Ajker Patrika

অবশেষে সাদা পোশাকে রঙিন তাসকিন

নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image

ঢাকা: আন্তর্জাতিক আঙিনায় কাটিয়ে দিয়েছেন সাত বছর। এই সময়ে সাফল্য আর ব্যর্থতা–দুটোর সঙ্গেই দেখা হয়ে গেছে তাঁর। দারুণ বোলিংয়ে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছেন। আবার বাজে বোলিংয়ে তলিয়ে গেছেন ব্যর্থতার চোরাবালিতে! সম্ভাবনা আর আফসোসের যুগলবন্দী হচ্ছেন তাসকিন আহমেদ।

তাসকিনকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বেশি আফসোস, সাত বছরে সম্ভাবনার সবটুকু দিতে পারেননি টেস্ট ক্রিকেটে। অবশেষ সাদা পোশাকে তাঁর রঙিন পারফরম্যান্স দেখা গেছে এই পাল্লেকেলে টেস্টে এসে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলারই তিনি।

একজন খেলোয়াড়ের জীবনে এই ওঠানামা থাকবেই। দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে তাসকিনকে নিয়ে আফসোসটা অন্য কারণে। মাশরাফির পর লম্বা সময়ে জাতীয় দলকে সেবা দিতে পারবেন, এমন একজন পেসার হন্যে হয়ে খুঁজছিল বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের জুনে তাসকিন জাতীয় দলে এসেছিলেন এই শূন্যতা পূরণের স্বপ্ন নিয়েই।

আন্তর্জাতিক আঙিনায় এসেই ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দিয়ে অভিষেকেই ২৮ রানে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট। পরের বছর বিশ্বকাপে দারুণ সাফল্যে মাশরাফির সঙ্গে তাঁর বোলিং জুটির নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ম্যাশকিন’। আবার আরেক টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বড় হতাশা উপহার দিল তাসকিনকে। ২০১৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনে নিষিদ্ধ হওয়ার পরই আসলে তাসকিনের হারিয়ে যাওয়া শুরু। চোট নামের অদৃশ্য শত্রুও তাঁকে জ্বালিয়েছে অনেক।

ছন্দহীনতা আর চোটে পড়ে এই জাতীয় দলে আসেন তো পরের সিরিজে বাদ! সাত বছরে তাসকিনের খেলা হয়েছে তাই ৬ টেস্ট।

দুঃসময় পেছনে ফেলে তাসকিন পাল্লকেলেতে গাইলেন ‘ফিরে আসার গান’। ৩০ ওভারে ১১২ রান দিয়ে ৩ উইকেট। হয়তো আহামরি পরিসংখ্যান নয়। কিন্তু এ পরিসংখ্যান আস্ত ‘গাধায়’ পরিণত হবে যখন দেখা যাবে পেসবিরুদ্ধ কন্ডিশনে ব্যাটিংসহায়ক উইকেটে গতি–বাউন্সে কীভাবে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে রেখেছিলেন বাংলাদেশ পেসার।

অবশ্য ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে। প্রায় চার বছর পর চট্টগ্রামের সেই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা তাসকিন সেদিন ১ উইকেট পেলেও দারুণ বোলিংই করেছেন। এরপর নিউজিল্যান্ড সিরিজেও একমাত্র তিনিই ছন্দে থাকা প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের যা একটু পরীক্ষা নিয়েছেন।

তাসকিনের ফিরে আসার পুনর্বাসন প্রক্রিয়াটা শুরু গত বছর। করোনা আতঙ্কে যখন সবাই ঘরবন্দী তখন তাসকিন কঠোর পরিশ্রম করেছেন ফিটনেস আর বোলিংয়ে। এখন তারই ফল পাচ্ছেন।

পাল্লেকেলে টেস্টে দারুণ বোলিংয়ের পর তাই দলের পক্ষ থেকে তাসকিনের জন্য বরাদ্দ শুধুই প্রশংসা। তাসকিনের বোলিং নিয়ে অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেছেন, ‘এই টেস্টে কোনোভাবেই মনে হয়নি তাসকিন ছয়টা টেস্ট ম্যাচ খেলা বোলার। গত এক–দেড় বছর সে অনেক চেষ্টা করছে, অনেক কষ্ট করছে। আমার মনে হয় এটা সেই কষ্টের ফল।’
তাসকিনের প্রশংসা করেছেন টিম লিডার খালেদ মাহমুদ। কাল সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘সব সময় যেটা হয়, ৩০ ওভার বোলিং করলেও বোলিংয়ের মতো বোলিং হয় না। তাসকিন অনেক চেষ্টা করেছে। আমি খুব খুশি।’

এখন তাসকিনের সামনে এই পারফরম্যান্স ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। অতীতে ‘ধারাবাহিকতার অভাব’ কথাটা তো কম শুনতে হয়নি তাঁকে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত