Ajker Patrika

ভারতীয়রা এত বড় ব্যাটার, তবু কাবু হয়েছে

বোরহান জাবেদ
ভারতীয়রা এত বড় ব্যাটার, তবু কাবু হয়েছে

ভারতের বিপক্ষে স্মরণীয় দুটি সিরিজ শেষ করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ খেলে নতুন দিনের বার্তাই যেন দিলেন মেয়েরা। গত পরশু মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজের পর আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ধারাবাহিক ভালো খেলা পেসার মারুফা আক্তার। সেই আলাপচারিতা তুলে ধরেছেন বোরহান জাবেদ

প্রশ্ন: স্বপ্নের মতো একটা সিরিজ গেল, তাই না?
মারুফা আক্তার: মিরপুরে খেলাটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিল। সিরিজটাও স্বপ্নের মতো কেটেছে। ভালো বোলিং করেছি। সবাই সমর্থন দিয়েছে। সবারই তো লক্ষ্য থাকে ঘরের মাঠে খেলা হচ্ছে, আমরা জিতব। আমরাও চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন: ভারতের বিপক্ষে ওই শেষ ওভারটায় মনের মধ্যে কী চলছিল? 
মারুফা: ওই মুহূর্তে সবারই একটা চাপ কাজ করে, স্বাভাবিক। ৬ বলে ৩ রান লাগত ওদের। তবু সবাই আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিল, আমি পারব। আমিও নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে বোলিং করে গেছি। আলহামদুলিল্লাহ, হয়ে গেছে। সব সময় জ্যোতি আপু অনেক সমর্থন দিয়েছেন। নাহিদা আপু বোলার না, তবু সব সময় পাশে থাকেন। যদি মাঝে মধ্যে খারাপ করি, নাহিদা আপু কাছে এসে বলেন, বাবু কিচ্ছু হয় নাই। রিলাক্স থাক, কোনো চাপ নিস না। 

প্রশ্ন: এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ব্যাটারদের একজন স্মৃতি মান্ধানা আপনাকে নিয়ে যে কথাগুলো বলেছেন, শুনেছেন নিশ্চয়ই?
মারুফা: হ্যাঁ, শুনেছি। একজন ভালো ব্যাটার যখন আপনাকে নিয়ে কথা বলবে, অবশ্যই অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

প্রশ্ন: ভারতীয় দলে অনেক তারকা ব্যাটার আছেন। সিরিজ শুরুর আগে তাঁদের বিপক্ষে আপনার লক্ষ্য কী ছিল?
মারুফা: ওরা যত বড় ব্যাটার হোক, সেটা দেখে লাভ নেই। খেলা হচ্ছে ব্যাট আর বলের। এখানে ওদের চেহারা দেখে তো ক্রিকেট খেলা যাবে না। ওরা যত বড় ক্রিকেটারই হোক না কেন, আমার লক্ষ্য ছিল লাইন আর লেংথ। আমার মনোযোগ শুধু এখানেই ছিল। ধারাবাহিক ওভাবেই বোলিং করেছি। কই ওরা এত বড় ব্যাটার, তবু তো কাবু হয়ে গেছে (হাসি)।

প্রশ্ন: এই সিরিজে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসার জাহানারা আলম ছিলেন না। এটা কি আপনার চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল ভালো করতে?
মারুফা: না, এত চাপ নিলে তো আর খেলা যাবে না। সব সময় রিলাক্স থাকার চেষ্টা করি। দলের সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছে, আমিও চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন: আগেই বলেছেন হার্দিক পান্ডিয়া আপনার প্রিয় ক্রিকেটার। কিন্তু পেসারদের মধ্যে কার বোলিং বেশি ভালো লাগে? 
মারুফা: মিচেল স্টার্ক। আমার রানআপের সঙ্গে মিল আছে।

প্রশ্ন: ক্যারিয়ার শেষে নামের পাশে কত উইকেট দেখতে চান?
মারুফা: এখনো অনেক দিন পড়ে আছে আমার সামনে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশ দলকে নিয়মিত ভালো কিছু দেওয়া।

প্রশ্ন: আপনার উঠে আসাটা যেরকম ছিল, এখন সেটা গ্রামের মেয়েদের জন্য কতটা অনুপ্রেরণার হবে?
মারুফা: গ্রাম এলাকায় মেয়েদের ওভাবে খেলতে দেয় না। পারিবারিক সমস্যা, বাইরের চাপ থাকে। পরিবার তো দিতেই চায় না।

প্রশ্ন: আপনাকে দিয়েছিল? 
মারুফা: আমাকেও দেয় নাই। আমি জোর করে খেলেছি। বাসায় বলত, তুই কী খেলবি, মেয়ে মানুষ, তোর কিসের খেলাধুলা! আমার ভাই সমর্থন দেওয়ায় আজ এখানে এসেছি।

প্রশ্ন: বাড়িতে এখন কী বলে?
মারুফা: এখনো মা বলে খেলাধুলা করিস না। মা চায় বাসায় থাকব। কিন্তু আমার লক্ষ্য তো অনেক ওপরে যাওয়া।

প্রশ্ন: এখন ছেলেদের দলে পেস বোলারদের একটা বিপ্লব চলছে। মেয়েদের দলেও কি এটা দ্রুত হতে পারে?
মারুফা: অবশ্যই, আরও ভালো পেসার উঠে আসবে। মেয়েরাও তো আর পিছিয়ে নেই। অনেক দূরে এগিয়ে যাচ্ছে। ভালো করছে। আমাদের তো অনেক লিগ চালু হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগ তো আছেই, বিসিএল চালু হয়েছে। এ রকম করে হয়ত বিপিএলও হতে পারে।

প্রশ্ন: সামনে আপনার লক্ষ্য কী?
মারুফ: দোয়া করবেন, সামনে আমি যেন বিশ্বের বড় লিগগুলো যেমন মেয়েদের আইপিএল, বিগ ব্যাশে খেলতে পারি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত