অনলাইন ডেস্ক
আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন—কেন কুকুর, বিড়াল বা গরিলার মতো আপনার সারা শরীর ঘন লোমে ঢাকা নয়? মানুষই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী নয়, যাদের লোম পাতলা। হাতি, গন্ডার এবং নেংটি ইঁদুরের গায়েও খুব কম লোম থাকে। তিমি এবং ডলফিনের মতো কিছু সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর ক্ষেত্রেও এটা সত্যি।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ডাইনোসরের সময়ে বসবাসকারী প্রথম দিকের স্তন্যপায়ীরা বেশ লোমশ ছিল। কিন্তু কোটি কোটি বছর ধরে, হাতে গোনা কয়েকটি স্তন্যপায়ী প্রাণী, যাদের মধ্যে মানুষও আছে, বিবর্তিত হয়ে কম লোমযুক্ত হয়েছে। নিজের শরীরের লোমের কোট না থাকার সুবিধা কী?
কেন মানুষ এবং অল্পসংখ্যক স্তন্যপায়ী অপেক্ষাকৃত লোমহীন—এটা বেশ আকর্ষণীয় প্রশ্ন। এর পুরোটাই নির্ভর করে নির্দিষ্ট কিছু জিন চালু আছে নাকি বন্ধ আছে তার ওপর। চুল ও লোমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। এগুলো প্রাণীদের উষ্ণ রাখে, রোদ এবং আঘাত থেকে ত্বক রক্ষা করে এবং তাদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে।
এমনকি লোম পরিবেশের অনুভূতি পেতেও প্রাণীদের সাহায্য করে। আপনার প্রায় কাছাকাছি কিছু এলে যে সুড়সুড়ি লাগে, সেটা কি কখনো অনুভব করেছেন? সেটাই আপনার লোম, যা আপনাকে কাছাকাছি জিনিস শনাক্ত করতে সাহায্য করে। মানুষের সারা শরীরেই লোম থাকে, তবে এটি সাধারণত আমাদের লোমশ অন্য প্রজাতির আত্মীয়দের চেয়ে পাতলা ও সূক্ষ্ম হয়। মাথার চুল এর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম, যা সম্ভবত মাথার ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করে।
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বগলের নিচে এবং পায়ের মাঝখানে যে মোটা মোটা লোম গজায়, তা সম্ভবত ত্বকের ঘর্ষণ কমায় এবং ঘাম ছড়িয়ে দিয়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং লোম বেশ উপকারী হতে পারে। একসময় মানুষের প্রচুর লোম থাকলেও পরে মানুষের বিপুল লোম হারানোর পেছনে নিশ্চয়ই একটি শক্তিশালী বিবর্তনীয় কারণ ছিল।
গল্পটি শুরু হয়েছিল প্রায় ৭০ লাখ বছর আগে, যখন মানুষ এবং শিম্পাঞ্জি ভিন্ন বিবর্তনীয় পথে যাত্রা শুরু করেছিল। যদিও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন, কেন মানুষ কম লোমশ হয়েছিল, তবে আমাদের কাছে ঘাম সম্পর্কিত কিছু জোরালো তত্ত্ব রয়েছে।
শিম্পাঞ্জি ও অন্যান্য স্তন্যপায়ীর তুলনায় মানুষের অনেক বেশি ঘর্মগ্রন্থি রয়েছে। ঘামলে শরীর ঠান্ডা থাকে। আপনার ত্বক থেকে ঘাম বাষ্পীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপশক্তি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। আফ্রিকার উষ্ণ সাভানা অঞ্চলে বসবাসকারী আদিম মানব পূর্বপুরুষদের জন্য এই শীতলীকরণ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অবশ্যই, বর্তমানেও অনেক স্তন্যপায়ী গরম আবহাওয়ায় লোমে ঢাকা অবস্থায় বসবাস করে। আদিম মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে তাড়া করে সেই সব প্রাণীকে শিকার করতে পারত—এই কৌশল অধ্যবসায়মূলক শিকার বা পারসিস্টেন্স হান্টিং নামে পরিচিত। মানুষকে তাদের শিকার করা প্রাণীদের চেয়ে দ্রুত হতে হতো না। তাদের শুধু ততক্ষণই দৌড়াতে হতো, যতক্ষণ না শিকার অতিরিক্ত গরম এবং ক্লান্ত হয়ে পালিয়ে যেতে অক্ষম হয়। লোমের ঘন আস্তরণ ছাড়াই প্রচুর ঘামতে পারা এই সহনশীলতা সম্ভব করেছিল।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের লোমশতা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য একদল গবেষক ৬২টি ভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর জেনেটিক তথ্যের তুলনা করেছে,ন যার মধ্যে মানুষ থেকে শুরু করে আর্মাডিলো, কুকুর এবং কাঠবিড়ালি পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই ভিন্ন প্রজাতির ডিএনএ সারিবদ্ধ করার মাধ্যমে, শরীরের লোম থাকা বা না থাকার সঙ্গে যুক্ত জিনগুলো চিহ্নিত করেন তাঁরা।
গবেষকেরা এই তুলনা থেকে যে বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন তার মধ্যে একটি হলো—মানুষ এখনো সম্পূর্ণ লোমের আস্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিন বহন করে, তবে সেগুলো নিষ্ক্রিয় বা বন্ধ অবস্থায় আছে। ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট’ গল্পে পশুর ঘন লোমে ঢাকা শরীর হয়তো নিছক কল্পনা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে কিছু বিরল পরিস্থিতিতে মানুষের সারা শরীরে প্রচুর লোম গজাতে পারে।
হাইপারট্রাইকোসিস নামক এই অবস্থা অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং যাঁরা এতে আক্রান্ত হন, তাঁদের দেখতে নেকড়ে মানবের মতো হওয়ায় একে ‘ওয়্যারউলফ সিনড্রোম’ বলা হয়। ১৫০০-এর দশকে পেত্রুস গনজালভেস নামে এক স্প্যানিশ ব্যক্তি হাইপারট্রাইকোসিস নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকালে তাঁকে একটি লোহার খাঁচায় পশুর মতো করে ফ্রান্সের রাজা দ্বিতীয় হেনরির কাছে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।
শিগগিরই রাজা বুঝতে পারেন যে, পেত্রুস অন্য যেকোনো মানুষের মতোই এবং তাঁকে শিক্ষিত করা যেতে পারে। পরে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে পেত্রুস একজনকে বিয়ে করেন। এই গল্পই ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্টের’ অনুপ্রেরণা তৈরি করেছিল।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট
আপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন—কেন কুকুর, বিড়াল বা গরিলার মতো আপনার সারা শরীর ঘন লোমে ঢাকা নয়? মানুষই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী নয়, যাদের লোম পাতলা। হাতি, গন্ডার এবং নেংটি ইঁদুরের গায়েও খুব কম লোম থাকে। তিমি এবং ডলফিনের মতো কিছু সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর ক্ষেত্রেও এটা সত্যি।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, ডাইনোসরের সময়ে বসবাসকারী প্রথম দিকের স্তন্যপায়ীরা বেশ লোমশ ছিল। কিন্তু কোটি কোটি বছর ধরে, হাতে গোনা কয়েকটি স্তন্যপায়ী প্রাণী, যাদের মধ্যে মানুষও আছে, বিবর্তিত হয়ে কম লোমযুক্ত হয়েছে। নিজের শরীরের লোমের কোট না থাকার সুবিধা কী?
কেন মানুষ এবং অল্পসংখ্যক স্তন্যপায়ী অপেক্ষাকৃত লোমহীন—এটা বেশ আকর্ষণীয় প্রশ্ন। এর পুরোটাই নির্ভর করে নির্দিষ্ট কিছু জিন চালু আছে নাকি বন্ধ আছে তার ওপর। চুল ও লোমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। এগুলো প্রাণীদের উষ্ণ রাখে, রোদ এবং আঘাত থেকে ত্বক রক্ষা করে এবং তাদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে।
এমনকি লোম পরিবেশের অনুভূতি পেতেও প্রাণীদের সাহায্য করে। আপনার প্রায় কাছাকাছি কিছু এলে যে সুড়সুড়ি লাগে, সেটা কি কখনো অনুভব করেছেন? সেটাই আপনার লোম, যা আপনাকে কাছাকাছি জিনিস শনাক্ত করতে সাহায্য করে। মানুষের সারা শরীরেই লোম থাকে, তবে এটি সাধারণত আমাদের লোমশ অন্য প্রজাতির আত্মীয়দের চেয়ে পাতলা ও সূক্ষ্ম হয়। মাথার চুল এর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম, যা সম্ভবত মাথার ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করে।
প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বগলের নিচে এবং পায়ের মাঝখানে যে মোটা মোটা লোম গজায়, তা সম্ভবত ত্বকের ঘর্ষণ কমায় এবং ঘাম ছড়িয়ে দিয়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং লোম বেশ উপকারী হতে পারে। একসময় মানুষের প্রচুর লোম থাকলেও পরে মানুষের বিপুল লোম হারানোর পেছনে নিশ্চয়ই একটি শক্তিশালী বিবর্তনীয় কারণ ছিল।
গল্পটি শুরু হয়েছিল প্রায় ৭০ লাখ বছর আগে, যখন মানুষ এবং শিম্পাঞ্জি ভিন্ন বিবর্তনীয় পথে যাত্রা শুরু করেছিল। যদিও বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত নন, কেন মানুষ কম লোমশ হয়েছিল, তবে আমাদের কাছে ঘাম সম্পর্কিত কিছু জোরালো তত্ত্ব রয়েছে।
শিম্পাঞ্জি ও অন্যান্য স্তন্যপায়ীর তুলনায় মানুষের অনেক বেশি ঘর্মগ্রন্থি রয়েছে। ঘামলে শরীর ঠান্ডা থাকে। আপনার ত্বক থেকে ঘাম বাষ্পীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপশক্তি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। আফ্রিকার উষ্ণ সাভানা অঞ্চলে বসবাসকারী আদিম মানব পূর্বপুরুষদের জন্য এই শীতলীকরণ ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
অবশ্যই, বর্তমানেও অনেক স্তন্যপায়ী গরম আবহাওয়ায় লোমে ঢাকা অবস্থায় বসবাস করে। আদিম মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে তাড়া করে সেই সব প্রাণীকে শিকার করতে পারত—এই কৌশল অধ্যবসায়মূলক শিকার বা পারসিস্টেন্স হান্টিং নামে পরিচিত। মানুষকে তাদের শিকার করা প্রাণীদের চেয়ে দ্রুত হতে হতো না। তাদের শুধু ততক্ষণই দৌড়াতে হতো, যতক্ষণ না শিকার অতিরিক্ত গরম এবং ক্লান্ত হয়ে পালিয়ে যেতে অক্ষম হয়। লোমের ঘন আস্তরণ ছাড়াই প্রচুর ঘামতে পারা এই সহনশীলতা সম্ভব করেছিল।
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের লোমশতা আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য একদল গবেষক ৬২টি ভিন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীর জেনেটিক তথ্যের তুলনা করেছে,ন যার মধ্যে মানুষ থেকে শুরু করে আর্মাডিলো, কুকুর এবং কাঠবিড়ালি পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই ভিন্ন প্রজাতির ডিএনএ সারিবদ্ধ করার মাধ্যমে, শরীরের লোম থাকা বা না থাকার সঙ্গে যুক্ত জিনগুলো চিহ্নিত করেন তাঁরা।
গবেষকেরা এই তুলনা থেকে যে বিষয়টি আবিষ্কার করেছেন তার মধ্যে একটি হলো—মানুষ এখনো সম্পূর্ণ লোমের আস্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত জিন বহন করে, তবে সেগুলো নিষ্ক্রিয় বা বন্ধ অবস্থায় আছে। ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্ট’ গল্পে পশুর ঘন লোমে ঢাকা শরীর হয়তো নিছক কল্পনা বলে মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে কিছু বিরল পরিস্থিতিতে মানুষের সারা শরীরে প্রচুর লোম গজাতে পারে।
হাইপারট্রাইকোসিস নামক এই অবস্থা অত্যন্ত অস্বাভাবিক এবং যাঁরা এতে আক্রান্ত হন, তাঁদের দেখতে নেকড়ে মানবের মতো হওয়ায় একে ‘ওয়্যারউলফ সিনড্রোম’ বলা হয়। ১৫০০-এর দশকে পেত্রুস গনজালভেস নামে এক স্প্যানিশ ব্যক্তি হাইপারট্রাইকোসিস নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। শিশুকালে তাঁকে একটি লোহার খাঁচায় পশুর মতো করে ফ্রান্সের রাজা দ্বিতীয় হেনরির কাছে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।
শিগগিরই রাজা বুঝতে পারেন যে, পেত্রুস অন্য যেকোনো মানুষের মতোই এবং তাঁকে শিক্ষিত করা যেতে পারে। পরে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে পেত্রুস একজনকে বিয়ে করেন। এই গল্পই ‘বিউটি অ্যান্ড দ্য বিস্টের’ অনুপ্রেরণা তৈরি করেছিল।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট
প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪৫০ কোটি বছর আগে গঠিত হওয়ার পর ধীরে ধীরে ঘূর্ণনের গতি কমছে পৃথিবীর। এর ফলে দীর্ঘ হচ্ছে দিনগুলোও। মানবজীবনের সময়কাল অনুযায়ী এই পরিবর্তন খুব একটা দৃশ্যমান না হলেও দীর্ঘ সময় পর তা পৃথিবীর পরিবেশে বড় পরিবর্তন এনেছে।
২ দিন আগেমানুষের চেয়ে অনেক ক্ষেত্রে বেশি মানসিক সমর্থন দেয় পোষা কুকুর। এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক এক বৈজ্ঞানিক গবেষণা। আন্তর্জাতিক জার্নাল সায়েন্টিফিক রিপোর্ট–এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ তাদের কুকুরকে শুধুমাত্র ‘পোষা প্রাণী’ হিসেবে নয়, বরং ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সন্তানের মতো আদরের...
৫ দিন আগেপূর্ব আফ্রিকার কেনিয়া ও তানজানিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলে নতুন মশার প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই আবিষ্কার ম্যালেরিয়া পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৫ দিন আগেমুরগির ডিমের কথা বললে সাধারণত সাদা বা বাদামি খোলসের ডিমই ভেসে ওঠে আমাদের চোখে। প্রকৃতপক্ষে ডিমের খোলসের রং হতে পারে ক্রিম, গোলাপি, নীল, এমনকি সবুজও। শুধু তাই নয়—কিছু ডিমের খোলসের ওপর আবার দাগও দেখা যায়। তবে প্রশ্ন হলো—ডিমের রঙে এত বৈচিত্র্য কেন এবং কী কারণে একেক মুরগি একেক রঙের ডিম পাড়ে?
৬ দিন আগে