Ajker Patrika

দেশের ফুটবলের রং আবারও ‘সাদা-কালো’

নাইর ইকবাল
আপডেট : ১৮ মে ২০২৫, ১৭: ৩৫
২৩ বছর পর লিগ শিরোপা জিতল মোহামেডান। ছবি: সংগৃহীত
২৩ বছর পর লিগ শিরোপা জিতল মোহামেডান। ছবি: সংগৃহীত

একসময় রানার্সআপ হওয়া যে ক্লাবের সমর্থকদের কাছে ছিল ‘ব্যর্থতা’, তারা লিগ শিরোপার স্বাদ কেমন, তা ভুলতে বসেছিল। মোহামেডান লিগ জেতেনি ২৩ বছর ধরে।

শনিবার বিকেলে ২৩ বছরের হতাশা ভুলে সাদা-কালোর সমর্থকেরা আবারও মেতেছেন লিগ শিরোপা জয়ের উল্লাসে। এ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডানের শিরোপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল আগে থেকে। শুক্রবার চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা থেকে একধাপ দূরে ছিলেন আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। দরকার ছিল ৩ পয়েন্টের। কিন্তু শনিবার কুমিল্লায় ফর্টিস এফসির কাছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা আবাহনীর অপ্রত্যাশিত হার মোহামেডানের শিরোপার উৎসবটা এগিয়ে দিয়েছে। তিন ম্যাচ বাকি থাকতে কাল বিকেল থেকেই উৎসবে মাতোয়ারা মতিঝিলের মোহামেডান ক্লাব ভবন।

মোহামেডান শেষবার লিগ শিরোপা জিতেছিল ২০০২ সালে। তবে সেটি ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। ২০০৭ সালে দেশের ফুটবলে পেশাদার ফুটবল লিগ চালু হওয়ার পর মোহামেডান এর শিরোপার স্বাদ কখনো পায়নি। চারবার রানার্সআপ হলেও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অধরাই ছিল। শিরোপা না জেতা মোহামেডানের সমর্থকদের হয়ে গিয়েছিল গা সওয়া। সময়টা তাঁদের জন্য ছিল ছিল বড্ড হতাশার।

প্রিমিয়ার লিগে গত আট বছরে অন্তত দুবার অবনমনের প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল মোহামেডান। ২০১৬-১৭ সালে দশম আর ২০১৮-১৯ সালে নবম স্থানের লজ্জায় মুখ ঢাকতে হয় সমর্থকদের। ক্লাবের ইতিহাসে এর চেয়ে বাজে ফল আর নেই। ২০১৯ সালে ক্যাসিনো-কাণ্ডে ঐতিহ্য ও গর্ব মিশে গিয়েছিল মাটির সঙ্গে। অবস্থা এমন হয়েছিল, প্রজন্মের মানসপট থেকে হারিয়ে যাওয়ার দশা হয়েছিল মোহামেডানের। তবে এর পরপরই ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। সাবেক ফুটবলারদের টেকনিক্যাল কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি ক্লাবের ব্যবস্থাপনাকে চাঙা করেছে। মোহামেডান কখনো খুব বড় বাজেটের দল গড়েনি। তবে শিরোপা জয়ের এ প্রক্রিয়ায় মোহামেডান তৈরি করেছে কার্যকর সব খেলোয়াড়। ইংলিশ কোচ শন লিন শুরু করেছিলেন দল গোছানোর কাজ। তিনি চলে যাওয়ার পর আলফাজ আহমেদের কৌশল বড় ভূমিকা এ অর্জনে। ম্যানেজার হিসেবে সাবেক স্ট্রাইকার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব ছিলেন আলফাজের যোগ্য সঙ্গী। ২০২৩ সালে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের শিরোপা দিয়ে মিশনের প্রথম ধাপ পূরণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এসেছে এবারের শিরোপা। মালির স্ট্রাইকার সোলেমান দিয়াবাতে কিংবা উজবেকিস্তানের মোজাফ্ফরভের বড় ভূমিকা। দুই নাইজেরিয়ান ইমানুয়েল সানডে আর ইমানুয়েল টনিকে ভুলে গেলে চলবে না। এ মুহূর্তে এ চারজনই বাংলাদেশের ফুটবলের সবচেয়ে কার্যকর বিদেশি ফুটবলার। দলের একঝাঁক কার্যকর দেশি ফুটবলারের মধ্যে কারও নাম আলাদা করে উল্লেখ করা অন্যায়। সবাই নিজেদের জায়গায় দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ প্রমাণ করেছেন।

আগে বলেছি, এই শিরোপা মোহামেডানের নবযাত্রা। সময়টা এখন আনন্দ উদযাপনের। তবে কিছু বিষয় ভুলে গেলে চলবে না। লিগ শিরোপা জিতে এএফসি টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ এসেছে এবার। ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের কত দূর? ৮৭ বছরেও একটা মাঠ হলো না, এটা মোহামেডানের মতো দলের জন্য লজ্জার। উৎসবের মধ্যে এ বিষয়গুলো যেন মোহামেডানের কেউ ভুলে না যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

জামায়াতের কেউ ইমাম-মুয়াজ্জিন হতে পারবে না: আটঘরিয়ায় হাবিব

আলটিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই আসতে পারে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ঘোষণা

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প স্থবির

দায়িত্ব পেয়েই ‘অনিয়ম-দুর্নীতিতে’ মাসুদ রানা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত