Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রে চিপ আমদানিতে ট্রাম্পের ১০০ শতাংশ শুল্কের হুঁশিয়ারি

অনলাইন ডেস্ক
এখনো স্পষ্ট নয়, কত পরিমাণ চিপ বা কোন কোন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য এই শুল্কের আওতায় আসবে। ছবি: উইলিয়াম পটার
এখনো স্পষ্ট নয়, কত পরিমাণ চিপ বা কোন কোন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য এই শুল্কের আওতায় আসবে। ছবি: উইলিয়াম পটার

যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করে না বা ভবিষ্যতে করারও কোনো পরিকল্পনা নেই—এমন দেশ থেকে আমদানি করা সেমিকন্ডাক্টর চিপের ওপর প্রায় ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ট্রাম্প বলেন, ‘যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বা সে প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তাদের জন্য এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে না। তবে কেউ যদি বলে যে তারা উৎপাদন করবে এবং শেষ পর্যন্ত না করে, তাহলে আমরা তা পরে হিসাব করে তাদের কাছ থেকে আদায় করব। এটা গ্যারান্টি দিলাম।’

ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে আনুষ্ঠানিক শুল্ক ঘোষণা হিসেবে গণ্য করা হয়নি এবং তিনি এ বিষয়ে আর কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেননি। এখনো স্পষ্ট নয়, কত পরিমাণ চিপ বা কোন কোন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্য এই শুল্কের আওতায় আসবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য চিপ তৈরি করে তাইওয়ানের চিপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি। কোম্পানিটি এখন যুক্তরাষ্ট্রেই কারখানা গড়ছে। ফলে এনভিডিয়ার মতো গ্রাহকদের ওপর এই শুল্কের প্রভাব পড়বে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এনভিডিয়া বলেছে, তারা আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি চিপ ও ইলেকট্রনিকসে শত শত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিনিয়োগ পরামর্শ প্রতিষ্ঠান অ্যানেক্স ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান জ্যাকবসেন বলেন, ‘যেসব বড় এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন স্থাপন করতে পারবে, তারাই সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। এটা বড়দের টিকে থাকার লড়াই।’

২০২২ সালে মার্কিন কংগ্রেস একটি ৫২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের চিপ উৎপাদন ও গবেষণা সহায়তা কর্মসূচি তৈরি করে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমলে বাণিজ্য দপ্তর পাঁচটি শীর্ষ সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপনে রাজি করাতে সক্ষম হয়।

বাণিজ্য বিভাগ জানায়, ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে ৪০ শতাংশ চিপ উৎপাদন করত, যা ২০২৪ সালে নেমে এসেছে ১২ শতাংশে।

চিপ আমদানিতে এই নতুন শুল্ক মূলত চীনকে লক্ষ্য করেই আরোপ করা হতে পারে, যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এখনো একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় রয়েছে। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ গবেষক মার্টিন চোরজেম্পা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর খাতে এত বড় বিনিয়োগ হয়েছে যে, খাতটির বড় একটি অংশই শুল্কমুক্ত থাকবে।’

তিনি বলেন, এই শুল্ক চীনা প্রতিষ্ঠান এসএমআইসি ও হুয়াওয়ের তৈরি চিপের ওপরও প্রযোজ্য হবে, কারণ এসব চিপ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে মূলত চীনে সংযোজন করা যন্ত্রে ব্যবহৃত হয়ে।

তবে চোরজেম্পা সতর্ক করেন, শুধু চিপের ওপর শুল্ক আরোপ করলে এবং অন্যান্য উপাদানে না করলে এর প্রভাব সীমিত হতে পারে।

অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি হয়েছে। এর ফলে দেশগুলো কিছুটা সুবিধা পাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তাদের অধিকাংশ রপ্তানিপণ্যের ওপর—যার মধ্যে গাড়ি, চিপ ও ওষুধ রয়েছে—একটি নির্ধারিত ১৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চিপের ওপর তাদের জন্য অন্য দেশের চেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করবে না। এর মানে, তারাও ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকছে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

৬ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, আসবেন পুতিনও

রাশিয়ার তেল চীনও কেনে, তবে ট্রাম্পের শুল্ক শুধু ভারতের ওপর কেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত