Ajker Patrika

কেন ব্যর্থ বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশ ফুটবলে যেন ভালো ফিনিশারের অভাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ ফুটবলে যেন ভালো ফিনিশারের অভাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফুটবলে জিততে হলে গোলের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিপক্ষ যেমন হোক, প্রতিটি দলই খেলায় নামে জেতার উদ্দেশ্য নিয়ে। তবে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ দলের প্রত্যাশার মাত্রা একটু বাড়তি ছিল। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পরে রূপ নিয়েছে হতাশায়।

হামজা চৌধুরী-শমিত শোম যে ম্যাচ ঘিরে এত উন্মাদনা এনে দিয়েছেন, ঘরের মাঠে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি হাভিয়ের কাবরেরার দল। বিশেষ করে ফরোয়ার্ডদের দৈন্য ফুটে উঠেছে আবারও। রাকিব হোসেন অবশ্য গোলের দেখা পেয়েছেন। তবে সেখানে রাকিবের নৈপুণ্যের চেয়ে সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষকের ভুলের অবদান বেশি।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কয়েকটি কর্নার পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু একেবারে শেষ মিনিটে তারিক কাজীর হেড পোস্টে লাগা ছাড়া আর কোনো সুযোগ সেভাবে তৈরি হয়নি। এতে ফরোয়ার্ডদের টেকনিকের ঘাটতি দেখছেন সাবেক ফুটবলার ও কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু। তিনি বলেন, ‘আসল সমস্যা হলো, টেকনিক্যাল দিক থেকে আমাদের স্কিল খুব কম। কোন পাস কেমন গতিতে দিতে হবে। কোন পাস কোথায় ফেলতে হবে, সেটা তেমন জানা নেই। সহজ সহজ ভুল করে বসে।’

বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডদের শিল্পী হওয়ার চেষ্টায় ঘাটতি মনে করেন টিপু, ‘সবই যদি হামজা করে তাহলে বাকিরা কী করবে। তারা পরিশ্রম করে ঠিক আছে, কিন্তু উপস্থিত বুদ্ধি তো থাকতে হবে। একটা বল নিয়ন্ত্রণে আনতে যদি ১০ সেকেন্ড লাগে; সেই সময় তো প্রতিপক্ষ দেবে না। এখন নিজেরা যদি স্কিল উন্নত না করে, তাহলে কিছু বলার নেই। তারা ফুটবলশ্রমিক, কিন্তু ফুটবলশিল্পী নয়।’

ফরোয়ার্ডদের জ্বলে উঠতে না পারার পেছনে ঘরোয়া ফুটবলকেই দায়ী করলেন জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড শেখ মোহাম্মদ আসলাম। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে, প্রবাসী ফুটবলারদের সঙ্গে স্থানীয় ফুটবলারদের বোঝাপড়া সেভাবে হয়নি। স্ট্রাইকিং জোন খুব বাজে ছিল। আমাদের বড় ক্লাবগুলো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য স্ট্রাইকিং জোনে বেশির ভাগ বিদেশি খেলোয়াড় এনে থাকে। স্থানীয় ফুটবলাররা সেভাবে খেলতে পারে না। এই জায়গায় আমাদের ভাবনার দরকার, লিগে সার্কভুক্ত খেলোয়াড়দের স্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে খেলানোটা আমাদের আরও ক্ষতি করবে। আমার মনে হয় না এটি সঠিক হবে।’

সিঙ্গাপুর দলে যাঁকে নিয়ে ভয় ছিল সবচেয়ে বেশি, সেই ইখসান ফান্দি ঠিকই ত্রাস সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশের ঘরের মাঠে। গোল তো করেছেনই, সংখ্যাটা বাড়ানোর বেশ কয়েকটি সুযোগ এসেছিল তাঁর সামনে। কিন্তু ওপেন প্লেতে বাংলাদেশ সুযোগের ধারেকাছে খুব একটা যেতে পারেনি। সাবেক ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি বলেন, ‘গোল করতে হলে যে সব সময় ফরোয়ার্ডদের লাগবে, তা কিন্তু নয়। সুযোগ তৈরি হলে যে কেউ গোল করতে পারবে। সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় থাকলে গোল হবে। ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতার চেয়ে পরিষ্কার সুযোগ কয়টা তৈরি হচ্ছে, সেটা নিয়ে ভাবা দরকার।’

গত লিগে রাকিব ছিলেন স্থানীয়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা। কিন্তু সেটা রাইট উইংয়ে খেলে। জাতীয় দলে তাঁকে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলিয়েছেন হাভিয়ের কাবরেরা। কোচের কৌশলের ভুল সামনে এনেছেন এমিলি, ‘রাকিবকে দিয়ে সেন্টার ফরোয়ার্ডের কাজ চালানো হয়েছে। অথচ তাঁকে রাইট উইংয়ে রেখে স্ট্রাইকার হিসেবে আল আমিন বা সুমন রেজাকে খেলাত, তখন হয়তো সুযোগ তৈরি হতো। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে আমরা বলতে পারতাম, ফরোয়ার্ডরা ব্যর্থ। কিন্তু দিন শেষে কৌশলটা ভুল ছিল।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুই ঘণ্টা আগে একই বিমানে ভ্রমণের দাবি এক ব্যক্তির, জানালেন ভয়াবহ তথ্য

ইরানে ইসলামি শাসনের অবসান হতে পারে—মার্কিন কর্মকর্তাদের আশঙ্কা

নির্বাচন নিয়ে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে যে কথা হলো

আ.লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৭ জন আহত, গ্রেপ্তার ১

গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত