আজকের পত্রিকা ডেস্ক
বহু প্রাচীনকাল থেকেই গল্পকার, কবি, জ্যোতির্বিদ ও মহাকাশচারীদের অভিভূত করে আসছে চাঁদ। আর ভবিষ্যতে খনিজ শিল্পেরও প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে পৃথিবীর এই একমাত্র উপগ্রহ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, শত কোটি বছর ধরে অ্যাস্টেরয়েডের (গ্রহাণু) আঘাতে চাঁদের পৃষ্ঠে অনেক মূল্যবান ধাতু সঞ্চিত হয়েছে। এর সম্ভাব্য মূল্য ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি মার্কিন ডলার হতে পারে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা!
এই হিসাব একটি গবেষণার ভিত্তিতে করা হয়েছে। চাঁদের পৃষ্ঠ পরীক্ষা করে হিসাব করা হয়েছে কতগুলো গর্ত প্লাটিনাম গ্রুপ মেটালসের (পিজিএম) আধার। এগুলো মূলত দীর্ঘ সময় ধরে গ্রহাণুর আঘাতে তৈরি হয়েছে। এই মূল্যবান ধাতুগুলোর মধ্যে রয়েছে—রুথেনিয়াম, রোডিয়াম, প্যালাডিয়াম, অসমিয়াম, ইরিডিয়াম ও প্লাটিনাম।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, নিউট্রন নক্ষত্রের ভয়াবহ সংঘর্ষের সময় এই উপাদানগুলো তৈরি হয়েছে। বর্তমানে এসব ধাতু ক্যাটালাইটিক কনভারটার (ক্ষতিকর গ্যাস শোষণের জন্য গাড়িতে ব্যবহার করা হয়), ইলেকট্রনিকস এবং সবুজ অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য।
এই গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক জয়ন্ত ব্যসনাকেরে বলেন, ‘মহাজাগতিক সময়ে নক্ষত্রের জন্ম ও মৃত্যুর বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে এই উপাদানগুলো অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মিশে গ্রহ গঠনকারী ডিস্ক এবং পরে গ্রহ ও গ্রহাণুর মধ্যে জমা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধাতব গ্রহাণুগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লোহা থাকে এবং পিজিএমগুলো এর সঙ্গে আবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। যখন এই গ্রহাণুগুলো চাঁদের মতো কোনো বস্তুকে আঘাত করে, তখন গতিবেগের প্রভাবের ওপর নির্ভর করে এর কিছু অংশ অক্ষত থাকতে পারে।’
পৃথিবীর মতো চাঁদের কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। এ কারণে চাঁদের দিকে আগত মহাজাগতিক শিলা পুড়ে যায় না। এ ছাড়া চাঁদের কোনো টেকটোনিক প্লেটও নেই, যা আছড়ে পড়া গ্রহাণুর ধ্বংসাবশেষকে মাটির গভীরে ঠেলে দিতে পারে। তাই আঘাতকারী বস্তুর বেশির ভাগ অংশই উপরিভাগে থেকে যাওয়ার কথা।
ব্যসনাকেরে এবং তাঁর সহগবেষকেরা অনুমান করেন, চাঁদে ৩ কোটি কেজি পর্যন্ত পিজিএম থাকতে পারে। তবে প্রকৃত পরিমাণ গ্রহাণুর আকার, গতি এবং আঘাতের কোণের ওপর নির্ভর করবে। যদি এই নতুন গবেষণা সামান্যও সঠিক হয়, তাহলে চাঁদ হবে পৃথিবীর বাইরে পিজিএমের সবচেয়ে সমৃদ্ধ পরিচিত ভান্ডার। উল্লেখ্য, পৃথিবীতে বার্ষিক পিজিএম উৎপাদন প্রায় ৬০০ টন।
চাঁদে এই ধাতুগুলো কতটা ঘনীভূত অবস্থায় রয়েছে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে ব্যসনাকেরে উল্লেখ করেছেন, পিজিএমগুলো মূল গ্রহাণুর প্রতি মিলিয়ন ভাগের ১০ থেকে ১০০ ভাগ ঘনত্বে থাকতে পারে, এই ঘনত্ব পৃথিবীর অনেক খনির মতোই বা তার চেয়েও ভালো।
তবে, চাঁদে খননের জন্য প্রচুর প্রযুক্তিগত বাধা রয়েছে। চাঁদের অভিকর্ষজ বল পৃথিবীর এক-ষষ্ঠাংশ হওয়ায় সেখানে ওজন, চাপ বা প্রবাহী গতিবিদ্যার ওপর নির্ভরশীল প্রচলিত নিষ্কাশন কৌশলগুলো প্রয়োগ করা কঠিন হবে। এ ছাড়া সেখানে কোনো তরল পানি নেই, এটি একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ। কারণ পৃথিবীর বেশির ভাগ পিজিএম পরিশোধনের পদ্ধতি পানিনির্ভর। প্রকৌশলীদের শুষ্ক পরিবেশে আকরিক নিষ্কাশন ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য নতুন করে ভাবতে হবে।
এর পরও চাঁদে কিছু সুবিধা রয়েছে, যা গ্রহাণুগুলোতে নেই। চাঁদ পৃথিবীর যথেষ্ট কাছাকাছি হওয়ায় প্রায় রিয়েল-টাইম রিমোট অপারেশনের (পৃথিবী থেকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ) মাধ্যমে যন্ত্রপাতি পরিচালনা করা সম্ভব। পৃথিবীর সঙ্গে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের যোগাযোগ বিলম্ব থাকায় রোবটগুলোকে সহজেই নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে, গ্রহাণু খননের জন্য সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবহার প্রয়োজন হবে।
আরেকটি বড় প্রশ্ন হলো, সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার ফলস্বরূপ বিনিয়োগকারীদের কি প্লাটিনামের দাম কমে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে? ব্যসনাকেরে বলেন, ‘যদি একসঙ্গে ১০০ টন পিজিএম চাঁদ থেকে পৃথিবীতে আনা হয়, তাহলে দাম কমে যেতে পারে। কিন্তু এটি খুবই অসম্ভব। সবচেয়ে সম্ভাব্য পরিস্থিতি হলো—অন্তত চাঁদ খননের প্রাথমিক দিনগুলোতে—কেউ কেউ বছরে কয়েক টন ফিরিয়ে আনতে পারবে। এটি দামের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।’
হার্ভার্ড ও স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকস এবং ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের গবেষকদের লেখা এই গবেষণাপত্র ‘প্ল্যানেটারি অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
বহু প্রাচীনকাল থেকেই গল্পকার, কবি, জ্যোতির্বিদ ও মহাকাশচারীদের অভিভূত করে আসছে চাঁদ। আর ভবিষ্যতে খনিজ শিল্পেরও প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠতে পারে পৃথিবীর এই একমাত্র উপগ্রহ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, শত কোটি বছর ধরে অ্যাস্টেরয়েডের (গ্রহাণু) আঘাতে চাঁদের পৃষ্ঠে অনেক মূল্যবান ধাতু সঞ্চিত হয়েছে। এর সম্ভাব্য মূল্য ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি মার্কিন ডলার হতে পারে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকা!
এই হিসাব একটি গবেষণার ভিত্তিতে করা হয়েছে। চাঁদের পৃষ্ঠ পরীক্ষা করে হিসাব করা হয়েছে কতগুলো গর্ত প্লাটিনাম গ্রুপ মেটালসের (পিজিএম) আধার। এগুলো মূলত দীর্ঘ সময় ধরে গ্রহাণুর আঘাতে তৈরি হয়েছে। এই মূল্যবান ধাতুগুলোর মধ্যে রয়েছে—রুথেনিয়াম, রোডিয়াম, প্যালাডিয়াম, অসমিয়াম, ইরিডিয়াম ও প্লাটিনাম।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, নিউট্রন নক্ষত্রের ভয়াবহ সংঘর্ষের সময় এই উপাদানগুলো তৈরি হয়েছে। বর্তমানে এসব ধাতু ক্যাটালাইটিক কনভারটার (ক্ষতিকর গ্যাস শোষণের জন্য গাড়িতে ব্যবহার করা হয়), ইলেকট্রনিকস এবং সবুজ অর্থনীতির জন্য অপরিহার্য।
এই গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক জয়ন্ত ব্যসনাকেরে বলেন, ‘মহাজাগতিক সময়ে নক্ষত্রের জন্ম ও মৃত্যুর বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে এই উপাদানগুলো অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মিশে গ্রহ গঠনকারী ডিস্ক এবং পরে গ্রহ ও গ্রহাণুর মধ্যে জমা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘ধাতব গ্রহাণুগুলোতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লোহা থাকে এবং পিজিএমগুলো এর সঙ্গে আবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। যখন এই গ্রহাণুগুলো চাঁদের মতো কোনো বস্তুকে আঘাত করে, তখন গতিবেগের প্রভাবের ওপর নির্ভর করে এর কিছু অংশ অক্ষত থাকতে পারে।’
পৃথিবীর মতো চাঁদের কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। এ কারণে চাঁদের দিকে আগত মহাজাগতিক শিলা পুড়ে যায় না। এ ছাড়া চাঁদের কোনো টেকটোনিক প্লেটও নেই, যা আছড়ে পড়া গ্রহাণুর ধ্বংসাবশেষকে মাটির গভীরে ঠেলে দিতে পারে। তাই আঘাতকারী বস্তুর বেশির ভাগ অংশই উপরিভাগে থেকে যাওয়ার কথা।
ব্যসনাকেরে এবং তাঁর সহগবেষকেরা অনুমান করেন, চাঁদে ৩ কোটি কেজি পর্যন্ত পিজিএম থাকতে পারে। তবে প্রকৃত পরিমাণ গ্রহাণুর আকার, গতি এবং আঘাতের কোণের ওপর নির্ভর করবে। যদি এই নতুন গবেষণা সামান্যও সঠিক হয়, তাহলে চাঁদ হবে পৃথিবীর বাইরে পিজিএমের সবচেয়ে সমৃদ্ধ পরিচিত ভান্ডার। উল্লেখ্য, পৃথিবীতে বার্ষিক পিজিএম উৎপাদন প্রায় ৬০০ টন।
চাঁদে এই ধাতুগুলো কতটা ঘনীভূত অবস্থায় রয়েছে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে ব্যসনাকেরে উল্লেখ করেছেন, পিজিএমগুলো মূল গ্রহাণুর প্রতি মিলিয়ন ভাগের ১০ থেকে ১০০ ভাগ ঘনত্বে থাকতে পারে, এই ঘনত্ব পৃথিবীর অনেক খনির মতোই বা তার চেয়েও ভালো।
তবে, চাঁদে খননের জন্য প্রচুর প্রযুক্তিগত বাধা রয়েছে। চাঁদের অভিকর্ষজ বল পৃথিবীর এক-ষষ্ঠাংশ হওয়ায় সেখানে ওজন, চাপ বা প্রবাহী গতিবিদ্যার ওপর নির্ভরশীল প্রচলিত নিষ্কাশন কৌশলগুলো প্রয়োগ করা কঠিন হবে। এ ছাড়া সেখানে কোনো তরল পানি নেই, এটি একটি বিশেষ চ্যালেঞ্জ। কারণ পৃথিবীর বেশির ভাগ পিজিএম পরিশোধনের পদ্ধতি পানিনির্ভর। প্রকৌশলীদের শুষ্ক পরিবেশে আকরিক নিষ্কাশন ও প্রক্রিয়াকরণের জন্য নতুন করে ভাবতে হবে।
এর পরও চাঁদে কিছু সুবিধা রয়েছে, যা গ্রহাণুগুলোতে নেই। চাঁদ পৃথিবীর যথেষ্ট কাছাকাছি হওয়ায় প্রায় রিয়েল-টাইম রিমোট অপারেশনের (পৃথিবী থেকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ) মাধ্যমে যন্ত্রপাতি পরিচালনা করা সম্ভব। পৃথিবীর সঙ্গে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের যোগাযোগ বিলম্ব থাকায় রোবটগুলোকে সহজেই নির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে। অন্যদিকে, গ্রহাণু খননের জন্য সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবহার প্রয়োজন হবে।
আরেকটি বড় প্রশ্ন হলো, সরবরাহ বেড়ে যাওয়ার ফলস্বরূপ বিনিয়োগকারীদের কি প্লাটিনামের দাম কমে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে? ব্যসনাকেরে বলেন, ‘যদি একসঙ্গে ১০০ টন পিজিএম চাঁদ থেকে পৃথিবীতে আনা হয়, তাহলে দাম কমে যেতে পারে। কিন্তু এটি খুবই অসম্ভব। সবচেয়ে সম্ভাব্য পরিস্থিতি হলো—অন্তত চাঁদ খননের প্রাথমিক দিনগুলোতে—কেউ কেউ বছরে কয়েক টন ফিরিয়ে আনতে পারবে। এটি দামের ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না।’
হার্ভার্ড ও স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিকস এবং ইউনিভার্সিটি অব বার্মিংহামের গবেষকদের লেখা এই গবেষণাপত্র ‘প্ল্যানেটারি অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
‘ইভেন্টউড’ নামে একটি মার্কিন কোম্পানি এমন এক ধরনের কাঠ তৈরি করেছে, যার শক্তি ইস্পাতের চেয়ে প্রায় ১০ গুণ বেশি এবং ওজন ছয় গুণ কম। এই কাঠের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সুপারউড’। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে এই কাঠের উৎপাদন শুরু করেছে।
৫ দিন আগেআন্তর্জাতিক অঙ্গনে খ্যাতিমান রসায়নবিদ ড. ওমর ইয়াঘি রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি দ্বিতীয় মুসলিম বিজ্ঞানী হিসেবে রসায়নে নোবেল জয় করলেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই এবং শুষ্ক অঞ্চল থেকে পানীয় জল সংগ্রহের প্রযুক্তিতে তাঁর যুগান্তকারী গবেষণার জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
১১ দিন আগেচলতি বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী—সুসুমু কিতাগাওয়া, রিচার্ড রবসন ও ওমর এম ইয়াঘি। আজ বুধবার সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পুরস্কারের বিজয়ী হিসেবে তাঁদের নাম ঘোষণা করেছে। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, তাঁরা ‘মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কসের বিকাশ’ ঘটানোর জন্য এ সম্মাননা পাচ্ছেন।
১১ দিন আগেপদার্থবিজ্ঞানের একটি অন্যতম প্রধান প্রশ্ন হলো—কত বড় ব্যবস্থার (system) মধ্যে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার প্রভাব দৃশ্যমান করা সম্ভব? এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা একটি বৈদ্যুতিক সার্কিট ব্যবহার করে এমন একটি ব্যবস্থায় কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং ও কোয়ান্টাইজড শক্তির স্তর প্রমাণ করেছেন—যেটির আকার রীতিমতো...
১২ দিন আগে