Ajker Patrika

গোলাপি বালুর সৈকতের দেখা মিলবে যে দ্বীপে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৩, ১৫: ২৯
Thumbnail image

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ বাহামার ছোট্ট এক দ্বীপ হারবার আইল্যান্ড। সেখানে গেলে প্রথমেই আপনার চোখ আটকে যাবে এর অদ্ভুত সুন্দর সৈকতে। মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি  ভাববেন, সৈকতের বালু এমন গোলাপি রং পেল কীভাবে? 

হারবার আইল্যান্ডের অবস্থান পূর্ব আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে। দৈর্ঘ্যে এটি সাড়ে তিন মাইলের মতো। চওড়ায় অবশ্য একেবারেই কম। এমনকি ভাটার সময়ও টেনেটুনে আধা মাইল মতো হবে। জনসংখ্যা বড়জোর হাজার দুয়েক। তবে দৃষ্টিনন্দন সব কটেজ, হোটেল আর চমৎকার স্বাদের খাবার পরিবেশন করা রেস্তোরাঁগুলোর জন্য আলাদা নাম আছে দ্বীপটির। তবে পর্যটকেরা এখানে ছুটে যান মূলত আশ্চর্য সুন্দর গোলাপি বালুর সৈকতের আকর্ষণে। 

দৈর্ঘ্যে সৈকতটি সাড়ে তিন মাইলের মতোএই গোলাপি বালু পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর কিন্তু অদ্ভুত সৈকতগুলোর একটিতে পরিণত করেছে একে। প্রায় গোটা দ্বীপের দৈর্ঘ্যজুড়েই পাবেন এই গোলাপি সৈকত। অবশ্য এ সৈকত চওড়ায় ৫০ থেকে ১০০ ফুট। 

সৈকতটি সানবাথ বা সূর্যস্নানের জন্যও দারুণ উপযোগী। পাশাপাশি এখানকার সাগরের উষ্ণ, স্বচ্ছ জলে সাঁতার কাটার মজাই আলাদা। বেশির ভাগ মানুষ গলফ কার্টে চেপে ঘুরে বেড়ান দ্বীপময়। দুই, চার ও ছয় আসনের এমন গলফ কার্ট পাবেন এখানে। এখানকার বিভিন্ন ট্যুর কোম্পানি ভাড়া দেয় এ ধরনের গাড়ি। সৈকতের কাছেই পাবেন পামগাছসহ নানা ধরনের গাছপালা। কাজেই গরম লাগলে অনায়াসে এগুলোর নিচে আশ্রয় নেওয়া যায়। 

সৈকতের পাশে আছে দৃষ্টিনন্দন সব কটেজকিন্তু আপনার মনে নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে এখানকার বালুর রং এমন আশ্চর্য গোলাপি হওয়ার কারণ কী? শুনে অবাক হবেন, সৈকতের গোলাপি রঙের জন্য দায়ী ফোরামিনিফেরা নামের একটি অতি ক্ষুদ্র প্রাণী। এটির শরীরে গর্তে ভরপুর একটি উজ্জ্বল গোলাপি কিংবা লাল খোল থাকে। এদিককার সাগরে এরা প্রচুর পরিমাণে থাকে। সাগরের কিনার ঘেঁষে উঠে যাওয়া পাহাড়ের নিচের অংশে, সাগরের মেঝেতে, পাথর ও গুহার মধ্যে এদের দেখা যায়। 

এখানকার সাগরের উষ্ণ, স্বচ্ছ জলে সাঁতার কাটার মজাই আলাদাএখন এই প্রবাল কীটগুলো মারা যাওয়ার পরে সাগরের ঢেউ এদের শরীরকে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে তীরে এনে ফেলে। তখন এটি বালু, সৈকতে থাকা আরও নানা উপাদান ও প্রবালের সঙ্গে মিশে সৈকতের বালুকে গোলাপি করে তোলে। এর সঙ্গে আরও যোগ হয় প্রবাল প্রাচীর থেকে আসা ক্যালসিয়াম কার্বোনেট। সব মিলিয়ে তাই এমন আশ্চর্য রঙের সৈকতের দেখা মেলে পৃথিবীতে কমই। পানির কিনারে এবং ভেজা বালুতে এই গোলাপি রং বেশি চোখে পড়বে আপনার। পৃথিবীর অন্য সব সৈকতের মতো এই গোলাপি সৈকতেও খালি পায়ে অনায়াসে হেঁটে যেতে পারবেন আপনি। 

ফেরিতে বাহামার রাজধানী নাসাউ থেকে মোটামুটি ঘণ্টা আড়াই সময় লাগে হারবার দ্বীপে পৌঁছাতেদ্বীপ হিসেবে একেবারে ছোট হলেও হারবার দ্বীপে গোলাপি সৈকত ছাড়াও দেখার মতো আরও জিনিস আছে। বিশেষ করে এখানকার ঐতিহাসিক দালানগুলো না দেখলেই নয়। এর মধ্যে ডানমোর টাউন পাবলিক লাইব্রেরি ও সেন্ট জন’স অ্যাংলিকেন চার্চ অন্যতম। এখনকার সাগরে দেখা পাবেন বর্ণিল সব মাছ, কচ্ছপ এমনকি জাহাজের ধ্বংসাবশেষও। ডুবুরিদেরও তাই বেশ পছন্দের জায়গা এখানকার সাগর। 

সৈকতের গোলাপি রঙের কারণ ফোরামিনিফেরা নামের একটি অতি ক্ষুদ্র প্রাণীহারবার দ্বীপের সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হলো নর্থ ইলিওথেরা এয়ারপোর্ট। সেখান থেকে গাড়িতে চেপে নিকটতম ঘাটে চলে যান পর্যটকেরা। তারপর ফেরি বা ওয়াটার ট্যাক্সিতে করে অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারেন গোলাপি সৈকতের দ্বীপে। বাহামার রাজধানী নাসাউ থেকেও ওয়াটার ট্যাক্সি বা ফেরিতে চেপে দ্বীপটিতে পৌঁছানো যায়। ফেরিতে নাসাউ থেকে মোটামুটি ঘণ্টা আড়াই সময় লাগে হারবার দ্বীপে পৌঁছাতে। 

সূত্র: বাহামাস ডট কম, ভিয়েতনাম টাইমস, দি জারকার ডট কম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত