Ajker Patrika

অনলাইন স্টোরেজে ডেটা রাখি নিরাপদে

অনিন্দ্য মজুমদার অর্ণব
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০: ৪১
অনলাইন স্টোরেজে  ডেটা রাখি নিরাপদে

অনলাইনে আপনার জরুরি ফাইল সংরক্ষণ করার জন্য যে জায়গা, সেটাই অনলাইন স্টোরেজ। বহনযোগ্য সংরক্ষণাগারের ব্যবস্থা, যেমন অপটিক্যাল মাধ্যম বা ফ্ল্যাশ ড্রাইভ ইত্যাদির বিকল্প হিসেবে কাজ করে এটি। আপনি-আমি বা আমরা অনেকেই মোবাইল ফোনে তোলা ছবি প্রতিদিন গুগল ড্রাইভে সংরক্ষণ করে রাখি। এই গুগল ড্রাইভ একটি ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস। যেসব প্রতিষ্ঠান ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিসের সুবিধা দেয়, তাদের আমরা সার্ভিস প্রোভাইডার বা ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস প্রোভাইডারও বলে থাকি। এ ধরনের সেবা অনেক প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে। যেমন, গুগল ড্রাইভ, মিডিয়া ফায়ার, মেগা, ড্রপবক্স, আই ক্লাউড, আমাজন ক্লাউড ইত্যাদি।

অনলাইন স্টোরেজ কেন করবেন
প্রথমত, আপনার জরুরি ফাইলগুলো অনলাইন স্টোরেজে থাকা মানে আপনার ফাইল হারানোর ভয় কমে যাওয়া। কেবল ইন্টারনেট পরিষেবা থাকলে আপনার সংরক্ষিত ফাইল যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় আপনি কাজে লাগাতে পারবেন। 

নিরাপত্তা
চারদিকে সাইবার অপরাধের বিচিত্র সব খবর শোনা যায়। তার ওপর আছে হ্যাকারদের উৎপাত। তাই ব্যক্তিগত তথ্য খোয়া গেলে যাতে বিপাকে পড়তে না হয় সে জন্য সজাগ থাকতেই হয়।

যদিও ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানগুলো ফ্রি আর পেইড সার্ভিসের মধ্যে নিরাপত্তাব্যবস্থায় কোনো পার্থক্য রাখে না। কারণ, যে প্রতিষ্ঠান ফ্রি সার্ভিসে নিরাপত্তা ঠিকমতো রাখতে পারে না, তাদের পেইড সেবা কেউ নেবে না। তবে নিরাপত্তার দিক দিয়ে কোনো পার্থক্য না থাকলেও পার্থক্য থাকে ফিচারে।

তবুও নিজের স্বার্থে নিজের সংরক্ষিত ফাইল সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে যা করা যেতে পারে সেগুলো দেখে নেওয়া যাক।

১. এনক্রিপশন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে গুগল ড্রাইভ নিরাপদে রাখা সম্ভব। সহজ ভাষায় এনক্রিপশন মানে হলো, এক ধরনের মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজ, যা কম্পিউটার এক বিশেষ অ্যালগরিদমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করে। এটি সাধারণ যেকোনো ডেটাকে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে মেশিন রিডেবল ভাষায় পরিবর্তন করে দেয়, যেটা সাধারণ মানুষ আর রিড করতে পারে না। আসলে সেটা রিড করার মতো ফরম্যাটেই থাকে না।

২. ফাইল শেয়ারে সতর্ক থাকুন। ক্লাউড সেবার বড় বৈশিষ্ট্য হলো, ফাইল শেয়ার করার সুবিধা। খুব সহজে যেকোনো ফাইল সহজে শেয়ার করা যায়। বিশ্বস্ত ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে ফাইল শেয়ার করা উচিত নয়। এ ছাড়া মেইন ফোল্ডার শেয়ার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। প্রয়োজন শেষে ফাইলের শেয়ার অপশন বন্ধ করতে হবে।

৩. যেখানে সেখানে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করবেন না। আজকাল অনেক জায়গায় ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুযোগ মেলে। হ্যাকাররা এসব ফ্রি ব্যবহারের জায়গাগুলোতেই তাদের জাল বিছিয়ে রাখে বেশি। তাই ওয়াই-ফাই ব্যবহারের আগে সচেতন হোন।

৪. ভেরিফিকেশন ও পাসওয়ার্ডের দিকে নজর দিন। ডেটা ট্রান্সফারের জন্য নিজের মোবাইল ফোন অন্যের পিসিতে যুক্ত করবেন না। সেই সঙ্গে অন্যের ফোনও নিজের পিসিতে যুক্ত করা থেকে বিরত থাকুন। মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য চার্জার ব্যবহার করুন। হালনাগাদ ওএস এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। অনেক সময় টাকা বাঁচাতে উইন্ডোজের স্বয়ংক্রিয় হালনাগাদ বন্ধ রাখা হয়। এতে হ্যাকাররা সহজেই ঢুকে পড়তে পারে আপনার ক্লাউড স্টোরেজে। নিজেকে নিরাপদ রাখতে কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেম ও নিত্যব্যবহৃত সব সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করতে হবে।

ক্লাউডের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশ ৫-জির যুগে প্রবেশ করামাত্র ইন্টারনেটের গতিতে যে বিপ্লব শুরু হয়েছে, তাতে ক্লাউডের নির্ভরতা আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মনে রাখা জরুরি, প্রযুক্তি যত এগোবে, হ্যাকারদের দৌরাত্ম্য তত বাড়বে। সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকার পরও ঘটে যেতে পারে তথ্য চুরি। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে হয়তো কারও কোনো আগ্রহ নেই। রাষ্ট্রীয় বা প্রাতিষ্ঠানিক অনেক তথ্য আছে, যা গুরুত্বপূর্ণ। কেউই চাইবে না, এগুলো অন্য কারও কাছে চলে যাক। সেসব ডেটা নিজের কাছেই রাখা উচিত। কিছু ডেটা কখনোই পাবলিক ক্লাউডে রাখা উচিত নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত