Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

ফুটবলে টাকাই সবকিছু নয়

২৩ বছর পর মোহামেডানের লিগ শিরোপা জয়ের অন্যতম নায়ক সুলেমান দিয়াবাতে। ছবি: সংগৃহীত

২৩ বছর পর লিগ শিরোপার স্বাদ পেয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ঐতিহ্যবাহী দলটির দীর্ঘ এই অপেক্ষা ঘোচানোর পেছনে অন্যতম নায়ক সুলেমান দিয়াবাতে। মোহামেডানের ঘরের ছেলে বনে যাওয়া মালির এই ফরোয়ার্ড দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সামনে থেকে। গতকাল ক্লাবের উঠোনে আজকের পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শোনালেন নিজের অনুভূতি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনোয়ার সোহাগ।

প্রশ্নঃ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার এক দিন পেরিয়ে গেলেও শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার আনন্দের যে রেশ, সেটা নিশ্চয়ই কাটেনি এখনো?

সুলেমান দিয়াবাতে: না, কাটেনি। এই বছর চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে খুবই খুশি। আলহামদুলিল্লাহ, অনেক বছর পর মোহামেডান চ্যাম্পিয়ন হলো। দল নিয়ে আমি খুবই গর্বিত।

প্রশ্ন: ছয় বছর ধরে ক্লাবটির হয়ে খেলছেন আপনি, নেতৃত্বও দিচ্ছেন। দল গুছিয়ে তোলা আপনার জন্য কতটুকু কঠিন ছিল?

দিয়াবাতে: খুব একটা কঠিন ছিল না। আমরা লম্বা সময় ধরে একসঙ্গে আছি। চার কিংবা পাঁচ বছর ধরে একসঙ্গে খেলছি। একে অন্যকে বেশ ভালো বুঝি আমরা। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা দল হয়ে খেলতে পেরেছি।

প্রশ্ন: মৌসুম শুরুর আগে কি ভাবনায় ছিল যে এবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন?

দিয়াবাতে: না, কেউই প্রত্যাশা করেনি, আমরা এই বছর চ্যাম্পিয়ন হব। ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কেউই বলতে পারে না। শুধু আল্লাহ জানে, ভবিষ্যতে কী হবে। তাই আমরা শুধু ভালো খেলে নিজেদের কাজটি করেছি। ইচ্ছা ছিল যে এবার কিছু অর্জন করতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি।

প্রশ্ন: লিগে কোন সময়ে মনে হয়েছিল, আপনারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন?

দিয়াবাতে: লিগের শুরু থেকে আমাদের লড়াই চালিয়ে যাই। প্রথম পর্ব যখন শেষ হলো, আমরা তখন শীর্ষে ছিলাম। দ্বিতীয় পর্বের পরও নিজেদের অবস্থান ধরে রাখি। প্রথমবার যখন ১০ জন নিয়ে খেলে বসুন্ধরা কিংসকে হারালাম, তখন মনে হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন হতে পারব। দ্বিতীয়বার তাদের ২-১ ব্যবধানে হারানোর পর মনে হয়েছে, এবার আমাদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ আছে। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সেটি করতে পেরেছি।

প্রশ্ন: লিগে ১০ গোল করেছেন আপনি। এখনো বাকি আছে তিন ম্যাচ। স্যামুয়েল বোয়াটেংকে (১৪ গোল) টপকে মৌসুম শেষে সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারবেন বলে মনে হয়?

দিয়াবাতে: আমি জানি না, হতে পারব কি না। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাব। এখনো তিন ম্যাচ বাকি আছে। যদিও সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া বা না হওয়া আমার কাছে অতটা মানে রাখে না। চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আলহামদুলিল্লাহ, আমি চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছি। তাই সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার ব্যাপারে আমার খুব বেশি ভাবনা নেই। এর আগেও সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছি। এটি নিয়ে বিশেষ কোনো চিন্তাও করছি না।

প্রশ্ন: বেশ কয়েকটি ক্লাবের কাছ থেকে বড় অঙ্কের প্রস্তাব পেয়েছেন আপনি। কিন্তু কখনো মোহামেডান ছেড়ে যেতে যাননি কেন?

দিয়াবাতে: তারা (মোহামেডান) আমার সঙ্গে ভালো আচরণ করে, আমাকে সম্মান করে। আমি যেটাই বলি না কেন, তারা তা শোনে এবং সেটাকে গুরুত্ব দেয়। ফুটবলে টাকাই সবকিছু নয়, এখানে সম্মান ও ভালোবাসার ব্যাপার আছে। মোহামেডানের কাছে আমি সবকিছু পেয়েছি। এ কারণে এখানে রয়ে গেছি।

প্রশ্ন: চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খবর পরিবারকে সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয় জানিয়েছেন?

দিয়াবাতে: হ্যাঁ, তারা জানে। চ্যাম্পিয়ন হয়েছি জেনে তারা খুব খুশি হয়েছে। তারা সব সময় পাশে থাকে। আমাকে অভিনন্দনও জানিয়েছে। বলেছে, ‘আমরাও চ্যাম্পিয়ন’। সবাই খুব আনন্দে আছে।

প্রশ্নঃ দীর্ঘদিন বাংলাদেশে আছেন, বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্নও দেখেছেন আপনি। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে?

দিয়াবাতে: দেখুন, বিষয়টি ভুলে যান। আমি এ নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না।

প্রশ্ন: পরের মৌসুমে শিরোপা ধরে রাখা কতটা কঠিন হবে?

দিয়াবাতে: আমরা এখন মানসিকভাবে একটু বিশ্রাম নিতে চাই। পরের মৌসুমে কী হবে, আমি জানি না। সত্যি বলতে আমি থাকব কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। যদি থাকি, শিরোপা ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

প্রশ্ন: শিরোপা ধরে রাখতে মোহামেডানের কী প্রয়োজন বলে আপনার মনে হয়?

দিয়াবাতে: তাদের ভালো দল গড়তে হবে। যদি থাকি, আমরা একটি ভালো দল গড়ব। দলকে আরও শক্তিশালী করতে এবং শিরোপার জন্য লড়াই করতে আমাদের নতুন খেলোয়াড় আনতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সারজিসের পোস্টে কমেন্ট করে বরখাস্ত মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী

‘৩ শর্তে’ সশস্ত্র বাহিনীর চাকরিচ্যুতদের বিক্ষোভ স্থগিত

চিরকুটে শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’

চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে সেনা সদরের প্রতিনিধিদল

জামায়াতের অফিসে আগুন নেভাতে গিয়ে কোরআন শরিফ দেখেননি, দাবি ফায়ার সার্ভিসের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত