Ajker Patrika

কোচিংকে বিদায় বলে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরে বেড়াব

ক্রীড়া ডেস্ক
Thumbnail image

কোচদের ‘ডন’ বলা হয় তাঁকে। তিন দশকের কোচিং ক্যারিয়ারে অবিশ্বাস্য সব কীর্তি গড়েছেন তিনি। নিজেকে নিয়ে গেছেন সবকিছুর ঊর্ধ্বে।

বাকি ছিল শুধু স্প্যানিশ লা লিগা শিরোপা। কদিন আগে রিয়াল মাদ্রিদকে সেই শিরোপাও এনে দিয়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ ঘরোয়া লিগ জয়ী প্রথম কোচ হওয়ার গৌরবও পূর্ণ করেছেন।

তবে সবকিছুরই শেষ আছে। আনচেলত্তিও প্রিয় পেশা কোচিংকে বিদায় বলতে চান। কবে থেকে তাঁকে আর ডাগআউটে দেখা যাবে না, সে ইঙ্গিত এখনই দিয়ে রেখেছেন। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আমাজন প্রাইমকে ৬২ বছর বয়সী ইতালিয়ান প্রশিক্ষক বলেছেন, ‘হ্যাঁ, রিয়াল ছেড়ে যাওয়ার পর আমি থামব। তবে ক্লাব চাইলে আমি আরও ১০ বছর থাকতে রাজি।’

তিন দশকের কোচিং ক্যারিয়ারে অবিশ্বাস্য সব কীর্তি গড়েছেন কার্লো আনচেলত্তি। কোচিং থেকে অবসর নেওয়ার পর কীভাবে সময় কাটাবেন, সেটিও জানিয়েছেন আনচেলত্তি, ‘অনেক কাজ জমা আছে, যেগুলো কোচিং ব্যস্ত থাকায় করা হয়নি। আমি নাতি-নাতনিদের সময় দিতে চাই। স্ত্রীকে নিয়ে অবকাশ যাপন করতে চাই। আমার অনেক প্রিয় জায়গা আছে, যেখানে কখনো যাওয়া হয়নি। যেমন—অস্ট্রেলিয়া, (ব্রাজিলের) রিও ডি জেনিরো। এমনকি আমার বোনের বাড়িতেও যেতে পারিনি। কোচিং না ছাড়া পর্যন্ত এসব ইচ্ছে পূরণ হবে না।’

বর্ণাঢ্য কোচিং জীবনে ২২টি শিরোপা জিতেছেন আনচেলত্তি। ২০০৪ সালে এসি মিলানের হয়ে ইতালিয়ান সিরি ‘আ’, ২০১০-এ চেলসির হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, ২০১৩-তে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) হয়ে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান, ২০১৭ সালে বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে জার্মান বুন্দেসলিগা আর এবার (২০২২) রিয়ালের হয়ে স্প্যানিশ লা লিগা। আর এসি মিলান ও রিয়ালের হয়ে ৩টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাসহ অন্য অর্জন তো আছেই।

ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ ঘরোয়া লিগ জয়ী একমাত্র কোচ আনচেলত্তি।আনচেলত্তির ঈর্ষণীয় সব অর্জন ক্লাবের হয়ে। অথচ নিজ দেশ ইতালির সহকারী কোচ হিসেবে এই পেশায় হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। এরপর থেকে দশটি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন। আবার জাতীয় দলকে কোচিং করানোর ইচ্ছে আছে কি না—এমন প্রশ্নে আনচেলত্তির জবাব, ‘কেন নয়, এটা হতেই পারে। তবে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে নয়। ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে পারি।’

রিয়াল মাদ্রিদকে লা লিগা শিরোপা জেতানোর পর আনচেলত্তিকে শূন্যে ওড়ান শিষ্যরা। ৪৮ দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে হবে ২০২৬ বিশ্বকাপ। সেই ফুটবল মহাযজ্ঞের সহ-আয়োজক কানাডা তিন যুগ পর এবার বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নিজ দেশ ইতালি এবারও বিশ্বকাপে না থাকায় কানাডাকেই সমর্থন করবেন আনচেলত্তি। ২০২৬ বিশ্বকাপে কানাডার কোচ হিসেবেও দেখা যেতে পারে তাঁকে, ‘ওরা (কানাডা) দুর্দান্ত খেলেই এ পর্যায়ে এসেছে। ইচ্ছে আছে তাদের সঙ্গে কাজ করার।’

তা এত দেশ থাকতে কানাডারই কোচ হওয়ার শখ জাগল কেন আনচেলত্তির? কারণ, একটাই। তাঁর বর্তমান স্ত্রী মারিয়ান বারেনা ম্যাকক্লে যে একজন কানাডিয়ান! প্রথম স্ত্রী লুইসার সঙ্গে ২০০৮ সালে বিচ্ছেদ হয় আনচেলত্তির। ২০১৪ সালে বিয়ে করেন কানাডিয়ান ব্যবসায়ী মারিয়ানকে।

ছেলে ডেভিড আনচেলত্তিকে নিজের মতো করেই গড়ে তুলছেন কার্লো আনচেলত্তি। আনচেলত্তি কোচিং থেকে অবসরে গেলেও উত্তরাধিকারসূত্রে ধারা প্রবহমান থাকার সুযোগ আছে। ছেলে ডেভিড আনচেলত্তিকে যে নিজের মতো করেই গড়ে তুলছেন ‘ডন কার্লো’। নিজে যেখানেই যান, ছেলেকে সঙ্গে রাখেন। বর্তমানে রিয়ালে বাবার ডেপুটি হিসেবে কাজ করছেন ডেভিড। এক মহান কোচের রক্ত বইছে যাঁর শরীরে, সেই ডেভিড নিশ্চয় বাবাকে ছেড়ে যেতে চাইবেন। তাঁর স্বপ্নযাত্রাটা সার্থক হলে কোচিং অঙ্গনও পেয়ে যাবে জগদ্বিখ্যাত বাবার স্বনামধন্য ছেলেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত