Ajker Patrika

খাওয়া যায় যে রোবট, পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন স্বাদেরও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জেলির মতো ভক্ষণযোগ্য রোবট বানিয়েছেন বিজ্ঞানীর। ছবি: ইপিএফএল
জেলির মতো ভক্ষণযোগ্য রোবট বানিয়েছেন বিজ্ঞানীর। ছবি: ইপিএফএল

রোবট নিয়ে আমাদের এত দিনকার একটি বড় সমস্যা ছিল—এগুলো খাওয়া যায় না! তবে এবার বিজ্ঞানীদের নিরলস চেষ্টায় সেই বাধা অতিক্রম করা গেছে। সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানীরা বিশ্বের প্রথম সম্পূর্ণরূপে ভক্ষণযোগ্য কোমল রোবট তৈরি করেছেন। এই রোবটের ব্যাটারি ও অ্যাকচুয়েটর (সক্রিয় অংশ) সম্পূর্ণভাবে গিলে ফেলা যায়। এটি খাওয়ার উপযোগী বিভিন্ন ফ্লেভারেও তৈরি করা হয়েছে।

যদিও প্রাথমিকভাবে এটি মানুষের জন্য তৈরি করা হয়নি, তবে এই উদ্ভাবন রোবোটিকস এবং ওষুধ শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

বাইরে থেকে দেখলে রোবটটিকে দেখতে অনেকটা জেলি বা ‘জেলো’ দিয়ে তৈরি একটি সরল টেট্রিস ব্লকের মতো মনে হয়। প্রচলিত রোবটগুলোতে যেখানে প্লাস্টিক ও ধাতব যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়, সেখানে এই নরম রোবটটির মূল দেহ এবং নড়াচড়ার জন্য ব্যবহৃত পাম্পের টিউবগুলো তৈরি হয়েছে মোম এবং জিলেটিনের মতো ভোজ্য উপকরণ দিয়ে।

সাধারণ রোবটগুলোর মতোই এটি গ্যাস পাম্প করে চেম্বারের ভেতরে ও বাইরে চলাচল করে। গ্যাসের প্রভাবে রোবটের দেহ বিকৃত হয় এবং নড়াচড়া করতে সক্ষম হয়। তবে এই রোবটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হলো এর ভোজ্য ব্যাটারি।

এটির ব্যাটারি সিলিন্ডার আকৃতির, যার ভেতরে আলাদা চেম্বারে বেকিং সোডা এবং তরল সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে। বেকিং সোডা দিয়ে তৈরি একটি পাতলা মেমব্রেন বা পর্দা এই উপাদান দুটিকে আলাদা করে রাখে।

যখন মেমব্রেনে চাপ প্রয়োগ করা হয়, তখন অ্যাসিড এবং বেকিং সোডা মিশে যায়। রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়। এই নির্গত গ্যাসই হলো রোবটটিকে চালনা করার মূল শক্তি। এই শক্তিই চেম্বারগুলোকে বিকৃত করে এবং রোবটকে নড়তে সাহায্য করে। ছোটবেলার বিজ্ঞান ক্লাসে তৈরি সাধারণ গ্যাস প্রতিক্রিয়ার মতোই এর কার্যপ্রণালী।

রোবটটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটির মূল লক্ষ্য ছিল বন্যপ্রাণীদের কাছে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, যেখানে মানুষের পক্ষে নিরাপদে পৌঁছানো সম্ভব নয়। গবেষকেরা এ ক্ষেত্রে বুনো শুয়োরের উদাহরণ দিয়েছেন। এই রোবট ব্যবহার করে এদের দেহে দূর থেকে ওষুধ প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।

তবে এরই মধ্যে মানুষও এই রোবটটির স্বাদ নিতে শুরু করেছে। বর্তমানে ফলের স্বাদের অ্যাকচুয়েটরসহ মানুষের ওপর এই রোবটের পরীক্ষা চলছে। এই গবেষণা প্রকল্পের ব্যবস্থাপক দারিও ফ্লোরিয়ানো জোর দিয়ে বলেন, এই রোবটের আসল তাৎপর্য হলো এর বায়ুচালিত ব্যাটারি এবং ভালভ সিস্টেম। এই যুগান্তকারী প্রযুক্তি আগামীতে খাদ্য বা ওষুধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নতুন পথ দেখাতে পারে।

সূত্র: নোটবুক চেক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ