জিনাতুন নুর

অক্ষশক্তির বিজয় ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই লড়াইয়ের সম্মুখভাগে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও বহু নারী সমানতালে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইতিহাসে এমন পাঁচ বীর নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যাঁরা সম্মুখসমরে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেরণাদায়ী ভূমিকা রেখেছেন।
গুপ্তচরবৃত্তি থেকে শুরু করে প্রকৌশলসেবা—এমন সব ক্ষেত্রে সেই নারীদের অবদান ছিল অসাধারণ ও অনুপ্রেরণাদায়ক। তাঁদের অবদান যুদ্ধের ফলাফলে হয়তো নির্ণায়ক ছিল, কিন্তু গতিপথ পাল্টাতে সাহায্য করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুরুদায়িত্ব পুরুষেরা সামাল দিলেও লড়াইয়ে অংশ নেওয়া এই পাঁচ নারী যা করেছেন, তা সত্যিই আশাতীত ও বিস্ময়কর।
জোসেফাইন বেকার
১৯০৩ সালের ৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির লুইসের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন জোসেফাইন বেকার। শিশুকালেই বর্ণবাদের শিকার হন তিনি। ১৯১৭ সালের জুলাইয়ে পূর্ব সেন্ট লুইস জাতিগত দাঙ্গার ভয়াবহতা এই কিশোরীর মনে দাগ কাটে; কর্মজীবনকেও ঝুঁকিতে ফেলে। বেকার ছিলেন আফ্রিকান-আমেরিকান নৃত্যশিল্পী; ঘুরে ঘুরে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তখন থাকার জায়গা খুঁজে পাওয়া বেকারের জন্য খুব কঠিন ছিল। কারণ শ্বেতাঙ্গরা ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠীর কেউ হোটেলে থাকতে পারত না।
কিন্তু বিন্দুমাত্র দমে যাননি বেকার। শিল্পের প্রতি প্রবল ঝোঁক এসব বাধা ডিঙিয়ে তাকে নিউইর্য়কে নিয়ে যায়। সেখানে ‘হারলেম রেনেসাঁ’ নামে আফ্রিকান-আমেরিকান বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবন আন্দোলনের অংশ হয়ে ওঠেন। তারপর আটলান্টিক পেরিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসেও যান তিনি।
অনন্য অভিনয়ের জন্য বেকার বেশ জনপ্রিয়তা পান। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি অনেক অর্থ উপার্জন করেন এবং ইউরোপের অনেক শহর ভ্রমণ করেন। সেই সময় ইউরোপে অতি রক্ষণশীলতার উত্থান ভালোভাবেই বেকারের নজরে পড়ে।
জাতিগত আধিপত্য ও জাতীয়তাবাদের ভিতের ওপর গড়ে ওঠা ইতালি ও জার্মানিতে ফ্যাসিস্টদের উত্থান বেকারকে সেন্ট লুইসের বর্ণবাদের কথা মনে করিয়ে দেয়। ১৯৪০ সালের মে মাসে ফ্রান্সে আগ্রাসন চালানোর পর নাৎসিদের কর্মকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বেকার। যে দেশ (ফ্রান্স) তাকে এত কিছু দিয়েছে, সে দেশ জার্মানির দখলে চলে যাচ্ছে দেখে নাৎসিবিরোধী লড়াইয়ে যোগ দেন তিনি।
ফ্রান্সে শ্যাতো দি মিলান্দেস নামে পঞ্চদশ শতকের তৈরি প্রাসাদে থাকতেন বেকার। ১৯৪০ সালে তিনি বাড়িটি ভাড়া নেন এবং সাত বছর পর সেটি কিনে নেন। সেই প্রত্নতাত্ত্বিক প্রাসাদ ঘুরে দেখতে আসেন এক ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তা। বেকারকে তিনি গুপ্তচরবৃত্তির প্রস্তাব দিলে তিনি নির্দ্বিধায় গ্রহণ করেন। খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার কারণে বেকার বহু কূটনৈতিক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পেতেন। সেখান থেকে তিনি গোপনে জার্মান সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ফরাসি কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করতেন। ফ্রান্স থেকে পালিয়ে পর্তুগাল আসার পর বেকার বিভিন্ন দূতাবাসের পার্টিগুলোতে অংশ নেন এবং ফরাসি প্রতিরক্ষা আন্দোলনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন। হোটেলরুমে ফিরে এসব তথ্য অদৃশ্য কালি বা সুরক্ষা কালি ব্যবহার করে লিখে রাখতেন।
তবে নিউমোনিয়া ও রক্তে বিষক্রিয়াসহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে বেকারের গুপ্তচর জীবন সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় ২১ মাস হাসপাতালে কাটান তিনি। এরপর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র বাহিনীর পক্ষে কাজ করে যুদ্ধের বাকি সময় পার করেন বেকার।
এলসি ম্যাকগিল
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জোসেফাইন বেকারের মতো এলসি ম্যাকগিলও সম্মুখসমরে অংশ নেননি। কিন্তু তাঁর লড়াইয়ের গল্প কম অনুপ্রেরণাদায়ক নয়। ১৯০৫ সালে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে জন্মগ্রহণ করেন ম্যাকগিল। মধ্যবিত্ত পরিবারের এই নারী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথম কানাডিয়ান নারী হিসেবে ১৯২৭ সালে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা তড়িৎ প্রকৌশলবিদ্যার ডিগ্রি অর্জন করেন। শুরুতে গাড়ি তৈরির কাজ করতেন। পরে বিমানের মতো রোমাঞ্চকর পরিবহন তৈরিতে মনোযোগ দেন ম্যাকগিল।
কিন্তু প্রাণঘাতী পোলিও রোগ ম্যাকগিলের কর্মময় জীবনকে থামিয়ে দেয়। কোমর পর্যন্ত অবশ হয়ে পড়ায় দৈনন্দিন কাজে তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন হতো এবং মাংসপেশির খিঁচুনিতেও ভোগেন তিনি। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও তিনি হাঁটতে পারতেন এবং কাজেও ফিরতে পেরেছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডিয়ান গাড়ি ও ঢালাই কোম্পানিতে (ক্যান-কার হিসেবে পরিচিত) কাজ করেন ম্যাকগিল। প্রধান বিমান প্রকৌশলী হিসেবে তিনি ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান হকার-হারিকেন তৈরি করেন। এর জন্য তাকে ‘কুইন অব হারিকেনস’ বা ‘হারিকেনের রানি’ বলা হয়। এমনকি ঠান্ডা আবহাওয়ার উপযোগী যুদ্ধবিমানের নকশাও করেন তিনি। বি-শীতলীকরণ ও স্কি ল্যান্ডিংসহ ম্যাকগিলের তৈরি নতুন হকার হারিকেন শীতকালীন পরিবেশের জন্য উপযুক্ত ছিল।
যুদ্ধের বাইরে ম্যাকগিল কানাডিয়ান ফেডারেশন অব বিজনেস অ্যান্ড প্রফেশনাল উইমেনস ক্লাবের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি নারী অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ১৯৭১ সালে ম্যাকগিলকে কানাডার সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘অর্ডার অব কানাডা’ দেওয়া হয়।
ল্যুদমিলা পাভলিশেংকো
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি গ্রামে বেড়ে ওঠেন ল্যুদমিলা পাভলিশেংকো। ১৯২২ সালের ডিসেম্বরে গ্রামটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হয়। ১৯৩২ সালে স্থায়ীভাবে রাজধানী কিয়েভে চলে আসেন তিনি। ফায়ারিং রেঞ্জ বা বন্দুক চালনা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যাওয়ার পর নিজের মধ্যে নিখুঁতভাবে গুলি চালানোর ক্ষমতা টের পান। পরের কয়েক বছর তিনি নিজের দক্ষতাকে শাণিত করেন। একপর্যায়ে ১২টি পুরস্কারের শ্যুটিং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সব কটিই জিতে নেন ল্যুদমিলা!
১৯৪১ সালে নাৎসিরা সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করলে তিনি লড়াইয়ে যোগ দেন। পাভলিশেংকো রাইফেল বিভাগের সদস্য হিসেবে রেড আর্মিতে যোগ দেন। এর আগে তিনি নাৎসীদের সহায়তাকারী রোমানিয়ার সেনাদের গুলি করে হত্যা করে দক্ষতার প্রমাণ দেন।
রেড আর্মিতে বেশির ভাগ নারী সম্মুখসমরে অংশ না নিলেও বহু নারী ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন। বিশেষ করে সোভিয়েত স্নাইপারদের জীবন খুব সংক্ষিপ্ত হতো। তাই পাভলিশেংকোর জীবনও ঝুঁকিতে ছিল।
তবে তিনি মৃত্যু ও ধরা পড়া এড়াতে সক্ষম হন। তার পরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শত্রুকে হত্যা করেন তিনি। ওডেসা অবরোধের সময় ১৮৭ জন জার্মান সৈনিককে হত্যা করেন পাভলিশেংকো। সেভাস্তোপল (রুশ শহর) যুদ্ধে তাঁর শিকার হয় আরও শত্রুসেনা। কিন্তু এ যুদ্ধই ছিল তাঁর শেষ লড়াই। শার্পনেলের শেলের আঘাত পান পাভলিশেংকো। সেই ক্ষত থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। বাধ্য হয়ে অবসর নিতে হয় তাঁকে।
তার পরও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও তার ভূমিকা ছিল। ক্রেমলিনে জোসেফ স্ট্যালিনের সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠকের পর সোভিয়েতের সমর্থনে তহবিল সংগ্রহের জন্য তিনি আমেরিকায় যান। দক্ষ মার্কসম্যান হিসেবে পাভলিশেংকোকে অন্য সোভিয়েত প্রতিনিধিদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন আমেরিকার সাংবাদিকেরা। কিন্তু বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের চেয়ে পাভলিশেংকোর চেহারা ও নারীত্ব নিয়েই মার্কিন সাংবাদিকদের মনোযোগ বেশি ছিল। তাঁদের চেয়ে দেশের মানুষ তাঁর প্রতি বেশি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। ১৯৪৩ সালে পাভলিশেংকো বীরত্বের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বোচ্চ বিশেষ সম্মাননা পান।
হ্যানি শ্যাফট
হ্যানি শেফট ছিলেন উচ্চাভিলাষী তরুণী। তিনি জাতিসংঘে কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৪০ সালে নাৎসিরা নেদারল্যান্ডসে আক্রমণ করায় তাঁর আর আমস্টার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া হয়নি।
নেদারল্যান্ডস জার্মানির দখলে চলে গেলে ডাচ ইহুদিরা ধীরে ধীরে তাদের অধিকার হারাতে থাকে। তাঁদের জন্য কিছু করার তাড়না বোধ করছিলেন শ্যাফট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদি বন্ধুদের জন্য জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন তিনি। এর ফলে তাঁরা নির্যাতন এড়াতে সক্ষম হন।
নাৎসিরা ডাচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দখলদার বাহিনীর প্রতি আনুগত্যের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। তখন অনেকের সঙ্গে শ্যাফটও তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি হারলেমে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আরভিভি নামে ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দেন।
এই বাহিনীর সদস্যরা শত্রুদের পরাস্ত করার জন্য বন্দুক ও বিস্ফোরক ব্যবহার করতেন। দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী নাৎসিদের সহযোগী ডাচ নাগরিকদের ধরাই ছিল তাঁদের প্রথমিক লক্ষ্য। শ্যাফট এই গোষ্ঠীর পক্ষে নাশকতা ও হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করতেন। তিনি এতটাই সফল হয়েছিলেন যে শিগগির তিনি প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন এবং ‘লাল চুলের মেয়ে’ উপাধি পান।
দুঃখজনকভাবে যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারেননি শ্যাফট। তাকে একটা তল্লাশি চৌকিতে পিস্তলসহ আটক করা হয়। শ্যাফটের চুলের কালো ছদ্ম রং ম্লান হতে শুরু করলে নাৎসিরা তাঁর পরিচয় টের পেয়ে যায়। তারা তাঁকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় এবং তাঁর ওপর নির্যাতন চালায়।
মিত্র শক্তির হাতে নেদারল্যান্ডসকে মুক্ত হওয়ার ঠিক ১৮ দিন আগে নাৎসিরা পশ্চিম হারলেমের এক টিলায় নিয়ে হ্যানি শ্যাফটকে হত্যা করে।
ইরিনা স্যান্ডলার
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে বড় হয়েছেন ইরিনা স্যান্ডলার। খ্রিষ্টান পরিবারে বেড়ে উঠলেও শৈশবে স্যান্ডলারের বহু ইহুদি বন্ধু ছিল।
১৯৩৯ সালে নাৎসিরা পোল্যান্ড দখল করে এবং শিগগির তারা ইহুদিবিরোধী নীতি বাস্তবায়ন করে। ১৯৪০ সালে নাৎসিরা ওয়ারশতে ইহুদি বস্তি প্রতিষ্ঠা করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। ছোট একটা এলাকায় কাঁটাতারের দশ ফুট প্রাচীরবেষ্টিত ওই বস্তিতে ৪০ হাজার ইহুদীকে আটকে রাখা হয়। সমাজের বাকিদের থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। তাদের পরিস্থিতি খুব ভয়ানক ছিল। তাদের খাবার দেওয়া হতো না।
স্যান্ডলার তাদের সাহায্য করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। ওয়ারশর সমাজকল্যাণ বিভাগের সদস্য হিসেবে ‘টাইফাস’ রোগের লক্ষণ পরীক্ষার জন্য বস্তি পরিদর্শনের অনুমতি ছিল তাঁর। কাউন্সিল টু এইড জিউস নামে একটি সংস্থার সহায়তায় স্যান্ডলার ইহুদি শিশুদের নিরাপদে বস্তি থেকে বাইরে পাচার করতেন।
কিছু শিশুকে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করে বাইরে পাচার করা হয়। বাকিদের টুলবক্সে ও আলুর বস্তার মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়। একবার বস্তির বাইরে শিশুরা প্রায় নাৎসিদের হাতে ধরা পড়েছিল। স্যান্ডলার শিশুদের জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে খ্রিষ্টান এতিমের ছদ্মবেশে আশ্রয়ে রাখেন। কিন্তু শিশুদের আসল নাম ও তাদের নতুন বাড়ির নথিপত্র তিনি সংরক্ষণ করে রাখেন, যাতে তাদের শনাক্ত করা যায়।
১৯৪৩ সালের অক্টোবরে গোপন খবর পেয়ে জার্মান গোয়েন্দা পুলিশ (গেস্টাপো) স্যান্ডলারকে গ্রেপ্তার করে। তথ্যের জন্য তাঁকে নির্যাতন করা হলেও স্যান্ডলারের মুখ খুলতে পারেনি তারা। সৌভাগ্যক্রমে কাউন্সিল টু এইড জিউস নাৎসিদের ঘুষ দিয়ে বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে এবং নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
যুদ্ধ শেষ হলে উদ্ধারকৃত শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে স্যান্ডলারকে খুব বেগ পেতে হয়। কারণ অনেকের বাবা-মাকে হলোকাস্টের (ইহুদি গণহত্যা) সময় হত্যা করা হয়। যাদের বাবা-মার সন্ধান মেলেনি, তাদের ইসরায়েলে পাঠিয়ে দেয় কাউন্সিল টু এইড জিউস।
(দ্য কালেক্টর থেকে অনূদিত)

অক্ষশক্তির বিজয় ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই লড়াইয়ের সম্মুখভাগে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও বহু নারী সমানতালে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইতিহাসে এমন পাঁচ বীর নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যাঁরা সম্মুখসমরে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেরণাদায়ী ভূমিকা রেখেছেন।
গুপ্তচরবৃত্তি থেকে শুরু করে প্রকৌশলসেবা—এমন সব ক্ষেত্রে সেই নারীদের অবদান ছিল অসাধারণ ও অনুপ্রেরণাদায়ক। তাঁদের অবদান যুদ্ধের ফলাফলে হয়তো নির্ণায়ক ছিল, কিন্তু গতিপথ পাল্টাতে সাহায্য করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুরুদায়িত্ব পুরুষেরা সামাল দিলেও লড়াইয়ে অংশ নেওয়া এই পাঁচ নারী যা করেছেন, তা সত্যিই আশাতীত ও বিস্ময়কর।
জোসেফাইন বেকার
১৯০৩ সালের ৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির লুইসের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন জোসেফাইন বেকার। শিশুকালেই বর্ণবাদের শিকার হন তিনি। ১৯১৭ সালের জুলাইয়ে পূর্ব সেন্ট লুইস জাতিগত দাঙ্গার ভয়াবহতা এই কিশোরীর মনে দাগ কাটে; কর্মজীবনকেও ঝুঁকিতে ফেলে। বেকার ছিলেন আফ্রিকান-আমেরিকান নৃত্যশিল্পী; ঘুরে ঘুরে নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তখন থাকার জায়গা খুঁজে পাওয়া বেকারের জন্য খুব কঠিন ছিল। কারণ শ্বেতাঙ্গরা ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠীর কেউ হোটেলে থাকতে পারত না।
কিন্তু বিন্দুমাত্র দমে যাননি বেকার। শিল্পের প্রতি প্রবল ঝোঁক এসব বাধা ডিঙিয়ে তাকে নিউইর্য়কে নিয়ে যায়। সেখানে ‘হারলেম রেনেসাঁ’ নামে আফ্রিকান-আমেরিকান বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক পুনরুজ্জীবন আন্দোলনের অংশ হয়ে ওঠেন। তারপর আটলান্টিক পেরিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসেও যান তিনি।
অনন্য অভিনয়ের জন্য বেকার বেশ জনপ্রিয়তা পান। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি অনেক অর্থ উপার্জন করেন এবং ইউরোপের অনেক শহর ভ্রমণ করেন। সেই সময় ইউরোপে অতি রক্ষণশীলতার উত্থান ভালোভাবেই বেকারের নজরে পড়ে।
জাতিগত আধিপত্য ও জাতীয়তাবাদের ভিতের ওপর গড়ে ওঠা ইতালি ও জার্মানিতে ফ্যাসিস্টদের উত্থান বেকারকে সেন্ট লুইসের বর্ণবাদের কথা মনে করিয়ে দেয়। ১৯৪০ সালের মে মাসে ফ্রান্সে আগ্রাসন চালানোর পর নাৎসিদের কর্মকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বেকার। যে দেশ (ফ্রান্স) তাকে এত কিছু দিয়েছে, সে দেশ জার্মানির দখলে চলে যাচ্ছে দেখে নাৎসিবিরোধী লড়াইয়ে যোগ দেন তিনি।
ফ্রান্সে শ্যাতো দি মিলান্দেস নামে পঞ্চদশ শতকের তৈরি প্রাসাদে থাকতেন বেকার। ১৯৪০ সালে তিনি বাড়িটি ভাড়া নেন এবং সাত বছর পর সেটি কিনে নেন। সেই প্রত্নতাত্ত্বিক প্রাসাদ ঘুরে দেখতে আসেন এক ফরাসি গোয়েন্দা কর্মকর্তা। বেকারকে তিনি গুপ্তচরবৃত্তির প্রস্তাব দিলে তিনি নির্দ্বিধায় গ্রহণ করেন। খ্যাতি ও জনপ্রিয়তার কারণে বেকার বহু কূটনৈতিক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পেতেন। সেখান থেকে তিনি গোপনে জার্মান সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ফরাসি কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করতেন। ফ্রান্স থেকে পালিয়ে পর্তুগাল আসার পর বেকার বিভিন্ন দূতাবাসের পার্টিগুলোতে অংশ নেন এবং ফরাসি প্রতিরক্ষা আন্দোলনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন। হোটেলরুমে ফিরে এসব তথ্য অদৃশ্য কালি বা সুরক্ষা কালি ব্যবহার করে লিখে রাখতেন।
তবে নিউমোনিয়া ও রক্তে বিষক্রিয়াসহ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে বেকারের গুপ্তচর জীবন সংক্ষিপ্ত হয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় ২১ মাস হাসপাতালে কাটান তিনি। এরপর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে মিত্র বাহিনীর পক্ষে কাজ করে যুদ্ধের বাকি সময় পার করেন বেকার।
এলসি ম্যাকগিল
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জোসেফাইন বেকারের মতো এলসি ম্যাকগিলও সম্মুখসমরে অংশ নেননি। কিন্তু তাঁর লড়াইয়ের গল্প কম অনুপ্রেরণাদায়ক নয়। ১৯০৫ সালে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার শহরে জন্মগ্রহণ করেন ম্যাকগিল। মধ্যবিত্ত পরিবারের এই নারী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথম কানাডিয়ান নারী হিসেবে ১৯২৭ সালে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বা তড়িৎ প্রকৌশলবিদ্যার ডিগ্রি অর্জন করেন। শুরুতে গাড়ি তৈরির কাজ করতেন। পরে বিমানের মতো রোমাঞ্চকর পরিবহন তৈরিতে মনোযোগ দেন ম্যাকগিল।
কিন্তু প্রাণঘাতী পোলিও রোগ ম্যাকগিলের কর্মময় জীবনকে থামিয়ে দেয়। কোমর পর্যন্ত অবশ হয়ে পড়ায় দৈনন্দিন কাজে তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন হতো এবং মাংসপেশির খিঁচুনিতেও ভোগেন তিনি। পুরোপুরি সুস্থ না হলেও তিনি হাঁটতে পারতেন এবং কাজেও ফিরতে পেরেছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কানাডিয়ান গাড়ি ও ঢালাই কোম্পানিতে (ক্যান-কার হিসেবে পরিচিত) কাজ করেন ম্যাকগিল। প্রধান বিমান প্রকৌশলী হিসেবে তিনি ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান হকার-হারিকেন তৈরি করেন। এর জন্য তাকে ‘কুইন অব হারিকেনস’ বা ‘হারিকেনের রানি’ বলা হয়। এমনকি ঠান্ডা আবহাওয়ার উপযোগী যুদ্ধবিমানের নকশাও করেন তিনি। বি-শীতলীকরণ ও স্কি ল্যান্ডিংসহ ম্যাকগিলের তৈরি নতুন হকার হারিকেন শীতকালীন পরিবেশের জন্য উপযুক্ত ছিল।
যুদ্ধের বাইরে ম্যাকগিল কানাডিয়ান ফেডারেশন অব বিজনেস অ্যান্ড প্রফেশনাল উইমেনস ক্লাবের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করেন। তিনি নারী অধিকারের পক্ষে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। ১৯৭১ সালে ম্যাকগিলকে কানাডার সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘অর্ডার অব কানাডা’ দেওয়া হয়।
ল্যুদমিলা পাভলিশেংকো
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের একটি গ্রামে বেড়ে ওঠেন ল্যুদমিলা পাভলিশেংকো। ১৯২২ সালের ডিসেম্বরে গ্রামটি সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ হয়। ১৯৩২ সালে স্থায়ীভাবে রাজধানী কিয়েভে চলে আসেন তিনি। ফায়ারিং রেঞ্জ বা বন্দুক চালনা প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যাওয়ার পর নিজের মধ্যে নিখুঁতভাবে গুলি চালানোর ক্ষমতা টের পান। পরের কয়েক বছর তিনি নিজের দক্ষতাকে শাণিত করেন। একপর্যায়ে ১২টি পুরস্কারের শ্যুটিং টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সব কটিই জিতে নেন ল্যুদমিলা!
১৯৪১ সালে নাৎসিরা সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করলে তিনি লড়াইয়ে যোগ দেন। পাভলিশেংকো রাইফেল বিভাগের সদস্য হিসেবে রেড আর্মিতে যোগ দেন। এর আগে তিনি নাৎসীদের সহায়তাকারী রোমানিয়ার সেনাদের গুলি করে হত্যা করে দক্ষতার প্রমাণ দেন।
রেড আর্মিতে বেশির ভাগ নারী সম্মুখসমরে অংশ না নিলেও বহু নারী ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছেন। বিশেষ করে সোভিয়েত স্নাইপারদের জীবন খুব সংক্ষিপ্ত হতো। তাই পাভলিশেংকোর জীবনও ঝুঁকিতে ছিল।
তবে তিনি মৃত্যু ও ধরা পড়া এড়াতে সক্ষম হন। তার পরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শত্রুকে হত্যা করেন তিনি। ওডেসা অবরোধের সময় ১৮৭ জন জার্মান সৈনিককে হত্যা করেন পাভলিশেংকো। সেভাস্তোপল (রুশ শহর) যুদ্ধে তাঁর শিকার হয় আরও শত্রুসেনা। কিন্তু এ যুদ্ধই ছিল তাঁর শেষ লড়াই। শার্পনেলের শেলের আঘাত পান পাভলিশেংকো। সেই ক্ষত থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। বাধ্য হয়ে অবসর নিতে হয় তাঁকে।
তার পরও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও তার ভূমিকা ছিল। ক্রেমলিনে জোসেফ স্ট্যালিনের সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠকের পর সোভিয়েতের সমর্থনে তহবিল সংগ্রহের জন্য তিনি আমেরিকায় যান। দক্ষ মার্কসম্যান হিসেবে পাভলিশেংকোকে অন্য সোভিয়েত প্রতিনিধিদের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন আমেরিকার সাংবাদিকেরা। কিন্তু বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের চেয়ে পাভলিশেংকোর চেহারা ও নারীত্ব নিয়েই মার্কিন সাংবাদিকদের মনোযোগ বেশি ছিল। তাঁদের চেয়ে দেশের মানুষ তাঁর প্রতি বেশি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। ১৯৪৩ সালে পাভলিশেংকো বীরত্বের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বোচ্চ বিশেষ সম্মাননা পান।
হ্যানি শ্যাফট
হ্যানি শেফট ছিলেন উচ্চাভিলাষী তরুণী। তিনি জাতিসংঘে কাজ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৪০ সালে নাৎসিরা নেদারল্যান্ডসে আক্রমণ করায় তাঁর আর আমস্টার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া হয়নি।
নেদারল্যান্ডস জার্মানির দখলে চলে গেলে ডাচ ইহুদিরা ধীরে ধীরে তাদের অধিকার হারাতে থাকে। তাঁদের জন্য কিছু করার তাড়না বোধ করছিলেন শ্যাফট। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদি বন্ধুদের জন্য জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে দিতেন তিনি। এর ফলে তাঁরা নির্যাতন এড়াতে সক্ষম হন।
নাৎসিরা ডাচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দখলদার বাহিনীর প্রতি আনুগত্যের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। তখন অনেকের সঙ্গে শ্যাফটও তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি হারলেমে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে আরভিভি নামে ডাচ প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দেন।
এই বাহিনীর সদস্যরা শত্রুদের পরাস্ত করার জন্য বন্দুক ও বিস্ফোরক ব্যবহার করতেন। দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী নাৎসিদের সহযোগী ডাচ নাগরিকদের ধরাই ছিল তাঁদের প্রথমিক লক্ষ্য। শ্যাফট এই গোষ্ঠীর পক্ষে নাশকতা ও হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করতেন। তিনি এতটাই সফল হয়েছিলেন যে শিগগির তিনি প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন এবং ‘লাল চুলের মেয়ে’ উপাধি পান।
দুঃখজনকভাবে যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারেননি শ্যাফট। তাকে একটা তল্লাশি চৌকিতে পিস্তলসহ আটক করা হয়। শ্যাফটের চুলের কালো ছদ্ম রং ম্লান হতে শুরু করলে নাৎসিরা তাঁর পরিচয় টের পেয়ে যায়। তারা তাঁকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় এবং তাঁর ওপর নির্যাতন চালায়।
মিত্র শক্তির হাতে নেদারল্যান্ডসকে মুক্ত হওয়ার ঠিক ১৮ দিন আগে নাৎসিরা পশ্চিম হারলেমের এক টিলায় নিয়ে হ্যানি শ্যাফটকে হত্যা করে।
ইরিনা স্যান্ডলার
পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে বড় হয়েছেন ইরিনা স্যান্ডলার। খ্রিষ্টান পরিবারে বেড়ে উঠলেও শৈশবে স্যান্ডলারের বহু ইহুদি বন্ধু ছিল।
১৯৩৯ সালে নাৎসিরা পোল্যান্ড দখল করে এবং শিগগির তারা ইহুদিবিরোধী নীতি বাস্তবায়ন করে। ১৯৪০ সালে নাৎসিরা ওয়ারশতে ইহুদি বস্তি প্রতিষ্ঠা করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। ছোট একটা এলাকায় কাঁটাতারের দশ ফুট প্রাচীরবেষ্টিত ওই বস্তিতে ৪০ হাজার ইহুদীকে আটকে রাখা হয়। সমাজের বাকিদের থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। তাদের পরিস্থিতি খুব ভয়ানক ছিল। তাদের খাবার দেওয়া হতো না।
স্যান্ডলার তাদের সাহায্য করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। ওয়ারশর সমাজকল্যাণ বিভাগের সদস্য হিসেবে ‘টাইফাস’ রোগের লক্ষণ পরীক্ষার জন্য বস্তি পরিদর্শনের অনুমতি ছিল তাঁর। কাউন্সিল টু এইড জিউস নামে একটি সংস্থার সহায়তায় স্যান্ডলার ইহুদি শিশুদের নিরাপদে বস্তি থেকে বাইরে পাচার করতেন।
কিছু শিশুকে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করে বাইরে পাচার করা হয়। বাকিদের টুলবক্সে ও আলুর বস্তার মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়। একবার বস্তির বাইরে শিশুরা প্রায় নাৎসিদের হাতে ধরা পড়েছিল। স্যান্ডলার শিশুদের জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে খ্রিষ্টান এতিমের ছদ্মবেশে আশ্রয়ে রাখেন। কিন্তু শিশুদের আসল নাম ও তাদের নতুন বাড়ির নথিপত্র তিনি সংরক্ষণ করে রাখেন, যাতে তাদের শনাক্ত করা যায়।
১৯৪৩ সালের অক্টোবরে গোপন খবর পেয়ে জার্মান গোয়েন্দা পুলিশ (গেস্টাপো) স্যান্ডলারকে গ্রেপ্তার করে। তথ্যের জন্য তাঁকে নির্যাতন করা হলেও স্যান্ডলারের মুখ খুলতে পারেনি তারা। সৌভাগ্যক্রমে কাউন্সিল টু এইড জিউস নাৎসিদের ঘুষ দিয়ে বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে এবং নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
যুদ্ধ শেষ হলে উদ্ধারকৃত শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে স্যান্ডলারকে খুব বেগ পেতে হয়। কারণ অনেকের বাবা-মাকে হলোকাস্টের (ইহুদি গণহত্যা) সময় হত্যা করা হয়। যাদের বাবা-মার সন্ধান মেলেনি, তাদের ইসরায়েলে পাঠিয়ে দেয় কাউন্সিল টু এইড জিউস।
(দ্য কালেক্টর থেকে অনূদিত)

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
১ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

অক্ষশক্তির বিজয় ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই লড়াইয়ের সম্মুখভাগে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও বহু নারী সমানতালে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইতিহাসে এমন পাঁচ বীর নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যাঁরা সম্মুখসমরে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেণাদায়ী ভূমিকা রেখেছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

অক্ষশক্তির বিজয় ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই লড়াইয়ের সম্মুখভাগে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও বহু নারী সমানতালে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইতিহাসে এমন পাঁচ বীর নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যাঁরা সম্মুখসমরে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেণাদায়ী ভূমিকা রেখেছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
১ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

অক্ষশক্তির বিজয় ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই লড়াইয়ের সম্মুখভাগে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও বহু নারী সমানতালে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইতিহাসে এমন পাঁচ বীর নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যাঁরা সম্মুখসমরে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেণাদায়ী ভূমিকা রেখেছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
১ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

অক্ষশক্তির বিজয় ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। সেই লড়াইয়ের সম্মুখভাগে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও বহু নারী সমানতালে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ইতিহাসে এমন পাঁচ বীর নারীর সন্ধান পাওয়া যায়, যাঁরা সম্মুখসমরে না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেণাদায়ী ভূমিকা রেখেছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
১ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে