Ajker Patrika

‘ঘুমিয়ে থাকা’ বাংলাদেশের ক্রিকেটকে জাগিয়ে তুলতে চান বিসিবি সভাপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতিতে আরও অনেক কিছু করতে হবে বলে মনে করেন বুলবুল। ছবি: ফাইল ছবি
টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতিতে আরও অনেক কিছু করতে হবে বলে মনে করেন বুলবুল। ছবি: ফাইল ছবি

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২৫ বছর পূর্তি হবে আগামীকাল। এই সময়ে টেস্টে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার মতো পরাশক্তিকে বাংলাদেশ হারালেও পরাজয়ের পাল্লাটাই বেশি ভারী হয়েছে।

টেস্টে বাংলাদেশের ব্যর্থতার পাল্লা ভারী হওয়ার কারণ মূলত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বাজে অবকাঠামো। ‘পিকনিক ক্রিকেট’ নামে পরিচিত এই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অনেকে ভালো খেললেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে গিয়ে বারবার ধরা খেয়ে যান। এ ছাড়া দেশের ক্রিকেট মাঠ ব্যবস্থাপনা নিয়েও রয়েছে নানা সমস্যা।

ক্রিকেট অবকাঠামো ও মাঠ ব্যবস্থাপনার জটিলতা দূর করতে বিসিবির গ্রাউন্ড বিভাগের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

টেস্ট মর্যাদার রজতজয়ন্তীর আগের দিন আজ ধানমন্ডির রিয়া গোপী নারী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এই আয়োজন নিয়ে কথা বলেছেন বুলবুল। সাংবাদিকদের বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে ক্রিকেট থেকে কিছুটা দূরে ছিলাম। তখন ভাবতাম, গত ২৫ বছরে হয়তো ২৫টি বড় আয়োজন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, ২৫ বছর পেরিয়ে আমরা এবার প্রথমবারের মতো একটি বড় আয়োজন করছি। এই প্রোগ্রামটি আমরা করছি মূলত দুটি কারণে—এক, টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন; দুই, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেখানে ক্রিকেট কার্যত ঘুমিয়ে ছিল, সেসব জায়গায় একটা তাদেরকে একটা ‘ওয়েকআপ কল’ দেওয়া।’

ক্রিকেট বিকেন্দ্রীকরণের কথা অনেক বছর ধরেই বলে আসছে বিসিবি। বিভিন্ন সময়ে বোর্ড সভাপতির মুখে প্রতিশ্রুতির কথা শোনা গেলেও কার্যকর উদ্যোগের অভাবে সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি। এবারের প্রেক্ষাপট কিছুটা ভিন্ন। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশজুড়ে আয়োজিত বিভাগীয় অনুষ্ঠানে বুলবুল যেমন বলেছিলেন, তেমনি বাস্তবায়নের পথে কিছুটা পরিকল্পনার ইঙ্গিত মিলছে একাধিক কার্যক্রমে।

ধানমন্ডির রিয়া গোপী নারী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আজ বিসিবি সভাপতি দেশের সব জেলায় ক্রিকেট উইকেট হিসেবে সিনথেটিক টার্ফ বসানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। বুলবুল বলেন, ‘আমাদের ৬৪ জেলায় ৬৪ জন কোচ রয়েছেন। তারা কী অবস্থায় আছেন, সেটি মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে আমরা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ দেখছি। মিরপুরে বসে সারাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই মাঠপর্যায়ে কাজ করার মতো শক্তিশালী কোচ তৈরি করতে চাই। যেন তারা উপজেলা পর্যায়েও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন এবং সেই কার্যকারিতা আমরা ভবিষ্যতে জাতীয় দলে দেখতে পাই।’

সিনথেটিক টার্ফ বসানো হলে একসঙ্গে ক্রিকেট, ফুটবল দুটি খেলাই চালানো সম্ভব বলে মনে করেন বুলবুল। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘জেলা মাঠে যদি এমন উইকেট বসানো যায়, তাহলে আলাদা জায়গার দরকার হবে না। খরচও কমে আসবে। একই মাঠে ক্রিকেট ও ফুটবল দুই খেলাই চালানো যাবে।’

বোর্ডের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কে না গিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই ও কার্যকর কাঠামো গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বুলবুল। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমি পেছনে ফিরে দেখতে চাই না। আমরা এমন একটি মানদণ্ড তৈরি করতে চাই, যা পরবর্তীতে যারা আসবেন, তারা অনুসরণ করতে পারবেন। আমরা কেউই স্থায়ী না। তবে ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে যেতে চাই।’

বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এই সংস্করণে দল কীভাবে আরও ভালো করতে পারে, বুলবুলের ভাবনা তেমনই। বিসিবি সভাপতি বলেন,

‘আমরা অত্যন্ত সফলভাবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। কারণ, টেস্ট ক্রিকেটই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরিচয়। টেস্ট খেলেই বাংলাদেশ আইসিসির পূর্ণ সদস্য হয়েছে। এই সংস্করণটিকে আমরা আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে নিতে চাই। টেস্ট ক্রিকেটে যে উন্মাদনা, ক্রিকেটের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা এবং ক্রিকেটার হওয়ার যে স্বপ্ন এসব বিষয়কে সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি এবং সফলভাবেই এগিয়ে চলেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত