Ajker Patrika

সাইবারবুলিং থেকে আপনার সন্তানকে রক্ষায় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন

প্রযুক্তি ডেস্ক
আপডেট : ১৯ মে ২০২১, ২৩: ৩৪
সাইবারবুলিং থেকে আপনার সন্তানকে রক্ষায় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করবেন

বর্তমানে কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের মাধ্যমে নেট জগতে অহরহ বিচরণ করছে মানুষ। নেট জগতে যেমন অনেক কিছু জানা যাচ্ছে, যোগাযোগ হচ্ছে বন্ধু আর স্বজনদের সঙ্গে, তেমনি নেতিবাচক অনেক বিষয়ের সম্মুখীনও হতে হচ্ছে মানুষকে। এ রকম নেতিবাচক একটি বিষয় হচ্ছে সাইবারবুলিং। যেকোনো সময় যেকোনো বয়সী মানুষ সাইবারবুলিংয়ের স্বীকার হতে পারে। তবে টিনএজ বাচ্চাদের সাইবারবুলিংয়ের শিকার হওয়ার বিষয়টি এখন মারাত্মক সামাজিক সমস্যা হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আবির্ভূত হয়েছে। বিশেষত শিশু–কিশোরদের এ সাইবারবুলিং থেকে রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন অভিভাবকেরা। সাইবারবুলিং থেকে আপনার সন্তানকে নিরাপদ রাখতে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখবেন—

১. গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত টিনএজাররা বেশি সাইবারবুলিংয়ের স্বীকার হয়। আপনি টিনএজ সন্তানের অভিভাবক হলে জানার চেষ্টা করুন আপনার সন্তান সাইবারবুলিংয়ের স্বীকার হচ্ছে কী না। পাশাপাশি এটাও জানার চেষ্টা করুন যে, আপনার সন্তান কাউকে সাইবারবুলিং করছে কি না। সন্তানদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। আপনার সন্তান এমন কিছুর শিকার হলে পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ বা এলাকাভিত্তিক প্রশাসনকে অবহিত করুন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব রয়েছে। পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ বা এ সম্পর্কিত প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের উচিত এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করা।

২. আপনার সন্তান আক্রান্ত হলে বুলিং–সংক্রান্ত সব তথ্য সংরক্ষণ করুন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানান।

৩. সাইবারবুলিংকারীর সঙ্গে বাদানুবাদে না গিয়ে তাকে ব্লক করাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিষয়টি আপনার সন্তানকে বোঝাতে হবে।

৪. অভিভাবক হিসেবে সাইবারবুলিংয়ের বিষয়টি বেশি বেশি জানুন। আপনার সন্তান নেটে কোন কোন বিষয় দেখছে। নেটের কারণে তার আচরণে কী কী প্রভাব পড়ছে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

৫. কোন কোন মাধ্যম থেকে সাইবারবুলিং হতে পারে, তা জানুন। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট থেকে বুলিং হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এসব প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীরা সরাসরিও বুলিং করতে পারে।

৬. সাইবারবুলিংয়ের লক্ষণগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। বয়ঃসন্ধিকালে যে আচরণটা কিশোর–কিশোরীরা করে, আপনার সন্তান অনেকটা সে ধরনের আচরণ করবে যখন সে সাইবারবুলিংয়ের স্বীকার হবে। যেমন কারও সঙ্গে কথা না বলা, ব্যক্তিগত তথ্য গোপন করার চেষ্টা করা ইত্যাদি। এ সময় তাদের মধ্যে হতাশা কাজ করে। তাদের খাবার ও ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন আসে। অনলাইন ব্যবহার করার পর আপসেট দেখা যায় তাদের। আবার অনেক সময় ক্রোধ প্রকাশ করতে দেখা যাবে, যদি তার স্মার্টফোন বা কম্পিউটার থেকে তাকে উঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে শেষের আচরণটি যারা সাইবারবুলিং করে, তারাই মূলত করে থাকে।

৭. নিজের ডেটা নিরাপদ রাখুন। আপনার সন্তানকেও ডেটা নিরাপদ রাখতে শেখান। পাসওয়ার্ড, ব্যক্তিগত তথ্য ইত্যাদি কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, তা শেখান। যেকোনো ওয়েবসাইটে না ঢোকা, অপরিচিত কাউকে ফেসবুকে গ্রহণ না করা ইত্যাদি সম্পর্কে সচেতন করুন।

৮. আপনার সন্তান বুলিংয়ের স্বীকার হয়ে পাল্টা বুলিং যাতে না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

৯. সবচেয়ে বড় কথা হলো সন্তানের সঙ্গে বন্ধুর মতো সম্পর্ক গড়ে তুলুন। তারা যাতে নির্ভয়ে আপনার সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করতে পারে, সেই পরিবেশ তৈরি করুন। পারিবারিক আড্ডার রেওয়াজ তৈরি করুন।

১০. সন্তানকে সব সময় আস্থায় রাখুন। সাইবারবুলিংয়ের শিকার হয়েছে জানার পর, তাকে দোষারোপ না করে সমস্যা সমাধানে মনোযোগ দিন। তার পাশে দাঁড়ান। এতে সেও আপনার ওপর আস্থা পাবে। যেকোনো সংকট জানাতে দ্বিধা করবে না। আর কে না জানে, সংকট জানাটাই এর সমাধানের সবচেয়ে বড় উপায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত