Ajker Patrika

‘আগে বলত ১০০ উইকেটের কথা, এখন মজা করে ১০০ টেস্টের কথা বলছে’

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ছবি: ক্রিকইনফো
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ছবি: ক্রিকইনফো

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে থেকেই আলোচনায় মুশফিকুর রহিম। পারফরম্যান্সের কারণে নয়। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নামবেন দেখে তাঁকে নিয়ে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মুশফিকের মতো এখন অনেকেই ১০০ টেস্ট খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

শততম টেস্টটা মুশফিক রাঙিয়েছেন নিজের মতো করে। ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে ক্যারিয়ারের সেঞ্চুরি টেস্টে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ২১৭ রানে ম্যাচ জেতায় মুশফিক নাম লিখিয়েছেন ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং, ডেভিড ওয়ার্নারদের মতো কিংবদন্তিদের তালিকায়। শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে জয় পাওয়া অষ্টম ক্রিকেটার এখন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ১০৬ রান করে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিক।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অধিনায়ক শান্ত। মুশফিকের শততম টেস্টের প্রসঙ্গ এলে শান্ত বলেন, ‘আমরা উপভোগ করেছি। মুশফিক ভাই উপভোগ করেছেন। আমাদের ড্রেসিংরুমে একজন পেসার বলছিল যে সে ১০০ টেস্ট খেলতে চায়। পেসার হলে আগে ১০০ উইকেট নেওয়ার কথা বলত। এখন মজা করে ১০০ টেস্ট খেলার কথা বলছে। আমাদের মধ্যেও এই ব্যাপারটা কাজ করেনি। মুশফিক ভাই যখন ১০০ টেস্ট খেললেন, তখন বুঝতে পারলাম তিনি কী অর্জন করেছেন। আমরাও এখন এটা নিয়ে কথাবার্তা বলছি। ১০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটারও চাচ্ছে ১০০ টেস্ট খেলতে। এখন জিনিসটা সবাই বুঝতে শুরু করেছে।’

মুশফিকের পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫ টেস্ট খেলেছেন মুমিনুল হক। এই তালিকায় তিনে থাকা সাকিব ৭১ টেস্ট খেললেও গত বছরের অক্টোবর থেকে সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে। বর্তমানে নিয়মিত খেলা ক্রিকেটারদের তাইজুল ইসলাম ৫৭, মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৬, লিটন দাস ৫২ ও শান্ত খেলেছেন ৩৯ টেস্ট। এখনই ১০০ টেস্ট খেলার কথা চিন্তা না করে ধাপে ধাপে এগোনো উচিত বলে মনে করেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়ক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার মনে হয় ৩৮-৩৯টা টেস্ট হয়েছে। মিরাজের মনে হয় ৫০টার বেশি। অনেকদূর যাওয়া বাকি। এত লম্বা চিন্তা না করে একটা একটা টেস্ট যদি আমরা খেলতে পারি, পারফর্ম করতে পারি, যদি কপালে থাকে, ইনশা আল্লাহ একদিন করতে পারব’

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ও ৪৭ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই টেস্টে যে এক ইনিংস ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিল, বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ৫৮৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল। মাহমুদুল হাসান জয় (১৭১), শান্ত (১০০) সেঞ্চুরি করেছিলেন। মিরপুরে এবার দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন মুশফিকুর রহিম (১০৬) ও লিটন দাস (১২৮)। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছে ৪৭৬ রান। ২১১ রানে এগিয়ে থাকার পরও ফের দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিকেরা ব্যাটিং করেছে। এবার তারা ৪ উইকেটে ২৯৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্টে ১২টা পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস হলেও সেঞ্চুরি হয়েছে কেবল চারটি। শান্ত, মাহমুদুল হাসান জয়, মুশফিক, লিটন একটি করে সেঞ্চুরি করেছেন। আয়ারল্যান্ড সিরিজে এই চারটা সেঞ্চুরি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক দিক বলে মনে করেন শান্ত। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন,‘এই সিরিজ শুরুর আগে আমরা যখন পরিকল্পনা করি, টিম মিটিং করি, এই বিষয়টা নিয়ে আমরা কথা বলছি যে আসলে আমরা কতগুলো সেঞ্চুরি করতে পারি। ব্যক্তিগতভাবে তো বটেই। কিন্তু দল হিসেবে আমাদের প্রত্যেক সিরিজে বা প্রত্যেক ইনিংসে কতগুলো সেঞ্চুরি হচ্ছে এবং সেঞ্চুরিটা যেন সেঞ্চুরিতেই থেমে না যায়—আপনি যেটা বললেন যে ১৫০, ১৬০, ১৭০, ২০০ এরকম যেন হয়। ইতিবাচক দিক হলো চারটা সেঞ্চুরি হয়েছে।’

৪ সেঞ্চুরির মধ্যে সর্বোচ্চ ১৭১ রানের ইনিংস সিলেটে খেলেছিলেন জয়। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়েছিলেন তিনি। শান্তর মতে যদি কারও ডাবল সেঞ্চুরি হতো বা সেঞ্চুরির সংখ্যা বাড়ত, তাহলে সেটা আরও অনেক ভালো হতো। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘নেতিবাচক দিক হলো সেঞ্চুরিগুলো আরও বড় হতে পারত। এখান থেকে যদি দুইটা ডাবল সেঞ্চুরি হতো, তাহলে আরও ভালো হতো। ফিফটিগুলো সেঞ্চুরিতে পরিণত হলে আরও ভালো হতো। আমাদের সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা করতে পারিনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ