বিড়াল, কুকুর, এমনকি ক্যাঙারুর পায়ের দিকে খেয়াল করলেই দেখবেন মানুষের হাত–পায়ের সঙ্গে এদের একটি মিল আছে। আকার, প্রকার ও অবস্থান আলাদা হলেও এই স্তন্যপায়ীগুলোর আঙুল পাঁচটি। এসব প্রাণীর সঙ্গে মানুষের আঙুলের সংখ্যায় এমন মিল কেন?
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের পাঁচটি আঙুল থাকার কারণ বোঝার জন্য প্রথমে টেট্রাপড (গ্রিক শব্দে ‘চার–পেয়ে’) মেরুদণ্ডীদের কেন পাঁচটি আঙুল থাকে, তা বুঝতে হবে। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা টেট্রাপোডা সুপারক্লাসের মধ্যে সরীসৃপ, উভচর ও পাখিরাও অন্তর্ভুক্ত। এই পর্বের সদস্যদের মধ্যে তিমি, সিল এবং সি লায়নের মতো প্রাণীদের কঙ্কালে পাঁচ আঙুলযুক্ত অঙ্গ না থাকলেও, এদের পাখনাতে পাঁচটি আঙুলই থাকে—যদিও প্রত্যঙ্গের আগায় চারটি বা তারও কমসংখ্যক ডগা দেখা যায়।
বিজ্ঞানীরা বলেন, বাইরে দৃশ্যমান না হলেও এসব প্রাণীর মধ্যে পাঁচটি আঙুলের গঠন বিবর্তনের ধারার কারণেই এখনো রয়ে গেছে। এ ধরনের বিষয়কে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রাণীদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এই কাঠামোটি বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজনের পরও অক্ষত রয়ে গেছে।
তবে কিছু ভিন্নতাও রয়েছে। যেমন—ঘোড়ার পায়ের খুর। এটি বিভক্ত নয়। আবার পাখিদের ডানার শেষ প্রান্তে একটি সংযোজিত আঙুলের হাড় থাকে। তবে, বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, এই প্রাণীগুলোর ভ্রূণের গঠন পাঁচটি আঙুল নিয়েই শুরু হয়। জন্ম নেওয়ার আগে সেগুলো ছোট হয়ে যায়।
এটি প্রমাণ করে যে পাঁচটি আঙুলের গঠন বিবর্তনের মাধ্যমে শুরু হয় এবং পরে পরিবেশ এবং কার্যকারিতার ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এটি আমাদের বোঝাতে সাহায্য করে যে ভিন্ন ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অভিযোজিত হলেও এদের মৌলিক গঠন প্রায় একই রকম রয়ে গেছে।
পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী থমাস স্টুয়ার্ট বলেন, এই প্রক্রিয়াটি প্রধানত হক্স জিন নিয়ন্ত্রণ করে। হক্স জিন প্রোটিনকে কোড করে, যা অন্যান্য জিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ভ্রূণ থেকে বিকাশ লাভের সময় শরীরের বিভিন্ন অংশ সঠিক স্থানে গঠিত হচ্ছে কি না, সেটি নিশ্চিত করে এই জিন।
হক্স জিন টেট্রাপডদের (যেমন—স্থলজ প্রাণী) কঙ্কালের আকৃতি বা বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের সঙ্গে জড়িত। জিনগুলো সোনিক হেজহগ জিন দিয়ে তৈরি প্রোটিনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। টিস্যু তৈরি করার সময় প্রোটিনগুলো একে অপরকে সক্রিয় অথবা ব্লক করে।
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আঙুলের বাড বা কুঁড়ি তৈরি হয়। প্রাণীর ধরন অনুযায়ী বাডগুলো বাড়তে থাকে বা ক্রমে নিশ্চিহ্ন হয়। এরপর যে অংশগুলোতে আঙুল নিশ্চিহ্ন হওয়ার সেখানকার কোষগুলো মরে যায়, যার ফলে আলাদা আলাদা আঙুল গঠিত হয়।
তবে এটি কীভাবে ঘটে, তা এখনো অস্পষ্ট। কারণ, বিভিন্ন বিজ্ঞানী ভিন্নভাবে এটি ব্যাখ্যা করেন। এই প্রক্রিয়ার পেছনে অনেক গবেষণা ও তত্ত্ব রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখনো সম্পূর্ণভাবে জানেন না, কীভাবে সবকিছু ঘটে।
কেউ নিশ্চিত নয়, কবে প্রথম এই পাঁচটি আঙুল বিকশিত হয়েছিল। বিবর্তনবাদের ধারণা অনুযায়ী, যেসব প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে আগে আঙুল দেখা যায়, তারা প্রায় ৩৬ কোটি বছর আগে মাছ থেকে বিবর্তিত হয়েছিল এবং তাদের আটটি আঙুল থাকতে পারে। উল্লেখ্য, হোমোলজি হলো একটি জীববিজ্ঞানের ধারণা। এই ধারণা বোঝায় যে দুটি বা ততোধিক প্রাণীর মধ্যে কিছু গঠন, জিন বা বৈশিষ্ট্য তাদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে।
বিবর্তনতত্ত্ব মতে, একটি জিন বা গঠন—যা বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে শেয়ার করা হয় কারণ তাদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল। সব জীবিত টেট্রাপডের সাধারণ পূর্বপুরুষ কোনো কোনোভাবে পাঁচটি আঙুলে বিকশিত হয়েছিল এবং সেই বৈশিষ্ট্যটি তার বংশধরদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছে।
একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ আমাদের বোঝায় কীভাবে স্তন্যপায়ীরা পাঁচটি আঙুল পেয়েছে, কিন্তু এটি কেন পেয়েছে তার ব্যাখ্যা এখান থেকে পাওয়া যায় না। একটি তত্ত্ব হলো—ক্যানালাইজেশন। এই ধারণা অনুযায়ী, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটি জিন বা বৈশিষ্ট্য আরও স্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
জীববিজ্ঞানী থমাস স্টুয়ার্ট বলেন, স্তন্যপায়ীদের মেরুদণ্ডে সাধারণত সাতটি কশেরুকা থাকে। যদিও এই সংখ্যা বিশেষ কোনো সুবিধা দেয় না। তবে এই সংখ্যা লাখ লাখ বছর ধরে কার্যকরভাবে কাজ করে এসেছে তাই বিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন হয়নি। এই তত্ত্বমতে, একটি বৈশিষ্ট্য যদি দীর্ঘ সময় ধরে সফলভাবে থেকে থাকে, তবে তা পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
বিড়াল, কুকুর, এমনকি ক্যাঙারুর পায়ের দিকে খেয়াল করলেই দেখবেন মানুষের হাত–পায়ের সঙ্গে এদের একটি মিল আছে। আকার, প্রকার ও অবস্থান আলাদা হলেও এই স্তন্যপায়ীগুলোর আঙুল পাঁচটি। এসব প্রাণীর সঙ্গে মানুষের আঙুলের সংখ্যায় এমন মিল কেন?
স্তন্যপায়ী প্রাণীদের পাঁচটি আঙুল থাকার কারণ বোঝার জন্য প্রথমে টেট্রাপড (গ্রিক শব্দে ‘চার–পেয়ে’) মেরুদণ্ডীদের কেন পাঁচটি আঙুল থাকে, তা বুঝতে হবে। স্তন্যপায়ী প্রাণীরা টেট্রাপোডা সুপারক্লাসের মধ্যে সরীসৃপ, উভচর ও পাখিরাও অন্তর্ভুক্ত। এই পর্বের সদস্যদের মধ্যে তিমি, সিল এবং সি লায়নের মতো প্রাণীদের কঙ্কালে পাঁচ আঙুলযুক্ত অঙ্গ না থাকলেও, এদের পাখনাতে পাঁচটি আঙুলই থাকে—যদিও প্রত্যঙ্গের আগায় চারটি বা তারও কমসংখ্যক ডগা দেখা যায়।
বিজ্ঞানীরা বলেন, বাইরে দৃশ্যমান না হলেও এসব প্রাণীর মধ্যে পাঁচটি আঙুলের গঠন বিবর্তনের ধারার কারণেই এখনো রয়ে গেছে। এ ধরনের বিষয়কে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রাণীদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এই কাঠামোটি বিভিন্ন পরিবেশে অভিযোজনের পরও অক্ষত রয়ে গেছে।
তবে কিছু ভিন্নতাও রয়েছে। যেমন—ঘোড়ার পায়ের খুর। এটি বিভক্ত নয়। আবার পাখিদের ডানার শেষ প্রান্তে একটি সংযোজিত আঙুলের হাড় থাকে। তবে, বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, এই প্রাণীগুলোর ভ্রূণের গঠন পাঁচটি আঙুল নিয়েই শুরু হয়। জন্ম নেওয়ার আগে সেগুলো ছোট হয়ে যায়।
এটি প্রমাণ করে যে পাঁচটি আঙুলের গঠন বিবর্তনের মাধ্যমে শুরু হয় এবং পরে পরিবেশ এবং কার্যকারিতার ধরন অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এটি আমাদের বোঝাতে সাহায্য করে যে ভিন্ন ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী বিভিন্ন পরিস্থিতিতে অভিযোজিত হলেও এদের মৌলিক গঠন প্রায় একই রকম রয়ে গেছে।
পেনসিলভানিয়ার পেন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী থমাস স্টুয়ার্ট বলেন, এই প্রক্রিয়াটি প্রধানত হক্স জিন নিয়ন্ত্রণ করে। হক্স জিন প্রোটিনকে কোড করে, যা অন্যান্য জিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ভ্রূণ থেকে বিকাশ লাভের সময় শরীরের বিভিন্ন অংশ সঠিক স্থানে গঠিত হচ্ছে কি না, সেটি নিশ্চিত করে এই জিন।
হক্স জিন টেট্রাপডদের (যেমন—স্থলজ প্রাণী) কঙ্কালের আকৃতি বা বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের সঙ্গে জড়িত। জিনগুলো সোনিক হেজহগ জিন দিয়ে তৈরি প্রোটিনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। টিস্যু তৈরি করার সময় প্রোটিনগুলো একে অপরকে সক্রিয় অথবা ব্লক করে।
এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আঙুলের বাড বা কুঁড়ি তৈরি হয়। প্রাণীর ধরন অনুযায়ী বাডগুলো বাড়তে থাকে বা ক্রমে নিশ্চিহ্ন হয়। এরপর যে অংশগুলোতে আঙুল নিশ্চিহ্ন হওয়ার সেখানকার কোষগুলো মরে যায়, যার ফলে আলাদা আলাদা আঙুল গঠিত হয়।
তবে এটি কীভাবে ঘটে, তা এখনো অস্পষ্ট। কারণ, বিভিন্ন বিজ্ঞানী ভিন্নভাবে এটি ব্যাখ্যা করেন। এই প্রক্রিয়ার পেছনে অনেক গবেষণা ও তত্ত্ব রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখনো সম্পূর্ণভাবে জানেন না, কীভাবে সবকিছু ঘটে।
কেউ নিশ্চিত নয়, কবে প্রথম এই পাঁচটি আঙুল বিকশিত হয়েছিল। বিবর্তনবাদের ধারণা অনুযায়ী, যেসব প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে আগে আঙুল দেখা যায়, তারা প্রায় ৩৬ কোটি বছর আগে মাছ থেকে বিবর্তিত হয়েছিল এবং তাদের আটটি আঙুল থাকতে পারে। উল্লেখ্য, হোমোলজি হলো একটি জীববিজ্ঞানের ধারণা। এই ধারণা বোঝায় যে দুটি বা ততোধিক প্রাণীর মধ্যে কিছু গঠন, জিন বা বৈশিষ্ট্য তাদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে।
বিবর্তনতত্ত্ব মতে, একটি জিন বা গঠন—যা বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে শেয়ার করা হয় কারণ তাদের একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ ছিল। সব জীবিত টেট্রাপডের সাধারণ পূর্বপুরুষ কোনো কোনোভাবে পাঁচটি আঙুলে বিকশিত হয়েছিল এবং সেই বৈশিষ্ট্যটি তার বংশধরদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছে।
একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ আমাদের বোঝায় কীভাবে স্তন্যপায়ীরা পাঁচটি আঙুল পেয়েছে, কিন্তু এটি কেন পেয়েছে তার ব্যাখ্যা এখান থেকে পাওয়া যায় না। একটি তত্ত্ব হলো—ক্যানালাইজেশন। এই ধারণা অনুযায়ী, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটি জিন বা বৈশিষ্ট্য আরও স্থিতিশীল হয়ে ওঠে এবং পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
জীববিজ্ঞানী থমাস স্টুয়ার্ট বলেন, স্তন্যপায়ীদের মেরুদণ্ডে সাধারণত সাতটি কশেরুকা থাকে। যদিও এই সংখ্যা বিশেষ কোনো সুবিধা দেয় না। তবে এই সংখ্যা লাখ লাখ বছর ধরে কার্যকরভাবে কাজ করে এসেছে তাই বিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন হয়নি। এই তত্ত্বমতে, একটি বৈশিষ্ট্য যদি দীর্ঘ সময় ধরে সফলভাবে থেকে থাকে, তবে তা পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স
আইনস্টাইনের কথা উঠলেই চলে আসে আরও একজনের নাম। তিনি হলের এমি নোয়েথার। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন এই নারী। তিনি ছিলেন জার্মান গণিতবিদ। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে মারা যান এই নারী। কিন্তু এই অল্প কিছুদিনেই গণিতে তাঁর অবদান অসামান্য।
১৯ ঘণ্টা আগেজলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের কৃষিপ্রধান দেশগুলোর ধানে আর্সেনিকের উপস্থিতির আশঙ্কা বেড়ে গেছে। সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট প্ল্যানেটারি হেলথ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২১ ঘণ্টা আগেডলফিনেরা পৃথিবীর অন্যতম বুদ্ধিমান প্রাণী, যাদের জটিল সামাজিক আচরণ ও শিসের মাধ্যমে নিজস্ব সাংকেতিক নাম রয়েছে। তারা ঘনঘন শব্দ, ক্লিক ও স্কোয়াক ব্যবহার করে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। রহস্যময় এই যোগাযোগব্যবস্থা ভেদ করার পথেই এগোচ্ছে বিজ্ঞান।
২ দিন আগেপৃথিবী ছাড়া মহাবিশ্বের অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে কিনা—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিগত কয়েক দশক ধরে গবেষণা পরিচালনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এবার সেই উত্তরের খোঁজে আরেক ধাপ এগোল মানবজাতি। নাসার জ্যোতির্বিদরা দাবি করেছেন, পৃথিবী থেকে ১২৪ আলোকবর্ষ দূরে ‘কে২–১৮ বি’ নামের একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে...
২ দিন আগে