Ajker Patrika

শিশু সুরক্ষা নিয়ে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে ইইউর তদন্ত শুরু

শিশু সুরক্ষা নিয়ে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে ইইউর তদন্ত শুরু

শিশু সুরক্ষার বিষয়ে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। অভিযোগে বলা হয়, শিশুদের মধ্যে আসক্তিমূলক আচরণ তৈরি করার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে মেটার মালিকানাধীন এই দুই প্ল্যাটফর্ম। দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নে ডিজিটাল সার্ভিস অ্যাক্টের (ডিএসএ) আওতায় এই তদন্ত করা হবে। অনলাইনে ইউরোপীয় নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ও অবৈধ কনটেন্ট সরাতে পৃথিবীর বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করছে আইনটি। 

মেটার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এটি দ্বিতীয় তদন্ত। অনলাইনে ভুয়া প্রচার বন্ধে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে গত মাসে একটি তদন্ত শুরু ইইউ। 

ইইউয়ের অভ্যন্তরীণ বাজার কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন বলেন, ‘তরুণ ইউরোপীয়দের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের নেতিবাচক প্রভাবের ঝুঁকি কমানোর জন্য মেটা ডিএসএ–এর বাধ্যবাধকতা মেনে চলার জন্য যথেষ্ট কাজ করেছে তা সম্পর্কে নিশ্চিত নই আমরা। 

তিনি আরও বলেন, ‘নিজের সন্তানদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কোনো চেষ্টা আমরা বাকি রাখিনি।’ 

তরুণ ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান মেটার মুখপাত্র। তিনি বলেন, আমরা তরুণদের অনলাইনে নিরাপদ, বয়স-উপযুক্ত অভিজ্ঞতা দিতে চাই ও তাদের সুরক্ষার জন্য ৫০ টিরও বেশি টুল এবং নীতি তৈরি করতে কোম্পানিটি এক দশক সময় ব্যয় করেছে। পুরো প্রযুক্তি শিল্প এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে ও ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে আমাদের কাজের বিস্তারিত তথ্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।’ 

বৃহস্পতিবারের ঘোষণায় সন্দেহ প্রকাশ করে ইউরোপীয় কমিশন বলেছে, প্ল্যাটফর্মের সিস্টেমগুলো ‘শিশুদের মধ্যে আচরণগত আসক্তিকে উদ্দীপিত করতে পারে।’ 

কমিশন তথাকথিত ‘র‍্যাবিট হোল’ প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীদের অ্যালগরিদমের ওপর ভিত্তি করে একটি পর একটি কনটেন্ট দেখানো হয়, কিছু ক্ষেত্রে এটি সংবেদশীল কনটেন্ট দেখিয়ে ফেলে। 

মেটার বয়স শনাক্তের টুলগুলো তেমন একটা কার্যকরী নয় বলে আশঙ্কা করেছেন ইইউ কমিশন। 

শিশুদের সুরক্ষা ও অনলাইনে তাদের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ডিএসএ-এর কঠোর নিয়ম রয়েছে। তবে মেটা বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করার জন্য যথেষ্ট কাজ করছে না বলে মনে করছে ইইউ। 

তদন্তের কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। 

ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামসহ আরও ২৩টি বড় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যেগুলোকে ডিএসএ মেনে চলতে হবে। এই আইন মেনে না চললে এসব কোম্পানিকে বিশ্বজুড়ে আয়ের ৬ শতাংশ জরিমানা দিতে হতে পারে। এই আইন বারবার লঙ্ঘন করলে কোম্পানিগুলোকে নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হতে পারে। 
স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম নিয়েও তদন্ত করছে ডিএসএ। 

গত ফেব্রুয়ারিতে তরুণদের ওপর নেতিবাচক প্রভাবগুলো মোকাবিলায় যথেষ্ট কাজ করছে না বলে অভিযোগ তুলে টিকটকের বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে ইউরোপীয় কমিশন। 

টিকটকের ‘আসক্তিমূলক’ অ্যালগরিদম ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি পারে বলে সতর্ক করে ইইউ। তাই গত এপ্রিলে টিকটিক লাইট অ্যাপের পুরস্কার দেওয়ার ফিচারটিও বন্ধের জন্য মূল কোম্পানি বাইটড্যান্সকে বাধ্য করা হয়। 

এ ছাড়া চীনের অনলাইন খুচরা বিক্রির প্ল্যাটফর্ম আলিএক্সপ্রেস ও ইলন মাস্কের মালিকানাধীন এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্ম নিয়েও তদন্ত করছে ইইউ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত