রাণীদের অনুভূতি, তাদের কষ্ট বোঝার বোধ আসে অন্তরার মধ্যে। ছোটবেলায় স্কুল থেকে বাসায় ফেরার সময় অসুস্থ বিড়ালের বাচ্চা দেখলে তাকে তুলে নিয়ে আসতেন বাড়িতে। সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব তুলে নিতেন নিজের কাঁধে। ব্যাপারটা তাঁর মা অনু রানী রায় পছন্দ না করলেও কখনো বাধা দিতেন না।
এভাবে অনেক পাখি, কুকুর, বিড়ালের সঙ্গে বড় হয়ে উঠেছেন তিনি। কলেজে পড়ার সময় পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে প্রাণী উদ্ধার করতেন। কলেজ শেষ করার পর ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হন অন্তরা। সেসব গ্রুপে যুক্ত হওয়ার আগে একা কাজ করা, রাস্তা থেকে কোনো প্রাণী তুলে বাসায় নিয়ে সুস্থ করা বিভিন্ন কারণে বেশ কঠিন ছিল। তাই ধীরে ধীরে সাংগঠনিকভাবে কাজ শুরু করেন তিনি। ফেসবুকে গ্রুপগুলোতে যুক্ত হওয়ার পর গ্রুপের পোস্ট দেখে ২০১৫ সালে অন্তরা প্রথম সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একটি কুকুর উদ্ধার করেন। এরপর তার চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তখনো বেশির ভাগ কুকুর, বিড়াল ও পাখি রেসকিউ করতেন তিনি।
এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে শতাধিক অভিযানে অংশ নিয়েছেন অন্তরা। এর মধ্যে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন দোকান ও অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দেশি পাখি, কচ্ছপ; বসতবাড়ি ও শিল্প এলাকা থেকে সাপ, গুইসাপ, বনবিড়ালের বাচ্চা, রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত ঘোড়া ইত্যাদি মিলিয়ে সংখ্যাটা কয়েক শ ছাড়িয়ে গেছে।
সাংগঠনিকভাবে অন্তরার প্রাণী উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে ‘কেয়ার ফর পজ’ নামক এক প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। করোনার সময় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় পথকুকুরদের খাওয়ানোর কাজ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ঢাকা ও সেন্ট মার্টিনের পথকুকুর বন্ধ্যাকরণ প্রকল্পে কাজ করেন। করোনা-পরবর্তী সময়ে ‘ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গে যুক্ত হন অন্তরা। এখন তিনি বন বিভাগের সহযোগিতায় ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছেন।
পথের কুকুর-বিড়াল উদ্ধারের ক্ষেত্রে নারীদের বড় ভূমিকা দেখা গেলেও বন্য প্রাণী উদ্ধারের বেলায় এ সংখ্যাটা তুলনামূলক কম। কিন্তু কেন? অন্তরার সহজ উত্তর, এ ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি সমাজের মনোভাব খুব অনুকূল নয়। আরও বড় প্রতিকূলতা হলো, অধিকাংশ রেসকিউ কল সাধারণত আসে দূর দূরান্ত থেকে। তাই চাইলেও নারী উদ্ধারকর্মীরা সব সময় উদ্ধারকাজে যেতে পারে না। তবে এ ক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে আনন্দিত অন্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাহায্যে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। অন্তরা মনে করেন, এভাবেই ধীরে ধীরে মানুষ বন্য প্রাণী সম্পর্কে কুসংস্কারমুক্ত ধারণা পাচ্ছে। আর এই সচেতনতার হাত ধরে দেশের তরুণেরা উদ্ধারকাজে উৎসাহ পাবে এবং দিন দিন উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা আরও বাড়বে।
তবে উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা না বাড়িয়ে বন্য প্রাণীর জন্য নিরাপদ আবাসস্থলের পক্ষে অন্তরার অবস্থান।
দুপুরের খাওয়া শেষ। মাছের কাঁটা, ভাত আর কিছু উচ্ছিষ্ট মিলিয়ে একটি প্লাস্টিকের বাটিতে নেওয়া হলো। এরপর বাসার বাইরে রাস্তার পাশে সেগুলো রেখে আসা হলো কয়েকটি কুকুরের জন্য।
এসব দেখেই পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের একটি বাড়িতে বড় হয়েছেন অন্তরা রায়। মা-বাবার এসব কাজই তাঁকে এখন করে তুলেছে একজন স্বেচ্ছাসেবী প্রাণী উদ্ধারকর্মী। তাঁর উদ্ধার করা এসব প্রাণীর মধ্যে শুধু কুকুর-বিড়ালই নয়, আছে সাপের মতো হিমশীতল রক্তের সরীসৃপও। ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সাংগঠনিক কাজ মিলিয়ে দেশের বেশ কয়েক প্রজাতির বিষধর ও নির্বিষ সাপ, ঘোড়া, বেজি, কাঠবিড়ালি, বনবিড়াল, গুইসাপ, কাক, বাজ, চিল, টিয়াসহ আরও বেশ কিছু প্রজাতির পশুপাখি উদ্ধার করেছেন তিনি।
অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে বনভূমির সঙ্গে ছোট হয়ে আসছে বন্য প্রাণীর আবাসস্থল, এমনটা মনে করেন অন্তরা। ফলে রেসকিউ করার পর সেসব প্রাণীর উপযুক্ত আবাসস্থলে ফিরিয়ে দিতে বেশ বেগ পেতে হয় তাঁর মতো স্বেচ্ছাসেবীদের। কাজ করতে গিয়ে তিনি দেখেছেন, ঢাকা থেকে কোনো বন্য প্রাণী বা পাখি উদ্ধার করা হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটিকে তার উপযুক্ত পরিবেশে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ঢাকা থেকে বেশ দূরে গিয়ে অবমুক্ত করতে হয়।
মা-বাবার কাছ থেকেই প্রাণীদের অনুভূতি, তাদের কষ্ট বোঝার বোধ আসে অন্তরার মধ্যে। ছোটবেলায় স্কুল থেকে বাসায় ফেরার সময় অসুস্থ বিড়ালের বাচ্চা দেখলে তাকে তুলে নিয়ে আসতেন বাড়িতে। সেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব তুলে নিতেন নিজের কাঁধে। ব্যাপারটা তাঁর মা অনু রানী রায় পছন্দ না করলেও কখনো বাধা দিতেন না।
এভাবে অনেক পাখি, কুকুর, বিড়ালের সঙ্গে বড় হয়ে উঠেছেন তিনি। কলেজে পড়ার সময় পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে প্রাণী উদ্ধার করতেন। কলেজ শেষ করার পর ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হন অন্তরা। সেসব গ্রুপে যুক্ত হওয়ার আগে একা কাজ করা, রাস্তা থেকে কোনো প্রাণী তুলে বাসায় নিয়ে সুস্থ করা বিভিন্ন কারণে বেশ কঠিন ছিল। তাই ধীরে ধীরে সাংগঠনিকভাবে কাজ শুরু করেন তিনি। ফেসবুকে গ্রুপগুলোতে যুক্ত হওয়ার পর গ্রুপের পোস্ট দেখে ২০১৫ সালে অন্তরা প্রথম সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একটি কুকুর উদ্ধার করেন। এরপর তার চিকিৎসার জন্য ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তখনো বেশির ভাগ কুকুর, বিড়াল ও পাখি রেসকিউ করতেন তিনি।
এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে শতাধিক অভিযানে অংশ নিয়েছেন অন্তরা। এর মধ্যে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন দোকান ও অবৈধ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দেশি পাখি, কচ্ছপ; বসতবাড়ি ও শিল্প এলাকা থেকে সাপ, গুইসাপ, বনবিড়ালের বাচ্চা, রাস্তা থেকে পরিত্যক্ত ঘোড়া ইত্যাদি মিলিয়ে সংখ্যাটা কয়েক শ ছাড়িয়ে গেছে।
সাংগঠনিকভাবে অন্তরার প্রাণী উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে ‘কেয়ার ফর পজ’ নামক এক প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে। করোনার সময় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় পথকুকুরদের খাওয়ানোর কাজ করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ঢাকা ও সেন্ট মার্টিনের পথকুকুর বন্ধ্যাকরণ প্রকল্পে কাজ করেন। করোনা-পরবর্তী সময়ে ‘ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’-এর সঙ্গে যুক্ত হন অন্তরা। এখন তিনি বন বিভাগের সহযোগিতায় ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছেন।
পথের কুকুর-বিড়াল উদ্ধারের ক্ষেত্রে নারীদের বড় ভূমিকা দেখা গেলেও বন্য প্রাণী উদ্ধারের বেলায় এ সংখ্যাটা তুলনামূলক কম। কিন্তু কেন? অন্তরার সহজ উত্তর, এ ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি সমাজের মনোভাব খুব অনুকূল নয়। আরও বড় প্রতিকূলতা হলো, অধিকাংশ রেসকিউ কল সাধারণত আসে দূর দূরান্ত থেকে। তাই চাইলেও নারী উদ্ধারকর্মীরা সব সময় উদ্ধারকাজে যেতে পারে না। তবে এ ক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে আনন্দিত অন্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাহায্যে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে বলেও মনে করেন তিনি। অন্তরা মনে করেন, এভাবেই ধীরে ধীরে মানুষ বন্য প্রাণী সম্পর্কে কুসংস্কারমুক্ত ধারণা পাচ্ছে। আর এই সচেতনতার হাত ধরে দেশের তরুণেরা উদ্ধারকাজে উৎসাহ পাবে এবং দিন দিন উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা আরও বাড়বে।
তবে উদ্ধারকর্মীর সংখ্যা না বাড়িয়ে বন্য প্রাণীর জন্য নিরাপদ আবাসস্থলের পক্ষে অন্তরার অবস্থান।
জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে নারী ফুটবল ম্যাচ আয়োজনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা এবং ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। একই সঙ্গে অবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
১ দিন আগেদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে যে সুফল পাওয়া যায়, সেই জায়গায় তাঁরা পিছিয়ে আছেন এখনো। যেমন এখন অনলাইনে সরকারি বিভিন্ন কাজ, কেনাকাটা, আর্থিক লেনদেন করা যায়। কিন্তু সঠিক তথ্য ও ব্যবহারের অভাবে প্রান্তিক নারীরা এসব সুবিধা নিতে পারছ
৩ দিন আগেকোভিড ইফেক্ট তাঁকেও আক্রান্ত করেছিল। উচ্চশিক্ষিত খাদিজা ভালো বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। কোভিডকালে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা ভালো যাচ্ছিল না। সে সময় খাদিজা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। নিয়মমাফিক অফিস থেকে ছুটি চাইলে অফিস জানিয়ে দিল, চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারেন। খাদিজা চাকরিটা ছেড়ে দিলেন। খাদিজা জা
৩ দিন আগেবাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউএন উইমেন নতুন এক অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ঢাকার ইইউ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই চুক্তির আওতায় ৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরো বা প্রায় ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অর্থ জনপরিসর, কর্মক্ষেত্র এবং উচ্চশিক্
৩ দিন আগে