নোভাক জোকোভিচ

নোভাক জোকোভিচ কি ‘গোট ডিবেট’ বা সর্বকালের সেরার বিতর্কের সমাধান করে দিলেন? গত পরশু ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালের পর এমন একটা বিষয় সামনে এনেছে বিবিসি।

শিরোপা সংখ্যায় পুরুষ টেনিসে নোভাক জোকোভিচই সর্বশ্রেষ্ঠ এটা মানতে কারও কোনো দ্বিধা নেই। টেনিস কিংবদন্তিসহ অনেকে এটা মানছেনও। তবে সার্বিয়ান তারকা নিজেকে এমনটা মানতে নারাজ। তাঁর মতে, তিনি শুধু নিজের ইতিহাস লিখছেন। আর কর্মের বিচারের দায়িত্ব অন্যর উপরে ছেড়ে দিয়েছেন। 

প্রথম সেটে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলেছিলেন ক্যাসপার রুড। সেটির বিপরীতে অভিজ্ঞ নোভাক জোকোভিচ অভিজ্ঞতার পুরোটা দিয়ে নিজেকে নিংড়ে দিলেন। দ্বিতীয় সেট জিতে নিলেন সহজেই। তৃতীয় সেটে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন রুড। তবে সেটি টাইব্রেকারে যাওয়ার আগেই জোকোভিচ জিতে যান ৭-৬ (৭-১),৬-৪, ৭-৫ গেমে। 

সেরেনা উইলিয়ামসের ক্ষেত্রে অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়েছিল টেনিসপ্রেমীদের। স্টেফি গ্রাফের ২২ ছোঁয়া কিংবা তাঁকে ছাড়িয়ে ২৩-এ পা রাখতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে সেরেনাকেও।

ফ্রেঞ্চ ওপেনের ড্রয়ের সময়ই জানা যায় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবেন নোভাক জোকোভিচ ও কার্লোস আলকারাজ। তার প্রমাণও মিলেছে আজ। নিজেদের বাধা পেরিয়ে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছেন তাঁরা।

নোভাক জোকোভিচকে ‘জোকার’ ডাকেন কেউ কেউ। কারণটা আর কিছু নয়, কারণে-অকারণে একটা কিছু করে তিনি মানুষ হাসাতে পারেন। সার্বিয়ান তারকার প্রতিদ্বন্দ্বী কাউকে অনুকরণ কিংবা তাদের চিরচেনা অঙ্গভঙ্গির নকল করার কথা কমবেশি সবারই জানা। তবে

নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন নোভাক জোকোভিচ! আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া ফ্রেঞ্চ ওপেনের ক্লে কোর্টের রাজা রাফায়েল নাদাল নেই—ভাগ্যবান এ জন্য নন তিনি। ভাগ্যবান এ কারণেই, এর মধ্যে জোকোভিচ জিতে ফেলেছেন দুটি ফ্রেঞ্চ ওপেন।

মন্টে কার্লো মাস্টার্স থেকে এত দ্রুত বিদায় নেবেন নোভাক জোকোভিচ, হয়তো কল্পনাও করেনি কেউ। কিন্তু গতকাল ফ্রান্সের টুর্নামেন্টটি তাই হয়েছে। শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছেন টেনিসের এক নম্বর তারকা। 

কোর্টে একটু মজা-রসিকতা করেন বলে নামের সঙ্গে মিল রেখে নোভাক জোকোভিচের নাম হয়ে গেছে ‘জোকার’। ধারাবাহিক সাফল্যে কারও কাছে তিনি পরিচিত ‘মেশিন’ নামে। ডাকনামের অবশ্য অভাব নেই সার্বিয়ান তারকার। তবে নিজের সময়ে রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদাল টেনিস বিশ্বের যে অকুণ্ঠ বা নিরঙ্কুশ ভালোবাসা পেয়েছেন, জোকোভিচ তা পেয়ে

স্তেফোনোস সিৎসিফাসকে হারিয়ে রেকর্ড গ্র্যান্ড স্লামের মালিক রাফায়েল নাদালের পাশে বসলেন নোভাক জোকোভিচ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে সার্বিয়ান তারকা জিতেছেন ৬-৩,৭-৬, ৭-৬ (৭ /৫) গেমে। 

এক বছর আগে-পরের দৃশ্যটা কতই না ব্যতিক্রম! গত বছর করোনা প্রতিষেধক ছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলতে গিয়ে মেলবোর্নে আটক হয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচ। পরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল দেশে। অথচ নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরতেই দৃশ্যপট ভিন্ন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের রাজাকে সমাদরে

রাফায়েল নাদালের ফ্রেঞ্চ ওপেন, রজার ফেদেরারের উইম্বলডন আর নোভাক জোকোভিচের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। দলিল দস্তাবেজ ছাড়াই, এই তিন গ্র্যান্ড স্ল্যাম নিজেদের সম্পত্তিই বানিয়ে ফেলেছেন টেনিসের তিন মহাতারকা। 

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নোভাক জোকোভিচের দাপট চলছেই। আন্দ্রে রুবলেভকে সরাসরি সেটে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছেন তিনি। অন্যদিকে নারীদের এককে ডোনা ভেকিচকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছেন আরিয়ানা সাবালেঙ্কাও। 

শেষবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে এসেও কোভিড প্রতিষেধক না নেওয়ায় টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি নোভাক জোকোভিচ। এবার সেরকম কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে চোখ রাঙাচ্ছিল তাঁকে চোট। তবে সব রকম প্রতিবন্ধকতাকে একপাশে রেখে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন তিনি। 

শুরুর আগেই চোটে বেশ কয়েকজন টেনিস তারকা ছিটকে গেছেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে। টুর্নামেন্ট শুরুর পর একই কারণে ছিটকে গেছেন রাফায়েল নাদাল। দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ৬৫ নম্বরে থাকা ম্যাকেঞ্জি ম্যাকডোনাল্ডের বিপক্ষে নিতম্বের চোট নিয়ে খেলে হেরেছেন টেনিস কিংবদন্তি। 

করোনাভাইরাস প্রতিষেধক না নেওয়ায় গত বছর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে পারেননি নোভাক জোকোভিচ। মেলবোর্ন থেকে আটক করে সার্বিয়ান তারকাকে ফেরত পাঠানো হয় ঘরে। বিষয়টি ঝড় তুলে

গত জানুয়ারিতে বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলতে গিয়ে ভিসা জটিলতার কারণে মেলবোর্নে আটক হয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচ। কোভিড-১৯ টিকা না নিয়ে বিশেষ মেডিকেল ছাড়পত্র হাতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলতে গিয়েছিলেন তিনি।