Ajker Patrika

আপওয়ার্কের সাতসতেরো

আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১০: ৫০
Thumbnail image

আপওয়ার্কে কাজের ধরন
আপওয়ার্কে ঘণ্টা এবং নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক—দুভাবেই কাজ করার সুযোগ আছে। ঘণ্টা হিসাবে কাজ করলে টাইম ট্র্যাকার দিয়ে ট্র্যাক করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। এক সপ্তাহ কাজ করলে পরের সপ্তাহের মধ্যে সাধারণত পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। ফিক্সড প্রাইসের কাজ একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্লায়েন্টকে বুঝিয়ে দিতে হয়। কাজ বুঝে নেওয়ার পর পারিশ্রমিক আপনার অ্যাকাউন্টে আসতে ১৪ দিনের মতো সময় লাগবে। আপওয়ার্কে প্রতিটি স্কিলের জন্য আলাদা বিশেষায়িত প্রোফাইল করার সুযোগ রয়েছে।

মিনহাজুল আসিফ
কোডম্যানবিডি ও ওয়েব ব্যাটেলিয়ন এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা। এই দুটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী তাঁর প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সিং শিখে খুঁজে পেয়েছেন আয়ের পথ। আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সার তিনি। এ পর্যন্ত আয় করেছেন প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ২০১২ সাল থেকে আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন তিনি। আপওয়ার্কে ১ হাজার ৫০০টির বেশি প্রকল্প তিনি সম্পন্ন করেছেন।   

আসিফের ৫ টিপস
»    যথেষ্ট দক্ষতা ও ক্লায়েন্ট কনভিন্স করার যোগ্যতা থাকলে নতুনরা আপওয়ার্কে সফল হবেন। 
»    প্রতিযোগিতা কম আছে নতুনদের এমন কোনো কাজের দক্ষতা অর্জন করা উচিত। এতে সহজে কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকে। 
»    আপওয়ার্কে পরামর্শক হিসেবে এবং প্রকল্প তৈরি করেও কাজ পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে কাজে আবেদন করা ছাড়াই একজন ফ্রিল্যান্সার কাজ পেতে পারেন। 
»    আপওয়ার্কে প্রোফাইল সাজানোর সময় ভালো পোর্টফোলিও ও প্রমাণপত্র যোগ করতে হবে। এতে ক্লায়েন্টের দিক থেকে বিশ্বস্ততা বাড়বে।
»    অ্যাভেইলেবল ব্যাজ চালু করে রাখতে হবে। এতে অরগানিক ভিউয়ের পাশাপাশি পেইড ভিউ পাওয়া যায়, যা প্রোফাইল র‍্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা সাহায্য করে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজের সন্ধান পাওয়া যায়। সার্বিকভাবে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।  

পরামর্শ
»    বিডিংয়ের সময় নির্দিষ্ট করবেন না: কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিড বা প্রপোজাল সাবমিট না করে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিড করুন। একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটা জবে কতগুলো বিড জমা পড়ল এটি দেখে বিড করা উচিত। এতে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ফ্রিল্যান্সাররা কোন সময়ে বেশি অ্যাকটিভ থাকেন তা বোঝা যায়।

»    বিশ্বস্ত থাকুন: মার্কেটপ্লেসের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে হবে। অনেকেই ১০ থেকে ২০ শতাংশ ফি বাঁচাতে ক্লায়েন্টকে মার্কেটপ্লেসের বাইরে আনার চেষ্টা করেন। এটি করা যাবে না। এ ছাড়া ফেক ক্লায়েন্ট চিনতে হবে।

»    ক্লায়েন্টকে প্রাধান্য দিন: আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস সম্পূর্ণভাবে ক্লায়েন্টকে প্রাধান্য দেয়। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ক্লায়েন্টের কোনো কাজ শেষ করলে তার কাছ থেকে আপনার সম্পর্কে পাবলিক ফিডব্যাকের পাশাপাশি প্রাইভেট ফিডব্যাকও নিয়ে থাকে আপওয়ার্ক। সুতরাং ক্লায়েন্টকে আপনি কেমন সার্ভিস দিলেন, কতটা আন্তরিক ছিলেন, তার প্রতি এগুলোর ওপর আপনার ভবিষ্যতে কাজ পাওয়া নির্ভর করবে।

সুদীপ্ত কুমার মণ্ডলসুদীপ্ত কুমার মণ্ডল
২০১৯ সাল থেকে সুদীপ্ত আপওয়ার্কে কাজ করছেন। তিনি আপওয়ার্ক স্পটলাইট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। অপু ন্যাশনাল টেক অ্যাওয়ার্ড পাওয়া ফ্রিল্যান্সার। আপওয়ার্কে ৯০টি প্রকল্প সম্পন্ন করেছেন তিনি। মাসে তাঁর গড়ে আয় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা।

আপওয়ার্কে যত সমস্যা
»    কানেক্ট বেশি কাটার কারণে অনেকেই কাজে উপযুক্ত হওয়ার শর্তেও প্রপোজাল পাঠাতে ভয় পান। 
»    অবিশ্বস্ততার কারণে অনেক ক্লায়েন্ট নতুন ফ্রিল্যান্সারদের কাজ দিতে চায় না। 
»    আগের তুলনায় প্রতিযোগিতা বেড়েছে।

নতুনদের জন্য
»    নতুনদের ক্যাটালগ তৈরি করে তার মার্কেটিং করে প্রাথমিক অবস্থায় কাজ নিতে হবে। বেশ কিছু রিভিউ ও রেটিং যুক্ত হলে প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে হবে। 
»    যে কাজে আপনি খুব পারদর্শী, সেই ধরনের কাজের জন্য আবেদন করতে হবে। 
»    জব প্রপোজাল পাঠানোর ক্ষেত্রে কপি কভার লেটার দেওয়া যাবে না। ক্লায়েন্টের চাহিদাকে প্রশ্ন মনে করে প্রপোজালের উত্তর লিখবেন।
»    স্কিল অনুযায়ী আপনার প্রোফাইল সাজিয়ে তুলুন যেন ক্লায়েন্ট প্রথমবারেই প্রোফাইল দেখে মুগ্ধ হয়।
»    যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ানো এবং একই ক্লায়েন্টের সঙ্গে বারবার কাজ করাটা খুব জরুরি। তাই কাজের ওপর মনোযোগের সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
»    প্রতিদিন ছোট ছোট কাজ না করে বড় প্রজেক্টে কাজ করা ভালো। তাই বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি কাজ করা যেতে পারে।
»    যে বিষয় নিয়ে কাজ করছেন, সেটার মতো বা কাছাকাছি অন্যান্য কাজও ধীরে ধীরে আয়ত্ত করে নিতে হবে। যেমন আপনি একজন গ্রাফিকস ডিজাইনার হলে তার পাশাপাশি অ্যানিমেশন বা ইউআই, ইউএক্স কিংবা ভিডিও এডিটিং-জাতীয় কাজ শিখতে পারেন।
»    এই পেশায় মাসিক আয়ের যেহেতু উত্থান-পতন আছে বলে কমপক্ষে ছয় মাসের ব্যাকআপ বা সঞ্চয় রাখতে হবে।

প্রোফাইল বাঁচাতে
»    আপওয়ার্কের সব টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন পড়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করা জরুরি।
»    ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ই-মেইল, মোবাইল ফোন নম্বর, সোশ্যাল মিডিয়া লিংক শেয়ার করা যাবে না।
»    ক্লায়েন্টের সঙ্গে কোনো ধরনের প্রতারণা করলে বা আপওয়ার্কের চোখে অবৈধ এমন কোনো কাজ করলে প্রোফাইল সাসপেন্ড হতে পারে।

আশরাফুজ্জামান পলাশআশরাফুজ্জামান পলাশ
পাবনার বেড়া থেকে ফ্রিল্যান্সিং করছেন আশরাফুজ্জামান পলাশ। আপওয়ার্কে ৭০৬টি প্রকল্প শেষ করেছেন তিনি। সেখান থেকে তাঁর আয় প্রায় ২ লাখ ডলার। আপওয়ার্কে তাঁর ব্যাজ টপ রেটেড প্লাস। পলাশ জানিয়েছেন, ভুল তথ্য আর অভিজ্ঞতার অভাবে বেশির ভাগ সময় প্রোফাইল অনুমোদন হয় না। সঠিক উপায়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে জানতে হবে। কোথাও আটকে গেলে গুগল বা ইউটিউব থেকে সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।

পলাশের ৫ টিপস
»    কোনো ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না। আইডির সঙ্গে নাম-ঠিকানার মিল থাকতে হবে।
»    সদ্য তোলা হাসিমুখের ছবি ব্যবহার করতে হবে। 
»    প্রতিটি প্রয়োজনীয় ঘর পূরণ করতে হবে।
»    যেকোনো একটি কাজে পারদর্শী হতে হবে আর সেটাতেই লক্ষ রাখতে হবে। 
»    প্রোফাইল ১০০ ভাগ শেষ করে পরে সার্টিফিকেট, টেস্টিমোনিয়াল যোগ করতে হবে। সুযোগ থাকলে স্কিল টেস্ট দিতে হবে। ২০-এর বেশি পোর্টফোলিও যোগ করতে পারলে ভালো হয়।

যা করা যাবে না
ক্লায়েন্টের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি করা যাবে না। কাজ শুরু হওয়ার পর ক্লায়েন্ট চাইলে মেইল বা মোবাইল ফোন নম্বর দেওয়া যাবে। কোনো কারণে ক্লায়েন্ট যদি রিপোর্ট করে, তাহলে আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করে দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত