আজকের পত্রিকা ডেস্ক
প্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুলসংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত তীব্র ব্যথা ও কষ্টে ভোগে।
গবেষণাটি করেছেন ওয়েলফেয়ার ফুটপ্রিন্ট ইনস্টিটিউটের সিনথিয়া শাক-পেইমের নেতৃত্বে একদল জীববিজ্ঞানী। তাঁরা জানান, মাছকে সাধারণত খোলা বাতাসে বা বরফপানিতে রেখে শ্বাসরোধের মাধ্যমে মারা হয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘এয়ার অ্যাসফিক্সিয়েশন’। পদ্ধতিটি খরচ সাশ্রয়ী হলেও এটি মাছের জন্য অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক।
মূলত রেইনবো ট্রাউট (Oncorhynchus mykiss) মাছ নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের শীতল নদী থেকে আগত এই প্রজাতির মাছ এখন প্রায় বিশ্বজুড়েই চাষ করা হয়।
প্রাণীর যন্ত্রণার মাত্রা পরিমাপ করা সব সময় সহজ নয়। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা একটি মানসম্পন্ন কাঠামো তৈরি করেছেন, যা প্রাণীর ওপর মানসিক চাপ বা ব্যথার মতো নেতিবাচক অবস্থা কতটা তীব্র এবং কতক্ষণ স্থায়ী হয়, তা হিসাব করার উপায় দেয়।
এই কাঠামোর নাম ‘ওয়েলফেয়ার ফুটপ্রিন্ট ফ্রেমওয়ার্ক’ বা সংক্ষেপে ‘ডব্লিউএফএফ’। এর লক্ষ্য হলো—জীববিজ্ঞানী, পশু চিকিৎসক, চিড়িয়াখানার কর্মী, খামারি প্রভৃতি যাঁরা প্রাণীর সঙ্গে সরাসরি কাজ করেন, তাঁদের জন্য প্রাণীর কল্যাণের মানদণ্ড তুলনামূলকভাবে পর্যালোচনা ও উন্নত করা।
গবেষণার লেখকেরা লিখেছেন, ‘খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াগুলোর কারণে প্রাণীদের ওপর যে প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে সমাজের উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে, যার প্রমাণ দেখা যায় ভোক্তানির্ভর আন্দোলন, পণ্যের লেবেলিং উদ্যোগ, নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে, যেখানে প্রাণীর কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’
তাঁরা আরও বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় প্রথমবারের মতো মাছ কাটার সময় ব্যথার পরিমাণগত পরিমাপ তুলে ধরা হয়েছে। মাছকে কাটার আগে ঠিকমতো অচেতন (স্টানিং) করা যায়, তাহলে তাদের অনেক কম কষ্ট হবে।
গবেষণায় দেখা যায়, মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের জন্য পানি থেকে তুলে নিলেই মাছের শরীরে একধরনের নিউরোকেমিক্যাল প্রতিক্রিয়া শুরু হয়, যা মানুষের ক্ষেত্রে নেতিবাচক আবেগের মতো কাজ করে। মাছ তখন ছটফট করতে থাকে, গড়াগড়ি খায়, যা তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ।
পানি ছাড়া মাছের সংবেদনশীল ফুলকা একে অপরের সঙ্গে লেগে যায়। এতে শরীরে জমতে থাকে কার্বন ডাই-অক্সাইড। এই পরিস্থিতিতে মাছ হাঁসফাঁস করতে থাকে, যা ‘নোসিসেপশন’ নামক একধরনের শরীরের বিপৎসংকেত ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। ধীরে ধীরে মাছের রক্ত ও সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডে অ্যাসিড বেড়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে অচেতন করে তোলে।
এই প্রক্রিয়া মাছের আকার ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ২ থেকে ২৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। গড় হিসাবে প্রতি কেজি মাছ উৎপাদনে ২৪ মিনিট পর্যন্ত মাঝারি থেকে তীব্র যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সময় এক ঘণ্টাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, সঠিকভাবে বিদ্যুৎ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছকে অচেতন করে মারা গেলে এই যন্ত্রণা অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। প্রতি ১ মার্কিন ডলার খরচে গড়ে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত মাছের মাঝারি থেকে তীব্র যন্ত্রণা কমানো সম্ভব।
তবে বর্তমান সময়ে ব্যবহৃত বিদ্যুৎভিত্তিক পদ্ধতিগুলোর কার্যকারিতা সর্বদা নিশ্চিত নয়। অনেক সময় মাছ পুরোপুরি অচেতন না হয়েই মারা যায়। গবেষকেরা বলছেন, মাছকে মারার পুরো প্রক্রিয়া—শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত—তার মানসিক ও শারীরিক কষ্টকে প্রভাবিত করে। তাই পুরো প্রক্রিয়াটির সংস্কার জরুরি।
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্টিফিক জার্নালে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্ট অ্যালার্ট
প্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুলসংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত তীব্র ব্যথা ও কষ্টে ভোগে।
গবেষণাটি করেছেন ওয়েলফেয়ার ফুটপ্রিন্ট ইনস্টিটিউটের সিনথিয়া শাক-পেইমের নেতৃত্বে একদল জীববিজ্ঞানী। তাঁরা জানান, মাছকে সাধারণত খোলা বাতাসে বা বরফপানিতে রেখে শ্বাসরোধের মাধ্যমে মারা হয়। এই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘এয়ার অ্যাসফিক্সিয়েশন’। পদ্ধতিটি খরচ সাশ্রয়ী হলেও এটি মাছের জন্য অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক।
মূলত রেইনবো ট্রাউট (Oncorhynchus mykiss) মাছ নিয়ে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের শীতল নদী থেকে আগত এই প্রজাতির মাছ এখন প্রায় বিশ্বজুড়েই চাষ করা হয়।
প্রাণীর যন্ত্রণার মাত্রা পরিমাপ করা সব সময় সহজ নয়। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা একটি মানসম্পন্ন কাঠামো তৈরি করেছেন, যা প্রাণীর ওপর মানসিক চাপ বা ব্যথার মতো নেতিবাচক অবস্থা কতটা তীব্র এবং কতক্ষণ স্থায়ী হয়, তা হিসাব করার উপায় দেয়।
এই কাঠামোর নাম ‘ওয়েলফেয়ার ফুটপ্রিন্ট ফ্রেমওয়ার্ক’ বা সংক্ষেপে ‘ডব্লিউএফএফ’। এর লক্ষ্য হলো—জীববিজ্ঞানী, পশু চিকিৎসক, চিড়িয়াখানার কর্মী, খামারি প্রভৃতি যাঁরা প্রাণীর সঙ্গে সরাসরি কাজ করেন, তাঁদের জন্য প্রাণীর কল্যাণের মানদণ্ড তুলনামূলকভাবে পর্যালোচনা ও উন্নত করা।
গবেষণার লেখকেরা লিখেছেন, ‘খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়াগুলোর কারণে প্রাণীদের ওপর যে প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে সমাজের উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে, যার প্রমাণ দেখা যায় ভোক্তানির্ভর আন্দোলন, পণ্যের লেবেলিং উদ্যোগ, নীতিমালা ও আইন প্রণয়নের মাধ্যমে, যেখানে প্রাণীর কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।’
তাঁরা আরও বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় প্রথমবারের মতো মাছ কাটার সময় ব্যথার পরিমাণগত পরিমাপ তুলে ধরা হয়েছে। মাছকে কাটার আগে ঠিকমতো অচেতন (স্টানিং) করা যায়, তাহলে তাদের অনেক কম কষ্ট হবে।
গবেষণায় দেখা যায়, মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের জন্য পানি থেকে তুলে নিলেই মাছের শরীরে একধরনের নিউরোকেমিক্যাল প্রতিক্রিয়া শুরু হয়, যা মানুষের ক্ষেত্রে নেতিবাচক আবেগের মতো কাজ করে। মাছ তখন ছটফট করতে থাকে, গড়াগড়ি খায়, যা তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ।
পানি ছাড়া মাছের সংবেদনশীল ফুলকা একে অপরের সঙ্গে লেগে যায়। এতে শরীরে জমতে থাকে কার্বন ডাই-অক্সাইড। এই পরিস্থিতিতে মাছ হাঁসফাঁস করতে থাকে, যা ‘নোসিসেপশন’ নামক একধরনের শরীরের বিপৎসংকেত ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। ধীরে ধীরে মাছের রক্ত ও সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডে অ্যাসিড বেড়ে যায়, যা শেষ পর্যন্ত তাকে অচেতন করে তোলে।
এই প্রক্রিয়া মাছের আকার ও পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ২ থেকে ২৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। গড় হিসাবে প্রতি কেজি মাছ উৎপাদনে ২৪ মিনিট পর্যন্ত মাঝারি থেকে তীব্র যন্ত্রণার সম্মুখীন হতে হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সময় এক ঘণ্টাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, সঠিকভাবে বিদ্যুৎ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছকে অচেতন করে মারা গেলে এই যন্ত্রণা অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। প্রতি ১ মার্কিন ডলার খরচে গড়ে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত মাছের মাঝারি থেকে তীব্র যন্ত্রণা কমানো সম্ভব।
তবে বর্তমান সময়ে ব্যবহৃত বিদ্যুৎভিত্তিক পদ্ধতিগুলোর কার্যকারিতা সর্বদা নিশ্চিত নয়। অনেক সময় মাছ পুরোপুরি অচেতন না হয়েই মারা যায়। গবেষকেরা বলছেন, মাছকে মারার পুরো প্রক্রিয়া—শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত—তার মানসিক ও শারীরিক কষ্টকে প্রভাবিত করে। তাই পুরো প্রক্রিয়াটির সংস্কার জরুরি।
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্টিফিক জার্নালে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্ট অ্যালার্ট
মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ‘ব্ল্যাক হোল’ আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। শক্তিশালী জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি) থেকে প্রাপ্ত ডেটা বিশ্লেষণ করে তারা জানান, এমন একটি ব্ল্যাক হোলের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, যার জন্ম হতে পারে বিগ ব্যাংয়ের মাত্র এক সেকেন্ডেরও কম সময় পরে
১৮ ঘণ্টা আগেঢাকার সময় অনুযায়ী, আজ রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা ২৮ মিনিটে শুরু হয়েছে অত্যন্ত বিরল পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের ‘পেনুম্ব্রাল’ বা সূক্ষ্ম ছায়া পর্ব। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আংশিকভাবে গ্রহণ শুরু হবে। বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ থেকে এই গ্রহণ দেখা যাচ্ছে।
২ দিন আগেপ্রায় দুই শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে শেখানো হয়ে আসছে যে, বরফের ওপর চাপ বা ঘর্ষণের ফলে তার পৃষ্ঠে একটি পাতলা তরল স্তর তৈরি হয়, আর এই তরল স্তরই বরফকে পিচ্ছিল করে তোলে। শীতপ্রধান দেশে বরফে ঢাকা ফুটপাতে হাঁটার সময় হঠাৎ পিছলে পড়ে যাওয়ার ঘটনা তাই অনেকেই এভাবে ব্যাখ্যা করতেন।
৩ দিন আগেপ্রকৃতি আবার সাজিয়েছে এক মায়াবী আয়োজন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রাতে আবারও ফিরে আসছে ‘ব্লাড মুন’। অর্থাৎ চাঁদ রূপ বদলে হয়ে উঠবে লাল। এই রক্তিম আভা রাতের আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। আর বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ দেখতে পাবে এই দুর্লভ চন্দ্রগ্রহণ।
৪ দিন আগে