এশিয়া কাপ

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে তুমুল আগ্রহ থাকে সবারই। বৃষ্টির বাধা পড়ুক বা খেলা গড়াক রিজার্ভ ডেতে, এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে আসেন অসংখ্য দর্শক। হাইভোল্টেজ এই ম্যাচে ঘটে অনেক মজার ঘটনাও

বাবর আজম মানেই যেন রেকর্ড। ব্যাটিংয়ে পাল্লা দিয়ে একের পর এক রেকর্ড তো তিনি করছেনই। পাশাপাশি পুরস্কার জয়ের ক্ষেত্রেও রেকর্ড গড়ছেন তিনি। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তৃতীয়বারের মতো আইসিসির মাসসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছেন পাকিস্তানি অধিনায়ক

পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা উত্তাপ না ছড়াক, তবু একটা মানসিক চাপ তো ছিলই। সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার জন্য একদিনও সময় মেলেনি। দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলকে দেখে অবশ্য এটা বোঝার উপায় ছিল না।

সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে এশিয়া কাপের মাঝপথে দেশে ফিরেছিলেন মুশফিকুর রহিম। গতকাল কন্যা সন্তানের বাবাও হয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলতে আবারও শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় ফিরতে হচ্ছে তাঁকে

রিজার্ভ ডের ‘সুবিধা’ নিতে গিয়ে অবশ্য আরেকটা জায়গায় ভালোই ধকল নিতে হচ্ছে ভারতকে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ গতকাল রিজার্ভ ডেতে গড়ানোয় কোনো বিশ্রাম ছাড়াই আজ তাদের আবার মাঠে নামছে ভারত। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর মধ্যে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। 

শ্রীলঙ্কার মাঠে ম্যাচ মানেই যেন এখন রাজ্যের দুশ্চিন্তা। ম্যাচ কি ঠিক সময়ে শুরু হবে, ম্যাচের ফল কি পাওয়া যাবে—এবারের এশিয়া কাপে লঙ্কায় কোনো ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে এই প্রশ্নগুলো উঁকি দেয় সবার মনে। লঙ্কায় ‘বিনা নিমন্ত্রণেই’ প্রতি ম্যাচে বাগড়া দিয়েছে বেরসিক বৃষ্টি।

ভারত-পাকিস্তান সুপার ফোরের ম্যাচ রিজার্ভ ডেতে যেতেই ক্রিকইনফো মজা করে একটা পোস্ট দিয়েছিল। ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট তখন লিখেছিল, ‘ভারতের টানা তিন ম্যাচ।’ সত্যিই তো তাই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজই যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে হবে ভারতকে। 

হতাশা যেন এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের নিত্যসঙ্গী। ৪ ম্যাচের ৩ ম্যাচ হেরে ফাইনালের আগেই থেমে গেছে তাদের পথচলা। এমন বাজে পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে নিয়ে হচ্ছে সমালোচনা। এই কঠিন সময়ে সাকিব আল হাসানরা পাশে পাচ্ছেন তাঁদের সাবেক কোচ শ্রীধরন শ্রীরামকে।

নাঈম শেখ, আফিফ হোসেন আর শেখ মেহেদী হাসান গতকাল দুপুরে একসঙ্গে খেতে বেরিয়েছিলেন। আফিফ-মেহেদীকে তবু স্বাভাবিক দেখাল। কিন্তু নাঈমকে আক্ষরিক অর্থেই বিধ্বস্ত মনে হলো। কলম্বোর সব মেঘ যেন নেমে এসেছে তাঁর মুখাবয়বে।

ম্যানচেস্টার থেকে কলম্বো-মাঝে কেটে গেছে ৪ বছর। মাঝের চার বছরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি কুলদীপ যাদবের। তাছাড়া পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা আইপিএল না খেলায় তাঁদের (পাকিস্তানি ক্রিকেটার) শক্তি, দুর্বলতা বোঝাটা কুলদীপের জন্য কিছুটা কঠিনই বটে। আর সেই কুলদীপের ঘূর্ণিতেই গতকাল পাকিস্তান রীতিমতো

রিজার্ভ ডের ‘সুবিধা’ নিতে গিয়ে অবশ্য আরেকটা জায়গায় ভালোই ধকল নিতে হবে ভারতকে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ রিজার্ভ ডেতে গড়ানোয় কোনো বিশ্রাম ছাড়াই আজ তাদের আবার মাঠে নামতে হবে। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বিরাট কোহলিদের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। 

ভারতের বিপক্ষে বোলিং-ব্যাটিং কিছুতেই পেরে উঠল না পাকিস্তান। শাহিন শাহ আফ্রিদি-নাসিম শাহদের ওপর তাণ্ডব চালিয়ে আগে ব্যাটিং করে ৩৫৬ রান করেছিল ভারত। বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে কুলদীপ যাদবের ঘূর্ণিতে নাকাল পাকিস্তানের ব্যাটাররা। ৩২ ওভারে ১২৮ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ভারত জিতেছে ২২৮ রানে। 

এবারের এশিয়া কাপ আয়োজনের দায়িত্ব মূলত পাকিস্তানের। তবে ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক বৈরিতায় আয়োজক হিসেবে যোগ করা হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। সুপার ফোরের একটি বাদে টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচ গুলো হবে শ্রীলঙ্কায়। এ জন্য কলম্বোতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে। 

পাকিস্তানের সামনে রানপাহাড় দাঁড় করিয়েছে ভারত। পাড়ি দিতে হলে দুর্দান্ত কিছুই করতে হতো পাকিস্তানের টপ অর্ডার ব্যাটারদের। কিন্তু পাকিস্তান যেন শুরুতেই পিছিয়ে গেল। ৪৩ রানে টপ অর্ডারের গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট হারিয়েছে তারা। 

প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে নিজের শেষ তিন ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করেছিলেন বিরাট কোহলি। প্রেমাদাসার সঙ্গে তাঁর প্রেমটা যেন পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও জমিয়ে তুললেন। আজ টানা চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিলেন সেই মাঠে। সব মিলিয়ে ওয়ানডে সংস্করণে ৪৭তম সেঞ্চুরি কোহলির।

বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের সেঞ্চুরিতে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড রান সংগ্রহ করেছে ভারত। কোহলির ১২২ ও লোকেশের ১১১ রানের সৌজন্যে আগে ব্যাট করে ৩৫৬ রান বিশাল সংগ্রহ পেয়েছে তারা। ওয়ানডে সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে যৌথ সর্বোচ্চ সংগ্রহ এটি। এর আগে ২০০৫ সালে বিশাখাপত্তমে ৩৫৬

রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল ওপেনিং জুটিতে দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন ভারতকে। ১০০ বলে দুজনে তুলেছিলেন ১২১ রান। ফিফটি করে আউট হন গিল ও রোহিত। তৃতীয় উইকেটে বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল সেই ছন্দ ধরে রাখলেন। তবে আজ রিজার্ভ ডেতে ব্যাটিংয়ে নেমে তাঁরাও জুটিতে সেঞ্চুরি করলেন।